Better Life With Steem | The Diary game 8, November |
Edited by Canva |
---|
ছুটির দিনে সাধারণত আমি বেলা করে ঘুমালেও আমাকে আমার হাবি ঘুম ভাঙ্গায় না। ব্যাতিক্রম ঘটে শুধু কোথাও যাওয়ার কথা থাকলে। আমার হাবি এমন একজন মানুষ তাকে যদি বলি যে ,যাও তো বাজার থেকে কয়েকটা জিনিস নিয়ে এস তাহলে সে যতভাবে সম্ভব সেটাকে পাশ কাটাতে চেষ্টা করে।
কিন্তু যদি তাকে কেউ ঝড়-বৃষ্টি কিংবা শীতের রাতেও ঘুমন্ত অবস্থায় এসে বলে যে চলো যাই একটু সুন্দরবনে ঘুরে আসি তাহলে দেখা যাবে যে সাথে সাথে সে মোচড় দিয়ে উঠে তার পেছনে পেছনে হাঁটা শুরু করবে। এটা নিয়ে আমি সবসময়ই ক্ষেপাতে চেষ্টা করি।
এককথায় ঘুরে বেড়াতে খুব পছন্দ করে সে। পারে না শুধু তার প্রাইভেট ব্যাংকের চাকরির জন্য। করোনার পর থেকে তো ব্যাংকারদের দেশের বাইরে যাওয়াও বলা চলে একরকম বন্ধই ।
কোথাও যাওয়ার কথা থাকলে বিশেষ করে সেটা যদি হয় তার বাড়িতে যাওয়া ,তাহলে সেদিন সে রাতে ভালো করে ঘুমায় কিনা এটা নিয়েই সন্দেহ লাগে আমার। সেদিন সে সবাইকে ভোরবেলাতেই একরকম ঘুম থেকে টেনে তুলে।
আসলে আমাদের আজকে গ্রামে যাওয়ার কথা। আজকে আমার হাবির সব ভাইবোনদের গ্রামে আসার কথা। আমাকে গতকাল জিজ্ঞেস করেছিল আমি যাবো কিনা। আমি সাধারণত এরকম ফ্যামিলি প্রোগ্রামগুলি মিস করতে চাই না। আমার বড়ো ছেলেটাও আমার মতোই হয়েছে। ওর পিকনিক ছিল আজকে। সেটাকে ক্যানসেল করেছে আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য।
ছোট ছেলে অবশ্য যাবে না ওর পরীক্ষার জন্য।
Edited by Canva |
---|
আমাদের ৯টার মাঝেই বের হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এর মাঝে আমার বড়ো ভাসুর জানালো যে ,সে যেতে পারবে না তার শরীর খারাপের জন্য। এটা শুনে আমার হাসবেন্ডের মন দেখলাম খারাপ হয়ে গেছে। মন খারাপের আরো একটা কারণ হলো তার বড়ো বোনও যেতে পারবে না।
একটু পরে দেখি সে আমার বড়ো ভাসুরকে কল দিয়ে বলতেছে যে ,তুমি ভাবীকে নিয়ে আমাদের বাসা পর্যন্ত আসো ,তারপর আমি তোমাকে নিয়ে যাবো। ভাই-ভাবি এখন তার মেয়ের বাসাতে আছেন। আমার বড়ো ভাসুর আমার বরের কথায় রাজি হন। আধা ঘন্টার মাঝেই তারা আবার নিয়ে আমাদের বাড়ির সামনে এসে উপস্থিত হন। এরপর আমাদের সাথেই গ্রামে যান।
গ্রামে পৌঁছে দেখি আমাদের আগেই বাকি সবাই এসে পৌঁছেছেন। আমার এক দেবর ১৭ তারিখ সুইডেন চলে যাচ্ছে। ও চলে গেলে কিভাবে কি হবে এটা নিয়েও সবার কথা ছিল। সাথে আমার ছোট দেবর চাচ্ছে গ্রামের পুরোনো বাড়ি ভেঙে বিল্ডিং করতে।
এটা শুনে আমার একদমই ভালো লাগে নাই। শুধু আমার না কারুরই আসলে ভালো লাগে নাই। পুরোনো দিনের টিন আর কাঠের দোতলা বাড়ি। কিন্তু কিছু করারও নেই। গ্রামে আমরা কেউ থাকি থাকি না একমাত্র আমার ছোট দেবর ছাড়া। আশেপাশে সবাই বিল্ডিং করতেছে। যার কারণে ওরও এই ইচ্ছে।
আমার বিয়ের পর যখন আমি প্রথমবার এই গ্ৰামে এসেছিলাম তখন কিছুটা অবাক হয়েছিলাম এই গ্রাম দেখে। প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই দোতলা টিন আর কাঠের বাড়ি। কাঠগুলি অনেক কারুকাজ করা। সত্যি বলতে আগে আমি এমন বাড়ি দেখি নাই। কিন্তু সেই বাড়িগুলি এখন শেষের দিকে। আমার আরেক জ্যাঠা শশুরের ছেলে বাড়িতে ডুপ্লেক্স করতেছে। এখন বাড়িতে ঢুকলে অপরিচিত লাগে।
অনেকদিন আগে থেকেই বলতেছিলো কিন্তু আবার সবাই ওর প্রস্তাবে রাজি হলো। আমার দেবর তার ভাই-বোনদের কাছে বললো যে,ও একতলা করবে। যদি বাকিরা ফাউন্ডেশনের টাকা দেয় তাহলে ও করবে নাহলে ওকে লিখিত দিতে হবে যে পরে কেউ এসে দাবি করতে পারবে না যে আমিও বিল্ডিং করবো উপরে। ওর কথা ঠিকই আছে।
ওর কথায় সবাই দাবি ছেড়ে দিলো কিন্তু আমরা কাছে জিনিসটা খুব একটা ভালো লাগতে ছিল না। এটা হলে আমার ছেলেদের দাদাবাড়ি থাকবে না। পেছন থেকে আমার বড়ো ভাবিও একই কথা বললো। যার কারণে আমি আর ভাবি বললাম যে আমরা দোতলার টাকা দিবো ,আর বাকিদেরও সিদ্ধান্ত নিতে বললাম।
Edited by Canva |
---|
আমার বড়ো ভাসুর হাসতে হাসতে বললো যে ,তোরা দুইজন মিলে তো বাড়ি দখল করলি। আসলে বাড়ি দখলের জন্য না ,ছেলেদের দাদাবাড়ি থাকবে না বলে এই উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। আর আমার শশুর বাড়িটাও সুন্দৰ। বাড়ির একদম পেছন দিয়েই পদ্মা থেকে এক নদীর মতো খাল চলে গেছে।
বাড়ি থেকে বের হলাম সন্ধ্যার মাঝেই। কারণ ভাই-ভাবীকে মেট্রোতে তুলে দিতে হবে। বেশি রাত হয়ে গেলে ট্রেন মিস হয়ে যাবে।আমাদের সাথে এক ভাগ্নেও আসলো। তিজনকে মেট্রো স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে ছেলেদের রাতের খাবারের জন্য গ্রিল আর নান নিয়ে বাসায় আসতে আসতে পৌনে দশটার মতো বেজে গেলো।