জেনারেল রাইটিং:- কাঁচের গুটি ও শৈশবের স্মৃতি
আজ - শুক্রবার
হাই বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন ? আছেন আশা করি সবাই সুস্থ সবল এবং ভালো আছেন । সবার সুস্থতা কামনা করে আজকে আবার আমি নতুন এবং ইন্টারেস্টিং একটা পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম । আজকে আমি আমার জীবনের সেই ছোট্টবেলার কাঁচের গুটি খেলার মুহূর্তের একটি ছোট্ট গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি আমি আশা করি আপনারা এই গল্পটি অনেক বেশি উপভোগ করবেন তবে চলুন শুরু করি..। আজ থেকে প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর আগে কাছের গুটি খেলাটি অনেক জনপ্রিয় একটা খেলা ছিল । ছোট থেকে বড় ছেলে-মেয়ে সবাই এই খেলাটা অনেক মজা করে উপভোগ করত এবং এই খেলাটি মোটামুটি গ্রাম অঞ্চলে একটা নেশার মতো কাজ করত । যেমন কাচের গুটি দিয়ে কাচের গুটি পাওয়া যেত । আমি তো শুধু হেরে যেতাম আমি এই খেলাটা তেমন ভালোভাবে পারতাম না তবে আমার একটা মামা ছিল যার নাম হচ্ছে মজনু উনি অনেক ভালো করে এই খেলা খেলতে পারতেন এবং তিনি বাড়িতে দুই থেকে তিন ভার গুটি না জমিয়ে ফেলেছিলেন।
![]() |
---|
কাচের গুটি খেলার পাশাপাশি আমাদের ছেলে মেয়েদের একটা জনপ্রিয় খেলার বস্তু ছিল সাইকেল অথবা ভ্যানের টায়ার। আপনারা হয়তোবা বলবেন যে সাইকেল অথবা ভ্যানের টায়ার দিয়ে আবার কি করা যাই? আসলে সত্যি বলতে এটা অনেক কাজের একটা জিনিস ছিল আমাদের কাছে । এটা দিয়ে আমরা সারাদিন একটা পাটকাঠির মাধ্যমে চালিয়ে নিয়ে বেড়াতাম এবং সবাই মিলে যে কি একটা মজা করতাম সত্যি সেদিনগুলো এখন অনেক মনে পড়ে ।আর আমাদের একটা মাস্টার ছিল যার নাম ছিল সরুয়ার স্যার উনি আমাদের ইসলামিক সাবজেক্ট পড়াতেন উনি যখন ছোট ছিল তখন গ্রাম দিয়ে যদি কোন মোটরসাইকেল যেত আর কোনভাবে যদি ব্রেক করত তাহলেও ওখানে যেই জায়গাটিতে টায়ারের ঘোষণ লেগে যেত ওই জায়গাটা ওনারা গন্ধ সুখে দেখত যে এটার গন্ধ কেমন হাহাহা, এই কথাটাই আপনাদের কাছে একটু অদ্ভুত শোনালেও এই অভ্যাসগুলো আমাদের ছোটবেলায় অনেক ছিল এবং এগুলো নিয়ে আমরা অনেক মাতামাতি করতাম।
![]() |
---|
সেই সাথে আমার আরো একটা ফেভারিট জিনিস ছিল সেটা হচ্ছে নসিমনের টিউব। নসিমনের টিউবে যদি হাওয়া দেওয়া হয় তাহলে এটি অনেক বড় পরিসরে ফুলে ওঠে আর ওই টিউব এর উপরে উঠে পুকুরে অনেক মজা করে সাঁতার কাটা যেত। সেই সাথে ওই টিউবের উপরে যদি বসা যেত তাহলে অনেকটা নৌকার মতো কাজ করত আর দুই হাত দিয়ে যেখানে খুশি সেখানে যাওয়া যেত এইটুক এর উপর উঠে এই জন্য আমার কাছে এই টিউবটি অনেক প্রিয় একটা জিনিস ছিল । আমি এই টিউবের গুণ সম্পর্কে তেমন একটা জানতাম না তবে আমাদের বাড়িতে একটা নষ্ট টিউব এমন পড়েছিল তখন আমি সেটাতে ফু দিয়ে এবং বিভিন্ন রকম আঠা দিয়ে ওই টিউবডি মেরামত করে পরবর্তীতে এভাবে চড়ে বেড়াতাম । আহ!! কি যে একটা মজা লাগতো। আসলে হয়তোবা এইসব অভ্যাসের কথা শুনলে অনেকের কাছে অনেক অদ্ভুত মনে হবে কিন্তু ছোটবেলায় এই ধরনের মজাটাই আমাদের আনন্দের কারণ ছিল ।
![]() |
---|
আপনারা আমার সাথে একমত হবেন কি না আমি ঠিক বলতে পারছি না তবে আমার মনে হয় আমরা ছোটবেলায় অল্পতেই খুশি হয়ে যেতাম। যেমন যদি একটা আইসক্রিম পেতাম তাহলে ও বাপরে বাপ আইসক্রিম পেয়েছি কি যে একটা মজা সারাদিন খেয়ে বেরাবো এমন একটা টেন্ডেসি আমাদের মাঝে কাজ করত । কিন্তু বর্তমানে দশ টাকার আইসক্রিম জায়গায় যদি আমরা দশ হাজার টাকার একটা পণ্য ক্রয় করি তাহলে হয়তো বা আমরা এত আনন্দ পায় না যখন ছোটবেলায় পেতাম ।যদি আমরা সায়েন্টিফিক চিন্তা করি তাহলে তখন আমাদের ব্রেনে ডোপামিন নির্গত বেশি হতো কিন্তু যত দিন যাচ্ছে তত আমরা এই ধরনের বিষয়গুলোতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি যার কারণে এখন ব্রেন থেকে কম রিলিজ হয়। এজন্যই আমাদের আনন্দের লেভেলটা অনেক বেশি কমে গেছে। এছাড়াও পাশাপাশি আরেকটা আমাদের বিখ্যাত খেলার জিনিস ছিল সেটা হচ্ছে ৩ বিরাইন গাড়ি।
![]() |
---|
এখন আপনারা হয়তো বলতে পারেন যে তিন বিরাইন এর গাড়ি আবার কি জিনিস ? এটা হচ্ছে বিভিন্ন রকম সাইকেল অথবা মোটরসাইকেলের যেই নষ্ট বিরাইন থাকে ওইগুলো দিয়ে একটা সুন্দর গাড়ি তৈরি করা যেত যার উপরে উঠে পিছন দিকে ধাক্কা দিলে এটি সামনের দিকে এগোতো আর এটাতে চরে আমরা বেশ মজা পেতাম বলা যায় প্রথমে আমি জীবনে এই ছিল আমার প্রথম গাড়ি। আসলে এ গাড়িটা ছোট এতে আমাদের কোন আফসোস ছিল না কিন্তু গাড়িটা যে আমার নিজের এই বিষয়টা ভেবে অন্যরকম একটা প্রশান্তি কাজ করতো। আচ্ছা আপনারা কি এই বিয়ারিং গাড়িতে কোনদিন চড়েছেন? যদি চালিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানিয়ে যাবেন আমিও দেখতে চাই কে কে আমার মত এমনভাবে শৈশব পার করেছে । যাই হোক ধন্যবাদ সবাইকে এতক্ষন পাশে থেকে ব্লগটি উপভোগ করার জন্য আবারো খুব সুন্দর দেখার জন্য কোন পোস্টে ততক্ষণ সবাই সুস্থ থাকুন।
ব্লগার | @emonv |
---|---|
ডিভাইস | Infinix note 11 pro |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
আমার নাম মোঃ ইউনুস আলী ইমন। বর্তমানে আমি সিরাজগঞ্জ মৎস ইনস্টিটিউট এর একজন ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করছি। এছাড়া পরিচয় দেওয়ার মতো এখনো কিছু করে উঠতে পারেনি তবে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিয়ারের উপরে কাজ চলমান......। আমি নিজেকে ভেঙে চুড়ে নতুন করে আবিষ্কার করতে অনেক পছন্দ করি এবং আমি মানুষকে সাহায্য করতে অনেক ভালোবাসি। আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাতে নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি। আপনাকে স্বাগতম আমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়ার জন্য। ভালোবাসা রইলো অবিরাম সবাইকে 💝।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
![]()
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ছোটবেলার স্মৃতি স্মরণ করে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। আপনার এই পোস্ট দেখে আমার খুব ভালো লাগলো। এক কথায় বলতে গেলে অসাধারণ হয়েছে আপনার পোস্ট। মার্বেল দিয়ে আমরাও খেলেছি। তবে কবে যেন হারিয়ে ফেলেছি সেই শৈশব। স্মৃতি স্মরণ করার জন্য ধন্যবাদ।
আজকের এই সুন্দর পোস্ট পড়ার মধ্য দিয়ে যেন একদম ফিরে গেলাম সেই ছোটবেলার অতীত স্মৃতির মধ্যে। আমার জীবনে অনেক দিন মার্বেল দিয়ে খেলা করেছি। আর মার্বেল দিয়ে দুই তিন ধরনের খেলা করা যেত। যাইহোক সেই সমস্ত স্মৃতিগুলো এক মুহূর্তে যেন মনের মধ্যে ভেসে আসলো পোস্ট পড়ে।
আসলে আপনি ছোট বেলার স্মৃতি নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনার পোস্টটি পরতে গিয়ে আমার সেই শৈশব জীবনে হাড়িয়ে গিয়েছেলাম। আসলে ছোট আমরা অনেকেই মিলে এমন মার্বেল খেলতাম। এবং টায়ার চালিয়ে বেড়াতাম। বেয়ারিং দিয়ে এমন গাড়ি তৈরি করে অনেক খেলা ধুলা করতাম। আসলে সেই দিন গুলো অনেক আনন্দর ছিলো। তবে বর্তমান সময়ের ছেলে পেলে এধরনের খেলা সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। যাই হোক এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ছোটবেলায় কাঁচের গুটি ও ভ্যানের টায়ার নিয়ে অনেক খেলেছি ভাই। গ্রামের বাড়িতে আমার এখনো ছোটবেলায় জমিয়ে রাখা কাঁচের গুটিগুলো রয়েছে। আসলে এরকম শৈশবের স্মৃতিগুলো কম-বেশি আমাদের সবারই জীবনে রয়েছে। আপনার এই শৈশবের স্মৃতিগুলো পড়ছিলাম আর মনে হচ্ছিল, আমি আমার নিজের শৈশবে ফিরে যাচ্ছি। অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার এই পোস্টটি পড়ে।
আসলে ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়লে একেবারে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করতে থাকে৷ এখন ছোট বাচ্চারা সেই খেলাধুলা করেও না যা আমরা ছোট থাকতে করেছিলাম৷ এখন যখন আপনার কাছ থেকে এই পোস্টটির মাধ্যমে এটি দেখতে পেলাম আমি একেবারে আমার নিজের ছোটবেলায় হারিয়ে গেলাম৷ ধন্যবাদ এই সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য৷