দুর্বলদের সমাজে অবস্থান // 10% beneficiary @shy-fox
আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি । |
---|
ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত আমার মাথায় অনেক চিন্তা ঘুরপাক খায় । কিছু কিছু চিন্তা সমাধান করতে পেরেছি আবার কিছু কিছু চিন্তা এখনো কুলকিনারা খুঁজে পাই নি । তার মধ্যে সমাজে নারী ও পুরুষের কি মুল্য বা কেমন ধরনের মানুষ পছন্দ করে সেটা অনেক বছর ধরে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল ।
আমাদের সমাজে অনেক পেশার মানুষ বসবাস করে । কেউ চাকরিজীবী, কেউ কৃষক, কেউ রিকশা চালক , ইত্যাদি নানান ধরনের মানুষের বসবাস । সমাজের মানুষেরা কি প্রত্যেক পেশাজীবী কে সমান মুল্য দেয় ? না দেয় না । এখানে যার একাউন্টে টাকা আছে তাকে বেশি মুল্য দেওয়া হয় । এখন সে যে কেউ হতে পারে ।
এখন বলি , একটা ছেলে তার জীবনে সবচেয়ে কষ্টটা কোথায় পায় ? কোথায় পায় জানেন, একটা ছেলের কাছে যখন টাকা বা সম্পদ থাকে না । টাকা থাকলে ছেলেটি কেমন হয় হউক , কোন বংশের হয় হউক , কালো হলেও কোনো প্রবলেম নেই । সমাজের সবাই তাকে মুল্য দেয় , সবাই তাকে চিনে । তখন সে সমাজে মাথা উঁচু করে চলতে পারে ।
আর যখন টাকা থাকে না তখন ছেলেটির বিভিন্ন দোষ খুঁজে বের করে । সেই আদিম কাল থেকে দুর্বলদের বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করে আসছে সম্পদশালীরা । তবে সম্পদশালী দের প্রতিবাদ করা কোনো ক্ষমতা নেই দুর্বলদের । তারা যা বলে দুর্বলদের তাই করতে হয় । এক সময় তো মানুষকে গোলাম হিসাবে বেঁচা কেনা করা হতো । কি এক পরিস্থিতি মানুষ হয়ে , মানুষকে বেঁচা কেনা করে ।
সম্পদশালী দের যেখানে সেখানে প্রাধান্য বেশি । ধরেন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে , সেখান দেখবেন সম্পদশালী দের অবস্থান সামনে । আর দূর্বলদের অবস্থান পিছনে । সেখানে শুধুই সম্পদশালীরাই কথা বলে । দুর্বলদের কথা বলার কোনো সুযোগ নেই আর বললেও গ্রহণ যোগ্য হয় না । সম্পদশালীরা যেটা বলবে সেটাই মানতে হবে । এতে সেটা ভুল হউক আর খারাপ হউক ।
আবার ধরেন একটা ছেলে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়েছে । তাকে বিয়ে দেওয়া হবে । মেয়েপক্ষের বাসায় পা দিতে না দিতেই বলে ছেলে কি করে ? ছেলের বাবা কি করে ? তারা কতগুলো সম্পত্তির মালিক ইত্যাদি নানা ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় । কিন্তু দুর্বল হওয়ায় কিছুই হয় না । এ রকম কাহিনী জীবনে অনেক দেখেছি ।
চোখের দেখা একটা ঘটনা শেয়ার করি তাহলে ।
আমাদের গ্রামের পাশের গ্রামে কথা । রাসেল ছেলেটি ছিল সবল পরিবারের ছেলে । তার বাবা গ্রামে ও থানা পর্যায়ের ভালো পজিশনে ছিল । সেই সুবাধে রাসেল বুক চাড়িয়ে ঘুরতো আর খারাপ কাজ করে বেড়াতো । আর সেই কাজগুলোর বিষয় তার বাবা সামলাতো । দেখতে দেখতে একদিন সে অনেক বড় একটা ভুল করে বসে । সে একটা শিশু বাচ্চার সাথে খারাপ আচরণ করে । মানে জোর করে রেপ করে । বাচ্চা মেয়েটির বয়স ছিল ৪ বছর । কিন্তু সে অপকর্ম করতে গিয়ে ধরা পড়ে । মেয়েটির পরিবার ছিল দুর্বল । তাই তারা রাসেল এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে নি । আর সমাজের প্রভাবশালীরা চুপ করে ছিল ।
তারপর আমরা পাশের গ্রামের ছেলেরা এই বিষয়ে স্থির থাকতে পারি নি । আমরা রাসেল বিরুদ্ধে মামলা করি এবং তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রজন্ত নিয়ে যাই । গ্রামের প্রভাবশালীরা যদি আমাদের পাশে থাকতো তাকে মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হতো। এইরকম ব্যক্তিকে পৃথিবী থেকে বিদায় করাই উত্তম।
এই ছিল আমাদের সমাজ ব্যবস্থাপনা । আমাদের উচিত সবাইকে সমান অধিকার দেওয়া । কারণ আমরা সবাই মানুষ । আপনাকে যে সৃষ্টি করেছে তাকেও সে সৃষ্টি করেছে ।মরে যাওয়ার পর আপনাকেও সাড়ে তিন হাত মাটিতে কবর দেওয়া হবে, দুর্বলদের কেও ঐ সাড়ে তিন হাত মাটিতে কবর দেওয়া হবে । কবরে আপনাকেও খালি হাতে যেতে হবে দুর্বলদের কেও খালি হাতে যেতে হবে। কিসের এত অহংকার ।
ধন্যবাদ সবাইকে । আজকের মতো এখানেই শেষ করছি । সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন ।
আমি মোঃ ইব্রাহিম ইসলাম নাহিদ। আমাকে সবাই নাহিদ বলেই ডাকে। আমি বাংলাদেশী । আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বই পড়তে , লিখতে ও নতুন কিছু সৃষ্টি করতে ভালোবাসি।নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি।
আপনার লেখাটি সম্পূর্ণ পড়লাম, সমাজে যারা ক্ষমতাসীন তারা ক্ষমতা দেখাবেই। কিন্তু আমাদের ও এখানে ভুল আছে দেখেন আপনার এলাকার রাসেল বার বার অপকর্ম করে তারপর ও তাকে কিছু বলা হয় না। চোরকে যদি আমরা কিছু না বলি সে বার বার চুরি করবেই কারণ তার পেশা এটাই। তাই আমাদের সমাজকে আমাদেরই টিকিয়ে রাখতে হবে সে জন্য অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেই হবে।
আপনি অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে লিখছেন , আপনার লেখাটি খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে
অনেক সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন ভাই । ধন্যবাদ আপনাকে ।
আজকাল ন্যায়বিচার ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য পরাজিত হয়েছে ।এটা সমাজের একটি জঘন্যতম অপরাধ যা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জায়গায় ঘটে চলেছে ।আপনি সেই বিষয়ে খুব সুন্দর ধারণা এবং আপনার বাড়ির পাশে ঘটে যাওয়া একটি উদাহরন স্বরুপ গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। এটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জি ভাই ঠিক বলেছেন , আমাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত । ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ।
আসলে ঠিক বলেছেন প্রত্যেক পেশাজীবীকে সমান মূল্য দেয় না। আমাদের এই সমাজ যার টাকা আছে তার মূল্যই বেশি। আসলে টাকায় সব টাকা থাকলে যত কিছুই হোক না কেন তার সব কিছু মাপ। এটাই দুনিয়া।আসলে বাবা-মা'র কারণে ছেলে মেয়ে নষ্ট হয়। আসলে জোর যার মুলুক তার। এটাই বাস্তব খুবই খারাপ লাগলো আপনার গল্পটি শুনে। আসলেই আইন বলতে কিছুই নাই বর্তমান সমাজে যারা গরীব তাদের তো সাহায্য নয় । আসলে দিনশেষে আমাদের সাথে কিছুই যাবে না। আমরা খালি হাতে যাব। অহংকার থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে থাকে সবাই ভাই ।সবাই ভালো না । টাকা থাকলে সবাই ভয় পায় বা সন্মান দেয় । ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।