মুক্তধারা প্রকল্পে জায়গা দেখতে ঢাকার বাইরে একদিন ।
ক'দিন ধরেই কথা হচ্ছিলো যে, মুক্তধারার প্লট দেখাতে নিয়ে যাবে আমাকে আমার হাবি।সাথে যাবে আমার মামী আর বড় ছেলে । আমি বললাম ভাইকেও বলি। গাড়িতে জায়গাতো আছেই। সকালে নাস্তা বানানোর ঝামেলা আর করি নাই।
আমরা চেয়েছিলাম রোদ উঠার আগে বের হতে কিন্তু বের হতে হতে বেশ লেট হয়ে গেল।যাওয়ার সময় দেখলাম মামীর সাথে মামাও হাজির।বেশ চাপাচাপি করেই রওনা দিলাম।চাপাচাপি হলেও ভালো লাগলো কারন আমরা সবাই খুব ঘনিষ্ঠ।
এছাড়া আরও একটা কারন ছিলো আর সেটা হলো আমি বের হতে চাচ্ছিলাম সব কিছু থেকে।বর্তমান সময়ে সবকিছু ঠিক মনে হলেও আমাদের বেশিরভাগ মানুষের জীবনেই কিছু হলেও পরিবর্তন এসেছে। এটা হয়তো বলে বোঝানো সম্ভব না।সেই সাথে এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করছে।এই সব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সবার সাথে এই জার্নিটা অন্তত আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
মুক্তধারা প্রকল্প ঢাকা থেকে খুব একটা দূরে না কিন্তু আমাদের শুরুতে মামীর টাইলস ফ্যাক্টরিতে যাওয়ার প্ল্যান ছিলো।সেখানে পৌঁছাতে বেশ খানিকটা সময় লেগে গেল। সেখানে যাওয়ার পরই এক বৃদ্ধ লোক এসে দাড়িয়ে আমাদের সালাম দিলেন।দেখে একজন কর্মচারীই ভেবেছি।
তিনি সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর মামা বললো এই যে মানুষটাকে দেখলি তাকো দেখে কি মনে হলো।এটা বলে নিজে থেকেই একটা কলেজের নাম করে বললো যে , উনি সেই কলেজ এর ইংরেজির প্রফেসর। বিয়ে করেন নাই। ভাইয়ের ছেলেমেয়েদের অত্যাচারে বাড়ি ছাড়া। কিছু দিন কোন এক বৃদ্ধাশ্রমে ছিলেন।
সেখানেও থাকতে পারেন নাই। পরে মামী নিজের কাছে এনে রেখেছেন। খুবই কস্ট লাগলো শোনে।
আমাদের নাস্তা করা হয় নাই তাই ফ্যাক্টরি থেকে বের হয়ে একটু দূরে এক খাবার এর হোটেলে নিয়ে গেল।অবশ্য খাবারের হোটেল না বলে মিষ্টির দোকান বললেই ভালো হয়।
মামী বললো যে, এখানকার মালাইচপ খুব ভালো হয় আর এই মালাইচপে কোন ধরনের চিনি বা মিষ্টি কিছুই ব্যবহার হয় না।দুধ ঘন করলে যে মিষ্টি হয় সেটাই। খেয়ে দেখলাম আসলেই ভালো।তাই বাসার জন্যও কিনে নিলাম।পাশের এক হোটেল থেকে পরোটা আর ডাল- ভাজি কিনে আনলাম। সবাই মিলে নাস্তা করে বের হলাম মুক্তধারা প্রকল্প এর দিকে।যাওয়ার পথে মামা আরো একটা জায়গায় নিয়ে গেল।একদমই গ্রামীণ পরিবেশ এই এলাকাগুলোতে।
কিন্তু যেভাবে মানুষ বাড়তেছে তাতে ৬/৭ বছর পরে হয়তো এই এলাকা আর চেনাই যাবে না অনেক দিন পরে আসলে।বড়ো বড় বিল্ডিং উঠে যাবে।
মুক্তধারা প্রকল্প এরও একই অবস্থা এখানে আমার বড় ভাই এর দুটো প্লট আছে৷ ও কোভিডের আগে একটা কিনেছিলো। কোভিডের সময় বিক্রি হতো না তাই ওই সময় অনেক কমে আরেকটা কিনে নিয়েছিলো।
এখনো কিনতে পারলে লাভবান হওয়া যাবে। কারন জ্যাম না থাকলে ঢাকা থেকে ১৫/২০ মিনিট এর ভেতরে আসা সম্ভব। আমাদের যে প্লট দেখালো সেগুলো এখনো নিচু জায়গা। আমাদের কাছে ৮ লাখ করে কাঠা চেয়েছিলো। হয়তো সাড়ে ৭ লাখ করে নেয়া যাবে।ওরা মাটি ফেলতেছে।
কেনা হয়তো হবে না কিন্তু জায়গাটা খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। বেশ কয়েকটা ছাগল দেখতে পেলাম তার মাঝে একটা বেশ বড়ো আর সেটা শুধু আমার কাছেই ঘুরাঘুরি করতেছিলো। আমি আসলে ভয় পাচ্ছিলাম ওর শিংগুলো দেখে।এরই মাঝে একটা ঘোড়ার গাড়িও এসে থামলো।
বেশ কিছু সময় কাটিয়ে আমরা আবার ঢাকার পথে রওনা দিলাম।