বগুড়া শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী নিত্য কাকার চপের দোকান।
নমস্কার সবাইকে,
আমার বাংলা ব্লগ এর সকল সদস্যদের জানাচ্ছি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি ঈশ্বরের কৃপায়।
আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হলাম নতুন একটা ব্লগ নিয়ে। বগুড়া শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী নিত্য কাকার চপের দোকান নিয়ে সাজানো আমার আজকের ব্লগ।
নিত্য কাকার দোকানঃ
বগুড়া জেলার শেরপুর পৌরসভার বিকেল বাজার এলাকার তিন মাথায় নিত্য কাকার ঐতিহ্যবাহী চপের দোকান। ২৫ বছরের উপরে তার দোকানের বয়স। তার খাবার দামে কম কিন্তু মানে ভালো।
২০০০ সালে আমি যখন পঞ্চম শ্রেণীতে লেখাপড়া করি ঠিক তখন থেকে কাকাকে চিনি। প্রতিদিন সন্ধ্যায় কাকার চপ পিয়াজি না খেলে শান্তি পেতাম না। কোন দিন এমনও হইছে রাত ৯ টায় যেয়ে চপ এনে খাইছি। আসলে তার চপ পিয়াজি খাওয়া টা আমাদের সকলের কাছে নেশার মতো।
এখনো বাড়ি গেলে তার কাছে চপ খেতে যেতে হবেই।
তখন তার প্রতি পিছ চপ এর দাম ছিল মাত্র ২ টাকা। সে সময় ৫ টাকা নিয়ে যেতাম। একটা চপ ২ টাকা আর পিয়াজি নিতাম ৩ টাকার।
আর এখন তার প্রতি পিছ চপ এর দাম মাত্র ৫ টাকা। ২০০০ সাল থেকে এখন ২০২৩ সাল এই ২৩-২৪ বছরে তার চপ এর দাম ২ টাকা থেকে ৫ টাকা হয়েছে। এখন দ্রব্যমুল্যের যে ঊর্ধ্বগতি সে হিসেবে তার চপ এর দাম কিন্তু বাড়ে নি।
করোনা মহামারীর পর যখন দ্রব্যমুল্যের দাম অনেক বেশি ছিলো তখন তার দোকান বেশ অনেক মাস বন্ধ ছিলো। খোলার পর আমি কাকাকে জিজ্ঞেস করলাম যে কাকা দোকান বন্ধ রাখছিলেন কেন? শরীর খারাপ ছিলো নাকি। কাকা বললো না রে বাবা জিনিস এর যে দাম এই দাম এ জিনিস কিনে চপ বিক্রি করতে হবে ১০ টাকা করে। কিন্তু আমি যে বাবা দাম বেশি নিতে পারবো না। যার কারনে দোকান ই বন্ধ রাখছিলাম। আমি তার কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম তার দিকে যে এখন এমন মানুষ আছে। যে হঠাৎ করে চপ এর দাম বারিয়ে দিলে মানুষ তাকে ভুল বুঝবে। আমার দেখা অসাধারন ব্যক্তিত্বের অধিকারী মানুষ তিনি একজন।
এই বার ঈদ এর ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার পর আমি প্রিয়াকে নিয়ে কাকার দোকানে গেলাম চপ আর পিয়াজি খেতে। সেই চিরচেনা ভীড় এর মধ্যে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কিছুক্ষন পর কাকা আমাকে দেখেই বললেন বাবা ভালো আছু, কবে আচ্চু। আমি বললাম কাকা ২ দিন আগে। কি খাবু ক আমি বললাম কাকা ৬ টা চপ আর ২০ টাকার পিয়াজি দেন। পরে ৬ টা চপ দিয়ে বলল এডা খা পরে পিয়াজি দিচ্চি। চপ খেতে খেতেই কাকা পিয়াজি দিয়ে দিলেন। অনেক গরম ছিলো তাই আস্তে আস্তে খেলাম। প্রিয়া চপ আর পিয়াজি খেয়ে বলছে আমার লাইফ এ এতো মজার চপ পিয়াজি খাই নাই।
চপঃ
পিয়াজিঃ
কাকার দোকানের চপ ও পিয়াজি ভাজার কিছু স্থিরচিত্রঃ
আমরা সেখানে খেয়ে বাসার জন্য কিছু চপ ও পিয়াজি নিয়ে নিলাম।
উল্লেখ্য যে কাকার এই ৫ টাকা মুল্যের চপের মধ্যে ছোট এক টুকরা খাসির মাংসও থাকে।
আপনারা যদি কখনো শেরপুরে আসেন তাহলে অবশ্যই কাকার চপ আর পিয়াজি খেয়ে আসবেন। চপ আর পিয়াজির পাশাপাশি ছোলা বুট ও ঝুরিও পাওয়া যায়।
এই ছিলো আমার আজকের আয়োজন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
বিষয় | বগুড়া শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী নিত্য কাকার চপের দোকান। |
---|---|
ফটো ক্রেডিট | @amitroy |
ডিভাইস | রেডমি নোট ৮প্রো |
লোকেশন | বিকেল বাজার, শেরপুর, বগুড়া |
অঞ্চল ভেদে অথবা জায়গা বিশেষ সব জায়গাতেই প্রিয় খাবার থাকে।
এবং কিছু কিছু জায়গায় জনপ্রিয় দোকানও থাকে যেখানে সব ধরনের খাবার মানুষের খুব ভালো লাগে।
মাঝে মাঝে নিউজ চ্যানেলগুলোতে দেখানো হয় অনেক দূর দূরান্ত থেকে মজাদার খাবার খাওয়ার জন্য এক দোকানে এসে সবাই ভিড় জমায়।
নিত্য কাকার দোকানের চপ খেতে খুবই সুস্বাদ ু এজন্য হয়তো আপনার কাছে এত ভালো লাগে।
আপনার মুল্যবান মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। হ্যা অঞ্চল ভেদে এমন খাবারের দোকান প্রায় অনেক। কিন্তু প্রতিটি দোকান এর খাবার এর ভিন্ন ভিন্ন সাদ। একেক অঞ্চল একেক খাবার এর জন্য বিখ্যাত।
এরকম চপ, পেয়াজির কথা শুনে আমার তো এখনই ইচ্ছে করছে এই কাকার দোকানে গিয়ে খেয়ে আসতে। কখনো যদি ভুল করেও বগুড়া শেরপুরে গিয়ে থাকি, তাহলে ও এই কাকার দোকানে যাওয়ার অনেক বেশি চেষ্টা করব। ঈদের ছুটিতে যাওয়ার পরেও আপনি ওনার দোকানে গিয়ে এই চপ, পেয়াজি খেয়েছিলেন এটা জেনে খুব ভালো লেগেছে। আমাদের মাঝে তুলে ধরলেন দেখে আরো বেশি ভালো লেগেছে।
ভুলক্রমে কেন? আপনি চলে আসেন আপনার দাওয়াত রইলো নিত্য কাকার দোকানের চপ আর পিয়াজির। আসলে ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপু কাকার দোকানের চপ খাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করার জন্য।
কখন আসলেন কখন গেলেন কিছুই বুঝলাম নাহ্ !! বাড়ির কাছে এসে এভাবে ফাঁকি! তবে নিত্য কাকার চপের সাইজ সেদিন দেখে আমি ভাবছি যে হোমিও ওষুধের দানা একটা। হাহাহাহা। ছোট বেলা থেকে খেয়ে আসছি নিত্য কাকার দোকানের জিনিস। আমার কাছে এখানকার পিয়াজি টা সব থেকে বেশি টেস্টি লাগে।
ফাঁকি কই দিলাম তোকে জানাই ছিলাম, হইতো তুই ভুলে গেছিস। দাম আর মানের দিক বিবেচনা করলে সাইজ বরই আছে। ধন্যবাদ তোকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আরে ভাই আমার তো ইচ্ছে করছে এখান থেকেই নিয়ে এখন খেয়ে নিতে, ওই কাকাটির দোকানের চপ, পিয়াজি। আপনি যেভাবে প্রশংসা করছেন, আমার তো ইচ্ছে করছে এখনই বগুড়া শেরপুরে চলে যেতে। চপ, পিয়াজির ফটোগ্রাফি দেখেই বুঝতে পারছি এগুলো আসলেই অনেক বেশি মজাদার। আমি তো মন প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করব শেরপুরে গেলে এই চপ, পেঁয়াজি খাওয়ার।
অবশ্যই ভাই চলে আসবেন। আপনি আসলে আমিও খুশি হবো। আমার কাছে অনেক মজা লাগে কাকার চপ পিয়াজি। এতো খাই তাও মন ভরে না। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।