জেনারেল রাইটিং : অবশেষে আমাদের ছেড়ে চলে গেলো কুড়িয়ে পাওয়া কাঠবিড়ালের বাচ্চা।

in আমার বাংলা ব্লগlast month (edited)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001

২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।

রোজ শনিবার। ।


কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। দিন যত যাচ্ছে শীতের তিব্রতা তত বেড়ে যাচ্ছে। রাত জেগে ডিউটি করাটা অনেক কষ্টদায়ক হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যরাতের ডিউটি করতে সব থেকে বেশি কষ্ট হয়। যেহেতু এখন অফিসের লোক কম আর ডিসেম্বর মাস সবাই এখন ডিসেম্বর মাস বছরে শেষের দিকে তাই সবাই সবার ছুটি নিতে ব্যাস্ত। একের পর এক ছুটি কাটাতেই আছে সবাই। তাই একটু সমস্যা হচ্ছে বেশি। যাই হোক সেদিকে আমারা না যাই কাজের কোথায় আসি......

◑ আজকে মনের ভেতর কষ্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। কেনো কষ্ট হচ্ছে সেটা হয়তো আপনারা দেখতেই পারছেন। কয়েক দিন আগে আমি আপনাদের সাথে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলাম, সেখানে আমি বলেছিলাম যে আমি পথের মধ্যে একটি অসুস্থ কাঠবিড়ালি উদ্ধার করেছিলাম। তাকে আমি বাড়ি নিয়ে আসার পরে আমার সাধ্যমত আমি চেষ্টা করেছি তার দেখা শোনা করে তাকে সুস্থ করে তোলার। কিন্তু ভালো হওয়া না হওয়াটা পুরটাই আল্লাহর হাতে।

1000007692.jpg

আসলে আমি আমার দিক থেকে কোন অংশে কমতি করিনি তার যত্ন করার। আমি যখন তাকে রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলাম তখন তার নাক থেকে রক্ত বের হচ্ছিল। বাড়িতে নিয়ে আসার পর আমি তার খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে তার থাকার জন্য সুন্দর একটি ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। আমি আশা করেছিলাম যে সে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। তার জন্য আমি সব কিছুরই ব্যাবস্থা করেছিলাম কিন্তু ভাগ্য হয়তো তার সহায় ছিলো না। এত যত্ন করার পরও কাঠবিড়ালির বাচ্চাটাকে আমি বাচাতে পারিলাম না। আমি প্রথম যেদিন তাকে বাড়ি এনেছিলাম সেই দিন সে একটু বেশি অসুস্থ ছিলো। তাকে আমি আমার বালিশের পাশে একটি কাথার ভেতরে রেখে ঘুমিয়ে ছিলাম। রাতে বার বার আমি তার খেয়াল রাখছিলাম। সেই রাত পার হওয়ার পর সকালে তার অবস্থার অনেক উন্নতি দেখতে পারলাম। ঘুম থেকে উঠেই আমি তাকে দুধ খাওয়ালাম। তার শারীরিক উন্নত দেখে আমার মনের ভেতরে অনেক ভালোলাগা কাজ করলো। আমার অনেকদিনের শখ ছিল একটা কাঠবিড়ালিকে পোষ মানাবো। সেই সুযোগ পেয়েও আমি হারিয়ে ফেললাম। সেই দিনটা ভালো থাকলেও সন্ধ্যা থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

1000007937.jpg

তাকে এমন অবস্থায় দেখে আমার অনেক খারাপ লাগছিলো। আমার মনের সব আশা শেষ হতে চলেছিলো। তার থেকে সব কথা আমি একটি প্রানকে বাঁচাতে পারলাম না। যদিও আল্লাহ না চাইলে কোন কিছুই হয় না। তার কপালে হয়তো মৃত্যুই লেখা ছিল। সেই দিনটা পার হয়নি বিকালের দিকে দেখলাম কাঠবিড়ালের বাচ্চাটা গায়ের লোম ফুলিয়ে শুয়ে আছে। তার কোন নড়াচড়া নেয়, তার ভেতর কোন অস্থিরতা নেয় নিস্তব্ধ হয়ে ঘরের একটি কোনায় শুয়ে আছে। এমন অবস্থায় তাকে দেখে আমার চোখে জল চলে আসলো। ছোটবেলা থেকেই আমার এই ধরনের জিনিসের উপর আলাদা টান রয়েছে। আমার ছোট ছেলে আমাকে বার বার বলছে আব্বু বাচ্চা কি শুয়ে আছে, আমি তাকে বললাম হ্যা আব্বু। সে আমাকে বারবার একই কথা জিজ্ঞাসা করছে, আমি বুঝতে পারছি যে সে বুঝতে পেরেছে যে কাঠবিড়ালের বাচ্চাটার হয়তো কিছু হয়েছে। কারন সে দেখেছে কাঠবিড়ালের বাচ্চাটা কত সুন্দর করে খেলা খেলেছিল। এমনকি কাঠবিড়ালি বাচ্চা ধরতে গিয়েও আইয়ান বাবুর হাতে আঁচড় ও কেটেছিলো। আমি বাচ্চাটাকে হাতে করে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম আর এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। এভাবে কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই হঠাৎ করে আমার হাতের উপরে কাঠবিড়ালের বাচ্চার মারা গেলো। এভাবে একটা নীরিহ প্রানীর প্রান আমার হাতের উপর থেকে চলে যাওয়াটা সহ্য করতে পরলাম না। খুবই কষ্ট পেয়েছি আমি। আমার ছেলেও অনেক কষ্ট পেয়েছে, সে আমাকে বলছে আব্বু বাচ্চা কি ঘুমিয়ে গেছে। আমি তাকে বললাম না বাবা বাচ্চাটা মারা গেছে।

আমার এই দিনের কথা সারাজীবন মনে থাকবে। এমনটা হবে আমি কোন দিন আশা করি নাই। যাই হোক আল্লাহ যেটা করে ভালোর জন্যই করে। এর থেকে আর বেশি কিছু আমার আর বলার নেই।

আল্লাহ হাফেজ


সমাপ্ত


পোস্টের বিষয়জেনারেল রাইটিং
পোস্টকারীমোঃ আশিকুর রহমান
ডিভাইসগ্যালাক্সি এ ১৫
লোকেশনপাবনা


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার জুগির গোফা গ্রামে বাস করি। সবুজ শ্যামলে ঘেরা আমাদের গ্রামটি দেখতে খুবই সুন্দর। আমি একজন সরকারি চাকরিজীবি। আমি চাটমোহর ফায়ার ষ্টেশনে কর্মরত আছি। বাইক নিয়ে ঘুরতে, খাওয়া দাওয়া আর ঘুমাতে বেশি পছন্দ করি। আমি বিবাহিত। আমার একটি ছেলে আছে। আমি আমার পরিবারে মা, বাবা, ভাই, স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে বসবাস করি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য। সবার জন্য দোয়া রইলো সবাই ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিনদের। যারা আমাকে শুরু থেকে সাপোর্ট করছে। আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের সকল কর্মরত সদস্যদের। লেখার ভেতর ভুল ত্রুটি হতে পরে। সেক্ষেত্রে আপনাদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । দোয়া করি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।


Logo.png

Banner.png

1000008774.png

1000008775.png

1000008782.png

Sort:  
 last month 

1000008971.jpg

1000008972.jpg

1000008973.jpg

1000008974.jpg

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

আমি এর আগের পোস্টে জানতে পেরেছি আপনি রাস্তার উপর একটি কাঠবিড়ালি রাস্তা দেখতে পেরেছিলেন এবং সেটাকে বাসায় এনে যতন নিয়ে ছিলেন। তবে বোনের জিনিস বনে ছেড়ে দেওয়াটাই বেটার। খাঁচার মধ্যে আবদ্ধ রাখাটা তাদের জন্য বেশ কষ্টদায়ক। যাই হোক তার উপকার করেছেন এটা সত্য কথা।

 last month 

সত্যি বিষয়টা আমার কাছেও অনেক খারাপ লেগেছিল। আমরা যখন কাঠবিড়ালিটা রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলাম তখন সে অনেক অসুস্থ ছিল। তারপর আমরা বাসায় এনে অনেক ট্রিটমেন্ট করার পরে সে কিছুটা সুস্থ হয়েছিল। কিন্তু অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে তাকে বাঁচানোর সম্ভব হলো না। যেহেতু কাঠবিড়ালিটা পুরোপুরি সুস্থ হয়েছিল না সেজন্য তুমি তাকে ছেড়ে দিতে পারোনি। সত্যি বিষয়টা অনেক দুঃখজনক ছিল। কাঠবিড়ালি টা যখন মারা যায় তখন দেখে আমার অনেক কষ্ট হচ্ছিল। তুমি তাকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছিলে কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে পারোনি।

 last month 

আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি বাঁচানোর জন্য। যাহোক কপালে যেটা হওয়ার ছিল সেটাই হয়েছে।

 last month 

তাহলে শেষ পর্যন্ত কাঠবিড়ালীর বাচ্চাটিকে আপনি বাঁচাতে পারলেন না। যাইহোক এটা সম্পূর্ণ উপর আল্লাহর ইচ্ছা কিন্তু আপনি আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন এই প্রাণীটিকে বাঁচিয়ে রাখার। মন খারাপ করবেন না নিশ্চয়ই উপর ওয়ালার নিয়তি এটাই ছিল। তবে পুরো ঘটনাটা শুনে আমার নিজের কাছেও বেশ খারাপ লাগছে।

 last month 

জ্বি আপনি ঠিকই বলেছেন সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছা। তিনি যেটা ভালো মনে করেছেন সেটাই করেছেন।

 last month 

এটা সত্যি খুবই হৃদয় বিদারক। পছন্দের প্রাণী এমনভাবে চলে গেলে সেটা অনেক কষ্ট দেয়। কাঠবিড়ালি টার এভাবে চলে যাওয়া কারো পক্ষেই মেন নেওয়া সম্ভব না আপনাদের। পোস্ট টা দেখে বেশ খারাপ লাগল ভাই।

 last month 

জ্বি ভাই আমি ও আমার পরিবারের সকল সদস্য অনেক কষ্ট পেয়েছিলো। যদিও তার সাথে আমাদের বেশি দিনের সম্পর্ক ছিলো না।ধন্যবাদ

 last month 

আসলে ভাইয়া সব প্রাণি এবং মানুষ মায়ের কাছে এবং পরিবারের কাছে ভালো থাকে। কিছুদিন আগে আপনার পোস্টে দেখেছিলাম কাঠবিড়ালটি কুড়িয়ে পেয়েছেন। আসলে আপনি চেষ্টা করেছেন কাঠ বিড়ালটি বাঁচানোর জন্য। আর মানুষ যখন একটি প্রাণীকে লালন পালন করে মারা গেলে তখন নিজের কাছেও খারাপ লাগে।

 last month 

জ্বি ভাই আপনি একদম ঠিক বলেছেন, সব কিছুর বাচ্চাই তার মায়ের কাছে ভালো থাকে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান অভিমত ব্যক্ত করার জন্য।

 last month 

আসলে আল্লাহ তায়ালা না চাইলে কেউ বেঁচে থাকতে পারে না। তবে আপনি আপনার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন ভাই। কাঠবিড়ালিটা বেঁচে থাকলে আপনার ছেলে তার সাথে খেলা করতে পারতো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last month 

জ্বি ভাই কাঠবিড়ালির বাচ্চা দেখে আমার ছেলে যেমন খুশি হয়েছিল, তেমনি তার মৃত্যুতে সে অনেক কষ্ট পেয়েছে। শুকরিয়া ভাই ভালো থাকবেন।

 last month 

আপনার কাছ থেকে কাঠবিড়ালি কুড়িয়ে পাওয়ার এই পোস্ট আমি পড়েছিলাম৷ তবে আজকে এই কাঠবিড়ালি মারা যাওয়ার খবর শুনে খুবই খারাপ লাগছে৷ আসলে আল্লাহ তায়ালা যদি চান তাহলে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারতেন৷ এখন তিনি তার হায়াত এই পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন৷ যদি তাকে আমাদের ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে৷ যদি এটি থাকতো তাহলে আপনার ছেলে অনেক খেলাধুলা করতে পারতো৷ যাই হোক সব কিছুকেই মেনে নিতে হবে৷ ধন্যবাদ এই পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷

 last month 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই অনেক সুন্দর ও সাবলীল ভাবে আপনার মতামত শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.25
JST 0.038
BTC 105066.26
ETH 3338.11
SBD 4.52