১৪ ই ডিসেম্বর, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান হারানোর এক দুঃসহ বেদনার দিন।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
গতকাল ১৪ই ডিসেম্বর ছিল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এর দুই দিন পরেই আমাদের দেশ স্বাধীন হয়। মায়ের মুখে অন্তত হাজারবার শুনেছি এই দিনের কথা যে ঐদিন সারাটাদিন রেডিওতে ইংরেজি ও উর্দুতে প্রচার করা হচ্ছিলো যে তার সারমর্ম অনেকটা এমন যে ,রাও ফরমান আলী ,জেনারেল নিয়াজী তোমরা আত্মসমর্পণ করো। তোমাদের সৈন্যরা এখন অবরুদ্ধ।
কিন্তু তারা এই আহবানে সারা না দিয়ে চুপচাপ থেকে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করার এক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে থাকে।
তাদের নিখুঁত পরিকল্পনা দেখে খানিকটা অবাক হতে হয়। তারা পরাজিত হয়েও পরাজিত হতে রাজি ছিল না। যার কারণে তারা বাংলাদেশিদেরকে মেধাশূন্য জাতিতে পরিণত করার জন্য ছক কাটে। এতে তারা অবশ্য সফলও হন। তাদের কারণে আমাদের দেশ কমপক্ষে ১০০ বছর পিছিয়ে যায়।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
অবশ্য এই ছক তাদের খানিকটা পুরোনোই ছিল। জেনারেল ইয়াহিয়া খান পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করেছিলেন এই যুদ্ধে। তাদের কাছে বাংলাদেশের মাটি জরুরি ছিল মানুষ না।
যখন তারা বুঝতে পারে যে তাদের পতন অনিবার্য তখন বাংলাদেশের কিছু রাজাকার ,আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় তারা অসংখ্য বুদ্ধিজীবী অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাঁদের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের পর তাদেরকে হত্যা করে।পরবর্তীতে ঢাকার মিরপুর, রায়ের বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে তাঁদের ছড়ানো -ছিটানো মৃতদেহ পাওয়া যায়।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
১৬ ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তাদের আত্মীয় -স্বজনরা রায়ের বাজার বদ্ধভুমি ,মিরপুর ইত্যাদি জায়গা হতে তাদের স্বজনদের মৃতদেহ সনাক্ত করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর তারা থেমে থাকে নাই। তাদের অনেকের দেহেই আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা, কারও শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন দেখা যায়। আবার অনেককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করেও হত্যা করা হয়েছিল।
প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও চলচিত্র পরিচালক জহির রায়হান তার ভাই সাহিত্যিক ও সাংবাদিক শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে মিরপুর গেলে সেখানকার বিহারি সম্প্রদায়ের লোকজন তাকে নৃশৃংস ভাবে হত্যা করে। তার মৃতদেহের কোনো খোঁজ পাওয়া যাই নাই।।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইক-এর সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
গতকাল সারা দিনই সোশ্যাল মিডিয়াতে নিহত বুদ্ধিজীবীদের একটা তালিকা ঘুরে বেড়াতে দেখেছি। এর মাঝে ,শিক্ষাবিদ -৯৯১
সাংবাদিক -১৩
চিকিৎসক -৪৯
আইনজীবী -৪২
অন্যান্য (সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পী এবং প্রকৌশলী)
-১৬
পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ ১৪ ই ডিসেম্বরকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। তাদের স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়।পরবতীতে ঢাকার রায়েরবাজারে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয় । প্রতি বছর এই দিন শোকের আবহে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয় সারা দেশ জুড়ে । দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং উড়ে শোকের প্রতীক কালো পতাকা।
এই ডিসেম্বর মাস, আমাদের জন্য অনেক আনন্দের একটি মাস। আবার অপরদিকে এই ডিসেম্বর মাস, আমাদের জন্য অনেক বেদনার অনেক কষ্টের এই মাস। এটা কখনো ভুলার মতো না। আপনি সত্যিই বলেছেন, এই সব বুদ্ধিজীবীরা যদি থাকতো তাহলে।আমাদের দেশটি আরো সুন্দর হতো, বর্তমানে বা ভবিষ্যতে আমরা একটি সুন্দর দেশ পেতাম। আমাদের মা-বাবারা এই যুদ্ধ দেখছে,আমরা দেখিনি আমি বইতে পড়েছি। সত্যিই তাদের ত্যাগ স্বীকার আমরা কখনো ভুলবো না, এই বাংলাদেশের মানুষ যতদিন পর্যন্ত থাকবে,ততদিন আমরা তাদেরকে স্মরণ করে যাব। আপু আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের দেশকে নিয়ে এত সুন্দর একটি পোস্ট তৈরি করার জন্য।আমি মনে করি, প্রতিটা দেশের নাগরিক তাদের দেশকে ভালোবাসা উচিত। যাদের জন্য এই দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদেরকে স্মরণ করা উচিত। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।