বন্ধুরা হারিয়ে যায়!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
বন্ধুরা সবাই মিলে একসঙ্গে ঘুরতে যাব ভাবতে ভাবতে বন্ধুরা হারিয়ে যায়। কখনো সময় থাকে না কখনো টাকা থাকে না আর কখনো পরিবার মানে না। তারপর একসময় বন্ধুরাও আর থাকে না। যে যার মতো দূরে চলে যায়, নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে দেখা হয় না কথা হয় না। একটা সময় গিয়ে যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যায় তাই না? মানুষের জীবন তো এমনই। কথাগুলো হঠাৎ মনের মধ্যে উকি মারছে। কথাগুলোর সঙ্গে সঙ্গে আমার নিজের বন্ধুদের নিয়েও কিছু ঘটনা কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেল আমার। সেজন্যই আগে কথাগুলো বললাম এবং এখন বাকি ব্যাপার টা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে নিব। ইকরা, তুহিন, নাভিদ এবং আমি আমাদের বাড়ি একই উপজেলায়। আমাদের একজনের থেকে আরেকজনের বাড়ির দূরত্ব বলতে পারেন এই ২০-২৫ মিনিটের হবে কখনো আবার তার চেয়েও কম।
তুহিন নাভিদ এবং ইকরা আমাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় একই ছিল। মোটামুটি আমরা সবাই সবাইকে চিনলেও আমাদের মধ্যে ঐরকম বন্ধুত্ব ছিল না। কিন্তু কলেজে উঠার পর কাকতলীয়ভাবে আমরা চারজন একই কলেজের একই ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়। এবং কলেজে উঠার পরে আমাদের মধ্যে শুরু হয় নতুন একটা বন্ধুত্ব। সময় টা তখন ২০১৯ সাল। প্রতিদিন একসঙ্গে কলেজে যেতাম একসঙ্গে ক্লাস করে বাড়ি ফিরতাম। পথে আড্ডা মাঝে মাঝে একে অপরকে ট্রিট দিতাম। বেশ ভালোই চলছিল আমাদের সময় টা। দেখতে দেখতে আমাদের প্রথম সেমিষ্টার শেষ হয়। এবং শুরু হয় করোনা। করোনার মধ্যে বেশ অনেকদিন আমাদের একে অপরের দেখা হতো না। তবে স্যোসাল মিডিয়ার কল্যাণে কথা হতো। এরপর করোনা গেল ক্লাস পরীক্ষা আবার শুরু হলো। তো তৃতীয় সেমিষ্টার পরীক্ষার মধ্যে আমরা প্ল্যান করি পরীক্ষা শেষে ঘুরতে যাব।
আমাদের টার্গেট ছিল রাজশাহী শহর। কিন্তু পরীক্ষার পর সম্ভবত প্রথম বাঁধা টা সৃষ্টি করে ইকরা। আর কী আমাদের ট্যুর বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তী চতুর্থ এবং পঞ্চম সেমিষ্টারের পরীক্ষার মধ্যেও আমাদের প্ল্যান হয় এইবার ঘুরতে যাবোই। সবাই বেশ কনফিডেন্ট ছিল। কিন্তু শেষদিকে গিয়ে হয় টাকা না হয় পরিবারিক ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আমাদের সেই ট্যুর টা আর না। ফলাফল তৃতীয় বার আমাদের প্ল্যান ফ্লপ। একইভাবে ষষ্ঠ সেমিষ্টারেও যখনই ওরা আবার ঘুরতে যাওয়ার কথা বলেছিল আমি রেগে গিয়েছিলাম। বলেছিলাম যে এই কথা আবার বলবি তার কপালে দুঃখ আছে। এখন প্ল্যান করবা আবার পরে ক্যানসেল করবা ভালো একটা ব্যবসা পেয়েছ তোমরা। ঐ সেমিষ্টারে প্ল্যান টাও করা হয় না আর হা হা হা।
এরপর সপ্তম সেমিষ্টার আমাদের কলেজের শেষ সেমিষ্টার আসে। তো মিড পরীক্ষা যেদিন শেষ হলো দেখি ওরা তিনজন এবং রাসেল সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছে এবার ঘুরতে যাবে। এবার আর মিস হবে না। আমি বললাম যা যা সেই তো ক্যানসেল করবি। কিন্তু না সেদিন রাতেই বুকিং দেওয়া হলো ট্রেনের টিকিট। আমাদের গন্তব্য গাজীপুর ঘুরে ঢাকাতে এসে ঢাকার বেশ কিছু জায়গা ঘুরে দেখা। মোটামুটি আমাদের ট্যুর ছিল ৩ দিনের। এবং সত্যি সত্যি আমাদের প্ল্যান টা বাস্তবায়িত হয়। বেশ ভালোভাবে আমরা আমাদের ট্যুর টা সম্পন্ন করি। মানে বলতে পারেন টানা পঞ্চমবার প্ল্যান করার পর আমাদের ট্যুর টা হয়। কিন্তু এখন ইকরা তুহিন নাভিদ আমি ভিন্ন জায়গাই। আমাদের ক্যারিয়ারের লক্ষ্য আলাদা সেজন্য গন্তব্য টাও। যে যার ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এখন সপ্তাহেও একদিন আর কথা হয় না। এটাই হয়তো বাস্তবতা। যেটা আমি একেবারে প্রথমে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে কিন্তু এটা বাস্তবতা। বন্ধুরা হঠাৎ করে অনেক দূরে সরে যায়। ভাইয়া এটা বাস্তবতার খাতিরেই হয়ে যায়। সবাই সবার ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। একটা কথা কিন্তু সত্য বন্ধুরা যত দূরে সরে যাক না কেন স্মৃতিগুলো কিন্তু মুছে ফেলা যায় না। এই যেমন আপনিও পারেননি স্মৃতিগুলো মুছে ফেলতে।
আসলে এটা বাস্তব কথা যেখানেই থাকুক না কেন টানটা সবার জন্য থেকে যায়। বন্ধুরা কলেজে অথবা স্কুলে যেখানেই থাকুক সবাই যেন ভালো থাকে। কিন্তু একসময় সবাই ব্যস্ত হয়ে গেলেও তাদের কথা ভীষণ মনে পড়ে। আপনারা ঘুরতে যাবেন যাবেন করে শেষমেষ ঘুরতে যেতে পারলাম। আজকে হয়তো বন্ধুরা পাশে নেই কিন্তু তাদের স্মৃতিগুলো বেশ মনে পড়ে আমারও। আপনি বেশ সুন্দরভাবে পোস্টটি আমাদের মাঝে তুলে ধরলেন।