রবের দয়া
src
সে বহুদিন আগের কথা, আমার মা ভীষণ অসুস্থ হয়েছিলেন। মা'র চোখে এলার্জির সমস্যা হয়েছিলো। যার কারনে মা'র চোখ দিয়ে পানি পড়ছিলো। চোখ মানব শরীরের একটি প্রধান অঙ্গ হওয়ায় তার সারা শরীরও প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো৷ এই সমস্যায় ভূগতে ভূগতে সে একদিন প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল। খেতে পারে না, ঠিকমতো ঘুমাতেও পারে না৷ ডাক্তারও দেখিয়েছিলাম, ঔষধও খেয়েছিলেন কিন্তু সেই ঔষধ মায়ের অসুস্থতা তৎক্ষনাৎ দূর করতে সক্ষম ছিলো না৷ মা ব্যাথায় কাতরাচ্ছিল৷
সন্তান অসুস্থ হলে যেমন মা শান্তি পায় না তেমনি মায়ের অসুস্থতায় আমিও শান্তি পাচ্ছিলাম না৷ ডাক্তারের দেওয়া ঔষধেও কাজ হচ্ছিলো না৷ মায়ের এমন পরিস্থিতিতে আমি নিরূপায় হয়ে পড়েছিলাম। সকল উপায়ে ব্যর্থ হয়ে গভীর রাতে উঠে ওযু করে দু’রাকাআত সালাত আদাই করে মহান রবের দরবারে মায়ের অসুস্থতায় সুস্থতার আবেদন জানিয়ে কিছু চোখের পানি ঝরিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
সকালবেলা উঠে দেখি মা সম্পূর্ন সুস্থ, আলহামদুলিল্লাহ। চাওয়া যখন রবের কাছে তা তো পূরণ হবেই।
আজ আমি এবং আমার পরিবার অনেক বড় একটি বিপদের সম্মুখীন হয়েছিলাম। আমাদের ক্ষমতায় সে বিপদের মোকাবিলা করা কোনোভাবেই সম্ভব ছিলো না৷ তাই নিরুপায় হয়ে হাত গুটিয়ে চুপ করে বসে ছিলাম। আছরের নামাযের সময় হলো। বাসার মানুষ যে যার মতো সালাত আদায় করতে গেলো। কিছুক্ষণ পর শুনতে পেলাম, আমরা আপাতত বিপদমুক্ত। হয়তো সবাই ঘরের দরজায় কড়া নাড়া বিপদের বিষয়ে মহান রবকে অবগত করেছে। যদিও রব এবিষয়ে খুব ভালোভাবেই অবগত। হয়তো তার বান্দার আকুতি তিনি কবুল করে নিয়েছেন। আকুতি যত তীব্র হয় পাওয়া তত সহজ হয়।
সারকথাঃ
আপনি একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন, আপনার বিষয়ে কে সবচেয়ে বেশি অবগত। উত্তরে সবাই হয়তো বলবেন মা-বাবা। তাহলে শুনুন, যে বাবা-মা আপনার উপর এত মায়া খাটায় তাদের চেয়ে ৯৯% বেশি মায়া আছে আপনার আমার রবের। তিনি সব জানেন এবং দেখেন। পৃথিবীতে বিচরনকালে আপনার আমার সাথে যা ঘটে তা তাঁর পক্ষ হতে সাময়িক পরীক্ষা মাত্র।
তিনি হয়তো পরীক্ষা করেন আমাদের ধৈর্যের পরিধি কতটুকু। তাই মাঝে মাঝে আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন করেন৷ ধৈর্য হারিয়ে ফেললে তিনিই আবার রক্ষাও করেন৷ তিনি তার বান্দাকে দিতেই ভালোবাসেন৷ তিনি চান, তার বান্দা খারাপ কিংবা ভালো যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁকে স্মরণে রাখুক।
আপনি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন....?
তিনি তাঁর বান্দাকে দিতে কার্পণ্যতা করেন না। বরং বান্দা হিসেবে আমরাই তার কাছে চাইতে কার্পণ্যতা করি।
আল্লাহ সবার মনের কথা জানেন, বুঝেন। সবাইকে ফাকি দেয়া গেলেও তাকে ফাকি দেয়া অসম্ভব। বান্দা কে উনি নানা ভাবে পরীক্ষা করেন, বান্দা যদি রবের কাছে হাত পাতে, দোয়া করে তাহলে দোয়া কবুল হয়।
মহান আল্লাহতায়ালা এমন কিছু পারে না আমাদের এই পৃথিবীতে কিছু নেই। আপনার মা অসুস্থ ছিলেন আপনি দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহতালার কাছে দোয়া করেছেন। আসলে মন থেকে রবের কাছে প্রার্থনা চাইলে তিনি কখনো ফিরিয়ে দেন না। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত আল্লাহতালার উপর ভরসা রেখে পথচলা। একটি শিক্ষনীয় পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।