Better life with steem// The Diary Game// 30th December,2024//
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
লেখার শুরুতে সবাইকে জানাই হ্যাপি নিউ ইয়ার। আশা করছি সকলের নতুন বছর খুব ভালোভাবে শুরু হয়েছে। প্রত্যেকেই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন।
তবে সবার নতুন বছর যে আনন্দময় হয় না, সেটা গতকাল আরও ভালোভাবে অনুভব করলাম। যখন সারাদিন হসপিটালে কাটলো। যাইহোক গতকালের গল্প আপনাদের সাথে পরবর্তী পোস্টটি শেয়ার করবো। আজ শুরু করি প্রথম দিনের গল্প দিয়ে, যেদিন শ্বশুর মশাইকে হসপিটালে ভর্তি করতে হলো, -
|
---|
"ছাদের গাছের ফুল"
যদিও আগে থেকেই কথা ছিলো সোমবার হয়ত শ্বশুর মশাইকে আবার এইমসে আনতে হবে, তাই সকাল থেকে বলতে পারেন সেই রকম একটা মানসিক প্রস্তুতি ছিলো। সেই কারণে শুভ অফিসে যায়নি সেদিন। তবে তার আগের সারারাত ঘুম হয়নি শ্বশুরমশাইয়ের জন্য। ক্যাথেটার নিয়ে তার এত সমস্যা হচ্ছিল যে, শনিবার থেকেই আমাদের টানা ঘুম হয় না রাতে। যাইহোক সকালে উঠে হাতমুখ ধুয়ে, ফ্রেশ হয়ে চা বসিয়েছিলাম সকলের জন্যই।
"আমাদের ব্রেকফাস্ট"
আলাদা করে সেদিনের ব্রেকফাস্ট তৈরি করিনি। চা দিয়ে পাউরুটি খেয়েছিলাম। আর অন্যদিকে ভাত বসিয়ে দিয়েছিলাম, যাতে বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় একটু ভাত খেয়ে বেরোতে পারি। তবে সকাল থেকে ফোন না আসায় বুঝতে পারছিলাম না যে, আমাদেরকে আদেও যেতে হবে কিনা। কারণ ডক্টর এর কাছে রিপোর্ট দেখানোর পর যদি তিনি মনে করেন ভর্তি নেবেন, তবেই কেবলমাত্র আমাদের যাওয়ার কথা ছিলো।
তবে তেমন কোনো ফোন না আসায়, আমি একসময় ভেবেছিলাম হয়তো আর আসতে হবে না। তাই আমি ঘরের ও কমিউনিটির সমস্ত কাজগুলো সেরে নিলাম।
|
---|
শীতকালে যথারীতি একটু তাড়াতাড়ি দুপুর হয়ে গেলো। শাশুড়ি মা শশুর মাশাইকে স্নান করানো, খাওয়ানো, এগুলো করছিলেন, তাই আমি রান্নার দিকটা সামনে নিয়েছিলাম। যথাসময়ে সব কাজ সেরে, আমি স্নান করে পুজো দিলাম।
"গাড়ি তখন ছুটছে"
"বড্ড চিন্তিত ছিলাম আমি"
পুজো শেষ করে সবে গীতা হাতে নিয়েছিলাম পাঠ করার জন্য, তখনই শুভ উপর থেকে নেমে এসে তাড়াহুড়ো করে আমাকে রেডি হতে বললো। কারণ শ্বশুর মশাইকে ভর্তি করাতে হবে। কোনরকম দিশা না পেয়ে দুটো ভাত খেয়েই গাড়ি খবর দেওয়া হলো। যদিও আগে থেকেই বলা ছিলো, তাই এক ঘন্টার মধ্যে গাড়ি চলে এলো এবং আমরাও তড়িঘড়ি রেডি হয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম।
"বিলিং করার জায়গায় এই মুর্তিটি ছিলো"
"শশুর মশাইকে তখন হুইলচেয়ার বসিয়ে রেখেছিলাম"
"ক্রিসমাসের ডেকোরেশন"
"শশুর মশাইয়ের বেড"
"বেডের পাশের জালনা দিয়ে বাইরে দেখা যায়"
ননদের ছেলের স্কুলের বিশেষ প্রয়োজন থাকায় আসতে পারে নি। তাই আমাকে আর শুভকে নিয়ে আসতে হলো। যাইহোক হসপিটালে পৌঁছানোর পর, ওনাকে ভর্তি করে দেওয়া হলো। ওনার বেড পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হল হুইল চেয়ারে করে। তারপর নার্স এসে জানালো, শশুর মশাইয়ের দুই ইউনিট ব্লাড লাগবে। সেটা নিয়ে আমরা বেশ কিছুক্ষণ দৌড়া দৌড়ি করতে হলো।
তবে এইমসের একটা জিনিস বেশ ভালো, তারা আপনার প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত দেবে, তবে আপনাকেও সেই পরিমাণ রক্ত তাদের ব্যাংকে ডোনেট করতে হবে। সেটা যে কোনো গ্রুপেরই হতে পারে, তাতে সমস্যা নেই। তবে পয়সার বিনিময়ে আপনি এখান থেকে ব্লাড কিনতে পারবেন না।
|
---|
"রক্ত দেওয়ার পর"
এই সকল কাজ করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে এলো। তবে শশুর মশাইয়ের বেডটা খুবই সুন্দর জায়গায় ছিলো। পাশেই একটা বড় জানালা ছিলো, যেটা দিয়ে বাইরের সমস্ত কিছু দেখা যাচ্ছিলো। প্রথমে বিছানা রেডি করা হলো, তারপর শ্বশুর মশাইকে ড্রেস পরিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেওয়া হলো। তারপর নার্স এলো শশুর মশাইয়ের ব্লাড নিতে। তবে ওনার শরীরে ব্লাড এতোটাই কম ছিল যে, সহজে ব্লাড পাচ্ছিলো না।
"সন্ধ্যাবেলার চা"
যাইহোক অবশেষে সমস্ত কিছু তাদেরকে জানানো হলো। শ্বশুর মশাইয়ের জন্য ইনজেকশন আনার পর, প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো দেওয়া হয়েছিলো। ইতিমধ্যেই ওনাকে সন্ধ্যের চা বিস্কুট দিয়েছিলো। তবে সুগার ফ্রি বিস্কুট ওনার পছন্দ নয়, তাই অনেক বলার পর একটা বিস্কুট খেয়েছিলেন। এরপর আমি অনেকক্ষণ ওখানে অপেক্ষা করলাম, শুভ ততক্ষণে বাইরের কাজগুলো সেড়ে এলো। হসপিটালে বোধহয় প্রতিটি মুহূর্ত একটা দীর্ঘদিন বলে মনে হয়, সময় যেন কিছুতেই অতিবাহিত হতে চায় না।
|
---|
"ড্রেস পরানোর পরে"
দেখতে দেখতে ঘড়ির কাটায় সাড়ে নটা বাজলো। রাত সাড়ে দশটা থেকে শশুর মশাইয়ের ব্লাড চলবে। তাই তার আগেই ওনাকে ডিনারটা করিয়ে দিতে হলো। রুটি খেতে উনি একদম পছন্দ করে না, অথচ ওনার সুগার বলে রাতে ওনাকে রুটি দিয়েছিলো। অনেক বুঝিয়ে ওনাকে খাওয়ালাম। তারপর বাকি ওষুধগুলো দেওয়ার পর, নার্স এসে ব্লাড চালালো। প্রথমে ১ ঘন্টা খুব ধীরে ধীরে ব্লাড দিয়েছিলো, যাতে যদি কোনো সমস্যা হয় সেটা ওরা বুঝতে পারে।
"ব্লাড দেওয়া শুরু হয়েছে"
আমি তখন বেশ কিছুক্ষণ ছিলাম ওনার পাশে বসে। তবে যত রাত বাজছিলো আমার ওখানে বসে থাকছে অস্বস্তি হচ্ছিলো। কারণ ওটা একটা মেল ওয়ার্ড ছিলো। তাই আমার পক্ষে বেশি রাত পর্যন্ত ওখানে থাকা সম্ভব ছিল না বলে, আমি শুভকে ডেকে শ্বশুর মশাইয়ের পাশে বসে থাকতে বললাম। আর আমি পাশের ওয়েটিং রুমে বসলাম। সেখানেই অতিবাহিত হল সেদিন সারা রাত।
"আমি কিছু বলছিলাম শশুর মশাইকে"
সারা ঘর জুড়ে অনেক মানুষ, যারা আপনজনের সুস্থতার জন্য ওই ঘরে প্রতীক্ষা করছেন। ওনাদেরকে দেখে সত্যিই মনে হলো, মানুষের জীবনে এটাই বোধহয় আসল বাস্তবতা। এই পৃথিবীতে নিজের সমস্যাই সব থেকে বড় নয়, আমার থেকেও কত বড় বড় সমস্যার সাথে মানুষ লড়াই করছে।
রাতটা কিভাবে কেটেছে সত্যিই জানিনা। তবে বসে বসে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা যে এই প্রথম হলো এমনটা নয়, তবে অনুভূতিটা একটু ভিন্ন তো বটেই। ফোন দেখে সময় কাটানোর মত মানসিকতা ছিল না, এমনকি ফোনে চার্জ প্রায় ফুরিয়ে এসেছিলো।
"শশুর মশাইয়ের ওয়ার্ডের ছবি"
রাতের দিকে আমাদেরকে জানানো হয়েছিল যে, শশুর মশাইয়ের সকালে একটা সার্জারি হতে পারে, সেটা নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিলাম। তবে ঘুম হয়নি সারারাত। কখনো বসেছি, কখনো একটু হেঁটেছি, এইভাবে রাত পার হয়েছে।
শুভ প্রায় রাত তিনটা পর্যন্ত শ্বশুর মশাইয়ের হাত ধরে বসে ছিলো, কারণ উনি এত পরিমাণে হাত নাড়ছিলেন যে ওনার হাত ছাড়তে পারেনি যাতে কোনো সমস্যা না হয়। ভোর রাত্রে দেখি ও একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলো, তখনই নার্স গিয়ে ওকে সকালে তুলেছিল।
"রাতে মেন বিল্ডিং এর ছবি "
"রাতের পরিবেশ"
পরদিন কিভাবে অতিবাহিত হয়েছে সেটা পরের পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। এই মুহূর্তে সত্যিই বড্ড ক্লান্ত লাগছে। কাউকে সরাসরি হাসপাতালে ভর্তি করার অভিজ্ঞতা এই প্রথম। যাক জীবনে আমরা সকলেই বোধহয় কোনো না কোনো কাজ প্রথম করি, আমার ক্ষেত্রে এটা তেমন একটা কাজ ছিলো। যাই হোক সকলে ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
বেশ কয়েকদিন ধরে, আপনি অনেক মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন দিদি, আপনার কয়েকটি পোস্টে ই আমি পড়েছি! আপনার শ্বশুর মশাইয়ের অবস্থা অনেক খারাপ। তার জন্য দোয়া রইল, সৃষ্টিকর্তা যেন খুব দ্রুত সুস্থ করে তোলে। আপনি ঠিকই বলেছেন, হাসপাতালে গেলে বোঝা যায়।মানুষ কত কষ্টের মধ্যে আছে! এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য মানুষের কত হাহাকার করছে। আপনার পোস্টের মাধ্যমে আরেকটি বিষয় জানতে পারলাম। এই হসপিটালের ব্লাড দেওয়া বা ব্লাড গ্রহণ করার বিভিন্ন রকম একটি আইডিয়া। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে, প্রয়োজন মতে আমি ব্লাড নেব এবং যে কোন গ্রুপ ব্লাড ডোনেট করতে আমি পারবো।
আপনার পরিবারের জন্য দোয়া করি দিদি। অতি শীঘ্রই যেন আপনারা এই বিপদ থেকে মুক্তি পান।ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
TEAM 7
Congratulation!!!
Your post has been supported. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.
Curated By : @wirngo
TERM
AVENGERS ALLIES
প্রথমে অনেক অনেক দোয়া রইল আপনার শশুরের যেন তিনি যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যান, পোস্ট টা পড়ে সত্যি খারাপ লাগলো যদি আপনার শশুর দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ, তবে আমি দোয়া করছি তিনি যেনো তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।
পরিবারে কেউ অসুস্থ থাকলে বড্ড খারাপ লাগে চিন্তায় পেরেশানিতে নিজেকে অনেক বেশি হতাশা লাগে,, কয়েকদিন আগে আমার শ্বশুর একটা এক্সিডেন্ট করেছিল যেটাতে আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম এখনো বিষয়টা নিয়ে আমি বেশ, চিন্তিত। কারণ আমার কাছে মনে হয় আমার শ্বশুর বাড়িতে ওই একটা মানুষই আছে, যে কিনা আমার ভুল এখনো বলত না সব সময় সাহস যোগায় আছেন পাশে ছিলেন।
সত্যি আপু, আপনার প্রতিটি লেখা বাস্তবতার ছোঁয়া এনে দেয়। শ্বশুর মশাইয়ের প্রতি আপনার যত্ন আর দায়িত্বশীলতা দেখে মুগ্ধ হলাম। কঠিন সময়েও এত সুন্দরভাবে সব সামলেছেন এটা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। আপনার শ্বশুর মশাই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন, এটাই প্রার্থনা।
আসলে প্রতিটা মানুষের বছরের প্রথম দিন ভাল কাটবে এটা আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারি না। হয়তোবা কারো জীবনে সুখ বয়ে নিয়ে আসে আবার কারো জীবনে অনাবিল দুঃখ। তারপরেও সবকিছু মিলিয়ে আমাদের চলতে হয়। আপনার শ্বশুর মশাই তখন হসপিটালে ছিলেন যেটা আমরাও শুনেছি।
আসলে আমরা চাইলেই আমাদের জীবনের সময়টাকে পরিবর্তন করতে পারবো না। জানিনা বর্তমান সময়ে আপনার শ্বশুর মশাই কেমন আছে। আশা করি তিনি আগের চাইতে অনেক ভাল আছেন আর পরিবারের মধ্যে যখন একটা মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন পরিবারের প্রতিটা মানুষ অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে থাকে। ধন্যবাদ এত ব্যস্ততার মাঝেও আপনার একটা দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।