ইঞ্জিনিয়ারদের জীবন
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনার সকলেই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে আমিও মোটামুটি ভালো আছি। আজ আমি একটু ব্যতিক্রমধর্মী বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। বেসিক্যালি আমাদের বাংলাদেশের বর্তমানে যদি কারো কাছে কোন ধরনের উপদেশ দেওয়া হয় যে, নিজের ছেলে কিংবা মেয়েকে কোথায় পড়াশোনা করাবো সবার মুখে একটাই শুধু মাত্র কথা শোনা যায় সেটা হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং।
এই ইঞ্জিনিয়ারিং জীবনে যারা পড়াশোনা করেছেন কিংবা বর্তমানেও করছেন তাদের জীবনে বেশি কিছু বিষয় বস্তু রয়েছে যেগুলো হয়তো আমাদের বাবা-মা কিংবা আত্মীয়-স্বজন, যারা কেউই জানে না। শুধুমাত্র সেই ছাত্র-ছাত্রীদেরাই জানেন যারা ইঞ্জিনিয়ার পড়েছেন কিংবা বর্তমানে পড়ছেন। এই বিষয়গুলো যদি জানতো তাহলে হয়তো আমাদের মা-বাবারা সেই সেই সেক্টরে আমাদেরকে কখনোই পড়াশোনা করাতেন না। যদিও কোন সেক্টরি খারাপ নয়। প্রত্যেকটি সেক্টরেই অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব, যদি আপনার এবং আমার কাছে সেই যোগ্যতা থাকে। তাই এই বিষয়গুলো সব কিছুই মজার ছলে আমি উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি।
ইঞ্জিনিয়ারদের ছাত্র জীবনের সকাল বলতে কিছু নেই তারা ঘুম থেকে উঠে অনেক লেট করে। আবার মাঝেমধ্যে যখন কোন ক্লাস পরীক্ষা থাকে কিংবা কোন এক্সাম থাকে কিংবা ক্লাস থাকে সেক্ষেত্রে কিন্তু তারা সকাল ছয়টায় উঠে ও ভার্সিটিতে যেতে পারবে। এই একটা মহৎ গুণ রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টদের মধ্যে। চার বছরে ইঞ্জিনিয়ার ছাত্ররা প্রায় সবকিছুই করে শুধুমাত্র তারা নিজেদের পড়াশুনা গুলো ঠিকভাবে করেনা। বন্ধু বান্ধবের সাথে ঘুরতে যাওয়া, কোথাও আড্ডা দেওয়া, কিংবা বিভিন্ন ধরনের পার্টি করা এগুলো তাদের দৈনন্দিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়।
আবার যারা একটু ভাল ছাত্র তারা যে পরিমাণে পড়াশোনা করে সেটা দেখে হয়তো অন্যান্য ছাত্ররাও ভয় পেয়ে যায়। কারণ প্রত্যেকটি সেমিস্টারে ভাইবা, প্রেজেন্টেশন সিটি পরীক্ষা, আরো কত কি যে রয়েছে সেটা আসলে বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু সেমিস্টারের সময় মাত্র চার মাস। একটু ভালো স্টুডেন্ট সবসময় মনে করে যে, আমাকে সব সময় ফাস্ট হতে হবে, ভালো নাম্বার পেতে হবে। তারা যে কোন ভাবে পাগল হয়নি সেটাই আমার একটু বেশি সন্দেহ হচ্ছে। কারণ যে পরিমাণে টেনশন থাকে এই পরিমাণ টেনশন হয়তো রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে ও হচ্ছে না। হাহাহাহা।
ইঞ্জিনিয়ারদের জীবনে খুব বেশি একটা চিন্তাভাবনা নেই শুধুমাত্র তাদের নিজস্ব ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তাভাবনা রয়েছে। কারণ তারা যেই সেক্টরে পড়াশোনা করেছে সেই সেক্টরের খারাপ অবস্থা সম্পর্কে তাকে আগেই ভয় পাইয়ে দেওয়া হয়। এতে করে আমাদের মনোবল টা আস্তে আস্তে ধ্বংস হয়ে যায়। এছাড়াও আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী চাকরি-বাকরির অবস্থা খুব বেশি একটা ভালো নয়। যার কারণে এই ভয়ের মাত্রা আরও বেশি বেড়ে যায়। যার কারণে ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টর থেকেই বাংলাদেশের সব থেকে বেশি বেকার যুবক বের হচ্ছে।
তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি বর্তমানে যতগুলো সিট রয়েছে কিংবা আসন রয়েছে তার তুলনায় আমাদের দেশে মেধাবীর ছাত্রর কোন কমতি নেই। বরঞ্চ অনেক ভালো ভালো মেধাবী যুবক আজও বেকার হয়ে পড়ে আছে। ইঞ্জিনিয়ারিং জীবনে যেরকম আনন্দ রয়েছে ঠিক তেমনি ভাবে বেদনা রয়েছে। একই সাথে একই হোস্টেলে থাকা বন্ধু-বান্ধবরা যখন আলাদা হয়ে যায় তখন সত্যিই সেটা হৃদয় বিদারক একটি ঘটনার মধ্যে পরিণত হয়ে যায়।
তবে এই ইঞ্জিনিয়ারিং লাইফে অনেক কিছু শিক্ষা দান করে দেয়। একে অপরের প্রতি বিশ্বাস, বন্ধুদের মাঝে ভালোবাসা এবং একটি সামাজিক বন্ধন। কিভাবে আমরা এই সমাজে চলব, কিভাবে সবকিছু ম্যানেজ করব, এই সব কিছুর প্র্যাকটিক্যাল বিষয়গুলো কিন্তু আমরা এই ইঞ্জিনিয়ারিং লাইফে শিখতে পারি আমাদের পড়াশোনার বাহিরেও। এটাই আমার কাছে সব থেকে বড় পাওয়া বলে মনে করি।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: ইঞ্জিনিয়ারদের জীবন
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ......
এটা কিন্তু খারাপ বলেননি ভাই,রেজাল্ট ভালো হবে কিনা খারাপ, সেটা নিয়ে প্রচুর টেনশন করতে হয়। যাইহোক এতো কষ্ট করে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে যদি বেকার থাকতে হয়, তাহলে এর চেয়ে কষ্ট আর কি হতে পারে। ইঞ্জিনিয়ারদের জীবন সম্পর্কে দারুণ লিখেছেন ভাই। পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।