কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি সবাই-ই ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালই আছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার পড়া নতুন একটি বইয়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। ইদানিং চেষ্টা করছি বই পড়ে শেষ করে বই পড়ার একটা অভ্যাস গড়ে তুলতে। সেই ধারাবাহিকতাতেই আজকে আমি এই বইটা পড়ে আমার অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

আপনার কলেজের প্রথম দিনে আপনার সাথে একটি অদ্ভুত ছেলের পরিচয় হলো। অদ্ভুত এই কারণে যে, সে আপনার নাম, আপনার ঠিকানা, আপনি কোন রাস্তা দিয়ে স্কুলে এসেছেন, কোন শিক্ষক কোন প্রাণী পোষেন- এই সবগুলো জিনিস-ই ঠিকঠাক অনুমান করে ফেলল। আপনার তখন কেমন লাগবে? আপনি যদি অনুমান করার চেষ্টা করে থাকেন, তাহলে অন্তত আপনি একটি ধারণা পাবেন যে জাভেদের সাথে দেখা হবার পর নাফিস কতটা অবাক হয়েছিলো। জাভেদ শুধু পর্যবেক্ষণ করাতেই পারদর্শী নয়, সে সব জায়গাতেই রহস্যের গন্ধ পায়। এই কারণেই নাফিস আর ও মিলে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ঘুরে আসার পরদিন ওরা দেখলো, সেখানে একজন খুন হয়ে গেছেন। স্বভাবতই পুলিশের বাধা সত্ত্বেও জাভেদ ও নাফিস তার নিজের মত করে অনুসন্ধান চালাতে লাগলো। কিন্তু এই রহস্যের সাথে তারা যে কতটা গভীরভাবে জড়িত তা তারা নিজেরাই জানে না। যিনি ভিক্টিম, মিস্টার সায়েম, তিনি দেশের বাইরে থাকতেন। দেশে তার ভাই ওমার সাহেল ছাড়া কেউ থাকে না, তবে তার ভাইয়ের হত্যা করার মত মানসিক অবস্থা নেই, তার কারণ তার ভাইয়ের লাশ দেখামাত্র তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। যখনই নাফিস আর জাভেদের মনে হয় রহস্যটা ওরা সমাধান করতে পারবে, ঠিক তখনই পুরো ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। ওরা কীভাবে রহস্য সমাধান করবে? জানতে হলে পড়ে ফেলতে হবে বইটি।

আমার অনুভূতিঃ

'রহস্যময় চিরকুট' লেখক ওয়াসীমূল বারী আরজুর ইংরেজীতে লেখা 'The Domicile of Mystery' বইটির বাংলা অনুবাদ এবং তার গোয়েন্দা সিরিজের প্রথম বই। এটা তার লেখা প্রথম বই হলেও, গল্পের প্লট দেখে মোটেও তা বোঝা যায় না। গল্পটা অত্যন্ত সুনিপুণভাবে লেখা, বিশেষ করে হত্যা ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার ঘটনাগুলো। বইটির শেষ তিন অধ্যায় পড়ার সময় আপনি টান টান উত্তেজনায় বইটা পড়া থামাতে পারবেন না। জাভেদ ও নাফিসের চরিত্রগুলো অনেক সুন্দরভাবে গঠন করা হয়েছে। বিশেষ করে তিনি প্রত্যেকটি চরিত্রের যেভাবে বর্ণনা দিয়েছেন, সেটা অনেক আকর্ষণীয়। কিন্তু অসাধারণ বিষয় এই যে, কোন চরিত্র একবারও তাদের স্বভাব বিরোধী কোন কাজ করেনি। প্রত্যেকটি সূক্ষ্ম ঘটনার পেছনেই অনেক বড় বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন, আর সেই ব্যাখ্যাগুলো সঠিক হওয়ায় গল্পের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তার চরিত্র নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই জাভেদকে নিয়ে কথা বলা যাক। জাভেদ ঢাকায় নতুন, তার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা অসাধারণ। সে রহস্য আর কাচ্চির ভক্ত। সে চালাকও বটে। স্যুটকেসের ঘটনাটা আমাদেরকে জানান দেয় যে, সেও মাঝে মাঝে মজা করতে পছন্দ করে। নাফিস আবার অন্যরকম। সে জাভেদের নাক গলানোর স্বভাব মোটেও পছন্দ করে না, জাভেদের মত অপরিসীম সাহসও তার নেই। তবে সে জাভেদকে অনেক পছন্দ করে, সে জাভেদের প্রতি আস্থা রাখে। পুরো গল্প যেহেতু তাকে কেন্দ্র করেই লেখা, আমরা বলতে পারি যে সে জাভেদের তুলনায় অনেক বেশি পড়াশোনা অপছন্দ করে। সে এই বইয়ে যতবার সিনেমা, বই আর পপ কালচার রেফারেন্স দিয়েছে, এ থেকে বোঝা যায় যে সে সিনেমাপাগল একজন মানুষ। বইটির একমাত্র দিক যেটা অনেককে কিছুটা বিরক্ত করতে পারে সেটা হলো যে, বইটির প্রথম অংশে ক্রিয়া হিসেবে ঘটছিল, করছিল, হাঁটছিল আর বলছিল- ইত্যাদি লেখা। কিন্তু শেষ অংশে লেখার ধরন হয়ে গেছে ঘটলো, করলো, হাঁটতে হাঁটতে বলল- এরকম। এটা খুব একটা বড় সমস্যা নয়, আশা করি পরবর্তী সংস্করণে এটাও ঠিক করে ফেলা হবে। আমার মনে হয়, আপনি বইটা পড়ে আমার মতই আনন্দ পাবেন ও আমার মতই লেখকের পরবর্তী বইয়ের অপেক্ষায় থাকবেন।

আমি অলক রায়। আমি একজন বাংলাদেশী। বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। আমি টুকটাক লেখালেখি করতে বেশ ভালোবাসি। এছাড়া রান্না, গান করা, বই পড়া ও সিনেমা দেখা, ছবি তুলতে ও নিজের বন্ধু ও পরিবারের সাথে সময় কাটাতে আমার অনেক ভালো লাগে। ঘোরাঘুরি করা আমার অন্যতম প্রিয় একটি কাজ, যখনই সময় পাই আমি বেরিয়ে যাই অজানার উদ্দেশ্যে। আমি বিশ্বাস করি যে পরিশ্রমই সাফল্যের চাবিকাঠি, তাই কোন কাজ করলে সেখানে নিজের শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করি। নিজের এই এতো রকম শখ ও আমার অভিজ্ঞতা সবার সাথে ভাগাভগি করতেই আমার স্টিমিট যাত্রা।

---

VOTE @bangla.witness as witness



OR

SET @rme as your proxy

---

JOIN WITH US ON OUR DISCORD SERVER

---

Follow @amarbanglablog for latest updates

১০% বেনেফিশিয়ারিজ লাজুক-খ্যাঁক এর জন্য

---

যদি আপনাদের আমার পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন।

---

ধন্যবাদ

---