Better Life With Steem | The Diary game 10, September |
সকালে চোখ খুলেই দেখি ছেলে উঠে গেছে।ওকে আগেই বলে রেখেছিলাম যে আমি হয়তো সকালেই বের হয়ে যাবো।
ওর ক্লাস আছে দশটার দিকে। এত আগে উঠার কথা না ওর। তাই সামান্য অবাক হলাম। কিন্তু ও নিজে থেকেই আমাকে বললো যে তোমার সাথে আমিও যাবো তাই এলার্ম দিয়ে রেখেছিলাম।
আমি শুরুতে ওকে মানাই করেছিলাম কারন রাস্তা-ঘাটে ইদানিং যে পরিমাণে জ্যাম পরতেছে তার ওপর আবার সকাল বেলা থাকে স্কুলের জ্যাম। কোন কারনে যদি আটকে সময় মতো বাসায় বা পৌঁছাতে পারি তাহলে ওর ক্লাসে যাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু ও বাচ্চাদের মতো জেদ ধরে রইলো আমার সাথে যাবেই।
এটা দেখে ওর বাবা বললো ওকে সাথে নিয়ে যেতে। ওকে নিয়ে যখন বাসা থেকে বের হলাম তখন সাড়ে ছয়টার মতো বাজে।কিন্তু আমার ভাগ্য ভালো ছিলো কোন জ্যামই পাই নাই।আমি সময়মতোই মোহাম্মদপুরে যেয়ে আমার কাজটা শেষ করে বাসার দিকে রওনা দিলাম।ততক্ষনে ভালোই জ্যাম শুরু হয়ে গেছে।
আসার সময় শুক্রাবাদ থেকে নাস্তা আর প্রয়োজনীয় সবজি কিনে আনলাম।এত দ্রুত বাসায় ফিরতে পারবো এটা চিন্তাও করি নাই। আমার হাসবেন্ড আর ছেলেরা নাস্তা করে বের হয়ে গেল আর আমিও রান্না ঘরে ঢুকে পরলাম দুপুরের রান্না করার জন্য। ইদানীং মাঝে মাঝে ভালোই গ্যাস থাকে আবার মাঝে মাঝে একদমই থাকে না।তাই চেষ্টা করি সকালেই রান্না শেষ করতে।
এরই মাঝে আমার কাজিন কল দিলো যাতে সময় করে হসপিটালে যাই।বেচারিকে এ হসপিটাল আর বাসা দুটোই এক সাথে সামাল দিতে হচ্ছে। মানুষ এর জীবনে কখন কি হয় বলা যায় না।
নিজেও ব্রেস্ট ক্যান্সার এর সাথে ফাইট করেছে এক সময় আর এখন আমার এই বোনের বর ক্যান্সারে আক্রান্ত দীর্ঘদিন ধরে । ওর মুখের হাসি এক মিনিটের জন্যও মলিন হতে দেখি নাই। কিন্তু মানুষ এর সহ্য শক্তিরও একটা সীমা থাকে।
এখনো হাসি মুখেই থাকে কিন্তু সেই হাসিমুখের মাঝেই এক ধরনের মলিনতা চলে এসেছে। পরিবারের মানুষগুলোকে চেনা যায় বিপদে পরলেই।নিজের ছেলেমেয়েরাও অনেক সময় কাজে লাগে না তেমন একটা।
বোনকে বললাম আমি বিকেলের দিকে যাবো।৪টার দিকে হসপিটালে গেলাম।আপুকে বাসায় চলে গেল। কিছুক্ষন পরে আমার বোনের দেবর আসায় তাকে রেখে আমিও বাসায় চলে আসলাম।
আমি আসার কিছু সময় পরে ছোট ছেলেও কোচিং থেকে বাসায় চলে আসলো। তার একটু পরে বড়ো ছেলে আর ওর বাবা দেখি একই সময় বাসায় চলে আসলো।এক সাথে কিভাবে আসলো এটা জিজ্ঞেস করায় বললো যে দুজনের ফার্মগেটে আসার পরে যোগাযোগ হয়েছে, যার কারনে একসাথেই আসতে পেরেছে।
রাতে সবাই খাওয়া শেষ করার পরে সবকিছু গুছিয়ে রেখে ঘুমাতে গেলাম।
একজন অসুস্থ মানুষ ততক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ থাকতে পারে যতক্ষণ পর্যন্ত তার মনের মধ্যে কোন প্রকার চিন্তা এবং মলিনতা না আসে। পরক্ষণেই একজন সুস্থ মানুষ যদি চিন্তিত এবং একাকীত্ব থাকে তাহলে তার সুস্থতা ও অসুস্থতায় পরিণত হয়।