আমাদের দেশের তথাকথিত দ্বিতীয় স্বাধীনতা নিয়ে আমার নিজস্ব মতামত। পর্ব:-০১.
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ সোমবার। ০২ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের চারটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে। যেগুলো হলো জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের এই চারটি উপাদান ১৯৪৭ সালের আগে এবং ১৯৪৭ সালের পরে আমাদের এই বঙ্গভূমিতে অর্থাৎ বাংলাদেশে ছিল না। ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট এর আগে ছিল ব্রিটিশদের অধীনে আমাদের এই বঙ্গ ভূমি। আর ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট থেকে আমাদের বঙ্গভূমি হয়ে যায় পাকিস্তানের আওতাধীন। ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরে আগে পর্যন্ত আমাদের বাংলাদেশের অবস্থা কেমন ছিল? এই প্রশ্নের উত্তর একটাই, আমাদের বাংলাদেশ ছিল পরাধীনতার চাদরে আবৃত।
এবার আমাদের বাংলাদেশের মাটিকে শত্রুমুক্ত করার জন্য ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ থেকে শুরু হয় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ। মূল খেলাটাই শুরু হয় এখানে। মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায় দুই ভাগে বিভক্ত হয়। চলুন বিষয়টা আরো একটু ক্লিয়ার করি,,, আপনারা সকলেই ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে সুস্পষ্ট ভাবেই দেখতে পারবেন যে, আমাদের বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য এদেশের সকল প্রকারের সংখ্যালঘু শ্রেণী অর্থাৎ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সহ সকল প্রকারের উপজাতিরাও সরাসরি স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে তারাও জীবন দিয়েছিল। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু শ্রেণি এবং উপজাতি শ্রেণীর সকলের উদ্দেশ্যে ছিল বাংলাদেশকে স্বাধীন করা। এদের মধ্যে কোন প্রকারের মতভেদ ছিল না। একই সাথে এদের মধ্যে কেউ পাকিস্তানিদের দালাল ছিল না।
এবার মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অর্থাৎ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীন করার জন্য বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মুসলমানগণ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং বাংলাদেশের শত্রুমুক্ত করার সর্ব প্রকারের চেষ্টা চালায়। কিন্তু এই মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মুসলমান ছিল পাকিস্তানিদের প্রতি দুর্বল। এক কথায় বলা যায় তারা ছিল পাকিস্তানিদের দালাল। এই দালাল শ্রেণীর মুসলমানেরা কখনোই বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রত্যাশা করেনি। বরং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সর্বাক্ত সহযোগিতা করেছিল আমাদের বাংলাদেশের মুসলিম দালালেরা। আজকের দিনে ওই দালালদেরকে বলা হয় রাজাকার বাহিনী। যখন ১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী এবং ভারতের সেনাবাহিনী নিয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। তখনো ওই রাজাকার বাহিনীরা, পাকিস্তানি দালালরা বাংলাদেশের এই অর্জিত স্বাধীনতা মানতে পারিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীরা সবসময় ওত পেতে থেকেছে এবং বাংলাদেশকে পুনরায় পরাধীনতার চাদরে আবৃত করা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকেছে। ২০২৪ সালের ০৫ই আগস্টের পর আমাদের দেশের কিছু মানুষ বেশ জোর গলায় বলতে লাগলো যে, বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করলো। এমনকি যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করলো তারাও একই কথা বলতে লাগলো। কিন্তু আমার এখানে একটাই প্রশ্ন, স্বাধীনতার প্রকৃত সংজ্ঞা কি? আর দ্বিতীয় স্বাধীনতা মানে কি মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করা? দ্বিতীয় স্বাধীনতা মানে কি শত শত মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া, দ্বিতীয় স্বাধীনতা মানে কি সংখ্যালঘু নিরপরাধ মানুষের উপর নির্যাতন শুরু করা, দ্বিতীয় স্বাধীনতা মানে কি নিরপরাধ মানুষদের ঘরবাড়ি লুট করে আনা, দ্বিতীয় স্বাধীনতা মানে কি মন্দিরে আক্রমণ করা, দ্বিতীয় স্বাধীনতা মানে কি পীর আউলিয়াদের মাজার ভাঙ্গা ও লুট করা, দ্বিতীয় স্বাধীনতা মানে কি কলেজ ভেঙ্গে দিয়ে কলেজ লুট করে নিয়ে যাওয়া, দ্বিতীয় স্বাধীনতা মানে কি মহান মুক্তিযোদ্ধাকে অস্বীকার করার পায়তারা করা, দ্বিতীয় স্বাধীনতা মানে কি বাঙালি জাতির ঐতিহ্যকে অস্বীকার করার পয়তারা করা, দ্বিতীয় স্বাধীনতা মানে কি বাংলা মায়ের বুক রক্তে রঞ্জিত করা, এই যদি হয় আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা তাহলে আমি ব্যক্তিগতভাবে এই স্বাধীনতাকে লাথি মারি,,,,, (চলবে)
Twitter link
আজকের কাজ সম্পন্ন।