ভ্রমণ || নীলফামারী টু ঢাকা
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তলার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি তবে ঢাকায় আসার পর থেকে শরীরটা হঠাৎ করে একটু অসুস্থ হয়ে যায়। তবে আশা করছি দু-একদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যাবে। গত বৃহস্পতিবার ভোর বেলায় নীলফামারী হতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা গিয়েছিলাম এবং সেই বিষয়টি আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
বাংলাদেশে কোন বিষয়ে পরিবর্তন হোক কিংবা না হোক বাংলাদেশের জনগণের ভোগান্তি কখনোই পরিবর্তন হবে না বরঞ্চ এই ভোগান্তি দিন দিন বেড়ে যাবে। এই কথা কেন বলছে জানেন আসলে বাংলাদেশের কোন কাজেই সময় মত হয় না সময়মতো শুধুমাত্র হয় ভোগান্তি। এই শুক্রবার আমার ভার্সিটির পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। যেটা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। সেই পরীক্ষায় এটেন্ড করার জন্যই মূলত ঢাকায় এত তাড়াহুড়ো করে আসা। ঢাকায় আসার জন্য টিকিট কেটেছিলাম আজ থেকে প্রায় দশ দিন আগে। কারণ আজকে যদি আপনি ভ্রমন করেন তাহলে সেই টিকিটটা আপনাকে ১০ দিন আগেই কাটতে হবে তা না হলে সেই যাত্রার ভ্রমের টিকিট আপনাকে পেতে অনেকটাই ভোগান্তি হতে হবে। এছাড়াও ব্ল্যাক এর টিকিট তো রয়েছেই। যেখানে এক হাজার টিকিটের দাম প্রায় দুই থেকে তিন হাজার টাকাও আপনার লাগতে পারে।
যাইহোক ২৭ তারিখ চিলাহাটি এক্সপ্রেস এর টিকিট কেটেছিলাম। যেটা নীলফামারী থেকে ছেড়ে যাবে ভোর ছয়টা ৪০ মিনিটে। যথা সময়ে স্টেশনে পৌঁছে যাই কিন্তু স্টেশনে পৌঁছানোর পরে সেই রকমের ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। ২০ মি আগেই স্টেশনে উপস্থিত হয়েছিলাম এবং স্টেশনে উপস্থিত হওয়ার পরপরই প্রচন্ড লেভেলের ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এতে করে আমরাও অনেকটা ভোগান্তির মধ্যে পড়ে যাই। বিশেষ করে যাত্রীরা অনেকেই ভিজে ভিজে এসেছে। এত কষ্ট করে যাত্রীরা সঠিক সময় আসলেও ট্রেন কিন্তু সঠিক সময় আসেনি। সেই ট্রেন প্রায় দুই ঘন্টা লেট করে নীলফামারী স্টেশনে ঢুকে। এছাড়াও আমাদের উত্তরবঙ্গের যেসব ট্রেন চলাচল করে সেগুলো বরাবরই অবলোহিত হয়ে থাকে। যেখানে যাত্রার সময়টা ধরা হয়েছিল তার থেকে সবসময় দু তিন ঘন্টা লেট করেই এই ট্রেন চলে।
যেহেতু ভোরবেলা ট্রেন ছিল তাই রাতও ঠিকভাবে ঘুমানো হয়নি তাই ট্রেনে উঠে সর্বপ্রথম একটু ঘুমানোর চেষ্টা করেছিলাম তবে দুঃখের বিষয় নীলফামারী পার হতেই গরমের আভাস লাগতে শুরু করে। এসি বোগীতে টিকিট পায়নি। এর আগেই সেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। নন এসিতেই কয়েকটি টিকিট ছিল এবং সেই টিকিটগুলোর মধ্যে একটি টিকিট কেটে রেখেছিলাম। ট্রেন জার্নি আমার ব্যক্তিগতভাবেই অনেক ভালো লাগে। কারণ ট্রেনে একটু হাটাহাটি করা যায় এছাড়াও ওয়াশরুমের বিষয়ে রয়েছে দীর্ঘ 12-13 ঘন্টা জার্নির পথ একটু হাঁটাহাঁটি না করলে খুব বেশি একটা ভালো লাগে না। বারো ঘন্টায় যদি একটা সিটে একইভাবে বসে থাকা যায় তাহলে সেটা আমার জন্য একটু বেশি সমস্যা দায়ক হয়ে যায়। তবে এই সমস্যাগুলো আগে ছিল না। ইদানিং ওজন বাড়ার পরপরই শারীরিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। যেগুলো আসলে নিজের কাছেই অনেকটা খারাপ লাগে।
আমাদের উত্তরবঙ্গের দিকে ট্রেনের গতি মোটামুটি একশোর উপরেই থাকে। কিন্তু যখন উত্তরবঙ্গ পেরিয়ে সিরাজগঞ্জের ভিতরে ঢুকে তখন ট্রেনের গতি অস্বাভাবিক রূপে কমে যায়, ৩০-৪০ এর উপরে ট্রেন কেন জানি চলে না। ট্রেন যাত্রার আরেকটি ভোগান্তির নাম ক্রসিং। নীলফামারী বা উত্তরবঙ্গের যেসব ট্রেন রয়েছে সেগুলোতে ঘন্টার পর ঘন্টা বিভিন্ন জায়গায় ক্রসিং এর জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এছাড়াও যমুনা সেতু পারাপারের জন্য মনে হয় ট্রেনগুলোকে আলাদাভাবে সিরিয়াল দিতে হয়। ক্রসিং এর জন্য আলাদাভাবে দুই তিন ঘণ্টা বরাদ্দ রাখা হয় এবং তা না হলে হয়তো আমাদের এই ট্রেনগুলো খুব দ্রুত ঢাকার মধ্যে প্রবেশ করে যেত।
তারপরও যেহেতু আমাদের এই ট্রেনটি প্রথম দিকেই তিন ঘন্টার বেশি লেট ছিল তাই বেশিরভাগ ক্রসিং গুলোই দ্রুত ওভারটেক করার চেষ্টা করেছিল। এছাড়াও মাঝে ট্রেনের গতি অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছিল, যেটা আসলে ট্রেনে থাকাকালীন অবস্থায় বুঝতে পারা যায়। সবমিলিয়ে কমলাপুর স্টেশনে ঠিক সন্ধার একটু আগে আমাদেরকে নামিয়ে দেয়। যে ট্রেন কমলাপুর থেকে নীলফামারীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল বিকাল পাঁচটায়। সেই ট্রেন এই ঢাকায় পৌঁছাতেই আরো দুই ঘন্টা লেট করে। তবে আর যাই হোক ট্রেন জার্নিটা অনেক ভালোই ছিল এবং সুস্থভাবেই কমলাপুর স্টেশনে নামিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে আমার গন্তব্যে আস্তে আরো বেশ কিছু সময় লেগে যায় এবং কেন জানি না হঠাৎ করেই বাসায় আসার পর থেকে জ্বর এবং প্রচন্ড মাথা ব্যাথা শুরু হয়।
যদিও নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছি। আশা করা যায় এক দু দিনের মধ্যেই আর সুস্থ হয়ে যাব। তবে আপনারা যদি কেউ ট্রেন জার্নি করতে চান তাহলে নীলফামারীর রোডের ট্রেন জার্নি করতে পারেন আপনারা অনেকটা এনজয় করবেন এই জার্নিটি আমি এটা বিশ্বাস করি। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: নীলফামারী টু ঢাকা
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
আমরা মনে করি দেশের সবচেয়ে নিরাপদ জার্নি ট্রেন জার্নি। আর নীলফামারী টু ঢাকা লং জার্নির বিষয়। আর এই ভ্রমণে সকাল সকাল রওনা দিতে পারলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। যাহোক অনেক ভালো লাগলো খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনার জার্নির বিষয়টা। পোস্ট পড়ার মধ্য দিয়ে বেশ অনেক কিছু জানার সুযোগ হলো। আপনাদের ওখানে ট্রেনের গতি একশোর উপরে জেনে ভালো লাগলো কিন্তু আমাদের এদিকে ভাই ট্রেনই নাই। আপনারা তো ঢাকা থেকে সরাসরি চলে যেতে পারেন। আর বিভিন্ন ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা এটা বেশ অস্বস্তিকর মুহূর্ত। এমন এক অস্বস্তিকর মুহূর্তে আমরা যশোরে পড়েছিলাম। ঐদিন বিকেল মুহূর্তে কি যে গরম ছিল। জয় হোক মোটামুটি অনেক ভালো লাগলো পড়ে।
ঠিক বলেছেন, বাংলাদেশ আর কিছু থাকার না থাক ভোগান্তির শেষ নাই জনগণের। এবার খেতে ট্রেন ঠিক সময় ছাড়ে না।আর গরমের কথা নতুন করে কি বলবো,বৃষ্টি হলে গরম আরো বেশি বাড়ে।যাই হোক আপনার সুস্থতা কামনা করছি। ধন্যবাদ
আমরা যখন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম যাব ট্রেনে করে তখনো কিন্তু টিকেট কেটে রেখেছিলাম অনেক আগে। সেদিনও কিন্তু বৃষ্টি ছিল এবং বাইরে বের হয়ে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। যাই হোক সেদিন বৃষ্টি হওয়ার কারণে, এগারোটায় ট্রেন আসার কথা সেই ট্রেন এসেছিল ১টা বাজে।আসলে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে এভাবে ভোগান্তির শিকার হলে ভালো লাগে না। তবে আমার কাছেও বাস জার্নি থেকে ট্রেন জার্নিতে অনেক বেশি ভালো লাগে। কারণ এখানে খুব বেশি সমস্যা হয় না। তবে চট্টগ্রাম বা ঢাকা যেটাই হোক কাছাকাছি পৌঁছাতে পৌঁছাতে লোকাল অবস্থা হয়ে যায় অনেক সময়।সিট থাকা শর্তেও মানুষের গাদাগাদিতে তখন আর ভালো লাগেনা।এটা বেশিরভাগ নন-এসিতেই হয়।তবে প্রথমবার এসি সিট না পেলেও পরেরবার পেয়েছিলাম। আপনার সুস্থতা কামনা করি ভাইয়া যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
প্রথমেই তোমার সুস্থতা কামনা করছি। আশা রাখছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে। ট্রেন জার্নিতে সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে ক্রসিং। ক্রসিং ছাড়া ট্রেনে জার্নি টা অনেকটাই আরামদায়ক। সুস্থভাবে পৌঁছে গেছো এবং ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়েছো এজন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। 🌹🌹
সব বাধা পেরিয়ে তুমি যে সুন্দর ভাবে ঢাকায় পৌঁছে গেছো এটাই আনন্দের। সাবধানে থাকো আর ভালো করে পরীক্ষা দাও। মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ভারতীয় রেলেও দিনে দিনে ভোগান্তির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এসব কিছু নিয়েই আমাদের দিন চলতে হবে। আর তার মধ্যেই জয় করতে হবে আমাদের লক্ষ্যটুকু।
কেমন আছো সিয়াম? তোমার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। তাড়াতাড়ি ট্রেনে ওঠো। তোমার ট্রেন জার্নির অভিজ্ঞতা বেশ ভালো লাগল। আমিও অনেক লম্বা লম্বা পথ ট্রেনে যাই৷ বই পড়ি। কত অভিজ্ঞতা হয়৷ ভারতে করোনার পর থেকে কেন জানি না ট্রেনগুলো বড্ড লেট করে৷ তাই আমি বেশ ভালোই বুঝি ট্রেনে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে ঠিক কেমন লাগে৷
ভালো থেকো৷ পরীক্ষা নিশ্চই ভালো হয়েছে৷
ভাই প্রথমেই আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে, আমাদের দেশের জনগণের ভোগান্তি আরও বাড়ছে। আপনার মতো আমারও ট্রেন জার্নি ভীষণ পছন্দ। তবে আমি বাংলাদেশে কখনোই ট্রেনে চড়িনি। কিন্তু অনেকের মুখ থেকেই শুনি যে, ট্রেন কখনোই সময়মতো স্টেশনে আসে না। মোটকথা জনগণের সময়ের মূল্যায়ন একেবারেই করা হয় না। যাইহোক ঢাকায় ঠিকঠাক মতো পৌঁছাতে পেরেছেন, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার লেখা পড়ে সত্যিই দারুণ লাগলো ভাইয়া। ভ্রমণের প্রতিটি ধাপে আপনি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, তা খুবই বাস্তব এবং আমাদের সবার সাথে ভালোভাবে ভাগ করে নিয়েছেন। নীলফামারী থেকে ঢাকার যাত্রা, ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে স্টেশনে অপেক্ষা এবং ট্রেনের লেট হওয়ার সমস্যা—এই সবকিছুই ভ্রমণের এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করেছে। আপনার শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও পরীক্ষা এবং ভ্রমণ নিয়ে যেভাবে মনোবল ধরে রেখেছেন, তা প্রশংসনীয়। আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি ভাইয়া। ট্রেন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে আপনার লেখাটি খুবই বাস্তবসম্মত এবং আকর্ষণীয় ছিল। আশা করছি, ভবিষ্যতেও এমন চমৎকার লেখা উপহার পাবো। ধন্যবাদ।
[@redwanhossain]