বি পি এল || রংপুর বনাম বরিশাল || সেমিফাইনাল-২||
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। তবে আমার মনটি আজকে একটু খারাপ কারণ আজকে বিপিএল এ আমার সার্পোট করা দল রংপুর বরিশালের কাছে হেরে যায়। আজ আমি এই ম্যাচাটির রিভিউ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে। তো চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক।
আমি আজকে খেলা দেখার জন্য গুলশান-০২ এ যাই। এখানে বড় পর্দায় খেলা দেখানো হয় ও অনেক মানুষ একসাথে খেলা উপভোগ করে। যেহেতু আজকে বিপিএলের শেষ সেমিফাইনাল এবং আবার বিভাগ রংপুরের সাথে বরিশালের খেলা ছিলো। এই ম্যাচে যে জিতবে সে ফাইনালে কুমিল্লার সাথে খেলবে। ম্যাচটি ছিলো নকআউট ম্যাচ। রংপুর এর ম্যাচ থাকায় আমি গুলশান-০২ এ যাই বড় পর্দায় খেলা দেখার জন্য। এখানে অনেক মানুষ আসে খেলা দেখার জন্য। খেলা দেখার জন্য অনেক ভীর হয় এই গুলশান-০২ এর মোড়ে। আমি নতুনবাজার এ থাকি এখান থেকে গুলশান -০২ খুবই কাছে। তাই খেলা শুরু হাওয়ার কিছুক্ষণ আগে আমি ও আমার ফ্লাটমেট পৌঁছে যাই খেলা দেখার জন্য।
বরিশাল টসে জিতে বোলিং করার সিন্ধান্ত নেয়। তাই প্রথমে ব্যাটিং করতে আসে রংপুরের ওপেনিং দুই ব্যাটসম্যান রনি তালুকদার ও মাহেদী হাসান। কিন্তু শুরুটা হয় অনেক বাজে। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে রংপুর প্রথম উইকেট হারায় মাহেদী হাসান এর, এরপর ব্যাটিং করতে আসে সাকিব আল হাসান কিন্তু ওই ওভারের লাস্ট বলেই ৪ বলে ১ রান করে আউট হয়ে যায় সাকিব। এরপর ১২ বলে মাত্র ৮ রান করে বড় শট মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে যায় রনি তালুকদার। এরপর ব্যাটিং এ থাকে জেমি নিসাম ও নিকোলেস পুরান। কিন্তু ১২ বলে মাত্র ৩ রান করে পুরান ও আউট হয়ে যায়। এরপর ব্যাটিং করতে নামে মোহাম্মদ নাবি। জেমি নিসাম একটু সেট হয়ে গিয়েছিলো কিন্তু তখনি কিপারের হাতে ক্যাচ আউট হয় নিসাম ২২ বলে ২৮ রান করেছিলো। এরপর নাবি ও সোহান এর মাঝে ছোট একটা পার্টনারশীপ হয় কিন্তু সেটি বড় হতে পারে না। নাবি ক্যাচ আউট ও সোহান ক্লিন বোল্ড হয়ে ফিরে যায় তাদের সংগ্রহ ১৫ বলে ১২ রান ও ১৭ বলে ১৪ রান। এরপর ব্যাটিং পীচে থাকে শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও আবু হাইদার। আবু হাইদার প্রথম বলেই ৬ মারে। কিন্ত রংপুরের কেউ ভালো না খেলায় রান অনেক কম হয়ে গিয়েছিলো কিন্তু শেষ এর দিকে শামীম অনেক ভালো একটি ইনিংস আমাদের উপহার দেয় তিনি মাত্র ২০ বলে নিজের ৫০ রান পূর্ণ করে। এবং ২০ ওভার শেষে ২৪ বলে ৫৯ রান করে অপরাজিত থাকে। সেই সাথে ২০ ওভার শেষে রংপুরের রান ছিলো ১৪৯ রানে ৭ ইউকেট। বরিশালের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ১৫০ রান। বরিশালকে জিততে হলে ১৫০ রান করতে হবে।
এরপর ১৫০ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে নামে বরিশালের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৫০ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে নেমে বরিশালের শুরুটাও ভালো হয়নি। বরিশালের হয়ে প্রথম উইকেট হারায় বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল তেরি ৮ বলে ১০ রান করে ক্যাচ আউট হয়ে যায় । এরপরেই মেহেদী মিরাজ ও এলবিডব্লিউ তে ১৪ বলে মাত্র ৮ রান করে আউট হয়ে যায়। এরপর ব্যাটিং করতে আসে সৌম্য সরকার ও মুশফিকুর রহিম। এই দুইজনের মধ্যে দারুন একটি পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে। এ পার্টনারশিপটি ম্যাচের ফলাফল বলে দিচ্ছিলো। বেশ ভালো একটি পার্টনারশীপ আমরা দেখতে পারি এদের মাঝে। কিন্তু সৌম্য সরকার মোহাম্মদ নাবির বলে স্টেপ করতে গিয়ে আউট হয়ে যায়। এরপর ব্যাটিং করতে আসে মায়ার্স। তিনি প্রথম থেকে অনেক অ্যাটাকিং খেলছিল। তার অ্যাটাকিং খেলায় রান রেটের কোন চাপ তো থাকেই না উলটো রানরেট অনেক বেশি কমে আসে, তিনি ১৫ বলে ২৮ রান করে ফারুকির বলে বড় শট মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে যায়। এরপর ব্যাটিং করতে আসে ডেভিড মিলার। পীচে তখন মুশফিক ও মিলার ব্যাটিং করছিলো। মুশফিক খুবই চমৎকারভাবে নিজের ইনিংসটি বড় করে ও তার সাথ দেয় মিলার। মুশফিকের ৩৮ বলে ৪৭ রান ও মিলারের ১৮ বলে ২২ রানের ইনিংসের মাধ্যমে মাত্র ১৮ ওভার ৩ বলেই ৬ উইকেটে বরিশাল ম্যাচটিতে জয়লাভ করে। আমি ছিলাম রংপুর সার্পোটার তাই আমার মন খারাপ হয়ে যায় কিন্তু ওখানে যারা বরিশালের সার্পোটার থাকে তারা সবাই বরিশাল জেতায় উদযাপন শুরু করে। যাইহোক ম্যাচটিতে ম্যান অফ দা ম্যাচ মুশফিকুর রাহিম হলেও আমার কাছে এই ম্যাচের সেরা ইনিংসটি খেলেছেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। বরিশাল ম্যাচটি জেতায় বিপিএল এর ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা বনাম বরিশাল। আপনাদের কি মনে হয় ম্যাচটি কোন দল জিতবে?
আজকের মতো এখানেই। এতক্ষণ ধরে মনোযোগ দিয়ে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। দেখা হবে অন্য একটি ব্লগে ততক্ষণে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আমি আল হিদায়াতুল শিপু। বর্তমানে আমি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর একজন ছাত্র। আমি ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি ভ্রমণ করতে অনেক পছন্দ করি। আমি মাঝে মাঝে কবিতা ও লিখি। আমার লেখা কবিতা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটা পত্র পত্রিকা এবং মেগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। কাব্যকলি বইতেও আমার লেখা কবিতা রয়েছে।
আগামীকালের ম্যাচটি দেখার সময়, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমার হার্ট বিট এর সঞ্চালন বেড়ে গিয়েছিল।আর যে পরিমাণ রান করেছিল, তাতে আমি শুরুতেই বুঝে আসছিলাম, আজকে আমাদের রংপুর নিশ্চিত হেরে যাবে। অবশেষে আঠারো ওভারের মধ্যেই ফারচুন বরিশাল জয়লাভ করে। আগামীকালের ম্যাচের মধ্যে ফারচুন বরিশাল দলের জয়ের একমাত্র সম্ভাবনা তৈরি করেছিল তামিম ইকবাল। ফারচুন বরিশালের জন্য শুভকামনা রইল।
আজকে তো ফাইনাল ভাই। ফাইনালে কুমিল্লাকে হারানো মুখের কথা হবে না। তারপরেও বরিশালের জন্য শুভকামনা রইলো। আশা করি এবার বরিশাল প্রথম বারের মতো বিপিএল ট্রফি জিতবে।