চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কিছুক্ষণ /১০% প্রিয় 💞 @shy-fox
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।
আজ আমি আপনাদের চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর অনুভূতি সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।
আসুন শুরু করি
source
Device :- Redmi note 7
আমার মামাতো ভাই তার নাম নুর উদ্দিন আমি তাকে নূর ভাই বলে সম্বোধন করি। নূর বলার কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক ভিপি আমার খুবই প্রিয় ব্যক্তিত্ব শ্রদ্ধাভাজন। ভিপি নুরের নাম অনুসারে তাকে আমি নূর ভাই বলে ডেকে থাকি। পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা, বাবা মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। সকল ভালোবাসায় মায়া মমতা বিসর্জন দিয়ে আমাদের কাছ থেকে দূর থেকে বহুদূরে পাড়ি জমিয়েছে সে সুদূর মস্কো শহরে। আজ থেকে এসেই প্রবাসী। নুরুদ্দিন ভাই আমাকে অনেক আগে বলছিলো আমি যখন বাইরে দেশে যাবো অবশ্যই তুই আমার সাথে বিমানবন্দর পর্যন্ত যাবি। আগামীকাল আটটার দিকে আমাকে ফোন করে বলে আজিম আমি আজ রাত একটায় বাড়ি থেকে রওনা দিবো। তুই তাড়াতাড়ি আমাদের বাসায় চলে আয় দুপুরে একসাথে খাওয়া দাওয়া করব। তার ফোন পেয়ে আমি তাড়াতাড়ি বাসার কিছু কাজকর্ম শেষ করে নানুর বাড়ি উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
নানুর বাড়ি যাওয়ার পরে নুরুদ্দিন ভাই আমাকে জড়িয়ে খুবই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লো। তারপর আমি তাকে কোন রকম সান্ত্বনা দিলাম। মামাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে দুপুরের খাওয়া শেষ করলাম। তারপর রাত আটটার দিকে বাইরে যাওয়ার জন্য সে সহ আমি কাপড়চোপড়, অন্যান্য আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করে নিলাম। তারপর রাতের খাওয়া শেষ করে আমি আমাদের বাসায় আসার জন্য তার থেকে বিদায় নিচ্ছি।
কিন্তু আমার মামাতো ভাই আমাকে কোন ভাবে বিদায় দিতে বা, ছাড়তে নারাজ। সে আমাকে বললো অবশ্যই তার সাথে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত যেতে হবে। আমি তাকে অনেক ভাবে বুঝিয়ে বললাম যে আমার বাসায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। আমাকে বাসায় যেতে হবে। কিন্তু সে আমার কোন কথা শুনতে নারাজ। তার কথাই হলো তার সাথে আমাকে যেতে হবে। তারপর কি আর করা। অবশেষে তার সাথে যাওয়ার জন্য সম্মতি প্রকাশ করলাম। রাত একটার দিকে আমাদের নেওয়ার জন্য প্রাইভেটকার আসলো। আমি লাকিস গুলো প্রাইভেটকারে নিয়ে রাখলাম।
আসলে আমার মামাতো ভাই যখন তার মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন এবং বাড়ির অন্যান্য সকল লোকদের দেখা করে বিদায় নিচ্ছে দৃশ্যটি খুবই আমার কাছে অন্যরকম মনে হলো। দৃশ্যগুলো খুবই কষ্টের। নূর ভাইয়ের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। তার বিদায়ের কষ্ট দেখে আমিও চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না। আসলে প্রিয়জনদের মায়া, মমতা, ভালবাসা বিসর্জন দিয়ে দূর দেশে যাওয়ার কি যে কষ্ট তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না । প্রিয় মানুষদের কোনভাবে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো সত্যকে মেনে নিতে হয় সবসময়। পরিশেষে রাত ২.৪৫ মিনিটে বাড়ি থেকে রওনা দিলাম। তার সাথে তার বাবা, তার মামাতো ভাই এবং আমি তিন জন সাথে ছিলাম। আমরা চট্টগ্রাম সিটি গেট প্রবেশ এর পূর্বে ফজরের আজান দিলো রাস্তার পাশে প্রাইভেটকারটি দাঁড় করিয়ে একটি মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করলাম। তারপর আবার রওনা দিলাম আমরা ছয়টার দিকে বিমানবন্দরে গিয়ে পৌঁছেছি।
সাজ সকালে বিমানবন্দরের পরিবেশ খুবই চমৎকার ছিলো। চারদিকে তেমন কোন কোলাহল নেই নীরবতা। মানুষজন তেমন বেশি নেই। আমরা বিমানবন্দরের ভিতরে একটি ক্যাফেতে হালকা নাস্তা করে নিলাম।
নাস্তা করার পরে নুরুদ্দিন ভাই আমাদের সবার কাছ থেকে শেষবারের মতন বিদায় নিচ্ছে। আসলে তাকে বিদায় দিতে গিয়ে আমরা সবাই খুবই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লাম। সে যখন আমাকে জড়িয়ে ধরলো তখন চোখের জল কোন ভাবে ধরে রাখতে পারছি না। চোখের জল কোন ভাবে মুছে তাকে বিদায় দিলাম। সেই ভিতরে প্রবেশ করলো। তাকে বলছি ইমিগ্রেশন পর্ব শেষ হওয়ার পর বিমানে যখন উঠবে তখন আমাদেরকে ফোনে কল দিতে। তার ফোন ফেলে আমরা বিমান বন্দর ছেড়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিবো। এজন্য আমরা বাইরে তার ফোনের অপেক্ষা করতে লাগলাম। এই ফাঁকে আমি বিমানবন্দরের কিছু অংশ ঘুরে ঘুরে দেখলাম।
সকালবেলা বিমানবন্দরে পরিবেশ একেবারে শান্ত মানুষজন নেই বললেই চলে । মাঝে মাঝে পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ শুনা যায় । আর বিভিন্ন স্থানে কিছু নিরাপত্তাকর্মীকে দেখা যায়।
বিমানবন্দরের ভিতরে সকালবেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছিল চোখে পড়ার মতন। গাছের সারি গুলো দেখে খুবই মুগ্ধ হয়ে গেলাম । কিছু দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য অবলোকন করা সুযোগ হলো। সবুজ অরণ্যের মাঝে মনে হলো কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গেলাম। বিশেষ করে বিমান বন্দরের দক্ষিণ দিকের জায়গা গুলো খুবই অসাধারণ ছিলো। সাজ সকালে সবুজের প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য দেখে মন খুবই ভালো হয়ে গেলো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ সৃষ্টি।
প্রায় ৩৫ মিনিট পরে নুরুদ্দিন ভাই আমাদের ফোন করে জানায় তার ইমিগ্রেশন পর্ব সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ হয়েছে এবং সে বিমানে অবস্থান করছে। তার ফোন পাওয়ার পরে আমরা বিমানবন্দর ত্যাগ করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলাম।
গাড়ির জানালা দিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
পোস্ট বিবরণ :-
শ্রেণী | ভ্রমণ |
---|---|
ক্যামেরা | Redmi note 7 |
পোস্ট তৈরি | @ah-agim |
লোকেশন | ফেনী, বাংলাদেশ |
এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি আরো অন্যান্য ধরনের পোস্ট উপস্থাপন করার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।
- অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে খুব সুন্দর এবং দুঃখ ভরা সময় কাটিয়েছেন। যেহেতু আপনার নুর ভাইকে বিদায় দিচ্ছেন তাই সেটি ভারাক্রান্ত একটি সময়। আপনার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে পেয়ে খুব ভালো লাগলো। বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নিরিবিলি এবং মনোরম একটি জায়গা ছিল। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ।আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
পোস্টটি দেখে এত চমৎকার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
নুরুদ্দিন ভাই বিদেশ চলে গেছে জেনে খুবই খারাপ লাগলো। কিন্তু বিমানবন্দরে খুব ভালো একটু সময় কাটিয়েছেন আপনি। খুব সুন্দর ভাবে পোস্টটি উপস্থাপন করেছেন
সুন্দর গঠনমূলক মতামত শেয়ার করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
আপনার এই পোস্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে চট্টগ্রামের বিমানবন্দরে অনেক চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন সেই সাথে কিছু সুন্দর ফটোগ্রাফি ও আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে ভাগাভাগি করার জন্য ধন্যবাদ।
পোস্ট সম্পর্কে সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
নুরুদ্দিন ভাইকে বিদায় দিতে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে গিয়েছিলেন। আসলে কেউ যখন নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যায় তার মনের অবস্থা খুবই খারাপ থাকে। তাই সে আবেগ আপ্লূত হয়ে গেছিলো। আপনার গল্পটি বেশ ভাল লেগেছে আমার কাছে। গুছিয়ে লিখেছেন। ধন্যবাদ
এত সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকা জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
আপনি বিমানবন্দরে আপনার কাটানো মুহূর্তগুলো আমাদের কাছে শেয়ার করেছেন এবং তার সাথে সাথে তার তার আশেপাশের সবুজ প্রকৃতি গুলোকে আপনার ফটোগ্রাফি এর মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন তার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।আপনার উপস্থাপনা অনেক ভালো ছিল
অনেক অনেক ধন্যবাদ এত অসাধারণ মতামত শেয়ার করার জন্য।