আমার ভয়ংকর রান্নার গল্প। ভুলেও বানাবেন না। পট করে মরে গেলে আমি কেস খেয়ে যাব । ভালো থাকুন সবাই
হ্যালো কেমন আছেন সবাই ? আশা করি ভালোই আছেন, না থাকলেও কিছু করার নেই, চেস্টা করুন ভালো থাকার। চারিদিকে যা পজিশন তাতে আমরা সবাই মোটামুটি খারাপের দিকেই আছি। যাকগে কাজের কথা বলি।
প্রায় ৭ দিন আসিনি, আসিনি কারণ রিসোর্স ক্রেডিট কমে একদম হাতে বাটি ধরিয়ে দিয়েছিল। মনের আনন্দে প্রথম দুদিন সবাইকে লাইক কমেন্ট করে গেছি তারপর একদিন দেখলাম হাতে লন্ঠন ছাড়া আর কিছু নেই, তারপর দিন চারেক পড়াশুনো করলাম। দিয়ে বিদ্যে বোঝায় দিদি শাশুড়ি হয়ে ফিরেছি আবার। তো বক্তব্য হচ্ছে এই কদিন আমি বিরাট কিছুই সেরকম করিনি। মানে শুয়ে বসে জানালা দিয়ে গরীবের ভেনিস দেখেই দিন কেটে গেছে, মা মাঝে একদিন বলল রান্না কর, আমিও গোটা পাড়াকে জানিয়ে রান্না করতে গেছিলাম। তারপর যেটা হয়েছে সেটাকে নিয়ে এখন ফিজিসিস্ট, বায়োলোজিস্ট আর জেনারেল সায়েন্টিস্টরা গবেষনা করছেন। সে করুক, আমি জানি সেটা করেও কিছু লাভ নেই, কারণ আমার রান্নার সুত্র পাওয়া আর উহান ল্যাবে করোনা খোঁজা একই জিনিষ। দুটোই আছে কিন্তু নেই টাইপের একটা ব্যাপার।
যায় হোক সে বাদ দিন। কাজের কথা হচ্ছে আমি ভাবছি একটা মোবাইল কিনবো। এই মোবাইলটা দিন দিন আরো রুগ্ন হয়ে যাচ্ছে, কিছুই হয় না, দুমদাম থেমে যায়। হিসেব করে দেখলাম মোটামুটি ২৫ টা এসবিডি হলেই আমি একটা মোবাইল কিনতে পারবো। সেই আশাতে আজ থেকে এখানে ছাই পাঁশ লিখতে থাকবো। আপনারা ভালো না লাগলেও লাইক দেবেন প্লীজ। গরীব মানুষের পেটে লাথি মারতে নেই।
বাই দ্যা ওয়ে আমি আজকে একটা ইউটিউব দেখে বিরাট কঠিন রান্না করেছি। সর্ষে দিয়ে ঢ্যাঁড়স। জিনিষটা নাকি দুরন্ত বাজে খেতে হয়েছিল, যদিও জনতা দুবার করে নিয়েছে খাবার সময়। আমার অবশ্য মন্দ লাগেনি, মোটামুটি দিব্যি পেট ভরানো যায়। সেটার সেরিপি দিলাম। আপনারা ভুলেও চেস্টা করবেন না । আর করলেও খারাপ হলে আমাকে একদম বলবেন না। তো ব্যাপারটা বলি -
( মাঝে খেতে খেতে ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছিলাম তাই মেকিং এর ছবি তোলা হয়নি , পরের বার দেব অন্য কিছু করলে )
প্রথমে ঢ্যাঁড়শ গুলো নিয়ে কেটে ছোট ছোট সাইজ করে নেবেন, হাতের আঙ্গুলের সাইজ করবেন, তারপর বীজ গুলো খুঁজে খুঁজে একটা চামক দিয়ে বের করে ফেলে দেবেন । তারপর সেগুলো জলে ধুয়ে কিছুক্ষন জল ঝরতে দেবেন। যতক্ষন জল ঝরবে ততক্ষন আপনি চাইলে ইউটিউব দেখে নেবেন বা ফেসবুক করে নেবেন। তারপর পুরো জল ঝরে গেলে কড়াতে সর্ষের তেল দেবেন। তেল গরম হয়ে বুদবুদ কাটলে তাতে নুন, হলুদ, তেজপাতা আর গরম মশ্লা দিয়ে একটু নেড়ে নেবেন।
ঠিক ঠাক করতে পারলে সুন্দর একটা ঝাঁজালো গন্ধ ছাড়বে। তারপর কাটা ঢ্যাড়সের টুকরো গুলো তাতে দিয়ে ভাজবেন। বেশ একদম ভাজবেন না, তেতো লাগবে। মোটামুটি লাল হয়ে রঙ ধরে এলে সেটাকে নামিয়ে নেবেন।
তারপর সেটাকে নামিয়ে নেবেন। এবার কড়াতে আবার তেল দেবেন, তেল গরম হলে তাতে নুন, হলুদ, লঙ্কা, আদা পেস্ট, পেঁয়াজ পেস্ট আর একটু গোল মরিচের গুঁড়ো দিয়ে ভাজবেন। ভাজা হলে আগের ঢ্যাঁড়স গুলো তাতে দিয়ে দেবেন। একটু জল দিয়ে কড়ার মুখ বন্ধ করে দেবেন। মিনিট দশেকের মধ্যে সেদ্ধ হয়ে বেশ একটা মাখা মাখা ব্যাপার তৈরি হবে।
তারপর সেটাকে নামিয়ে নেবেন। মাথায় রাখবেন একদম যেন ঠান্ডা না হয়ে যায়।
এরপর মিক্সিতে খানিকটা পোস্ত নিয়ে সেটাকে পেস্ট বানিয়ে নেবেন, আগে থেকে সেদ্ধ করে রাখা আলুর টুকরোর সাথে সেটাকে মেখে নিয়ে একটা কি দুটো ডিম ফেটিয়ে পোস্ত আর আলুর মধ্যে দিয়ে দেবেন। তারপর পুরো ব্যাপারটা ভালো করে হাতে মাখা হয়ে গেলে সেটার মধ্যে আগের হালকা হরম ঢ্যাঁড়শ গুলো দিয়ে আবার মাখবেন। পুরোটা মাখা হয়ে গেলে গ্যাস জ্বালিয়ে আবার বসিয়ে দেবেন একটু জল দিয়ে। এবার আর তেল দেবেন না।
একটু ফুটতে শুরু করলে কাঁচা সরষের তেল আর একটু ধনে পাতা কুচো ছড়িয়ে দিয়ে কড়ার মুখ বন্ধ করে নামিয়ে দেবেন।
গরম গরম একটু খুন্তি দিয়ে এদিক ওদিক করে তেলটা মেখে নিয়ে পরিবেশন করুন শুকনো ভাতে। বিশ্বাস করুন, আমার মত দুরন্ত বাজে রান্না করা মানুষও যদি দুবার প্লেটে নিতে পারে তাহলে আপনাদেরও ভালো লাগবে, শুরু করে দিন। ভালো লাগলে নেমতন্ন করবেন । কাল অন্য কিছু বানালে আবার জানাবো। আপাতত আজকের মত ছুটি।
আর যারা কমেন্ট করেছেন আমি রিপ্লাই করতে পারিনি , ক্ষমা চাইছি, প্রচন্ড কম রিসোর্স হয়ে গিয়েছিল, তাই রিপ্লাই করা যায়নি, এবার থেকে সবাইকে করবো। সবাই আনন্দে থাকুন, জমিয়ে খান। গুছিয়ে আড্ডা মারুন। আর আমাকে ঠাঙ্কিউ বলুন।
এই ছবিটা আমার ছাদ থেকে বৃষ্টি দিনে তোলা। রান্নার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই, থাকলেও আমার কিছু যায় আসে না :D ।
আপনার কথাগুলো বেশ মজার। আপনার কথা শুনেই বোঝা যাছে যে আপনি যে কাউকে হাসাতে পারেন।
রেসিপি যেমনই হোক লেখার ধরণটা আমার পছন্দ হয়েছে । রম্য লেখক হতে পারবেন , চালিয়ে যান :)