বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে বিনোদনগুলো(১০ শতাংশ শিয়ালের জন্য বরাদ্দ)
আমরা জন্মগ্রহণ করার পর থেকে প্রতিনিয়ত বড় হচ্ছি।বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ভালোলাগা এবং মন্দ লাগার বিষয়গুলোও পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।এখনকার চাহিদা এবং চাওয়া-পাওয়া গুলো আর আগের মত নেই।ছোটবেলায় বাবা মা এবং পাড়ার বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে বেশিরভাগ সময় কেটে যেত। আর এখন সময় গুলো কেটে যাচ্ছে ভার্চুয়াল জগতের বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে।
ছোটবেলায় যে বিষয় এবং মাধ্যম গুলো থেকে বিনোদন নিয়েছি,এখন আর ওই বিষয়গুলো আমাদের তেমন একটা বিনোদিত করে না। আমার বাড়ি গ্রামে হওয়ায়, ছোটবেলা থেকে গ্রামেই আমার বেড়ে ওঠা। বাসায় না বলে পুকুরে গোসল দিয়ে বাবা মার বকা খাওয়া;আইসক্রিম এবং সনপাপরিওয়ালা গ্রামে আসলে বাবা মাকে না বলে চাউল দিয়ে এগুলো কিনে খাওয়া; কানামাছি, কুতকুত, গোল্লাছুট থেকে শুরু করে আরো নানা ধরনের খেলা; ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মারামারি করা;কেরোসিনের তেল দিয়ে হারিকেন এবং প্রদীপ জ্বালিয়ে রাতে পড়াশোনা করা; দাদা দাদীর কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ভূতের গল্প শুনে আনন্দ নেয়া এসবই ছিল আমার ছোটবেলার বিনোদনের মাধ্যম। আমার জন্ম নব্বইয়ের দশকে হওয়ায় ওই সময় গুলোতে এসব করতে পেরেছি,যেগুলো থেকে এখনকার যুগের ছেলে মেয়েরা বঞ্চিত।
আবার ছোটবেলায় বাড়িতে কোন উৎসব লেগে থাকলে নিজের ভিতরে এক প্রকার প্রাণ চাঞ্চল্যতা এবং হাসি খুশি চলে আসত। সমবয়সী কেউ বাড়িতে আসলেই তার সঙ্গে খেলাধুলা ও দৌড়াদৌড়ি করে সারাটা দিন কেটে যেত। আমার বাড়ির বাইরে মাইক দিয়ে কোথাও গান-বাজনা করলে গানের তালে তালে নাচ করতাম। পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুর্গাপূজা কিংবা অন্য কোন মেলা লাগলে সেখানে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতাম। দুই -তিন দিন আগে থেকে মেলায় গিয়ে কি কিনবো না কিনবো তা নিয়ে বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে চলতো বিস্তর আলোচনা।
এখন আর এই বিষয়গুলো কেমন একটা টানে না। বন্ধুবান্ধবরাও যে যার মত কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আগের মত একসঙ্গে সময় কাটানো কিংবা খেলাধুলা করা হয় না। ছোটবেলায় হতাশা, দুঃখ কষ্ট এসব কি জিনিস তাই বুঝতাম না। আর এখন মাথার উপর বিভিন্ন ধরনের চিন্তা এসে ভর করে।ক্যারিয়ার গঠন, ভালো একটা চাকরি করো এবং বিয়ে এসব নিয়ে কথাবাত্রা এবং আড্ডা হয় বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে। জীবনে কি করব না করব তা নিয়ে ভাবার ফলে মনের মধ্যে অজান্তেই হতাশা এসে ভর করে।
ছোটবেলায় যে উপকরণ এবং মাধ্যমগুলো আমাদের হাসিখুশি রাখত,এখন সেগুলো থেকে আর বিনোদন নিতে পারিনা।ছোটবেলার বিনোদনমূলক বিষয়গুলো এখন দেখলেই মনের অজান্তে মুখে হাসি চলে আসে।আর চিন্তা করি কতই না মধুর ছিল শৈশবের কাটানোর দিন গুলো।
একদম সঠিক লিখেছেন যত বড় হচ্ছি জীবন থেকে আনন্দ গুলো তুচ্ছ হয়ে যাচ্ছে।ছেলে বেলার শৈশব মনে পরলে আচমকা কেমন মায়া লাগে কতো আনন্দ করেছি।অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
বয়সের বাড়ার সাথে আনন্দ গুলাও কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে। আপনি অনেক সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। খুবই ভালো লেগেছে।
আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।
আসলে ভাইয়া একদম বাস্তব কথা তুলে ধরেছেন বয়স যত বাড়বে আস্তে আস্তে বন্ধুবান্ধব সকলেই দূরে চলে যাবে একাকীত্ব একদম গ্রাস করে ফেলবে খুবই ভাল মন্তব্য করেছেন এবং খুবই ভালো লাগলো পড়ে
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ভাইয়া পোস্ট টি যেনো একদম মন ছুঁয়ে গেলো।
আসলেই ঠিক কথা বলেছেন আপনি একদম।
ছোট বেলার আনন্দ গুলো আমাদের ছোঁয় না আর আমরাও ছুঁতে পারি না।শুধু অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি একরাশ আফসোস নিয়ে।
এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।