আমাদের এলাকার ক্যান্সার রোগীর "ক্যান্সার জয়ের গল্প"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ-১৮ ই জুলাই, মঙ্গলবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমাদের এলাকার একজন ক্যান্সার রোগীর ক্যান্সার জয়ের গল্প। পৃথিবীতে যতো মরণব্যাধি আছে সব থেকে বেশি ভয়ানক মরনব্যাধি হলো ক্যান্সার। একসময় ক্যান্সার হলে ধরে নেয়া হতো যে, ক্যান্সার রোগীর মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সফলতায় ক্যান্সার রোগকে জয় করা সম্ভব। ক্যান্সার মানেই যে, সেই রোগীর আনসার নেই এমনটা ভাবা যাবে না এখন। আধুনিক বিশ্বে এখন ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা অনেক উন্নত। যদিও ক্যান্সার চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল তারপরেও ক্যান্সার জয় করা সম্ভব। আজকে আমি আমাদের এলাকার এক ক্যান্সার রোগীর ক্যান্সার জয়ের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
আমাদের এলাকার এই রোগীর প্রথমে টেস্টিকুলারে টিউমারের ইনফেকশন জন্য প্রথমে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে এসে অপারেশন করায়। আমি নিজেও একদিন এই রোগীকে দেখার জন্য ইভেনের সিনা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। এখানে অপারেশন করার পরে ডাক্তাররা প্রাথমিকভাবেই অনুমান করে যে, রোগীর ক্যান্সার হয়েছে। তারপর ইবনে সিনা হাসপাতাল থেকে ঢাকা সাভারের ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এখান থেকে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ এক ডাক্তার ক্যান্সারের প্রথম ধাপেই ক্যান্সার সনাক্ত করে। তারপর এনাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে এই রোগীর ক্যান্সারের চিকিৎসা চলতে থাকে। আমি নিজেও ঢাকা সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে এই রোগীকে দেখার জন্য বেশ কয়েকদিন করে গিয়েছিলাম ।
এভাবে ক্যান্সার চিকিৎসা বেশ কিছুদিন চলার পরে রোগীর আত্মীয় স্বজনরা মিলে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পাসপোর্ট করে ইমার্জেন্সি মেডিকেল ভিসা নিয়ে রোগীকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। কারণটা বর্তমানে মানুষের কিছু হলেই তারা ভারতের ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। আসলে আমরা অনেকেই মনে করি যে, বাংলাদেশের ডাক্তাররা ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য পারফেক্ট না।
অবশ্য এটাও সত্য যে, এখনো বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের ডাক্তাররা চিকিৎসার দিক দিয়ে বেশ এগিয়ে। এই ক্যান্সার রোগীকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরে, সেখানে কোনো ভালো একটি ক্যান্সার বিশেষায়িত হাসপাতালে ডাক্তার দেখান। ভারতের ডাক্তাররা এই ক্যান্সার রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে জানায় যে, বাংলাদেশের যে ডাক্তার এই ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা করছে সে ডাক্তারের চিকিৎসা সম্পূর্ণ সঠিক।
ভারতের ডাক্তার আরো জানাই যে, যদি ক্যান্সারের শুরু থেকে তাদের শরণাপন্ন হতো তাহলেও তারা একই পদ্ধতি এবং পথ অবলম্বন করে ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রদান করতো। তারপর ভারতীয় ক্যান্সার চিকিৎসকরা কিছুদিন এই ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা করে আবার বাংলাদেশের এই ক্যান্সার ডাক্তারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। কারণটা বাংলাদেশের ডাক্তার এবং ভারতীয় ডাক্তারের চিকিৎসার পদ্ধতি একই ছিলো।
এই ক্যান্সার রোগীর শেষের দিকের কয়েকটি কেমোথেরাপি ইন্ডিয়া থেকে কিনে নিয়ে বাংলাদেশের এই ক্যান্সার ডাক্তারের মাধ্যমে নেওয়ার পরামর্শ দেয় ভারতের ডাক্তাররা। আর বাংলাদেশের যে, ডাক্তার এই ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা করছিলো সে, চিকিৎসার জন্য বেশিরভাগই ভারতীয় ঔষধ ব্যবহার করতো।
তারপর বাংলাদেশে এসে আবার ঢাকার সাভারের এনাম হাসপাতাল এন্ড কলেজ ভর্তি হয়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে থাকে। ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য সকল কেমোথেরাপি গুলো সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পরে, শরীরে ক্যান্সারের জীবাণু আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করার জন্য একটি টেস্ট দেয়। বেসরকারিভাবে এই টেস্ট করতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। আর ক্যান্সারের রোগীর এই টেস্টের সিরিয়ালের জন্যই কিছুদিন আগে আমি ঢাকার ধানমন্ডির মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস এ গিয়েছিলাম।
কয়েকদিন আগে সিরিয়াল দিয়ে তারপর ঢাকাতে এসে টেস্ট করিয়েছিলো আর এই টেস্টের রিপোর্ট গতকালকে দিয়েছে। তারপর এই টেস্টের রিপোর্টটি নিয়ে এনাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের ওই চিকিৎসককে দেখানো হয়। এই টেস্টের রিপোর্টটি দেখে ডাক্তার জানায় যে, এই ক্যান্সার রোগীর শরীরে আর ক্যান্সারের জীবাণু নেই। ডাক্তারের মুখ থেকে এই কথাটা শোনার জন্যই ক্যান্সার রোগী একটি বছর মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তারপর কালকেই বাড়ি ফেরার পথে রোগীর ভাই আমাকে ফোন করে ক্যান্সার জয়ের বিষয়টি বলে। আমি এই ক্যান্সার রোগীর ক্যান্সার জয়ের কথাটা শুনে বেশ খুশি হয়েছি। আসলে দুই দেশের ডাক্তারের চিকিৎসা পদ্ধতি একই থাকার কারণে এই ক্যান্সার রোগী বেশ দ্রুত আরোগ্য লাভ করে।
এই ক্যান্সার রোগীর ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রায় ১৫ লক্ষ মত টাকা খরচ করতে হয়েছে। আসলে টাকার থেকে একটি জীবনের দাম অনেক বেশি, জীবনের কাছে টাকা পয়সা তুচ্ছ। বাংলাদেশ এবং ভারতের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সঠিক চিকিৎসার কারণেই আজকে এই ক্যান্সার রোগী ক্যান্সার জয় করতে সক্ষম হয়েছে।
আপনারা সবাই দোয়া এবং আশীর্বাদ করবেন এই ক্যান্সার জয়ী রোগী যাতে তার পরিবারের সাথে সুস্থ এবং সুন্দরভাবে পরবর্তী জীবন উপভোগ করতে পারে।
পোস্টের বিবরন
পোস্টের ধরন | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | স্যামসাং জে-৭ প্রো |
লোকেশন | মোহাম্মদপুর,ঢাকা |
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
@aongkon


জি ভাইয়া একদম ঠিক বলেছেন আপনি জীবনের কাছে টাকার বিষয় খুবই তুচ্ছ। ১৫ লক্ষ্য টাকা খরচ করে হলেও তিনি এখন সুস্থ এটাই অনেক।তাছাড়া সৃষ্টিকর্তার দয়া এবং ডাক্তার এর চেষ্টা তো রয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
প্রতিটি জীবনের কাছে টাকা তুচ্ছ। সৃষ্টিকর্তা এবং ডাক্তারের চেষ্টাতে ক্যান্সার জয় করে সেটাই অনেক। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আসলে বর্তমানে ক্যান্সার একটি ভয়ংকর মরণব্যাধি। এই রোগ যার হয়েছে সে খুব অল্প সংখ্যক দিন পৃথিবী থেকে বেঁচে আছে। আপনার এলাকায় একজন লোক সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়েছে এটা জেনে অনেক ভালো লাগছে। মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা ফেলে ও অনেক রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেনা। মানুষ চায় টাকা খরচ করে হলেও আরো কিছুদিন এই সুন্দর পৃথিবীতে থাকো। লোকটির জন্য শুভকামনা রইল।
বাহ্ আপু আপনার মন্তব্য আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনি ঠিক বলেছেন মানুষ চাই টাকা খরচ হলেও এই সুন্দর পৃথিবীতে আরো কিছুদিন বেঁচে থাকতে। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ক্যান্সারের কথা শুনলে আমার বড্ড ভয় করে। কেননা বেশ কয়েক বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে আমার দুলাভাই পরলোক গমন করেছে। তাই কারো ক্যান্সারের কথা শুনলেই বুকের ভেতরটা দুমরে মুচড়ে ওঠে। তবে আপনার এলাকার ক্যান্সার রোগীর ক্যান্সার জয়ের গল্প শুনে খুবই ভালো লাগলো। বাংলাদেশের ডাক্তার সময়মতো সঠিক চিকিৎসা করাতে এবং ভারতের ডাক্তারের সহযোগিতায় এই রোগী খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এদিক থেকে বলতে হয় আপনার এলাকার লোকটি খুবই সৌভাগ্যবান। যাইহোক অনেক টাকা-পয়সা খরচ করেও তিনি যে এখন একদম সুস্থ হয়ে উঠেছেন এর চেয়ে বড় পাওয়া বোধহয় আর কিছুই হতে পারে না।
হ্যাঁ ভাই আমাদের এলাকার এই লোকটি বেশ সৌভাগ্যবান তাছাড়া ক্যান্সার জয় করা তো কঠিন একটা ব্যাপার। বেশ সুন্দর মন্তব্য করে সবসময় পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আসলেই জীবনের কাছে পয়সা কিছুই নয়।কোনো মানুষ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা অনেক ভাগ্যের ব্যাপার।আসলেই ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম থাকে।কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে বাঁচার সম্ভাবনা বেড়ে গেলেও খুব কম মানুষই বাঁচে।আপনার এলাকার এক ক্যান্সার রোগী সুস্থ হয়ে গেছেন জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ দাদা।
হ্যাঁ দিদি ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। আসলে ঈশ্বর চাইলে সবকিছুই সম্ভব হয়। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।