বৃদ্ধ বয়সে মানুষ কেন অসহায় হয়ে যায়
আসসালামুআলাইকুম/আদাব
আমাদের এই সমাজে বৃদ্ধ বয়স্ক মানুষদের বেশি অবহেলা করা হয়। আসলে এই বৃদ্ধ বয়সের মানুষগুলো যেন সমাজে অবহেলিত হয় বেশি।কিন্তু এই মানুষগুলো একসময় পুরো পরিবার, পুরো সমাজকে তারা নিয়ন্ত্রণ করেছে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধ হওয়ার কারণে তাদের যেন আর কোন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সমাজে আমরা অনেক মানুষ রয়েছি, যারা বৃদ্ধদেরকে দেখলেই ঘৃণা করি, তাদেরকে অন্যরকম চোখে আমরা দেখি। তাদের সাথে আমরা ঠিক ভাবে কথাও বলি না, কিন্তু এই বৃদ্ধ মানুষগুলোই একদিন সমাজের নেতা ছিল। সমাজটাকে তারা সুন্দরভাবে পরিচালনা করত, এই দৃশ্যগুলো আমরা যেন ভুলে যাই।
আসলে আমরা সমাজের ক্ষমতাবান মানুষকে বেশি সম্মান দিয়ে থাকি। তাকে শ্রদ্ধা করি। ক্ষমতার ঊর্ধ্বে আমরা কাউকেই দেখতে পায় না। যে ব্যক্তির ক্ষমতা রয়েছে, তাকে আমরা সম্মান করি। তাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। তাকে আমরা ভালোবাসি। আর যে ব্যক্তির সম্মান বা ক্ষমতা নেই, তাকে আমরা যেন সম্মান বা শ্রদ্ধা করি না। ক্ষমতায় কি আমাদের সমাজে প্রধান কারণ। আমরা যদি সঠিকভাবে সমাজের মানুষদেরকে সম্মান করি, তাহলে এই সমাজ থেকে সুন্দর মানুষ সৃষ্টি হবে।
আসলে গতকাল সন্ধ্যাবেলা আমি আমাদের সিরাজগঞ্জের বড়পুলে বসে ছিলাম। ঠিক তখনই দেখতে পেলাম এক বৃদ্ধ চাচা পাশেই বসে আছে। তার কথা বলার কেউ নেই, আমি এবং আমার বন্ধু তার সাথে গিয়ে কথা বলতে লাগলাম। একসময় কথা বলতে বলতে জানতে পারলাম সে তার গ্রামের ইউনিয়নের একজন চেয়ারম্যান ছিল। তার অনেক ক্ষমতা ছিল। তখন তার আশেপাশে হাজার মানুষ থাকতো। তার এসিস্ট্যান্ট থাকতো অনেকগুলো মানুষ। কারণ সে শহরের অনেক বড় একজন নেতা ছিল। কিন্তু সময়ের কারণে তার ক্ষমতা হারিয়ে যায় এবং তার দুইটা ছেলে ছিল। একটা ছেলে এক্সিডেন্টে মারা যায়। আর একটা ছেলে ঘরে পঙ্গু হয়ে রয়েছে, কারণ দুই ভাই তারা এক্সিডেন্ট করেছিল একসাথে। তখন থেকেই তার ক্ষমতা হারিয়ে যায় এবং তার জীবনে অভাব দেখা দেয়।
এক্সিডেন্ট করার কারণে একটা ছেলে মারা যায় এবং আর একটা ছেলের চিকিৎসা করতে করতে তার অর্থ সম্পদ নানাভাবে শেষ হয়ে যায় এবং তার স্ত্রী ও মারা যায়। সে যেন এখন একজন অসহায়, আর এই অসহায় হওয়ার কারণে গ্রামের মানুষ তাকে আর সম্মান করে না। কিন্তু একসময় যে দাপটে নেতা ছিল যাকে দেখলে সবাই ভয় পেত, তাকে এখন দেখলেই মানুষ নানা রকমের ঠাট্টা করে থাকে। আর এই মানুষটার এখন যেন কোন মূল্যই নেই। যদি সে তার ক্ষমতাকে ধরে রাখত, তার অর্থ সম্পদ থাকতো তাহলে গ্রামবাসীসহ অন্যান্য মানুষেরা তাকে ঠিকই সম্মান করতো তাকে ভালোবাসতো।
তাই আমি মনে করি নিজের পরিবার ও গ্রামবাসী এবং আশেপাশে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে নিজের সম্মান এবং নিজের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে জীবনের শেষ পর্যন্ত অর্থ সম্পদ যেন সঞ্চয় বা অর্থ সম্পদ তার কাছে থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থ সম্পদহীন ব্যক্তিকে কেউ সম্মান বা মর্যাদা দেয় না। আর যদি তার কাছে অর্থ সম্পদ থাকে, তাহলে জীবনের শেষ পর্যন্ত তার সম্মান, তার দাম থেকে যায়। তাই আমাদের সমাজে যারা বৃদ্ধ রয়েছে আমি তাদের বলব আপনাদের সম্পদ জীবনের শেষ পর্যন্ত আপনাদের কাছে রাখুন। সম্পদ শেষ হয়ে গেলে বা ছেলে মেয়ে বা আত্মীয়-স্বজনদের দিলে তখন আর আপনাকে ওইভাবে সম্মান করবে না। এটাই যেন আমাদের মানুষের ধরন বা মানসিকতা। তাই নিজের সম্মানকে রক্ষা করতে এবং নিজেকে মূল্যবান করতে অর্থ সম্পদ নিজের কাছে, নিজের নামে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। 🖤✨।
ধন্যবাদ সকলকে✨💖
ফোনের বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
ধরণ | রাইটিং ✨ |
মডেল | এম-৩১ |
ক্যাপচার | @alif111 |
অবস্থান | সিরাজগঞ্জ -রাজশাহী- বাংলাদেশ। |
আমার পরিচয়
![]() |
---|
https://twitter.com/AhmedAlif135308/status/1879196188299456949?t=bgMUwh5b4Tsp4-RPjMbNwg&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার লেখাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সামাজিক বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। বৃদ্ধদের প্রতি সম্মান ও সহানুভূতি প্রদর্শন আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সম্পদের চেয়ে মানবিক মূল্যবোধ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত। সবাই যদি দায়িত্বশীলভাবে এগিয়ে আসি, তবে সমাজে বৃদ্ধদের প্রতি অবহেলা কমবে এবং তাদের জীবনের শেষ সময়টা হতে পারে শান্তিময়।
আজ আপনি যে কথাগুলোকে বলেছেন সবগুলো একদম সত্য কথা। আসলে বয়স বাড়লে মানুষের কদর কমে যায়। কেননা মানুষের কর্মক্ষমতা বয়স বাড়ার সাথে সাথে কমতে থাকে।
বৃদ্ধ বয়সে মানুষ অনেক কিছুর শিকার হয়ে থাকে। এক নাম্বারে হচ্ছে বৃদ্ধ মানুষগুলো তাদের এই বৃদ্ধ বয়সে অনেক অসহায় হয়ে পড়ে। প্রতিটা মানুষের উচিত তাদেরকে শ্রদ্ধা করা। মানুষের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধের সৃষ্টি হওয়া অনেক জরুরী। অনেক সুন্দর একটা টপিক নিয়ে পোস্টটা লিখেছেন দেখে ভালো লাগলো।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট নিয়ে আজ আপনি আমাদের মাঝে হাজির হয়েছেন। আসলে আমরা কেউ বৃদ্ধদের নিয়ে ভাবি না। বৃদ্ধ মানুষ বৃদ্ধ বয়সে অচল হয়ে পড়ে। তাদের চলাফেরা থেকে যেমন তারা অক্ষম হয়ে যায় তেমনি করে রুজি রোজগারেও তারা অখম হয়ে যায়। হলে তারা সমাজে ও পরিবারের অবহেলিত অসম্মানের হয়ে পড়ে।