কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি সবাই-ই ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালই আছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার পড়া নতুন একটি বইয়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। ইদানিং চেষ্টা করছি বই পড়ে শেষ করে বই পড়ার একটা অভ্যাস গড়ে তুলতে। সেই ধারাবাহিকতাতেই আজকে আমি এই বইটা পড়ে আমার অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আজকের এই বইটি তুলনামূলকভাবে অপরিচিত একটি বই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

পরীক্ষা শেষ হলে আমাদের কার না ভালো লাগে? পরীক্ষা শেষ হলে আমরা সবাই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। কিন্তু শাফকাত হাসান ওরফে নুরুর অবস্থা এত ভালো নয়। তার পরীক্ষা শেষে কিছুই করার নেই। তার সব বন্ধু, এমনকি তার বড় ভাইও কোথাও না কোথাও বেড়াতে যাচ্ছে, কিন্তু তার বেড়াতে যাবার কোন জায়গা নেই। হঠাৎ করে তার শওকত মামা হাজির। বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি রিসোর্ট, নীলাঞ্জনা রিসোর্টের মালিক নাকি মামার কাছে তার অনেকদিনের একটা প্রশ্নের মনমত জবাব পেয়ে রিসোর্টের সাত নম্বর রুমটা মামাকে গিফট করে দিয়েছেন। মামা নুরুকে নিয়ে যেতে চাইলে নুরু একবাক্যে রাজি হয়ে যায়। যাওয়ার পথে তারা একটা ডাকাতদল দেখতে পায়, তাদের মোটরসাইকেলের নম্বর তারা পুলিশকে দিয়ে দেয়। নীলাঞ্জনা রিসোর্টে যাবার পর নুরুর সাথে মিথিলা নামের একটি মেয়ের পরিচয় হয়। নুরু আর মিথিলা একসাথে একটি বনবিড়ালের হাত থেকে ছোট একটি বানরের বাচ্চাকে বাঁচায়। পরে তাদের সাথে টিটন আর ঙুইনের পরিচয় হয়। টিটনও নুরু আর মিথিলার মত নীলাঞ্জনা রিসোর্টে বেড়াতে এসেছে, আর ঙুইন নীলাঞ্জনা গ্রামের বাসিন্দা। তাদের গ্রামের পুরো এলাকা দখল করে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক করা হবে, এজন্য ঙুইনসহ অনেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, পার্ক না করার পক্ষে সবার স্বাক্ষর বা টিপসই নিচ্ছে। সবকিছু শুনে নুরু, মিথিলা আর টিটন তাদের সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তাদেরকে কিছু মানুষ অনুসরণ করতে থাকে। পরে সুযোগ বুঝে তাদেরকে আটকে ফেলে সব কাগজপত্র তারা নিয়ে নেয় আর গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তারা এখন কী করবে?

"কী হয়েছে বুঝতে আমাদের একটু সময় লাগল। একটু সামনে তাকাতেই দেখলাম দূরে আগুন দেখা যাচ্ছে।

এক মুহূর্ত পর বুঝে গেলাম ঙুইনের গ্রামের মানুষদের ভয় দেখানোর জন্য সেখানে আগুন দিয়েছে। কার বাড়িতে কে জানে? হয়তো ঙুইনের বাড়িতেই।"

আমার অনুভূতিঃ

অপারেশন নীলাঞ্জনা মুহম্মদ জাফর ইকবালের কিশোর উপন্যাসের মধ্যে সর্বশেষ সংযোজন। প্রথমেই বলি বইটির কোন কোন দিক আমার ভালো লেগেছেঃ

• আমার আসলে প্রথমে বইটা পড়ার তেমন ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু রকমারিতে বইটার প্রথম দুই পৃষ্ঠা পড়ার পর আমি বুঝলাম, বইটা আমার পড়তেই হবে। আমার মনে হয় বইয়ের আকর্ষণক্ষমতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বইয়ের প্রথম দুই- তিনটা পৃষ্ঠায় যদি এমন কিছু না থাকে যা আমাদের আকর্ষণ করে, তাহলে কেউ বইটা পড়তেই চাইবে না। আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, অপারেশন নীলাঞ্জনা বইটার আকর্ষণক্ষমতা অনেক ভালো। আপনি পড়া শুরু করলে কোন না কোন একটা বিষয় আপনাকে আকৃষ্ট করবেই।
• বইটার কাহিনী অনেক থ্রিলিং- হঠাৎ করে কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। এই ধরণের কাহিনী সাধারণত সবাই-ই পছন্দ করে।
অপারেশন নীলাঞ্জনা বইটির একমাত্র দিক যেটা আমার ভালো লাগে নি সেটা হলো যে ওরা ডাকাতদলকে ধরিয়ে দেবার পর ডাকাত নিয়ে কেউ কোন মাথা ঘামায়নি। কিন্তু আমার মনে হয় আসলে ডাকাতদের খুঁজে বের করতে মোটেও বেশি সময় লাগার কথা না যে কে তাদের ধরিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে যারা তাদের ধরিয়ে দিয়েছে তারা যে নীলাঞ্জনা রিসোর্টে থাকে, পুলিশ কর্মকর্তাদেরই এটা ডাকাতদের বলে দেওয়ার কথা। তাই ডাকাতদের নির্বিকার থাকাটা আমার কাছে একটু অবাস্তব মনে হয়েছে।
এই দিকটা উপেক্ষা করে গেলে অপারেশন নীলাঞ্জনা স্বতন্ত্রভাবে দারুন একটি বই। মুহম্মদ জাফর ইকবালের সেরা বইগুলোর মধ্যে না হলেও এটি অবশ্যই তার লেখা অপেক্ষাকৃত ভালো বইগুলোর মধ্যে একটি। বইটি আমার ভালো লেগেছে, আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে।

আমি অলক রায়। আমি একজন বাংলাদেশী। বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। আমি টুকটাক লেখালেখি করতে বেশ ভালোবাসি। এছাড়া রান্না, গান করা, বই পড়া ও সিনেমা দেখা, ছবি তুলতে ও নিজের বন্ধু ও পরিবারের সাথে সময় কাটাতে আমার অনেক ভালো লাগে। ঘোরাঘুরি করা আমার অন্যতম প্রিয় একটি কাজ, যখনই সময় পাই আমি বেরিয়ে যাই অজানার উদ্দেশ্যে। আমি বিশ্বাস করি যে পরিশ্রমই সাফল্যের চাবিকাঠি, তাই কোন কাজ করলে সেখানে নিজের শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করি। নিজের এই এতো রকম শখ ও আমার অভিজ্ঞতা সবার সাথে ভাগাভগি করতেই আমার স্টিমিট যাত্রা।

---

VOTE @bangla.witness as witness



OR

SET @rme as your proxy

---

JOIN WITH US ON OUR DISCORD SERVER

---

Follow @amarbanglablog for latest updates

---

যদি আপনাদের আমার পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন।

---

ধন্যবাদ

---