সেকেন্ড টাইম রক্ত দেয়ার সময় যা ঘটেছিল আমার সাথে।
নমস্কার বন্ধুরা। আমি bloggershanto । আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে কিছুদিন আগের একটি ঘটনা শেয়ার করব যে ঘটনাটি আমি ছুটিতে থাকায় শেয়ার করতে পারনি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
পরশুদিন থেকে সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষা হঠাৎ করে আমার রুমমেট আতিউর বলল A+ ব্লাড লাগবে। আতিউর আগে থেকেই অনেক গুলো ব্লাড সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছে তাই তার কাছে ব্লাডের জন্য মাঝে মাঝেই ফোন আসে। সে আমায় জানাল সাভার সুপার হসপিটালে একজন মহিলার সিজার করা হবে ডাক্তার নাকি বলেছে এই মহিলার ব্লাড আবশ্যক। রোগীর পরিবার ডোনার খুঁজে পাচ্ছে না। আমি আতিউরকে বললাম আমি ব্লাড দিতে চাই কারণ আমার আজ চার মাস পূর্ণ হয়েছে প্রথম রক্তদানের।
কথাটা বলার সাথে সাথেই আতিউর আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বললো পরশুদিন থেকে আমাদের পরীক্ষা আর এখন রাত বাজে ১০ টা। তারপর সে বলল রক্ত দেয়া খুবই ভালো কাজ জানি কিন্তু সামনে পরীক্ষা রেখে এখন রক্ত দেয়াটা কি ঠিক হবে তাছাড়া তুই নতুন ডোনার আগে মাত্র একবার রক্ত দিয়েছিস। তারপর আমি ওকে বললাম আমি রক্ত দিতে চাই তুই ওদের সাথে কথা বল সমস্যা হলে আমি দেখে নিব। তারপর আতিউর তাদের সাথে কথা বলে কনফার্ম করলো এবং আমাদের বাসার ঠিকানা দিয়ে দিল।
কিছুক্ষণ পর তারা বাসার সামনে এসে কল দিল ততক্ষণে আমরা দুজনেই রাতের খাবার খেয়ে রেডি হয়ে ছিলাম। বাসা থেকে নেমে দেখলাম একটি প্রাইভেট কার নিয়ে দুজন লোক দাঁড়িয়ে এদিকে ওদিকে তাকিয়ে কাউকে খুঁজছে। আতিউর তাদের কাছে গিয়ে পরিচয় দিল তারা চিনতে পেরে আমাদের প্রাইভেট কারে উঠিয়ে নিল। তারপর তাদের সাথে কথা বলে তাদের পরিচয় জানার পর রোগীর সম্পর্কে জানলাম।
প্রায় ২০ মিনিট পর আমরা সাভার সুপার হসপিটালে প্রবেশ করলাম। তারা আমাদের হসপিটালের সোফায় বসতে বলল এবং জানাল রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম রাত ১২টার দিকে রোগীকে বাচ্চাসহ বের করে আনা হল। আমি রক্ত দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি হঠাৎ করে রোগীর পরিবারের একজন জানাল ডাক্তার নাকি বলেছে রোগী এখন পুরোপুরিভাবে সুস্থ আছে রক্ত না দিলেও চলবে। মুহুর্তেই মনটা খারাপ হয়ে গেল পরীক্ষা রেখে রক্ত দিতে আসলাম অথচ এখন বলছে রক্ত লাগবে না। কিছুক্ষণ পর তারা প্রাইভেট কার রেডি করে দিল আমি উনাদেরকে বললাম যদি পরবর্তীতে রক্তের প্রয়োজন হয় তাহলে যেন আমায় ফোন দেয়। অতঃপর আমরা ১২:৩০ টার দিকে বাসায় ফিরে আসলাম।
আপনি ঠিক বলেছেন রক্ত দেওয়া আসলে অনেক ভাল কাজ। আপনার পরীক্ষা সামনে চলছিল তারপরও আপনি রক্ত দান করতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো। বলতে হচ্ছে যে আপনার মনে সাহস আছে । কোন কাজের উপর যদি মন চলে যায় তাহলে সেটা না হলে আসলেই খারাপ লাগে। তার জন্য হয়তো আপনি রক্ত দিতে পারেননি বলে খারাপ লাগছিল। যাহোক উনি সুস্থ হয়ে গিয়েছেন এটা জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ সেদিন রক্ত দিয়ে পারিনি।
আসলে আপনি রক্ত দেওয়ার জন্যই তো গিয়েছিলেন কিন্তু রক্তের দরকার পরেনি। সাধারণত প্রথম বার সিজার করলে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। তবে তারা আপনার প্রতি অনেক খুশি হয়েছিল তাই আপনাকে প্রাইভেট কার ঠিক করে বাসায় পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল।
সত্যিই তারা খুবই আন্তরিক ছিল।
আপনার মত আমিও যে বার প্রথমবার রক্তদান করতে গিয়েছিলাম সেখানে যাবার পরে রোগীর রক্তের প্রয়োজন হয়েছিল না। সেটা জেনে ভালো লাগলো যে আপনি পরীক্ষা সামনে করেও রক্ত দেবার জন্য চলে গিয়েছিলেন। আমাদের সকলেরই উচিত নিয়মিতভাবে রক্ত দান করা।
হ্যাঁ আমাদের সকলেরই নিয়মিত রক্ত দান করা উচিত।