আমাদের গোড়ায় গলদ পর্ব-২( ১০ ভাগ 🦊🦊🦊)
কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভাল আছেন। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। গতকাল আমি আপনাদের সাথে আমাদের লক্ষ্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছি। আজ আমি আপনাদের সাথে লক্ষ্য পূরণ করতে সবথেকে বড় যে বাধা সেটি নিয়ে আলোচনা করব।
আমরা যখন লক্ষ্য ঠিক করে ফেলি তারপরে আমাদের লক্ষ্য পূরণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। কেউ শটকার্ট কেউবা দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে। তবে আপনাদের অবশ্যই মনে রাখা উচিত সফলতার কোন শর্টকাট পদ্ধতি নেই। সফলতা অর্জন করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে একটি দীর্ঘ পথ, বিপদসংকুল পথ অতিক্রম করতে হবে। আবার এই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে ধৈর্য শক্তির প্রমাণ দিতে হবে। আপনার যদি যথেষ্ট পরিমাণে ধৈর্য শক্তি না থাকে তাহলে আপনি মাঝ পথে গিয়ে হতাশ হয়ে পড়বেন। তখন আপনি চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন কি করব সামনের দিকে এগোবো না পিছন দিকে ফিরবো? এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পরে আপনি আপনার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়বেন । তাই আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে আসলে আমরা কোন পদ্ধতি অবলম্বন করব এবং সেই পদ্ধতি পালন করতে আমরা কি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কিনা? আপনি যদি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন তাহলে প্রথমে আপনাকে আপনার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য একটি সঠিক রোডম্যাপ ঠিক করতে হবে।
এই রোড ম্যাপ কে বিজনেসের ভাষায় বলি মিশন। আর আপনি যে দীর্ঘস্থায়ী লক্ষ্যটা ঠিক করেছেন সেটাকে আমরা বলব ভিশন। প্রথমে আমরা ভিশন সম্পর্কে জানি বিষয় হচ্ছে আপনি 5 বছর বা দশ বছর পরে আপনাকে কোথায় দেখতে চান? আপনার অবস্থানটা কোথায় রাখতে চান সেটা কি আমরা বলব ভিশন। আর মিশন হচ্ছে সেই ভীষণ অর্জন করতে গিয়ে আপনি যে পদ্ধতি ধাপে ধাপে অবলম্বন করেন। অর্থাৎ আপনি নিজেকে 10 বছর পরের অবস্থানে যেতে হলে কিছু কাজ করতে হবে, কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এই প্রতিটি পদ্ধতি সাকসেস করাকে আমরা মিশন বলি। আপনারা যারা গেম খেলেন তারা দেখবেন নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য অর্জন করতে গেলে আপনাদের অনেকগুলো স্টেপ করতে হয় মানে গেমের ভাষা যেটা আমরা বলি লেভেল। তাহলে আমরা কি বুঝলাম? একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা স্বপ্ন পূরণ করতে গেলে আমাদের কয়েকটি লেভেল পার করতে হবে।
অর্থাৎ এখন যদি আমি আপনার জীবনের পড়াশোনার ক্ষেত্রে বলেন বা যে কোনো লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে বলেন, আপনাকে ছোট ছোট বিভিন্ন কাজে ভাগ করতে হবে। যে আমি এইটুকু কাজ করার পরে এটুকু করব। এইভাবে যখন আপনি একটার পর একটা করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন, তখন আপনার কাছে অনেকটাই সহজ মনে হবে। কিন্তু আমরা সেটা না করে সবগুলো একসাথে করতে চাই তখন মাঝপথে গিয়ে হতাশ হয়ে পড়ি। আমরা মানুষ আমাদের ক্লান্ত আসে, একসাথে আমরা সবকিছু চাপ সহ্য করতে পারি না। সেজন্য আমাদের চাপ কমানোর বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এই কৌশল গুলি যে যত পারফেক্ট ভাবে করতে পারে সে ততটাই সফল হতে পারে। এজন্য আমাদের কাজগুলোকে একটি রুটিন এর মধ্যে আনতে হবে। সেই সাথে নির্দিষ্ট সময়ে জন্য নির্দিষ্ট কাজ ভাগ করে নিতে হবে। সে কাজ করতে আপনি অবশ্যই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকবেন যত যাই হোক না কেন। যখন আপনি একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা মিশন অর্জন করবেন তখন আপনাকে নিজেকে পুরস্কৃত করার একটি ব্যবস্থা রাখতে হবে। আমরা যদি একবার সময় নিয়ে শ্রম দিয়ে সঠিক একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে পারি তাহলে আমাদের জীবনটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। সেই সাথে আপনি যখন কিছু কাজ করার পর ফলাফল দেখতে পাবেন তখন আপনার কাজ করার প্রতি একটি আগ্রহ জন্মাবে।
Image Source
ধরেন আপনি শেয়ারবাজারে এক কোটি টাকা ইনভেস্ট করেছেন। সেটা টাকার যে হবে তা যদি আপনি দীর্ঘ সময় না পান তাহলে আপনার ভেতরে এক সন্দেহ জেগে যাবে। আপনি দোটানায় পড়ে যাবেন যে আদৌ আপনি কোন মুনাফা পাবেন কিনা বা আপনার টাকাটা কি অবস্থায় আছে। কিন্তু আপনি যখন নির্দিষ্ট সময় পরে দেখবেন আপনার হাতে কিছু মুনাফা এসেছে। তখন আপনি কিন্তু কখনোই হতাশায় পড়বেন না, চিন্তিত হবেন না যে আপনার টাকা নেই । অর্থাৎ আমরা যে কাজ করতে চাই না কেন আমরা ফলাফল চাই, সুসংবাদ চাই । আমি একটি স্টিমিট এর উদাহরণ দিয়ে বলি এখানে আমাদের প্রায় অনেক ইউজার কাজ করে অনেক ইউজার আছে সঠিক পরিকল্পনা চিন্তাভাবনা না করে পোস্ট করে। এভাবে যখন তারা দীর্ঘ সময় অপরিকল্পিত কোয়ালিটি পোস্ট করেছে একটা সময়ে এসে তারা হতাশ হয়ে যায় কারণ এই ধরনের পোস্ট কখনো সাপোর্ট দেওয়া হয় না। আর তারা যদি পোষ্ট করার জন্য একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতো তাহলে তারা ভালো সাপোর্ট পেত পেত কাজের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যেত।
অর্থাৎ এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের ভিশন বা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করতে গেলে অবশ্যই ধাপে ধাপে এগোতে হবে। প্রতিটি স্টেপ বা লেভেল সম্পন্ন করার সাথে সাথেই নিজেকে পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। তাইলে আমরা সঠিক সময়ে সঠিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারব এবং হতাশা আমাদের কখনোই ঘিরে ধরতে পারবেনা।
ধন্যবাদ সবাইকে
চমৎকার লিখেছেন আপু আপনার ভিশন ও মিশন নিয়ে যুক্তিযুক্ত আলোচনাগুলো ভালো লেগেছে। আপনি একদম সঠিক বলেছেন আমাদের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে চাইলে কখনোই সেটা একেবারে সম্ভব নয়। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে আমাদের ধাপে ধাপে এগুতে হবে। তার মানে আমাদের মিশন টাকে ঠিক রাখতে হবে। মিশন ও ভিশন নিয়ে অত্যন্ত সুন্দর বক্তব্যটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এত সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপু আপনি ঠিকই বলেছেন, আমাদের গোড়ায় গলদ, প্রথম পর্ব পড়েছিলাম খুবই ভালো লেগেছে। দ্বিতীয় পর্বে এসে আরো বেশী ভালো লাগলো। আসলে আমরা নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করলেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পৌঁছতে গেলে আমাদের অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়। শুধু এতেই থেমে থাকেনা এর চেয়েও বড় বেশি অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যায়। তবে আমরা অনেকেই ধৈর্য ধরতে পারিনা, আবার অনেকে অধৈর্য হয়ে বিপথে চলে যাই। তবে আমাদের সকলের উচিত নিজেদের মিশন রোড, ম্যাপ ঠিকঠাক রেখে চলা নয়, চিন্তা নয় সাহস। আপনার এত সুন্দর শিক্ষনীয় পোষ্ট শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা অবিরাম।
আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে ভাইয়া।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক সুন্দর একটি বিষয় তুলে ধরেছেন যদিও প্রথম পর্বটি পড়া করা হয়নি। দ্বিতীয় পর্বটি দেখে প্রথমে আগে প্রথম পর্বটি পড়ে আসলাম এরপর দ্বিতীয় পর্ব টি এখন কমেন্ট করছি। সত্যি বলতে কোন বিষয় যদি আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করি সেটা একেবারেই কখনো এচিভ করা সম্ভব নয়, এটা আস্তে আস্তে করতে হয় ধন্যবাদ আপনাকে
আমার 2 টি পোস্ট পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনি একদম ঠিক বলেছেন ধাপে ধাপে আমাদের সামনে এগোনো উচিত।
প্রথম পর্ব পড়ে যতটা ভালো লেগেছে, দ্বিতীয় পর্ব পড়ে ঠিক ততটাই ভালো লাগলো আপু। মিশন আর ভিশন এই দুটো ব্যাপার নিয়ে অনেক চমৎকরভাবে আলোকপাত করলেন। খুব ভালো লেগেছে আমার। আর এটা একদম সত্যি কথা সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া নিজেদের লক্ষ্যে কখনোই পৌঁছানো সম্ভব নয়। অনেক ভালো লিখেছেন আপু।
আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুব খুশি হলাম ভাইয়া অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।