Better Life With Steem | The Diary game 19 , October |
Edited by Canva |
---|
সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলে গতকালের সিএনজি পাম্পে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। সাথে সাথে মনটাও খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু মন খারাপ নিয়ে পড়ে থাকলেও চলবে নাছেলে সকাল আটটার দিকে ক্লাস আছে। তাই ওকে দ্রুত ডেকে তুলতে গেলাম।
ছেলে চলে যাওয়ার পরে আমার হাবি ঘুম থেকে উঠে বললো যে,সে- সকালে নাস্তা করবে না।তার মিরপুরে কাজ আছে তাই সে দ্রুত বেরিয়ে গেল।সে আর তার কলিগরা মির পুরেই নাস্তা করবে। ওরা চলে যাওয়ার পরে ছেলে ফ্রিজে রুটি ছিল সেগুলো ভেজে নাস্তা করে নিলাম।
ওর সাথে কিছুক্ষণ গল্প করতে চলে গেলাম রান্না ঘরে। কারণ লেট হলে গ্যাসের প্রেশার একদমই কমে যায় তখন এক ঘন্টা রান্না করতে সময় লেগে যায় প্রায় দুই ঘন্টা। রান্না শেষ হতে না হতেই দেখি আমার হাবি এসে উপস্থিত।
বড় ছেলেরা আজকে একটাই ক্লাস তাই দ্রুতই চলে আসার কথা। সাড়ে বারোটার দিকে কল দিলাম কোথায় আছে জানার জন্য। বললো বাসার প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে। ও যখন বাসায় ঢুকলো তখন প্রায় ১টা বেজে গেছে।ওদের ক্লাবের কিছু কাজ থাকার কারনে বাসায় আসতে লেট হয়েছে ।
ওইদিকে গতকালই আমার ধামরাই তো যাওয়ার প্রয়োজন ছিলো শরীর খারাপের জন্য যাওয়া হয়নি। আমি সাভারে আমাদের একটা জায়গাতে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। সেখানেও যাওয়া প্রয়োজন ছিলো। ভেবেছিলাম যে দ্রুত খাওয়া শেষ করে বেরিয়ে যাব। কিন্তু আমার হাসবেন্ড আমার ভাইকে দিয়েছিলো সিএনজি পাম্প এর খবর নেয়ার জন্য। সে জানালো যে ওর ড্রাইভার ছুটিতে আছে তাই আমরা যখন বের হই তখন যেন সাথে করে ওকেও নিয়ে যাই।
ও তখনও বাসার বাইরে ছিলো যার কারণে আমাদের বের হওয়াটা কিছুটা লেট হয়ে যায়। চারটার দিকে আমরা বাসা থেকে বের হই। তুলে নিয়ে যাই ওর বাসা থেকে। ধামরাই পৌঁছাতে ঘন্টা ঘন্টা খানেকের মত সময় লেগেছিল। ভাই বলল যে, যে লোক এলপিজি সিলিন্ডারকে সিএনজি সিলিন্ডারে কনভার্ট এর কাজ করেছিল তাকে পাওয়া গেছে। আরো বলল যে এই লোকটাকে পুলিশে দেওয়া দরকার কিন্তু ওর পরিবারের কথা চিন্তা করতেছি।
সিএনজি পাম্প স্টেশনে পৌঁছে একদম স্তম্ভিত গেলাম আমি। আমাদেরকে দেখেই সিএনজির কর্মচারীরা এগিয়ে আসলো। মেশিনের কাছে তখন ও খানিকটা রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। ওয়ালে আর ছাদে রক্তের ছোপ ছোপ দাঁগ লেগে রয়েছে। এসব দেখে আমি আর ওইখানে দাড়িয়ে থাকতে পারলাম না। দ্রুত অফিস রুমে এসে ঢুকলাম। অফিসে ঢুকে দেখলাম যে, আমার বড়ো ভাইও এসেছে।
এমন সময় সিএনজি পাম্প এর ম্যানেজার আমাদেরকে উপরে ডেকে নিয়ে গেল। সেখানেই সে বিস্ফোরণের সিসিটিভি ফুটেজ দেখালো।
সেখান থেকে নিচে নেমে আসলাম।পরের দিন বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লোক আসার কথা তদন্তের জন্য। যেসব কাগজপত্র লাগতে পারে সেগুলো বাইরে বের করে রাখলো আমার ভাই। যাতে চাইলেই দ্রুত বের করে দেয়া যায়।
সিএনজি থেকে বের হতে আমাদের প্রায় সাতটা বেজে গেল। আমার কিছু বাজার করার দরকার ছিল তাই নবীনগর সুপার মার্কেটের সামনে এসে থামলাম।।এই সুপারমার্কেট আর্মিদের আন্ডারে যার কারণে জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এখান থেকে বের হয়ে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সামান্য এগুতেই পুলিশ টাউনের দিকে চোখ পরলো।নদীর তীর ঘেঁষে আলো ঝলমল করছে। হঠাৎ ভাই গাড়ি ঘোরাতে বলল পুলিশ টাউনের দিকে।আমিও আগে কখনো যাইনি তাই ওকে আর কিছু বললাম না।
ঢুকে একদম মুগ্ধ হয়ে গেলাম। প্রতিটা বাড়ির সামনে দিয়ে অনেক চওড়া রাস্তা। এখনো পুরোপুরি কাজ কমপ্লিট হয় নাই এই জায়গাটার। আমরা নদীর তীরের দিকে এগিয়ে গেলাম। একজন নদীর তীরে একটা রেস্টুরেন্ট দেখতে পেলাম। খুবই সুন্দর করেছে রেস্টুরেন্টটা। ভাই বললে চল কফি খেয়ে যাই। এখানে ঢুকে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে কফি আর চিকেন রোল খেয়ে আবার ঢাকার পথে রওনা দিলাম।
সাভার আসার পরে আমরা আমাদের জায়গার দিকে গেলাম। সেখানে মাটি ভারতের কাজ চলছে। আমি অনেক বছর পরে আসলাম এই জায়গাতে। দেখলাম মাটি ফেলার কাজ অনেকটাই হয়ে গেছে। মাটি পুরোপুরি ফেলা কমপ্লিট করে আবার সেগুলোকে সমান করতে হবে।সাভারে আধা ঘন্টার মত থেকে আবার আমরা ঢাকার দিকে রওনা দিলাম।
আমিনবাজারের দিকে আসার পরে প্রচন্ড জ্যামের মুখোমুখি হলাম। আসলে সারাদিন ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকে কিন্তু রাত আটটার পর সেগুলোকে ছেড়ে দেয়, যার কারনে জ্যামের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। গাবতলী আসতেই আমাদের অনেকটা সময় লেগে গেল। অবশ্য গাবতলী পৌঁছানোর আসার পর আর খুব একটা সময় লাগে নাই। তারপরও বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় পৌনে এগারোটা বেজে গেল। বাসায় এসেছে ফ্রিজে জিনিসপত্রগুলোকে ঢুকিয়ে রেখে ফ্রেশ হয়ে ঘুমোতে গেলাম।