নালিশ যখন নিজের কাছে!(Remember to be kind to yourself, even when you're having negative thoughts!)

in Incredible India5 days ago (edited)
1000028689.png

শারীরিক পরিস্থিতি আজকে বিশেষ সুবিধার নয়, উপরন্তু এই প্রথম কমিউনিটির একটি কাজ একেবারেই মাথায় ছিল না, অন্যন্য কাজের ভিড়ে!

বিগত দু'বছরে এমনটা কখনোই হয়নি, সবটা মিলিয়ে আজকের নালিশ নিজের কাছে।
কারণ, আমি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কখনোই পিছপা হই নি জ্ঞানত!

কথায় বলে উন্নতি কখনো একা আসে না, সঙ্গে নিয়ে আসে পরীক্ষা। সেটা ব্যাক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রেও যেমন প্রযোজ্য, তেমনি কর্ম জীবনের ক্ষেত্রেও।

অন্যের প্রতি নালিশ আমরা বিভিন্ন আবেগের মাধ্যমে উগড়ে দিয়ে থাকি, কিন্তু নালিশ যখন নিজের প্রতি থাকে তখনও কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না আমি নিজেও একজন মানুষ।

কাজেই, অন্যের প্রতি তথা নিজের প্রতি সমান দৃষ্টি দিয়ে বিচারের প্রয়োজন আছে, যদি কোনো খামতি অনিচ্ছাকৃত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে এবং খানিক ইচ্ছেকৃত হলে নিজেকে শুধরে নেওয়া উচিত।

যদিও আমার বিশেষ সোশ্যাল মিডিয়া ঘাটার সময় হয় না, তবুও কিছু যখন অতিমাত্রায় আলোচিত হয়, সেটা বন্ধুদের মাধ্যমে অথবা কোনো না কোনোভাবে কানে পৌঁছে যায়।

1000019559.jpg
1000019560.jpg
(ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া সহজ, নিজেকে আলদা প্রমাণ করাই তো চ্যালেঞ্জ)

এরকম একটি ঘটনা শুনলাম আজকাল ফেসবুক এ বেশ চর্চিত এখন;
বিষয়টি একটি মেয়ের আত্মঘাতী হবার আগে করে যাওয়া ভিডিও নিয়ে।

অনেকেই মেয়েটার প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে শুনলাম, তবে পুরো বিস্তারিত ঘটনা জানার পরে, এটা বুঝলাম মেয়েটির নিজের তথা পরিবারের অনেকের প্রতি নালিশ ছিল বিভিন্ন পারিবারিক বিষয় নিয়ে!

যদি একজন মানুষ হিসেবে আমার অভিমত এক্ষেত্রে দিতেই হয়, তাহলে আমি মেয়েটিকে স্বার্থপর আক্ষা দেবো।
কারণ, মেয়েটি শুরু থেকে শেষ নিজে কি পায়নি সেটা বলে গেছে, এবং শেষে মেয়েকে শক্ত হতে বলে গেছে।

একটা ২৪ বছরের মেয়ে যা পারলো না, সেটা ওই ছোট্ট শিশুকে বলে নিজে পালিয়ে বাঁচাকে আমি স্বার্থপরতার আখ্যা ছাড়া কিছু দিতে পারলাম না।

নিজের জীবনে যা কিছু ঘটেছে ভবিষ্যত হিসেবে নিজের মেয়েকে সেটাই উপহার দিয়ে যাওয়াকে আর যাইহোক বাহবা দিতে পারছি না।

আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কিছু লুকোনো গল্প আছে, কিছু কারোর সমক্ষে আমরা তুলে ধরতে পারি, আর কিছু সারাজীবন আড়ালে নিঃশব্দে বয়ে চলতে হয়।

1000017615.jpg
1000017614.jpg
1000010168.jpg
(গোলাপের সুঘ্রাণ পেতে হলে কাঁটার যন্ত্রণা নেবার অভ্যেস করতে হবে বৈ কি!)

এটাকেই জীবনযুদ্ধ বলে, আর যারা পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে, জীবনযুদ্ধে হেরে যায় আসলে তারা জীবনকে তো ছোটো করেই, সাথে কিছু মানুষ যারা এই পৃথিবীতে তাদের ইচ্ছেতে হয়তো আসেনি;
পিতা , মাতার যৌথ সম্মতিতে এসেছে, তাদের ভবিষ্যত জীবন ধ্বংস করে দিয়ে যায়।

এদের প্রতি আমার কখনোই কোনো সমবেদনা কাজ করে না, বরঞ্চ নিজের যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে যারা প্রমাণ করতে প্রতিনিয়ত বদ্ধপরিকর তাদেরকে আমি কুর্নিশ করি।

তাদের উদ্দেশ্য সমবেদনা পাওয়া নয়, পৃথিবী ত্যাগ করে নিজেকে মহান, নিজে ঠিক প্রমাণ করা নয়, বরঞ্চ বেঁচে থেকে জীবনের লড়াইটা চালিয়ে সাবলম্বী হয়ে পর প্রজন্মকে উৎসাহিত করাই এদের মূল লক্ষ্য।

সাথে নিঃশব্দে সেই মানুষগুলোকে উচিত জবাব দেওয়া যারা মনে করেন তারা ছাড়া এই মানুষগুলো বাঁচতে অক্ষম।

তাই আজকে এমন একটি শীর্ষক নির্বাচন করেছি, যেখানে আমাদের ভাবার আছে, যদি অন্যের প্রতি নালিশ না হয়ে, নালিশ নিজের প্রতি হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের কি করণীয়?

কেনো আমার সাথেই এমন হয় বা হলো? কেনো আমি? আর কি আছে জীবনে যার জন্য বেঁচে থাকা? আর নিতে পারছি না?

এই অনুভূতির মধ্যে দিয়ে যায়নি পৃথিবীতে এমন মানুষ আছে বলে আমার মনে হয় না!

তবে, প্রশ্ন গুলোকে যদি এভাবে ভাবা যায়?

কেনো আমি নই?
আমি তো সৃষ্টিকর্তার প্রিয় আমাকে তো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেই হবে!
জীবন একটাই, তাই ভালো মন্দ দুটোর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে, তবেই তো জীবনের শিক্ষা দিয়ে যেতে পারবো আগামী প্রজন্মদের।

জীবনে প্রতিটা দিন আসে, নতুন দিন নতুন ভাবনা নিয়ে, নিজেকে উন্নত করার সুযোগ নিয়ে, আরও একবার লড়াইটা করেই দেখি না, হেরে না গিয়ে! চলে গেলে তো জিতে যাবে সেই মানুষগুলো, যারা মনে প্রাণে চেয়েছিল আমি হেরে যাই!

নেওয়ার প্রয়োজন তো মানুষের থেকে নয়, নিজের থেকে নিজের ভালোটা নেওয়া, সেটা বোধহয় আমাদের সর্বাগ্রে শেখার প্রয়োজন।

নিজেকে হেরে যেতে দেওয়া নয়, লড়াই করে প্রমাণ করা, জীবন একটাই আর সেটা আমার জীবন, যেটা সৃষ্টিকর্তা দিয়েছেন ভালো মন্দ নিয়ে শেষ পর্যন্ত তাকে উপভোগ করে, নিজের তথা পরের স্বার্থে কিছু করে যাবার জন্য।
এমনিতেই হেলায় হারাতে নয়।

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
 4 days ago 

কদিন আগে ইউটিউবে একটা ভিডিও বারবার চোখের সামনে দিয়ে ঘুরাঘরি করতে ছিল। আমি দেখি নাই ,অবশ্য আগেও এমন অনেক ফেসবুক লাইভ এর কথা কানে এসেছে যে ,লাইভে এসে কথাবলতে বলতে সুইসাইড করেছে।
এসবের কথা শুনলেই বিরক্তি লাগে আমার। কিন্তু আমার কদিন আমার হাজবেন্ডকে দেখলাম খুব দুঃখী দুঃখী মুখ করে বসে বসে ভিডিওটা দেখতেছে। সে তার সময় আর বাচ্চাকে উদ্দেশ্য করেই মনে হয় কথা বলতেছিলো। আমার সামান্যই চোখে পড়েছিল। আমি তোমাদের খুব ভালোবাসি এই ধরনের কথা বলতেছিলো।

তখন আমি আমার হাজবেন্ডকে বলেছিলাম যে ,কি দেখতেছো এসব ?! জীবন থেকে যারা পালিয়ে যায় তাদের দেখে কোনো লাভ আছে। আমার কারণেই মনে হয় বেচারা আর ভিডিওটা শেষ করে নাই।
আমি জানি না আপনি সেই একই ভিডিওর কথা লিখেছেন কিনা। তবে আপনার লেখার সাথে আমিও একমত।

জীবন একটাই ,একে এভাবে নষ্ট করার কোনো মানেই নেই।
ভালো লাগলো আপনার লেখা পড়ে। ভালো থাকবেন সবসময়।

Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.

Loading...
 4 days ago 
  • জীবনে পথচলা কখনো কখনো কঠিন হলেও জীবন সুন্দর। তাই তো সকলেই চেষ্টা করে তাকে সুন্দর ভাবে সাজাতে। যদিও ফেসবুকের ঘটনাটা দেখিনি। তবে মেয়েটি শুধু মাত্র স্বার্থপর নয়, বরং মা হওয়ারও অযোগ্য।

  • যারা প্রকৃতপক্ষে মা হয় তারা যেকোনো কষ্টের বিনিময়ে সন্তানকে কষ্ট পাওয়া থেকে রক্ষা করতে চায়। আর এই মেয়েটা সন্তানের জন্যে আজীবনের কষ্ট রেখে গেলো। কারণ এই পৃথিবীতে মাকে ছেড়ে বেঁচে থাকার মতো কষ্ট আর কিছুতেই নেই।

চলে গেলে তো জিতে যাবে সেই মানুষগুলো, যারা মনে প্রাণে চেয়েছিল আমি হেরে যাই!

  • একদম সঠিক কথা এটি। জন্ম যখন হয়েছে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর মৃত্যু অনিবার্য,কথাটা আমরা সকলেই জানি। তবে সময়ের আগে জীবনের লড়াই থেকে, কঠিন পরিস্থিতি পালিয়ে যাওয়া মানে তাদের জিতিয়ে দেওয়া, যারা আমাদের জীবনে ঐ কঠিন পরিস্থিতি গুলো তৈরি করে। বরাবরের মতো আপনার লেখা মন ছুঁয়ে গেলো। ভালো থাকবেন।
 4 days ago 

শিরোনাম দেখে আসলে অন্য কিছু ভেবে পরতে শুরু করি, কিন্তু যতই ভেতরের দিকে এগুচ্ছিলাম, বুঝেছি এই লেখার গভীরতা কত, বিশেষ করে যাদেরজীবন নিয়ে ভিযোগের শেষ নেই তাদের জন্যে একেবারে আদর্শ লেখা। আমিও ওই মেয়ের ভিডিও টা দেখেছি, এবং আমার কাছে ব্যাপারটা মনে হয়েছিল নিছক আবেগ আর ভাইরাল হবার নেশায় করা একটা ভিডিও। ধন্যবাদ ম্যাম সুন্দর অনুপ্রেরণামূলক একটা লেখা উপহার দেবার জন্যে।

Congratulations!

Your post has been upvoted by @steemladies.
The community where the Steemian ladies can be free to express themselves, be creative, learn from each other, and give support to their fellow lady Steemians.

Manually curated by patjewell for Steem For Ladies

Steem For Ladies

 yesterday 

অন্যের প্রতি নালিশ আমরা বিভিন্ন আবেগের মাধ্যমে উগড়ে দিয়ে থাকি, কিন্তু নালিশ যখন নিজের প্রতি থাকে তখনও কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না আমি নিজেও একজন মানুষ।

আমাদের জীবনে সবার এই একটা সমস্যা। আমরা অন্যের প্রতি নালিশ দিতে অনেক বেশি আগ্রহ প্রকাশ করি। যদি আমরা নিজেদেরকে সেই জায়গায় দাঁড় করিয়ে দেখি, তাহলে কিন্তু নিজেদের প্রতি নালিশ আরো বেশি হওয়া দরকার। কে কি করছে সেটা চিন্তা তা না করে। আমরা যদি আমাদের সমস্যাগুলোকে সমাধান করার চেষ্টা করে নিজের ভুলগুলোকে শুধরে নেয়ার চেষ্টা করি। তাহলে আমার মনে হয় না অন্যের প্রতি আমাদের নালিশ কখনো মনের মধ্যে জন্ম নেবে।

এই ভিডিওটা আমি নিজেও বেশ কয়েকবার দেখেছি এবং মৃত্যুর আগে মেয়েটার নালিশ তার পরিবারের প্রতি। তার একটা সন্তানের প্রতি তার যে কথাগুলো ছিল, সেগুলো সত্যিই হৃদয় লেগেছিল। তবে আমার কাছে মনে হয় তার এই নালিশ কিংবা অভিমান অভিযোগ, নিজের পরিবারের কাছে থাকার পেছনে যে কারণগুলো রয়েছে। সেগুলো যদি একটু সমাধান করার চেষ্টা করত। তাহলে তাকে আত্মহত্যা করতে হতো না।

কেনো আমার সাথেই এমন হয় বা হলো? কেনো আমি? আর কি আছে জীবনে যার জন্য বেঁচে থাকা? আর নিতে পারছি না?

এই প্রশ্নগুলো আমি নিজেকে প্রতিনিয়ত করি, কেন আমার সাথে এমন করছে, তাহলে কি আল্লাহতালা আমাকে কখনো পছন্দ করেনি, নাকি আমি তার পছন্দের তালিকায় আজ পর্যন্ত নিজের নাম লিখাতে পারিনি। পরক্ষণে মনে হয় আল্লাহতালা ওই মানুষটা কেই অনেক বেশি কষ্ট দেয়, অনেক বেশি পরীক্ষার মধ্যে ফেলে দেয়। যাকে তিনি অনেক বেশি ভালোবাসে।

আমাদের জীবন সম্পর্কে আমাদের অভিযোগ অনেক কিন্তু সেই অভিযোগ গুলো অবশ্যই সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। আমরা যদি শুধু এটা চিন্তা করে যে আমাদের সাথেই এমন হচ্ছে। তাহলে এটা ভুল এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের সমস্যা আছে। কিছু মানুষ সেই সমস্যা গুলোকে সমাধান করার চেষ্টা করে আর কিছু মানুষ নিজের জীবন দিয়ে দেয়। যেমনটা ওই মেয়েটা দিয়েছিল, ধন্যবাদ আপনাকে উপরোক্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। জানিনা আপনার পোস্ট অনুযায়ী মন্তব্য প্রকাশ করতে পেরেছি কিনা, তবে চেষ্টা করেছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 62954.14
ETH 3466.39
USDT 1.00
SBD 2.51