মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার।

in Incredible Indialast year

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

হ্যালো বন্ধুরা,, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি সুস্থ আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরব আপনাদের মাঝে।

addict-2713598_1280.jpg
Source

বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ মাদকাসক্তি আসক্তির প্রতি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান বিশ্বের দিকে তাকালে মাদক দ্রব্য সেবন এর মাত্রা সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।

বর্তমান সময়ের তরুণ সমাজের জন্য মাদকাসক্তি এক ভয়ঙ্কর মরণফাঁদ। মাদকাসক্তি আসক্ত হওয়ার কারণে বর্তমান সমাজ তথা রাষ্ট্রের এক কুলুষিত পরিবেশর সৃষ্টি হচ্ছে।

তাই আমাদের সবার উচিত হবে,, বর্তমান একটি সুন্দর পৃথিবীর জন্য এবং আলোকিত বিশ্বের জন্য। মাদকাসক্তির মতো জঘন্য মরণথাবা থেকে আমাদের যুবক সমাজকে রক্ষা করা সবার নৈতিক দায়িত্ব।

drugs-4260911_1280.jpg
Source
মাদকদ্রব্য হলো আমাদের প্রাকৃতিক ভাবে ও রাসায়নিকভাবে উৎপাদিত, যা নেশা তৈরি করে। আর এই সমস্ত উৎপাদিত পদার্থ যারা সেবন করে তাদেরকে বলা হয় মাদকাসক্ত।

মাদকাসক্তি এমন এক প্রকার নেশা যা একবার জড়িত হয়ে পড়লে তা থেকে অতি সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয় না।

মাদকদ্রব্য

মাদক দ্রব্য সেবনের ফলে অকালে মৃত্যু ঘটে, আমাদের পৃথিবীতে বিভিন্ন ভাবে মানুষ মাদকদ্রব্য সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। অনেক সময় খারাপ বন্ধুবান্ধব সহপাঠীর সাথে চলাচলের মাধ্যমে ধীরে ধীরে মাদকদ্রব্য সেবন এর প্রতি আসক্ত হয়ে যায়

addict-1055951_1280.webp
Source
আমাদের পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রকারের মাদকদ্রব্য রয়েছে। এর মধ্যে কিছু কিছু মাদকদ্রব্য ব্যথানাশক ও চেতনানাশক হিসেবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

তবে অধিকাংশ মাদক নেশাকারী পদার্থ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে মাদকাসক্তি ব্যক্তিগণ। মাদকদ্রব্য গুলোর মধ্যে হতে পারে মদ, গাজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল, হিরোইন, আফিম এছাড়া বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য রয়েছে যেগুলো আমার নাম জানা নেই।

আমরা সবাই জানি তরুণ সমাজে বড় একটি অংশ ধ্বংসের পথে মেতে উঠেছে। আর ধ্বংস থেকে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন উপায় রয়েছে। যেগুলো অবলম্বন করলে আমরা ধীরে ধীরে এ সমস্ত মরণ আসক্ত থেকে বের হতে পারি।

আর আমরা সবাই জানি এগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ। তা সত্বেও কিছু মাফিয়া আমাদের সুন্দর সমাজকে এবং যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে মেতে তুলেছে।

বর্তমানে মাদকের উৎস বিশ্বব্যাপী ধরা চলে। কারণ এখন প্রায় সব দেশে অবৈধভাবে এ সমস্ত মাদক উৎপাদন করে থাকেন। আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে মাদক উৎপাদিত হয়ে থাকে অবৈধভাবে।

মাদকদ্রব্য উৎপাদনের সাথে জড়িত রয়েছে কিছু অসাধু মুনাফালোভী বিশাল চক্র। আর চক্রগুলো গ্রাম থেকে শুরু করে বড় বড় শহর রাষ্ট্র ও এই অসাধু কারবার করে থাকে।

মাদকদ্রব্যর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন বা পুরাতন মাদক হল আফিম। আমরা প্রায় খবরে কাগজে শুনে থাকি। আফিম উৎপাদন হয়ে থাকে পপি নামক এক উদ্ভিদ থেকে।

আফিম বিশেষ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে তৈরি করা হয়ে থাকে "মরফিন বেস" আর মরফিন থেকে উৎপাদন হয়ে থাকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। যেমন হিরোইনের মতো জঘন্য মাদক দ্রব্য এগুলো আফিম থেকে উৎপাদন হয়ে থাকে।

আফিম আপনারা অনেকেই চিনে থাকবেন। অনেকটা দেখতে গোলাপ ফুলের মত। মূলত এগুলো থেকে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ উৎপাদন করাও হয়ে থাকে এবং এগুলো বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

আর আফিম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উৎপাদন করা হয়ে থাকে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এগুলোকে বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উৎপাদন করে থাকে।

সেই অসাধু ব্যবসায়ীগণ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পদ্ধতিতে মাদকদ্রব্য মাদক সেবনের হাতে তুলে দিয়ে থাকে।

মাদকাসক্ত হওয়ার কারণ

আমাদের জীবনে অনেকে সামান্য আঘাতে হতাশাগ্রস্থ ও সাময়িক দুঃখবোধ স্বস্তি লাভের আশায় মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকে।

women-4029705_1280.jpg
Source
অনেকেই আবার বন্ধুবান্ধব সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দ উল্লাস করার জন্য মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এই আনন্দ উল্লাস আমাদের জীবনকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছি।

এভাবে এক সময় আমরা মাদকদ্রব্য প্রতি আসক্তি হয়ে যাই। একটি কথায় আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।

তাই আমাদের সবার উচিত হবে সঠিক সহপাঠি নির্বাচন করা। যেন সেই সহপাঠী কখনো মাদকদ্রব্যের মতো ভয়ংকর কাজের সাথে জড়িত না হয়।

এভাবে অনেকেই অন্যর প্ররোচানায় মাদক দ্রব্য গ্রহণ করে। অনেকে কৌতুহলবশত মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে থাকে।

এই মাদকদ্রব্য যে যেভাবে প্রথম গ্রহণ করুক না কেন, এই আসক্তি থেকে বের হওয়া তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে।

মাদকাসক্তির কুফল

মাদকদ্রব্য যারা গ্রহণ করে তাহলে দেখতে পারবেন তার ভিতরে বিবেক বুদ্ধি লোপ পেয়েছে। তার ক্ষুধা তৃষ্ণার অনুভূতি কমে যাবে।

মাদক সেবনকারীর দেহের ওজন কমতে থাকবে। মাদক সেবনকারী হাসি কান্নার বিবেক বুদ্ধি থাকেনা। এক পর্যায় তার জীবন মৃত্যুর অবস্থায় পৌঁছায়।

এছাড়া মাদক সেবনকারীর বিভিন্ন কুফল আপনারা দেখতে পারবেন। মাদকদ্রব্য মূল্য বেশি হওয়ায় অল্প দিনে মাদকাসক্তির সঞ্চিত অর্থ শেষ হয়ে যাবে। তখন সে অবৈধ উপায় অর্থ সংগ্রহ করার চেষ্টা করবে।

thief-1562699_1280.jpg
Source
ধীরে ধীরে সে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এর মতন জঘন্য অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ে।

মাদকাসক্তি ব্যক্তিরা ধীরে ধীরে তারা শারীরিক মানসিক নিজেদের ক্ষতির পাশাপাশি পরিবার-পরিজন আত্মীয় স্বজনের ও ক্ষতি করে থাকে।

মাদকাসক্তির আসক্তির কারণে নিজে অধঃপতনে চলে যায় সাথে সাথে তার পরিবার সমাজ রাষ্ট্র তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

alcoholic-6708280_1280.jpg
Source
মাদকাসক্তির ব্যক্তির কারণে একটি সমাজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। নষ্ট হয়ে যেতে পারে আরো একটি পরিবার।

একটি রাষ্ট্রের জন্য হুমকির কারণ হয়ে যেতে পারে কিভাবে আসুন জানি। আমরা সবাই জানি একটি দেশের উন্নয়নের জন্য সর্বদা যুবক বয়সী মানুষদের সবচাইতে বেশি প্রয়োজন।

দেশের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য যুবক-যুবতী বয়সী লোক সবচেয়ে উপযুক্ত। তাই নারী ও পুরুষ এই বয়সে মাদকাসক্তি আসক্তি হলে দেশের উন্নয়নের বাধাগ্রস্ত হয়। সেই সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে বিনষ্ট করে দেয়।

মাদকাসক্তি শক্তির প্রতিকার

মাদকসক্তি থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক কাজকর্ম করে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন সংস্থা মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে।

মাদকাসক্তি ব্যক্তির জন্য শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা প্রদান করা যায় এমন সংগঠন গড়ে তুলতে হবে।

মাদকের হাত থেকে দেশের যুবসমাজকে বাঁচানোর জন্য যথাযথ কর্মের ব্যবস্থা করতে হবে তাদের। সাধারণত বেকারত্বের হতাশার কারনে নানান ধরনের খারাপ কাজের সাথে লিপ্ত থাকে মানুষ।

যারা মাদকদ্রব্য বিক্রি করে তাদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা ও কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে তাদের জন্য।

প্রিয় বন্ধুরা মাদকাসক্তির কারণে আমাদের পরিবারে যে কোন জায়গা অশান্তি সৃষ্টি হলে সেই অশান্তি গোটা সমাজ গ্রাস করে। তাই আসুন মাদকাসক্তিকে না বলি সুস্থ সুন্দর সমাজ গড়ি।

প্রিয় বন্ধুরা আমার লেখার বিষয়বস্তু এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

Sort:  
 last year 

ভাই কী বলবো। বর্তমান মাদকদ্রব্য আমাদের সমাজের জন্য বিশাল এক অভিশাপ। এই অভিশাপ থেকে বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করা খুব মুশকিল। কেননা যেকোন মাদকদ্রব্য এখন যেখানে সেখানে পাওয়া যায়। হাতের নাগালে হওয়াতে যেকেউ এর দিকে ঝুকছে এখন।

আপনি আপনার লেখনিতে বেশ চমৎকারভাবে মাদকদ্রব্য বিষয়ে আপনার অভিমত ও এর থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় উপস্থাপন করেছেন। যা পড়ে আমিও অনেক কিছু জানলাম ও শিখলাম। ধন্যবাদ ভাই, মাদকদ্রব্য নিয়ে দারুণ একটি লিখা আমাদের উপহার দেয়ার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময়।

 last year 

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

This post has been upvoted through Steemcurator09.


Team Newcomer- Curation Guidelines for June 2023
Curated by - @goodybest

 last year 

Thank you.

Loading...
 last year 

বর্তমানে মাদকাসক্ত প্রায় অধিকাংশ যুবকরা। তাই তাদের কে ফেরানো খুব কঠিন। তাই মাদক প্রতিরোধে পরিবার ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা, শিক্ষা, পরিমিত জীবন যাপন, বন্ধু নির্বাচন, দায়িত্বশীলতা ইত্যাদি মাদকাসক্তি প্রতিরোধ ও প্রতিকারের পথ। তাই পরিবার হতে তাদের পরামর্শ দিতে হবে যেমন সন্তানের উপর খেয়াল রাখতে হবে যে সে কোন অস্বাভাবিক জীবন যাপন করছে কিনা, কেমন বন্ধু বান্ধবের সাথে সে মিশছে।
পরিবারের কেও মাদকে আসক্ত হলে তাকে এর খারাপ দিকগুলো বোঝাতে হবে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তুলতে হবে।
খেলাধূলাসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিয়োজিত থাকতে উৎসাহিত করতে হবে।
তাদেরকে বোঝাতে হবে যে মাদকদ্রব্য সেবন বন্ধ করার জন্য নিজের ইচ্ছায় যথেষ্ট । তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আমাদের মাঝে এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করে জানানোর জন্য।ভালো থাকবে ছোট ভাই

 last year 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় ভাই। আমার পোষ্টের সঙ্গে আপনার মন্তব্য যথাসাধ্য অনেক সুন্দর হয়েছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 67703.52
ETH 3449.65
USDT 1.00
SBD 2.73