Better Life With Steem | The Diary game 23, August।
সকালবেলা ঘুম ভেঙেছে মন খারাপ নিয়ে।রাতেও বার বার ঘুম ভেঙেছে।মনে হয়েছে আমরা কত ভালো আছি কিন্তু বন্যা আক্রান্ত মানুষগুলো কিভাবে আছে।একদিকে ইলেক্ট্রিসিটি নাই, নেট নাই আর এর মাঝে পানি বেড়েই চলেছে। রাত ৩টার দিকে দেখলাম গোমতি নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে। প্রচন্ডরকম মন খারাপ নিয়ে আবারও ঘুমাতে চেষ্টা করলাম।কখন ঘুমিয়েছে সেটা অবশ্য জানা নেই।
ঘুম থেকে উঠেই নিউজ দেখলাম। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকে দেখলাম আমার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা প্রবাসী ছেলেটা আবারও সবার কাছে দোয়া চেয়েছে। দুইদিন থেকেই লিখতেছে যে পরিবারের কারোর সাথে কোন যোগাযোগ নেই। দেখে মনটা আরো খারাপ হয়ে গেল।
বারান্দায় গিয়ে গাছগুলোকে পানি দিলাম।টবে লাগানো পুইশাক এর পাতাগুলোকে দেখে ভালো লাগলো।
সকালে আর কোন নাস্তা বানাই নাই। বাইরে থেকে পরোটা আর ডাল-ভাজি কিনে আনতে বলেছিলাম সেটা দিয়েই নাস্তা করেছি।
কদিন থেকেই গ্যাস একদমনই কমে গেছে। কারন জানি না।বন্যার কোন প্রভাব পরেছে কিনা সেটাও বুঝতে পারছি না। এর মাঝেই দুপুরের রান্না শুরু করলাম।চারদিন থেকে বুয়ার আসার খবর নেই। তাকে কল দিয়ে জানলাম যে আজকে এসেছেন উনি।
কাজ করার ফাকে ফাকে বার বার বন্যার খোজ নিয়েছি। সব কিছুই করতেছি কিন্তু কেমন জানি এক মন খারাপে ভুগতেছি। এরই মাঝে ভাইকে কল দিলাম আমাদের গ্রামের অবস্থা জানার জন্য। ভাই জানালো যে ভালো আছে আমাদের গ্রাম। সবাই মিলে টাকা তুলে বোট নিয়ে ফেনীতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। ভাই সেটাকে থামিয়েছে।কারণ রাস্তায় পুরো জ্যাম লেগে রয়েছে ।সবাই ফেনি যাওয়ার চেষ্টা করছে সাহায্য নিয়ে ।এজন্য তাদের ফেরত পাঠিয়ে দিতেছে।বোটের চেয়ে হেলিকপ্টার বেশি প্রয়োজন ওইসব এলাকায়।
অবশ্য শুধু আমাদের গ্রামের মানুষই না পুরো দেশের মানুষই এগিয়ে এসেছে।চারপাশে এত খারাপ এর মাঝেও এই জিনিসটাই একধরনের আাশা জাগায়। পুরো দেশের মানুষ এক হয়ে যেন একটা পরিবার হয়ে গেছে। এই একতা যদি ধরে রাখা যায় তাহলে সেটাই হবে সত্যিকারের বিজয়।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
দুপুরে সবাই মিলে একসাথেই খেয়ে নিয়েছি। খাওয়ার পর পরই বড় ছেলে উইনসকোর্টে চলে গেল ওর ডিউটি করার জন্য। ওরা আজকে বিদ্যানন্দে যেতে চেয়েছিলো ত্রাণসামগ্রী প্যাকেট করার জন্য। কিন্তু আজকে পরীক্ষা থাকার কারনে ও যেতে পারে নাই। খানিকটা মন খারাপ নিয়েই দেখলাম বাসা থেকে বের হলো। যাওয়ার আগে বললো যে, আমার জায়গায় যদি ডিউটি করার জন্য কাউকে পেতাম তাহলে আর আমি যেতাম না।
ও যাওয়ার কিছু সময় পরে আমার হাবিও চলে গেল মিরপুরে। আর আমি গেলাম হসপিটালে সেখানে আমার কাজিন এর বর বেশ অনেক দিন থেকেই আছে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। ভাইকে দেখে মনটা আরো খারাপ হয়ে গেল। কি মানুষ কি হয়ে গেছে।
সবসময় টিপটপ থাকা বোনটার দিকেও তাকানো যায় না। সেখানেও বেশি সময় থাকতে পারি নাই। কেমন জানি দমবন্ধ লাগছিলো সবকিছু মিলে। তাই দ্রুতই বাসায় চলে এসেছি।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
তবে বাসায় এসেই যে মন ভালো হয়ে গেছে এমনও না। ঢুকবো না ঢুকবো না করেও একটু পর পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকেছি। যতবারই ঢুকছি আরো মন খারাপ করা কিছু দেখতে হয়েছে। নিজেকেই নিজে সান্ত্বনা দিলাম যে ,সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে ।