অনেক দিনের ইচ্ছে পূরণ।
হ্যালো
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজকের ব্লগ টি শেয়ার করছি আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।
শনিদেব
শনি হিন্দুধর্মে শনি গ্রহের ঐশ্বরিক মূর্তিকে বোঝায় এবং হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্রে নয়টি স্বর্গীয় বস্তুর (নবগ্রহ) মধ্যে একটি। তাকে কৃষ্ণের অবতার বলে মনে করা হয়, এবং ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে কৃষ্ণ বলেছেন যে, গ্রহগুলোর মধ্যে তিনি শনি। পুরাণে শনি পুরুষ হিন্দু দেবতা, যাঁর মূর্তিশিল্পে তলোয়ার বা দণ্ড (রাজদণ্ড) বহনকারী ও কাকের উপর বসে থাকা কালো চিত্র রয়েছে। তিনি কর্ম, ন্যায়বিচার ও প্রতিশোধের দেবতা এবং একজনের চিন্তা, কথা ও কর্মের উপর নির্ভর করে ফলাফল প্রদান করেন।শনি দীর্ঘায়ু, দুঃখ, মৃত্যু, বার্ধক্য, শৃঙ্খলা, সীমাবদ্ধতা, দায়িত্ব, বিলম্ব, উচ্চাকাঙ্ক্ষা, নেতৃত্ব, কর্তৃত্ব, নম্রতা, সততা ও অভিজ্ঞতার জন্মগত জ্ঞানের নিয়ামক। তিনি আধ্যাত্মিক তপস্যা, শৃঙ্খলা ও বিবেকপূর্ণ কাজকেও বোঝায়। তাঁর দুজন স্ত্রী- প্রথম জন নীলা, নীলা রত্নপাথরের মূর্তি এবং দ্বিতীয় জন মান্দা, গন্ধর্ব রাজকন্যা।
অনেক বছর ধরেই আমি শনিদেবকে মেনে আসছি।ঢাকায় থাকাকালীন অবস্থায় আমরা প্রায় সময় মন্দিরে গিয়ে বসে থাকতাম।যখনই মন অস্থির হয়ে যেতো কোন কিছু ভালো লাগতো না শরীর অনেক বেশি অসুস্থ বোধ করতাম তখন আমি মন্দিরে যাওয়ার চেষ্টা করতাম।কারণ মন্দিরে গেলে কেমন যেন একটা শান্তি অনুভব হয়।তখন শরীরও মন তুই ভালো হয়ে যায়।আমার হাজব্যান্ড একদিন সন্ধ্যা বেলায় আমাকে ফোন করলো এবং বললো তার ডিউটিরত এলাকায় একটি মন্দির আছে সেখানে পূজো হচ্ছে অনেক লোকজন আছে চলে আসো।আমিও সাথে সাথে মেয়েদেরকে নিয়ে চলে গেলাম।ওখানে গিয়ে দেখি শনিদেবের পূজো হচ্ছে।ছোটবেলা থেকে আমাদের বাড়িতে শনি পূজো দেখেছি কিন্তু এভাবে বড় আকারের পূজো কখনো দেখা হয়নি।তাই ওই দিনটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিলো এবং মনে মনে চিন্তা করেছি মাসে একদিন হলেও আমি এখানে আসবো।আর ঠিক তাই করেছি,প্রতিমাসে একটা শনিবার উপবাস থেকে মন্দিরে গিয়ে পূজো শেষ করে প্রসাদ খেয়ে তারপর বাসায় আসতাম ওই সময়টা খুবই ভালো লাগতো।আর এভাবেই আমি শনিবারের দিনটা খুব মানি প্রতি শনিবার নিরামিষ খাবার খাই এবং মাসে একটা করে বারব্রত করি এভাবে বেশ ভালোই চলছিলো দিনকাল।
হঠাৎ করেই মাঝে বেশ অসুস্থ হয়ে যাই আর বেশি অসুস্থ হওয়ার কারণে এসব থেকে অনেকটা দূরে চলে গেছি।মন্দিরে যাওয়া উপবাস করা এগুলো হয়ে উঠছিলো না।অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম যে আবারও বারব্রত শুরু করবো কিন্তু কোনোভাবেই হয়ে উঠছিলো না।যখনই মনে মনে চিন্তা করি শুরু করবো ঠিক তখনই কোনো না কোনো সমস্যা এসে হাজির হয়ে যায় আর তখন কোনোভাবেই করতে পারি না।কিছুদিন ধরে আমরা নতুন জায়গায় এসেছি এখানে নামকরা একটা শনি মন্দির আছে যেখানে প্রতি শনিবার করে বেশ বড়সড়ো আকারের শনি পূজো হয়।কয়েকদিন মন্দিরে গিয়েছিলাম কিন্তু শনি পূজো কখনো দেখা হয়নি।সেদিন জানতে পারলাম যে এখানে বাৎসরিক শনি পূজো হবে।প্রতি শনিবার পূজো হয় কিন্তু বছরে ভাদ্রমাসে শনি দেবের জন্ম মাস আর ভাদ্রমাসে বাৎসরিক পূজো হয়।আর তখনই মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম সেই দিন থেকে আবারও বার ব্রত শুরু করবো।এবার যতো সমস্যা আসুক না কেনো তারপরেও সব বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে হলেও এবার বারব্রত শুরু করতেই হবে এই ভেবেই ছিলাম।ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমি এবার সফল হতে পেরেছি।গতকাল বাৎসরিক পূজো ছিলো উপবাস থেকে যথা সময়ে মন্দিরে চলে গেছি।
মন্দিরে গিয়ে দেখি অনেক লোকজনের ভিড়।অনেক কষ্টে মূল মন্দিরের কাছাকাছি যেতে পেরেছি।তারপর ওখানে গিয়ে হাতে হাতে একটু কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।মন্দিরে গিয়ে একটু কাজ করতে পারলে মনে শান্তি লাগে।খুবই ভালোভাবে পূজা দেখতে পেরেছি পূজো শেষ হতে হতে রাত ৯টা বেজে গিয়েছিলো।অঞ্জলি শেষে সবাই গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম প্রসাদ নেওয়ার জন্য।প্রসাদ পেতে প্রায় ঘন্টাখানেক সময় লেগেছিলো কারণ অনেক মানুষ ছিলো লাইনে,অনেক কষ্ট করে হলেও অবশেষে প্রসাদ পেয়েছি।তারপর মন্দিরে বসেই প্রসাদ খেয়ে আমরা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যাই।ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় ভালোভাবে বাসায় এসেছি।সব মিলিয়ে গতকালকের দিনটি ছিলো আমার কাছে অসাধারণ একটি দিন। আমার অনেক দিনের ইচ্ছে পূরণ হওয়াতে অনেক খুশি হয়েছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গতকালকের দিনটি আপনার খুবই ভালো ছিল বুঝতে পারছি আপু। নিজের পছন্দের কাজ গুলো করতে অনেক ভালো লাগে। আর মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়। অনেক সুন্দর করে নিজের অনুভূতি তুলে ধরেছেন আপু। বেশ ভালো লাগলো।
একদম ঠিক বলেছেন আপু পছন্দের কাজ করতে পারলে সত্যই অনেক শান্তি লাগে।আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আসলে কয়েকদিন আগেও আমি গিয়ে শনি দেবতার পূজা দিয়ে এসেছি। বিশেষ করে যখন ছোট ছিলাম তখন কিন্তু বাড়িতে এই শনি পুজো হতো। আর আমরা সব সময় এই পুজোর প্রসাদ ছিন্নি খাওয়ার জন্য পুজোর আশেপাশে ঘুরে বেড়াতাম। যাই হোক আপনি পুজোটা দিতে পেরেছেন এটা আপনার সৌভাগ্য।
শনি পূজোর সিন্নি খেতে খুবই ভালো লাগে,ছোটবেলায় আমরাও প্রসাদ খাওয়ার জন্য এ বাড়ি ও বাড়ি যেতাম।হ্যাঁ দাদা সত্যিই অনেক সৌভাগ্য যে অনেক দিনের ইচ্ছে টা পূরণ হয়েছে।অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।