আজকের কবিতা - "ফেলে আসা দিনগুলো!" Poetry:- "Days gone by!"
|
---|
মনে পড়ে? দলবেঁধে...
একসাথে সেই... পথ চলা?
আলু কাবলি, ফুচকা,আচার,
নিজেদের পছন্দের খাবারের কথা বলা!
মজার ছলে, একে অপরের
দুষ্টু মিষ্টি খুনসুঁটি ভরা কথা;
এক্ মুহূর্তেই নিরুদ্দেশ
পুরোনো মান অভিমান,
জমে থাকা সমস্ত ব্যথা!
চলতে গিয়ে হোঁচট খেলে
হাত ধরে টেনে তোলা;
লাগেনি তো বেশি?
দেখি, দেখি.. লেগেছে কোথায় একবার?
ক্ষত সারাতে হয়ে জেরবার!
ধুলো ঝেড়ে উঠে এক গাল হাসি;
ধুস! এইটুকু কাটা! চল্ আজ আসি!
এই তো সেদিন বাড়ি ফিরতাম
দুই ঝুটি নাড়তে নাড়তে;
চোখে পড়লে ফলের গাছ
এদিক ওদিক চেয়ে..
দাড়িয়ে যেতেম গাছের ফল পাড়তে!
দেখলে যদিও কেউ বলতো না কভু কিছু
জানতো সকলে এ এক্ নামকরা বিচ্ছু!
বড়রা তখন ছিল অন্যরকম;
ছোটদের প্রতি স্নেহ ব্যতিক্রম!
নিজের বাড়িতে কম,
প্রতিবেশীর বাড়িতে ভিড় জমাতাম বেশি;
একবেলা বাড়িতে খেলে
অন্যবেলা মনে হতো
জেঠিমা কি রেঁধেছে দেখে আসি!
হঠাৎ উপস্থিতিতে ছিল না বিরক্তি;
উপস্থিতিতেই অভ্যস্ত, ছিল আসক্তি!
খেলার সাথীদের মিলেমিশে,
এক্ সাথে বনভোজন;
এক্ এক্ জনের বাড়ি থেকে
সামগ্রীর আয়োজন।
ভালো সময় ক্ষণস্থায়ী! এটা হয়তো সকলের সম্মিলিত অনুভূতি! অথচ সময় কিন্তু সময়ের মত করেই পার হয়;
শুধু বদলে যায় মানুষ এবং পরিস্থিতি!
পিছু ফিরে চাই না ততক্ষণ,
বর্তমান চলে, নিজেদের পছন্দ মতন যতক্ষণ।
তুলনা কিন্তু সবসময় বর্তমানের সাথে অতীতের হয়, ভবিষ্যত অধরাই রয়ে যায়!
কোনো কিছু নিয়ে অতিরঞ্জন, অতিরিক্ত কোনকিছুই মানব জীবনে ক্ষতি বিয়ে নিয়ে আসে।
আমি একটা কথা বিশ্বাস করি, আর সেটা হলো, যখন কেউ ভালো সময়ের মধ্যে দিয়ে যায়, তার বোধহয় সেই সময় বেশি সচেতন থাকার প্রয়োজন।
তবে, মানুষ স্বভাবগত ভাবে উল্টোটি করে থাকে।
ভোরের আগের তিমির সবচাইতে অধিক হয়, তাই খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে গেলে বিচলিত হবার নেই, শুধু শান্ত ভাবে উদিত সূর্যের অপেক্ষা ছাড়া।
অধিক সময় দেখা যায়, বেহিসাবি আচরণ, বেহিসাবি দিন যাপন, বেহিসাবি সিদ্ধান্ত আমাদের জীবনের আধারের মুল স্রোত বয়ে নিয়ে আসে।
তবে, ব্যতিক্রম নেই সেটা বলবো না, অনেক সময় সৃষ্টিকর্তা সততা, নীতি, ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিতেও সময় সময় কিছু সমস্যা দিয়ে আমাদের বিচক্ষণতার পরীক্ষা করেন।
মজার বিষয় হলো, আমরা বিপদে সচেতন থাকি, আর অতীত হাতড়ে বের করবার প্রয়াস করি বর্তমানে নিজের সাথে কেনো এমনটা হচ্ছে!
খুব মূল্যবান একটি কথা আমাদের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তাঁর একটি বক্তৃতায় বলেছিলেন, আর কথাটি ছিল, আমাদের কর্ম হলো আমাদের সফলতার চাবিকাঠি, আর ভাগ্য হলো বোনাস!
আরেকটি উদাহরণ আমি আগেও একটি লেখায় উল্লেখ করেছিলাম, যেটি স্মৃতি ইরানি একবার নিজের জীবনের সফলতার গল্প বলতে গিয়ে বলেছিলেন, আজকে আর একবার ভাগ করছি, কারণ আমার মনে হয়, আমরা নিজেদের কর্মের দ্বারা এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তের দ্বারা খানিক ভাগ্যের পথ প্রশস্থ করতে সক্ষম।
স্মৃতি ইরানি (একজন অভিনেত্রী এবং রাজনীতিবিদ) একটি সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছিলেন এক্ জ্যোতিষীকে তার বাবা বাড়ীতে ডেকেছিলেন, এবং স্মৃতি ইরানির হাত দেখে বলেছিল, আপনার মেয়ে জীবনে সুখে সংসার করা লেখা আছে, এবং খুব তাড়াতাড়ি বিবাহ যোগ আছে!
কথাটা মনে ধরেনি স্মৃতি ইরানির, তার স্বপ্ন ছিল কিছু করে দেখাবার, আর হলোও তাই, প্রথমে ছোটো পর্দার নামকরা তুলসী চরিত্র ঘরে ঘরে সমাদৃত হলো, এরপরের যাত্রা শুরু হলো রাজনীতি দিয়ে!
আজকে, তিনি বিবাহিত বটে, তবে কর্মের দ্বারা নিজের স্বপ্ন পূরণ করে, জ্যোতিষীর কথাকে ভুল প্রমাণিত করে, সমগ্র দেশে সমাদৃত।
আমাদের জীবনের লাগাম যদি অন্যের হাতে দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে শেষমেশ শৈশবের দিনগুলো সহ, পাতে পড়ে থাকে হারিয়ে যাওয়া মুহুর্ত আর শৈশবের কিছু অমূল্য স্মৃতি!
আপনার লেখা কবিতার প্রতিটি লাইনে নিজের ছোটবেলার একঝলক দেখতে পেলাম। সেটা অন্যের গাছে পছন্দের ফল পাড়া থেকে শুরু করে, পাশের বাড়ি পছন্দসই কোনো রান্না হয়েছে কিনা সেই খোঁজ নেওয়া পর্যন্ত। তবে উপরোক্ত লাইনটি ছোটবেলার সবথেকে আনন্দঘন মুহূর্ত গুলির মধ্যে একটির কথা মনে করিয়ে দিলো।
যখন আশেপাশের সকলে মিলে পিকনিকের আয়োজন করা হতো, তখন আনন্দ হত অন্যরকম। এখন পিকনিক মানেই সেটা হয় বিরিয়ানি, নয় ফ্রাইড রাইস। যা তৈরি করার জন্য আলাদা করে বিশেষ চাল কেনা হয়।
তবে আমার ছোটো বেলায় পিকনিক মানে এক এক বাড়ি থেকে চাল, ডিম, আলু, তেল মশলা সমস্ত সংগ্রহ করে এক জায়গায় বসে রান্না করা ও খাওয়া দাওয়া করা হতো। তাই সেক্ষেত্রে এক এক বাড়ি থেকে এক এক ধরনের চাল আসতো। সব ধরনের চাল একসাথে করেই ভাত রান্না করা হলেও যেন সেই ভাতের স্বাদ আজকালকার দিনের সব থেকে দামি চালের কাছেও হার মানে। সেই সকল দিনগুলিকে সত্যিই অনেক বেশি মিস করি। আপনার কবিতা তথা লেখার মাধ্যমে নিজের ছোটবেলার পাশাপাশি, আমাদের সকলকে ছোটবেলায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ম্যাম। ভালো থাকবেন।
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
নদীর স্রোত আর ঘড়ির কাঁটা কখনো থেমে নাই চলছে নিজের আপন গতিতে। সময় তো তার মত করেই পার হবে এটাই স্বাভাবিক। এটা একদম ঠিক যে সময়ের সাথে সাথে মানুষের পরিস্থিতি বদলে যাই।
আমাদের বয়স যতই বাড়ুক না কেন ফেলে আসা দিনগুলো কখনোই ভুলতে পারবো না। ছোটবেলায় আমরা অবুঝ ছিলাম তাই বুঝতাম না অনেক কিছু।
আমার কথা হল জ্যোতিষী যদি হাত দেখে অন্যের ভাগ্য বদলাতে পারে তাহলে জ্যোতিষী কেন তার নিজের ভাগ্য এখনো বদলাতে পারল না। সৎকাজ সঠিক দোয়া সৃষ্টিকর্তার উপরে ভরসা রেখে নিজের পরিশ্রম কর্মের মধ্য দিয়েই নিজের ভাগ্য বদলানো সম্ভব কোন জ্যোতিষ এর কথাই ভাগ্য বদলায় না।