সবকিছু সিস্টেমেটিক!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আমাদের বাংলাদেশের ১৬ বছরের একটা ছেলে সাধারণত কী করে থাকে। এমন প্রশ্নের উওর খুবই সহজ। বাংলাদেশের ১৬ বছরের একটা ছেলে ব্যস্ত থাকে তার মাধ্যমিক বা এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে। বাবা মা পরিবার আত্মীয়স্বজন, শিক্ষক সবাই তাকে চাপ দেয় পরীক্ষায় এ প্লাস পেতে হবে না হলে তার জীবন শেষ। আর কী হয় ঐ ছেলে সেটা করার জন্য উঠেপড়ে লাগবে। দিনরাত লেখাপড়া করবে। আর না হলে সে সবার প্রেসারে ডিপ্রেশনে চলে যাবে। সাধারণত এটাই হয় আমাদের বাংলাদেশ ভারত সহ এই উপমহাদেশে। এখানে লেখাপড়ার বাইরে কোন অপশন নেই। আপনার ইচ্ছা না করলেও আপনার অন্য কিছু করার ইচ্ছা থাকলেও আপনাকে ঐ লেখাপড়ায় করতে হবে হা হা।
আর এই একই পথে সবাই চলতে গিয়ে একসময় আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা ডিপ্রেশনে চলে যায় আত্মহত্যা করে। নিজের ক্যারিয়ার চিন্তাই অসংখ্য রাত নিদ্রাহীনভাবে কাটায় তারা। এতো গেল আমাদের দেশের একটা ছেলের কথা। চলুন এবার একটু ইউরোপ এবং অন্য কয়েকটা দেশ ঘুরে আসি। লামিন ইয়ামাল, নিকো উইলিয়ামস, এন্ড্রিক, আর্দা গুলার আমি যাদের নাম বললাম তাদের সবার বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছর। এরা কেউ স্পেনের কেউ ব্রাজিলের আবার কেউ তুরস্কের। কিন্তু এখন এদের কে পুরো বিশ্বে চেনে। বিশেষ করে যারা ফুটবল টা একটু অনুসরণ করে। ইতিমধ্যে এইসব ১৬-১৭ বছরের ছেলেদের দাম ছাড়িয়েছে হাজার কোটি টাকা। হ্যা ঠিকই শুনেছেন হাজার কোটি।
ফুটবল টান্সফার মার্কেট অনুযায়ী লামিন ইয়ামালের বতর্মান বাজারমূল্য $১২০ মিলিয়ন ইউরো। হ্যা ঠিকই দেখছেন। আমাদের দেশে ঐ বয়সের ছেলেরা যখন ক্যারিয়ার চিন্তাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না হওয়ার জন্য না ঘুমিয়ে রাত কাটায়। ঠিক ঐসময়ে ফুটবল মাঠে বল নিয়ে ছুটে বেড়ায় এই ছেলেগুলো। দেখাই তাদের শৈল্পিক ফুটবলের নৈপুণ্য। শুধু ওরাই কেন পারে। আমাদের দেশের ছেলেরা কেন পারে না। এই প্রশ্ন কখনও আপনাদের মনে আসে না। এর বেশ কিছু কারণ আছে। আমাদের দেশের সিস্টেম। সাধারণত আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একটা ছেলেকে তার মা বাবা কখনোই মাঠে খেলতে যেতে অনুপ্রাণিত করে না পারলে সারাদিন বই নিয়ে টেবিলে বসিয়ে রাখে।
কিন্তু ঐসব দেশে ছেলেদের বয়স তখন ৪-৫ তখন বাবা মা সঙ্গে করে মাঠে নিয়ে যায়। ভর্তি করে দেয় ফুটবল একাডেমি তে। আবার কিছু কিছু থাকে জন্মগত প্রতিভাব তারা আপনা আপনি উঠে আসে। দরিদ্রতা, ক্ষুদা, তৃষ্ণা কোন কিছুই তাদের আটকে রাখতে পারে না। কিন্তু আমাদের দেশে তাদের রীতিমতো গলা টিপে হত্যা করা হয়।ঐ ছেলেকে না তার ট্যালেন্টকে। ইউরোপ কাঁপানো ছেলেদের মধ্যেও যে স্ট্যামিনা যে প্রতিভা আছে। আমাদের উপমহাদেশের ছেলেদের মধ্যেও সেটা আছে। কিন্তু আমাদের এবং ওদের সিস্টেম, দৃষ্টিভঙ্গি, ওদের উন্নত ট্রেনিং এগুলোই মূলত পার্থক্য সৃষ্টি করে দেয়। আমাদের দেশে এখনও মানুষের কাছে খেলতে যাওয়া সময় নষ্ট হিসেবে পরিচিত। না সবাই খেলোয়ার হবে না এটা ঠিক। কিন্তু যারা আগ্রহী যাদের প্রতিভা আছে তাদের তো সুযোগ দেওয়া উচিত। কিন্তু আমরা সেটা করতে পারি না বলেই ওদের ছেলেরা এই বয়সে বিশ্ব মাতায় আর আমরা ডিপ্রেশনে রাত কাটায়।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
পুরো লেখাটাকে এতটাই গুছিয়ে লিখেছেন আপনি যতই পড়ছিলাম ততই ভালো লাগছিল। লেখাটার মধ্যে ইউরোপের দেশগুলো এবং এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একই বয়সের ছেলেরা ভিন্ন রকম কাজের সাথে পরিচিত হয় কেউ বিশ্ব কাপায় কেউ ডিপ্রেশনে কাটায় এটার মূল কারণ হচ্ছে দেশের সিস্টেম। হ্যাঁ এটা আপনি ঠিকই বলেছেন সহমত আমি। আমাদের পরিবার থেকে কখনো চায়না এত ছোট বয়স থেকে খেলাধুলা বা অন্য কোন জায়গায় যায় কেবল মাত্র লেখাপড়া নিয়েই ব্যস্ত থাকতে বলে। যার কারণে এমন প্রতিভাবান তৈরিও হয় না। যাই হোক বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সুন্দর কিছু কথা লিখেছেন, ধন্যবাদ।