পার্কার সোলার প্রোব (Parker Solar Probe)
Picture Create by AI
পার্কার সোলার প্রোব (Parker Solar Probe) হল নাসার একটি মহাকাশযান। যা সূর্যের করোনার (corona) বা বায়ুমন্ডলে সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছিলো। এটি ২০১৮ সালের ১২ আগস্ট উৎক্ষেপণ করা হয় এবং এটি প্রথম মহাকাশযান যা সূর্যের এতটা কাছাকাছি পৌঁছেছে যা পূর্বে আর কোন মহাকাশযান যেতে পারেনি। এছারাও এটি এমন একটি মহাকাশযান যা মানবসৃস্ট সব থেকে দ্রুত ছুটে চলে যা ঘন্টায় ৭০০০০০ কিলোমিটার।
পার্কার সোলার প্রোব মহাকাশযানটি তৈরি করা হয়েছিল সাধারণত সূর্যের বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। সূর্যের মধ্যে থাকা এলিমেন্ট গুলো কিভাবে বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের সূর্যের বায়ুমণ্ডলীয় স্তর সম্পর্কে জানার জন্যই সাধারণত এই মহাকাশযযানটি তৈরি করা হয়েছিল। এটা উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। তখন একটি ক্যাম্পেইন লঞ্চ করা হয়েছিল। এটা আমার এখনো স্পষ্ট ভাবে মনে আছে। নাসার পৃথিবীবাসীর কাছ থেকে সবার নাম এবং ইমেইল এড্রেস নিয়েছিল। যেটা সবগুলো ডাটা একত্রিত করে একটি মেমোরি কার্ডে সেই পার্কার সোলার প্রোব মহাকাশযানের মধ্যে রয়েছে। এখান থেকে শুধুমাত্র একটু মজা করার জন্যই বলা হয়েছিল যে আপনাদের নাম গুলো আমরা সূর্যের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি। হাহাহা। দারুন না বিষয় টি।
বিষয়টা ব্যাপক মজাদার হলেও দুই লক্ষ মানুষ এখানে নাম দিয়েছিল। সৌভাগ্যক্রম্য বসত আমিও সেখানে নাম এবং মেইল এড্রেস দিয়েছিলাম। এই তো কিছুদিন আগে এই নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছিল। কারণ সূর্যর বায়ুমণ্ডলে প্রথম আমাদের মানবজাতির কোন স্পেস যান কিংবা মহাকাশযান সূর্যের বায়ুমণ্ডলের প্রবেশ করেছে। যা আমাদের জন্য অনেক সৌভাগ্যকর বিষয় বলে আমি মনে করছি।
পার্কার সোলার প্রোবের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সূর্যের করোনা বা বায়ুমন্ডল এবং সৌর বাতাসের (solar wind) এর গতি ও তাপমাত্রা বোঝার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা যা ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে। এখন প্রযন্ত ১৭ বার সূর্যের প্রদক্ষিন করেছে। এই মহাকাশযানের কক্ষপথ এমনভাবে সেট করা হয়েছে যেটা প্রতিভার সূর্যকে প্রতিক্ষণ করার পরে সূর্যের আরও বেশি কাছে চলে যাবে। এতে করে সূর্যের আরো বেশি কাছে আমরা পৌঁছাতে পারবো এবং সে সম্পর্কে সব ধরনের ডাটা আমরা সংগ্রহ করতে পারব।
অনেকেই মনে করতে পারেন সূর্যের কাছাকাছি গেলে তো সেখানে তাপমাত্রা অনেক বেশি। এক্ষেত্রে মহাকাশযান কিভাবে সঠিকভাবে কাজ করছে? কিংবা গলে যাচ্ছে না কেন? এখানে এমন একটি হিট ফিল্ড লাগানো হয়েছে সেটার সামনের টেম্পারেচার ২০০ থেকে ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও পিছনের রিক্রুটমেন্ট ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যেই থাকবে। এটি সবোচ্চ ১৩৭৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপ সহ্য করতে পারে।
আমরা সকলেই জানি সূর্যের সারফেস টেম্পারেচার ৫০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এর বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রায় এর থেকেও অনেক বেশি হতে পারে। কোন কোন জায়গায় লক্ষ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্তই হয়ে যায়। এই কারণগুলো খুঁজে বের করার জন্যই সাধারণত এই মহাকাশযানটিকে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সৌর ঝড় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করার জন্য এই মহাকাশযানটিকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।
আমাদের মানব সভ্যতার টেকনোলজি এতটাই অ্যাডভান্স হয়েছে আমরা এখন সূর্যের কাছাকাছি যেতেও পারি এবং সূর্যকে নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করতে পারি। এটা আমাদের মানব সভ্যতার জন্য অনেক বড় একটি এচিভমেন্ট হলে আমি মনে করি। আপনারা কি মনে করেন তা অবশ্যই মন্তব্যে জানাতে পারেন ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: পার্কার সোলার প্রোব (Parker Solar Probe)
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ......
ভাইয়া,আজকের আপনার লেখাটি অত্যন্ত তথ্যবহুল এবং আকর্ষণীয়। পার্কার সোলার প্রোব সম্পর্কে এত বিস্তারিত জানার মাধ্যমে আমি অনেক কিছু শিখলাম, বিশেষ করে সূর্যের কাছাকাছি পৌঁছানোর প্রযুক্তি এবং তার বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব নিয়ে। এটি সত্যিই আমাদের মানব সভ্যতার জন্য একটি বিশাল সাফল্য। যে ভাবে মহাকাশযানটি সূর্যের রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি অজানা বিষয় সম্পর্কে জানানোর জন্য।
পার্কার সোলার প্রোব এখন অব্দি সূর্যকে ১৭ বার প্রদক্ষিণ করেছে এটা শুনে তো রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম। আরো অবাক হয়ে গেলাম এটা শুনে যে যতবারই প্রদক্ষিণ করবে ততবারই এটি সূর্যের আরো কাছে চলে যাবে। একটা সময় তো তাহলে এই মহাকাশযান সূর্যের একেবারে নিকটে চলে যাবে। যেহেতু এটার মধ্যে হিট ফিল্ডার লাগানো আছে আশা করি সবকিছুই সঠিক ভাবে সম্পূর্ণ হবে। এখন দেখা যাক আগামী দিনে সৌর ঝড়ের সম্পর্কে আমরা কি তথ্য জানতে পারি। বেশ চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আজকে, ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাই এটা আমি শুনেছিলাম এবং আপনি যে নাম দিয়েছিলেন,সেটাও একবার বলেছিলেন। আমার নাম এবং মেইল অ্যাড্রেস দিতে পারলে খুব ভালো লাগতো হা হা হা। যাইহোক প্রযুক্তি সত্যিই অনেক উন্নত হয়ে গিয়েছে। পার্কার সোলার প্রোব মহাকাশযানটি রেকর্ড গড়েছে সূর্যের এতো কাছাকাছি গিয়ে। আশা করি সামনে এই মহাকাশযান সম্পর্কে আরও অনেক আপডেট জানতে পারবো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
নিঃসন্দেহে পার্কার সোলার প্রোব এর বিষয়টা দারুন। একই সাথে এটা মহাকাশ বিজ্ঞানের একটি যুগান্তকারী সাফল্য। আশা করি এটা নিয়ে আগামীতে আমরা আরো ভালো কিছু জানতে পারবো। যাহোক ভাইয়া খুবই ভালো লাগলো আজকের পোস্টটি পড়ে। আসলে এই পোস্টটায় পড়ার জন্য কয়েকদিন আগে আপনাকে আমি কমেন্টের মাধ্যমে অনুরোধ করেছিলাম। আমার অনুরোধ রাখার জন্য সত্যি ভাইয়া আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ।
আপনার অনুরোধেই এই পোস্টটি করেছিলাম, আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।