আমদের ব্যবহার, আমাদের প্রকৃত মানসিকতার পরিচয় বাহক।steemCreated with Sketch.

in Incredible Indialast year
IMG_20231109_213037.png

আমরা সকলেই মানুষ কাজেই ভুলের ঊর্দ্ধে কেউ নই! তবে আমাদের সুস্থ্য মানসিকতা প্রকাশ পায় আমাদের আচরণে।

আমি প্রায়শঃই বলি, রাস্তায় বেরোলে আমাদের গায়ে লেখা থাকে না, আমরা কে কতখানি শিক্ষিত।
তবে আমাদের অন্যের প্রতি ব্যবহার এবং আচরণ আমাদের পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপশি আমাদের পারিবারিক শিক্ষার নজির বহন করে।

আমরা যতই আধুনিক হই না কেনো, অথবা সময়ের সাথে প্রযুক্তির উন্নতি যতই হোক না কেনো, কিছু জিনিষ আজও বাজারে বিক্রিত পণ্যের আওতা ভুক্ত নয়।
সেগুলো আমাদের অর্জন করতে হয়, কখনো ব্যবহার দিয়ে আবার কখনো অপরকে সম্মান দিয়ে।

উন্নত মানসিকতার মধ্যে সম্মান কিন্তু সমান গুরুত্ব বহন করে, এবং এমনটা একেবারেই নয় কেবলমাত্র বয়সে বড় হলেই সে কেবল সম্মান পাবার একচ্ছত্র অধিকার পেয়ে যায়।

একটি শিশু পর্যন্ত সমান সম্মানের অধিকারী!
কার সামনে কতটুকু বলতে হবে, কি বলতে হবে, কখন বলতে হবে, এগুলো কিন্তু একটি সুস্থ্য মানসিকতার সাথে সঠিক শিক্ষার পরিচয় বাহক।

দেখবেন অনেকেই কথায় কথায় বলে বাতাসে চুল পেকেছে!
কথাটার অভ্যন্তরীণ অর্থ হলো সময়ের সাথে বয়েসের সংখ্যা বাড়লেও মানসিকতায় সেই সকল মানুষ আজও পিছিয়ে।

সকলের সবকিছু, সব কথা, সব কাজ পছন্দ হবে এমনটা নয়, তবে আমি মনে করি হিসেব করে ব্যাক্তি বিশেষে কথা বলা শেখাটা আবশ্যকীয়।

যেহেতু কথা একবার মুখ থেকে বেরিয়ে গেলে ফেরত নেওয়া সম্ভব নয়, কাজেই যেকোনো কথা বলার আগে অবশ্যই হিসেব করে বলা উচিত।

বিশেষ করে যদি নিজেদের কাছে সম্পূর্ণ তথ্য না থাকে!
সর্বাগ্রে যেকোনো বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ তথ্য নিয়ে তবেই মন্তব্য করাটা সুস্থ্য মানসিকতার লক্ষণ।

এই প্ল্যাটফর্মে কাজের সুবাদে বহু দেশের মানুষের সংস্পর্শে আসার সুযোগ হয়েছে, এবং যারা আমার আগে থেকে এখানে কাজ করছেন তাদেরকে সবসময় গুরুজন হিসেবেই দেখেছি, এখানে বয়স নয়, অভিজ্ঞতা দিয়ে বিচার করার প্রয়োজন বোধ করেছি বেশি।

কাউকে অপমান করতে বিশেষ কৃতিত্বের প্রয়োজন হয় না, এটা সহজ কাজ, কিন্তু সম্মান দেওয়া শিখতে সবাই পারে না।

সমাজের অঙ্গ হিসেবে যেটা অত্যন্ত জরুরি, কারণ আজকে আমি যা অন্যকে দেবো, কালকে আমার কাছে সেটাই ঘুরে আসবে।

আমি যদি সুস্থ্য মানসিকতার অধিকারী হই, তবেই অন্যকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে সক্ষম হতে পারবো।

অনেক সময় অন্যের ব্যবহারে আমরা আহত হয়ে থাকি, কিন্তু ভেবে দেখার বিষয় সেই একই ব্যবহার আমি কখনো কারোর সাথে করেছি কি না!

নিজেকে অন্যের জায়গায় রেখে সঠিক শব্দ চয়ন এবং কথা বলাটা সভ্যতা।
ভালো পোশাক, ভালো প্রসাধনী, মূল্যবান অলঙ্কার, কেবলমাত্র পুঁথিগত শিক্ষা কখনোই কোনো ব্যক্তির সুস্থ্য মানসিকতার পরিচয় বহন করে না।

আমি সর্বদা, সময় এবং ঈশ্বরের উপরে বিচার ছেড়ে দিয়ে থাকি কারণ এই পৃথিবীতে আমার মনে হয় এদের চাইতে বড় বিচারক কেউ নেই।

ব্যক্তি জীবন হোক অথবা কর্ম জীবন মতানৈক্যতা থাকতেই পারে, কিন্তু সেখানে অপমান, ভাষায় সংযম না থাকা, অশালীন আচরণ এগুলোর গ্রহণযোগ্যতা আমার কাছে নেই।

protection-442907_1280.jpg

Pixabay

কাজের অভিজ্ঞতার সুবাদে আমি খেয়াল করে দেখেছি, বেশিরভাগ মানুষেরই পদস্খলন হয় উচ্চাকাঙ্ক্ষা দিনত্বর দিন বৃদ্ধি পাবার জন্য।
তুলনা, হিংসা, আত্ম অহঙ্কার ছাড়া উচ্চাকাঙ্ক্ষা কিছুই বয়ে নিয়ে আসে না।

আকাঙ্ক্ষা থাকা উচিৎ তবে উচ্চাকাঙ্ক্ষা কখনোই নয়, বিশেষত আমি দেখেছি সৃষ্টিকর্তা আমাদের সুযোগ দেন আমাদের মন পরীক্ষার জন্য, সেই প্রাপ্তিটা আমাদের ভাগ্য কিন্তু তাকে ধরে রাখতে পারলাম কিনা সেটা আমাদের কর্ম নির্ধারণ করে।

পরিশেষে তাই বলতে চাই, উপরে ওঠার সদিচ্ছা ভালো, মনে কোনো প্রশ্ন, দ্বিধা থাকলে সেটাও সুন্দর ব্যবহার দিয়ে জেনে নেওয়া সম্ভব কিন্তু মুখে এক্ আর মনে আরেক এই বিষয়টিকে দ্বিচারিতা বলে।

কাজেই, আমাদের এটা কখনোই ভুলে গেলে চলবে না,

আমাদের মানসিকতার প্রকৃত পরিচয় বহন করে আমাদের ব্যবহার।

I9Ws6mn5yoT8JYcTf1.gif

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjo1R3nByagojBFK9X9VyMfrNoTUUqjGSvWpqdmMgU31CjnNeqLcAbmdrcdhwjg36qCE8hXx2eEL9gcF5xj7.gif

Sort:  
 last year 

অনেক সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লিখছেন আপনি। আচরণ হলো আয়নার মতো যা দিয়ে
আমাকে সবাই দেখবে। আমার সম্পর্কে ধারণা নিবে।একটি কথা আমরা সকলেই জানি,আচরন বংশের পরিচয়।তো আমাদের আচরন কোন ভাবেই যেন খারাপ না হয়। সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। অনেক সুন্দর ভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে ।

Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.

Loading...
 last year 

আমাদের মানসিকতার প্রকৃত পরিচয় বহন করে আমাদের ব্যবহার।

  • আপনার লেখা সম্পূর্ণ পোস্টটি অনেক সুন্দর হয়েছে, তবে শেষের এই লাইনটি আমার মন ছুঁয়ে গেলো। আসলে আমাদের আশেপাশে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যারা নিজেদেরকে শিক্ষিত বলে দাবি করেন, কিন্তু জীবনের ছোটো ছোটো শিক্ষায় তারা অনেক অশিক্ষিত মানুষের থেকেও নিম্ন রুচিসম্পন্ন হয়ে থাকেন।

  • কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের মানসিকতা এতটাই নিচু হয় যে, তারা তাদের ব্যবহারের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেন পুঁথিগত বিদ্যা যদিও বা তারা অর্জন করেছেন, কিন্তু পারিবারিক শিক্ষা হোক বা সামাজিক শিক্ষা, সব ক্ষেত্রেই তারা অনেক পিছিয়ে।

  • অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। আশা করছি আপনার লেখার সারমর্ম সকলে বুঝতে পারবেন এবং নিজেদের মানসিকতাকে উন্নত করার চেষ্টা করবেন। ভালো থাকবেন।

 last year 

আমি প্রায়শঃই বলি, রাস্তায় বেরোলে আমাদের গায়ে লেখা থাকে না, আমরা কে কতখানি শিক্ষিত।
তবে আমাদের অন্যের প্রতি ব্যবহার এবং আচরণ আমাদের পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপশি আমাদের পারিবারিক শিক্ষার নজির বহন করে।

আপনি একদম ঠিক বলেছেন, আমরা যখন ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় চলে যাই। তখন কেউ আমাদের দেখে বুঝতে পারে না আমরা কে কতটা শিক্ষিত, বা কোন পরিবার থেকে বিলং করি। এটা একমাত্র আমাদের ব্যবহারের মাধ্যমেই বোঝা যায়।

একজন মানুষের ব্যবহারের মাধ্যমে তার বংশ পরিচয় সম্পন্ন বিষয়টা উঠে আসে। আজকে আপনার পোস্ট পড়ার মাধ্যমে বাস্তবতা চোখের সামনে ভেসে উঠলো। যদিও কিছু কিছু মানুষের সাথে চলাফেরা করে বুঝতে পেরেছে। তাদের জীবনচক্র কেমন, আবার মাঝে মাঝে বুঝতে পেরেছি তারা আসলে কি চায়।

কথায় আছে ব্যবহারে বংশের পরিচয়, ব্যবহার করার মাধ্যমেই একজন মানুষ বুঝতে পারে আমি কেমন। আমি কতটুকু ভালো। তাই আমি মনে করি সব সময় সবার সাথে খুব নম্র ভদ্র ভাষায় কথা বলা উচিত। চমৎকার বিষয় উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 90827.60
ETH 3116.50
USDT 1.00
SBD 2.97