Better life with steem// The Diary Game// 3rd december, 2024// দিদির জন্মদিন

in Incredible India13 days ago (edited)
IMG_20241206_082209.jpg
"দিদির জন্মদিনের কিছু মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলেরই আজকের দিনটি অনেক ভালো ভাবে শুরু হয়েছে এবং সারাটা দিন খুব ভালো কাটুক সেই প্রার্থনা রইলো।

আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে গত পরশুদিন কাটানো সারাদিনের গল্প শেয়ার করবো। গত পরশুদিন সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করে ঠিক হলো আমি এবং শুভ দিদি বাড়িতে যাবো।

আসলে পরশুদিন আমার দিদির জন্মদিন ছিলো। তবে কয়েকদিন আগে ঘুরে এসেছিলাম বলে, তেমন যাবার ইচ্ছা ছিল না। তাই ওকে বলেছিলাম যাবো না। তবে সেদিন হঠাৎ করে শুভ দাদাকে দেখতে যাওয়ার কথা বললো। তখন যাবো কি যাবো না, এই সিদ্ধান্ত নিতেই অনেকটা সময় পার করে, শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যার দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। যাইহোক চলুন সারাদিনের গল্পটা সকাল থেকেই শুরু করি, -

1672344690977_010726.jpg

"সকালবেলা"

যেমনটা আপনারা জানেন, তার আগের দিন অর্থাৎ সোমবার আমি গিয়েছিলাম ডাক্তার দেখাতে এবং বান্ধবীদের সাথেও বেশ সুন্দর সময় কাটিয়ে এসেছিলাম। যেই বিষয়ে পোস্ট আমি ইতিমধ্যেই শেয়ার করেছি। পরদিন সকালে যথারীতি অ্যালার্মের শব্দে ঘুম থেকে উঠলাম।

IMG_20241206_024642.jpg
"শীতের সকালের গরম চা"

ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে প্রথমে চায়ের জল বসালাম। আজকাল আমি সকালবেলায় কাঁচা হলুদ খাচ্ছি, সেটা আগেই জানিয়েছিলাম। হলুদটা খাওয়ার পর একটু অস্বস্তি লাগে বটে, তবে সাথে সাথে আমি উষ্ণ গরম জল খেয়ে ফেলি। তাই নিজের জন্য জল নামিয়ে রেখে, বাকি জলটুকু দিয়ে আমি সকালের চা করে শ্বশুর মশাইকে দিলাম ও শুভকে চা দিয়ে ওকে ডেকে এলাম।

IMG_20241206_024357.jpg
"আমাদের গাছে ফোঁটা স্থলপদ্ম ফুল"

আমাদের স্থল পদ্ম গাছটাতে এখনো পর্যন্ত একটা দুটো ফুল ফুটছে। সেদিন একটা ফুল ফুটেছিল। প্রায়দিন ভাবতাম আপনাদের জন্য ফুলের ছবি তুলবো। কিন্তু ফোন নিয়ে নিচে চলে আসার পর, চা দিতে যাওয়ার সময় আর ফোন নিয়ে ওপরে যাওয়া হয় না। ফলতো ছবি তোলা হত না। এই কারণে সেদিন মনে পড়তে শুভর ফোন থেকে একটা ছবি তুলে রাখলাম, যেটা পরে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আমি নিয়ে নিয়েছিলাম।

যাইহোক পদ্মফুলের সাথে বাকি গাছ থেকে ফুল তুলে নিচে নিয়ে এসেছিলাম। আজকাল শীতের কারণে খুবই কম ফুল ফুটছে। তবে শীতকালের জন্য শাশুড়ি মা গাঁদা ফুল গাছ বসিয়েছেন, যেখানে এখনো ফুল ফোঁটা শুরু হয়নি।

যাইহোক এরপর যথারীতি রান্না সম্পূর্ণ করলাম। শুভর স্নানের জল ওপরে দিতে গিয়ে দেখলাম শুভ তখনও ঘুমাচ্ছে। ততক্ষণে অফিসে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে, ওকে আবার ডেকে দিলাম। ঘুম থেকে উঠলো বটে, কিন্তু অফিসে যাওয়া আর হলো না

সত্যি বলতে রান্নাবান্না হয়ে যাওয়ার পর অফিসে না গেলে আমার ভীষণ রাগ হয়। কিন্তু নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে, গরম জলটা নষ্ট না করে সকাল সকালই স্নান করে নিলাম। আর পুজো সম্পন্ন করে নিলাম। মনে হল যেন দিনের সব থেকে বড় কাজ শেষ হয়ে গেলো।

এরপর বসলাম কমিউনিটির কাজ নিয়ে। সেই কাজগুলো করতে করতে মোটামুটি দুপুর হয়ে এলো। শীতের বেলা এত তাড়াতাড়ি শেষ হয় যে, সকাল আর দুপুরকে আলাদা করে ভাবতে ভাবতেই যেন সন্ধ্যা হয়ে আসে।

1672344690977_010726.jpg

"দুপুরবেলা"

IMG_20241206_024622.jpg
"বাড়ির পুজো"

যাইহোক পূজো দেওয়াটা যেহেতু একটু আগেই হয়ে গিয়েছিল, তাই কিছুক্ষণ বসে নিজের পোস্টে লেখা সম্পন্ন করেছিলাম। যেহেতু আমার এনগেজমেন্ট রিপোর্ট উপস্থাপন করার দিন ছিলো। লেখা অনেকটাই এগুলো ছিলো বলে খুব বেশি সময় লাগেনি।

IMG_20241206_024705.jpg
"স্নান করার পরবর্তী মুহুর্তে পিকলু ভীষন রেগে আছে"

অন্যদিকে শুভ অফিসে যায়নি বলে পিকলুকে স্নান করিয়ে দিয়েছিলো। এরপর বাকি সকলে স্নান করে নিলো। ব্রেকফাস্ট সকলেই একটু লেট করে করেছিলো বলে, খুব বেশি খিদে পায়নি। তাই একটু অপেক্ষা করে সকলে একসাথে লাঞ্চ করলাম। সেখানে বসেই শুভ দিদি বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তাব দিল।

দিদি সকালবেলাতে ফোন করে যাওয়ার কথা বলেছিলো, কিন্তু আমি যাবো না বলে দিয়েছিলাম। তাই আমার না যাওয়ার ইচ্ছার কথাই জানিয়েছিলাম। তবে শ্বশুরমশাই, শাশুড়ি মা, ও শুভ সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলো দাদাকে দেখতে যাওয়া দরকার। যাইহোক খানিকটা ইচ্ছা, খানিকটা অনিচ্ছা সবটা মিলিয়ে নিয়েই সিদ্ধান্ত হলো, খাওয়া দাওয়ার পর একটু রেস্ট করে আমরা বেরোবো।

1672344690977_010726.jpg

"সন্ধ্যাবেলা"

IMG_20241206_024601.jpg
"উল্টোদিকের ট্রেন ঢুকেছে"
IMG_20241206_024541.jpg
"স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায়"

আজকাল বিকেল পড়তে না পড়তেই সন্ধ্যা হয়ে যায়। কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আমি আর শুভ রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম। যাওয়ার সময় মিষ্টি নিয়ে স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সেখানে গিয়ে টিকিট কেটে প্রায় মিনিট দশেক অপেক্ষা করতে হলো ট্রেনের জন্য। কারণ ট্রেন কিছুটা লেট ছিলো।

প্রায় এক ঘন্টার ব্যবধানে ছিলো এই লোকাল ট্রেনটি। তাই ট্রেনে অসম্ভব ভিড় ছিলো বলে আমি লেডিস কামড়াতে উঠলাম। সেখানেও ভিড়ের কমতি ছিল না। বেশ ঠেলাঠেলি করে শেষ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছিলাম দমদম ক্যান্টনমেন্ট।

IMG_20241206_025222.jpg
"দিদির জন্মদিনের কেক"

দিদির জন্মদিনে যাবো না বলে, কোনো কিছুই প্রস্তুতি ছিল না। তবে শুভ বলল যাওয়ার সময় একটা কেক নিয়ে যাই। অন্যদিকে দিদি আবার নিরামিষ খায়, তাই ওর জন্য এগ লেস কেক নিতে হবে।।এই কারণে আমরা মিও আমোরে গিয়ে, দেখে শুনে একটা এগলেস কেক নিয়ে নিলাম্ তারপর পৌঁছে গেলাম দিদির ফ্ল্যাটে।

IMG_20241206_024955.jpg
"শুভর সাথে তিতলি ও তাতান"

সকলকে না জানিয়ে যাওয়াতে সকলেই বেশ অবাক হলো। বিশেষ করে শুভ যাওয়াতে সকলের অনেকটাই খুশি হয়েছিল বিশেষত তিতলি ও তাতান। সেই মুহূর্তে তিতলি বাড়িতে ছিল না, ও পড়তে গিয়েছিলো, তাই ততক্ষণ পর্যন্ত তাতান আর শুভ খেলা করলো।

1672344690977_010726.jpg

"রাত্রিবেলা"

শুভর সাথে রাতেই ফিরে আসার প্ল্যান ছিলো। তবে ওখানে গিয়ে দিদির সাথে কথা প্রসঙ্গে ঠিক হলো, পরদিন ভোর বেলায় দক্ষিণেশ্বর মন্দির যাবো। সেটা জানানোর পরে শুভও আর আপত্তি করেনি। তাই আমি রাতে থেকে যাবো এমনটাই সিদ্ধান্ত হলো।

IMG_20241206_025814.jpg
"চাউমিন"

শুভ খুব বেশি দেরি করবে না বলে, বাবাকে দিয়ে দিদি চাউমিন, মোগলাই আনালো, কারণ সেই মুহূর্তে ভাত খেতে চাইলো না শুভ। সকলে মিলে তিতলির জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। তিতলি আসার পর দিদিও রেডি হয়ে নিলো।

IMG_20241206_025158.jpg
"জীবনে প্রথমবার এতো বড়ো চুল রেখেছে"
IMG_20241206_025345.jpg
"দাদা ও দিদি- যুদ্ধ জয়ের পর"

আসলে আমরাই জোর করলাম ওকে একটা শাড়ি পড়ার জন্য। আসলে দিদির চুলটা অনেকখানি লম্বা হয়েছে, তবে ও চুলগুলো কেটে ফেলবে কারণ, এতো লম্বা চুল নিয়ে ডিউটি করা একটু কষ্টকর হয়ে যায়। তাই ভাবলাম কেটে ফেলার আগে শাড়ি পরে কয়েকটা ছবি তুলে রাখি।

ছবিতে আপনারা দাদাকেও দেখতে পারছেন। আপনাদের সকলের প্রার্থনায় দাদা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে,,যেটা দেখে আমরা প্রত্যেকে ভীষণ আনন্দিত। খুব বেশি আয়োজন না থাকলেও, জন্মদিনের উপলক্ষে প্রত্যেকে কিছুটা সময় আনন্দ উপভোগ করেছি, এটাই অনেক।

IMG_20241206_025259.jpg
"কেক কাটার পূর্বে তোলা ছবি"
IMG_20241206_025415.jpg
"বাবার সাথে আমরা"

যাইহোক এরপর সকলে মিলে কেক খেলাম, ট্রেনের টাইম হয়ে গিয়েছিলো। তাই শুভ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলো। এরপর সবাই মিলে ডিনার শেষ করলাম। তারপর আমি বসলাম কমিউনিটির কাজ নিয়ে।

যেহেতু ভোরের দিকে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে, তাই রাতে একটু তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়েছিলাম। তবে পরদিন সকালে বাকি কাজ শেষ করেছিলাম। এইভাবে পরশুদিনটা হঠাৎ করেই বেশ সুন্দরভাবে কেটেছিলো। পরের দিন ঘুরতে গিয়ে কেমন মজা করেছিলাম, সেটা পরবর্তী পোস্টে অবশ্যই শেয়ার করবো। ভালো থাকবেন সকলে।

"পোস্টটা গতকাল লিখেছিলাম, তবে পারিবারিক সমস্যার কারণে পোস্ট করা হয়নি। আর ক্রপ করার কারণে ছবির তারিখ গুলো পরিবর্তন হয়ে গেছে"

5c08ed51-26dc-462f-94f6-6f9e6e0fa2b4.gif

Sort:  
 13 days ago 

সর্ব প্রথম আপনার দিদির জন্য প্রাণ ভরা দোয়া ও শুভকামনা রইল। এবং জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আশা করি আপনার দিদির সামনের দিন গুলো অনেক সুন্দর ভাবে কাটবে। যেহেতু আপনি বেশ কিছু দিন আগে দিদিদের ওখান থেকে ঘুরে এসেছেন তাই যাওয়ার ইচ্ছা ছিলো না। তবে আপনার হাসবেন্ড যাওয়ার কথা বলে এবং আপনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যাবেন। আসলে কাউকে না জানিয়ে যদি আমরা যাই তাহলে অনেকটাই সারপ্রাইজ হয়ে যায় তারা। আপনারা যেহেতু যেতে চাচ্ছেন না তার পাশাপাশি হঠাৎ করেই তাদের ওখানে গিয়েছেন তাই তারা আপনাদের দেখে অবাক হয়ে গিয়েছে। যাইহোক সুন্দর একটি লেখা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

Loading...

1000002812.jpg

We look for quality posts and comments.
Curated by @kouba01

 13 days ago 

Thank you so much @kouba01 Sir, for your support. 🙏

 12 days ago (edited)

শুভ জন্মদিন দিদিকে। সৃষ্টিকর্তা যেন দিদিকে এইভাবে সবসময় হাসিখুশি রাখে এই প্রার্থনা করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.26
JST 0.040
BTC 101120.17
ETH 3683.12
USDT 1.00
SBD 3.16