মৃৎশিল্প:- পর্ব :- ০৩ //\\ কাদামাটি দিয়ে সুন্দর একটি কবুতর পাখির বাচ্চা তৈরি।
৩***
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ সোমবার। ১৯ ই জুন, ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, মৃৎশিল্প আমাদের দেশের অন্যতম একটি ঐতিহ্য। এক সময় আমাদের দেশে মৃৎশিল্পের বিশেষ কদর ছিল। অতীত কালে প্রায় সর্ব শ্রেণীর মানুষেরা নিজের প্রয়োজন অনুসারে নিত্যদিনের কাজে মৃৎশিল্পের বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহার করতো। কিন্তু কালের বিবর্তনের ফলে আজ আমাদের মাঝখান থেকে মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের দেশের ঐতিহ্য মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের একান্ত কর্তব্য।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, এক সময় ছোট ছেলে মেয়েরা কাদামাটি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের পাখি এবং পুতুল লিয়ে সুন্দর সুন্দর খেলা খেলতো। কিন্তু বর্তমান সময়ের অধিকাংশ ছোট ছেলেমেয়েরা মাটির তৈরি পাখি ও পুতুলের সাথে তেমন একটা পরিচিত নয়। যাহোক, আমি কাদামাটি দিয়ে সুন্দর একটি কবুতর পাখির বাচ্চা তৈরি করেছি। কবুতর পাখির বাচ্চা তৈরি করতে বেশ অনেকক্ষণ সময় লেগেছিল আমার। তারপরও অধিক চেষ্টা করার ফলে কাদামাটি দিয়ে সুন্দর একটি কবুতর পাখির বাচ্চা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। তাহলে চলুন দেখে আসি কাদা মাটি দিয়ে কবুতর পাখির বাচ্চা তৈরি প্রক্রিয়া গুলো
কবুতর পাখির বাচ্চা তৈরি করতে আমার ব্যবহারিত প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলোর নাম নিম্নে দেওয়া হলো:-
- পরিমাণ মতো কাদামাটি।
- পরিমাণ মতো পানি।
- দুইটি পুঁথি।
কাদামাটি দিয়ে কবুতর পাখির বাচ্চা তৈরির প্রক্রিয়াটি নিম্নে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করা হলো:-
⬇️ ধাপ-০১:⬇️
কাদা মাটি দিয়ে কবুতর পাখির বাচ্চা তৈরি করার জন্য প্রথমেই আমি পরিমাণ মতো নরম কাদামাটি সংগ্রহ করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০২:⬇️
তারপর নরম কাদামাটি গুলো সুন্দর ভাবে ছেনে পাখির ছানা তৈরি করার জন্য প্রস্তুত করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৩:⬇️
পরিমাণ মতো নরম কাদামাটি নিয়ে দুই হাতের তালুর সাহায্যে গোলাকার ফুটবলের মতো তৈরি করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৪:⬇️
তারপর গোলাকার নরম কাদামাটি গুলো সুন্দরভাবে চ্যাপ্টা করে নিয়েছিলাম। তারপর চ্যাপ্টা করা কাদামাটির পুরো অংশ পানি ও হালকা কাঁদার প্রলেপ দিয়ে নেপে মসৃণ করে দিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৫:⬇️
চ্যাপ্টা করা মসৃণ কাদামাটির অংশ দিয়ে প্রথমে কবুতর পাখির বাচ্চার লেজের অংশটি তৈরি করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৬:⬇️
তারপর কবুতর পাখির বাচ্চার গলা, মাথা এবং ঠোঁটের অংশটি সুন্দরভাবে তৈরি করে দিয়েছিলাম। তারপর কবুতর পাখির বাচ্চার শরীরের পুরো অংশ হাতের আঙ্গুল দিয়ে নেপে মসৃণ করে দিয়েছিলাম।
ছোট ছোট দুইটি ডানা তৈরি করে পাখির শরীরের নির্ধারিত জায়গায় সুন্দরভাবে লাগিয়ে দিয়েছিলাম। ডানা দুটি লাগানোর সাথে সাথে কবুতর পাখির বাচ্চার চেহারাটি দেখতে দারুন লাগছিল।
তারপর বাচ্চা পাখিটির দুটি চোখ তৈরি করে দেওয়ার জন্য নির্ধারিত জায়গায় একটি কাঠি দিয়ে সামান্য গর্ত করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৯:⬇️
কাঠি দিয়ে সামান্য গর্ত করে নেওয়া স্থানে রঙ্গিন দুইটি পুথি লাগিয়ে দিয়েছিলাম। আর এভাবেই কবুতরের বাচ্চার সুন্দর দুটি চোখ তৈরি করেছিলাম।
⬇️ ধাপ-১০:⬇️
কাদামাটি দিয়ে সুন্দর একটি কবুতরের বাচ্চা তৈরি করার পরে বাচ্চাটি গাছের ডালে বসিয়ে দিয়েছিলাম। গাছের ডালে বাচ্চাটি দেখতে খুবই সুন্দর লাগছিল। আপনাদের কাছেও নিশ্চয়ই কাদামাটি দিয়ে তৈরি কবুতর পাখির বাচ্চাটি দেখতে বেশ ভালো লেগেছে। আজ এতোটুকুই ছিল আমার আয়োজন। পুনরায় আগামীকাল নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির হবো। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা সবাই ভাল থাকুন এবং সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন আগের দিনের বাচ্চারা কাদামাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলনা তৈরি করতে এবং সেগুলো রোদে শুকিয়ে আবার সেগুলো দিয়ে খেলা করত । কিন্তু এখনকার বাচ্চারা এই ধরনের খেলার সাথে একদমই পরিচিত নয় । কাদামাটি দিয়ে তৈরি আপনার কবুতরের বাচ্চাটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে । ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য ।
মৃৎশিল্প হল বাংলাদেশের ঐতিহ্য। সময়ের সাথে সাথে মৃৎশিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। যাইহোক ভাইয়া আপনার তৈরি করা কবুতরটি অনেক সুন্দর হয়েছে। অনেক সময় বাচ্চারা খেলার ছলে অনেক কিছুই তৈরি করে। আপনিও খুব সুন্দর ভাবে কবুতরটি তৈরি করেছেন। এই কাজগুলো করতে অনেকটা সময় লাগে। তবে দেখতে কিন্তু বেশ সুন্দর হয়েছে।
সত্যি বলেছেন ভাই বর্তমানে মৃৎশিল্প বিলুপ্তির পথে। মাটি দিয়ে খুবই সুন্দরভাবে আপনি কবুতরের বাচ্চা তৈরি করেছেন। তৈরি পদ্ধতি এবং ধাপগুলো বেশ চমৎকার ছিল ভাই। সুন্দর একটি ইউনিক পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
একটা সময় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের বিপুল চাহিদা ছিল কিন্তু কালের বিবর্তনে সবকিছু হারিয়ে যাচ্ছে। আপনার তৈরি কবুতরটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। এধরনের কাজগুলো করতে বেশ সময় লেগে যায় এবং পরিশ্রম হয়। ধন্যবাদ ভাই আপনার হাতের কাজটি আমাদের উপহার দেয়ার জন্য।