Better life with steem// The Diary Game// 27 th November, 2024// একাদশীর দিনের ব্যস্ততা
|
---|
Hello,
Everyone,
শেষ যেদিন শশুর মশাইকে ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে এলাম ডাক্তার বললেন, ওনার দেওয়া অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ করছে এবং শ্বশুর মশাইয়ের শারীরিক অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে।
সেই মুহূর্তের জন্য কিছুটা নিশ্চিত হয়েছিলাম ঠিকই, তবে ঠিক তার থেকে ৬ দিন বাদেই দাদার অপারেশনের ডেট পড়লো। সেই মুহূর্তগুলো কিভাবে কাটিয়েছি, তার সবটাই আপনাদের সাথে পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করেছি।
দাদা কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরলাম। ভেবেছিলাম বাড়িতে এসে কয়েক দিন বোধহয় মানসিক শান্তি পাবো, যেহেতু দাদা ও শ্বশুরমশাই দুজনেই কিছুটা হলেও ভালো আছে। কিন্তু মানসিক শান্তির স্থায়িত্ব বেশিদিন হলো না।
আবার শশুর মশাইয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। সেই পূর্বের মতো অবস্থানে ফিরে গিয়েছেন। আজ এই পোস্টের মাধ্যমে সেই দিনের কার্যক্রমে আপনাদের সাথে তুলে ধরবো, যেদিন থেকে ওনার শরীর খারাপ শুরু হলো।
|
---|
আমি যেদিনের কথা বলছি সেদিন ছিল ২৭ তারিখ উৎপন্না একাদশী। মায়ের মৃত্যুর পর একবছর আমি একাদশী পালন করেছিলাম। অনেক বছর পর আবার পুনরায় একাদশীর উপবাস করতে শুরু করেছি। সেদিন আমি উপোস ছিলাম ঠিকই, তবে তার কারণে বাড়ির কোনো কাজ বন্ধ রাখার উপায় ছিল না।
|
---|
|
---|
তাই যথারীতি সকাল থেকে উঠে প্রতিদিনের কাজগুলো সেরে নিয়েছিলাম। যথাসময়ে শুভকে চা দিলাম, টিফিন তৈরি করলাম। শুভ অফিসে চলে গেলে, শ্বশুর মশাইকে ব্রেকফাস্ট দেওয়ার পর, খাবার খাওয়ার পরের ওষুধগুলো দিয়ে দিলাম।
ঘরে বসে কমিউনিটির কিছু কাজ দেখছিলাম সেই মুহূর্তে শশুর মশাই ডাকলো। ওনার ঘরে পৌঁছাতে উনি বললো ইউরিনের সাথে ব্লাড আসছে। আজকাল একটু ভুল কথাবার্তা বলছেন, তাই খুব বেশি যে বিশ্বাস করেছি এমনটা নয়। আবার একেবারে অবিশ্বাসও করতে পারিনি। কারণ ওনার ইউরিন ইনফেকশনের একটা সমস্যা রয়েছে।
তাই শাশুড়ি মাকে বিষয়টি জানালাম এবং পরেরবার ওনাকে খেয়াল করতে বললাম। কিছুক্ষণ বাদে শাশুড়ি মায়ের ডাকে ছুটে গেলাম এবং যা শুনলাম তাতে বুঝে গেলাম, আবার শরীর খারাপ হতে চলেছে শশুর মশাইয়ের। কারণ এটি একবার নয়, এই নিয়ে মোট চার বার একই রকম ভাবেই তার অসুস্থতা শুরু হয়।
|
---|
|
---|
ততক্ষণে প্রায় দুপুর হওয়ার কাছাকাছি। আমিও রেডি হয়েছিলাম স্নান করে ঠাকুর পূজো সারবো বলে। তার আগে ওনার প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে ডাক্তারের কাছে পাঠালাম এবং ওনার থেকে সাজেশন চাইলাম। সৌভাগ্যবশত ডাক্তারবাবু হোয়াটসঅ্যাপে রিপ্লাই করেন এবং ইউরিন ইনফেকশনের জন্য একটি সিরাপ তিনি সাজেস্ট করেন।
যথারীতি সেটা শুভকে পাঠাই এবং ওষুধের দোকানে খোঁজ নিতে বলি। যে দোকান থেকে আমাদের প্রতি মাসের ওষুধ আসে, সেখান থেকে বাড়িতে ডেলিভারি দেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। তাই ওষুধটা যদি দোকানে থাকে তাহলে বাড়ি বসেই ওষুধটা আনানো সম্ভব হবে, তাই কিছুটা নিশ্চিত ছিলাম।
কিন্তু যথারীতি আমার দুর্ভাগ্য। ওষুধটা দোকানে ছিল না আর সেই মুহূর্তে ওষুধ আনাটাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। অগত্যা আমাকে যেতে হলো ওষুধ আনতে। স্টেশন বাজার খুব বেশি দূরে না হলেও, দুপুরবেলায় বাড়ি থেকে বেরোতে ভালো লাগে না, তার উপর আবার উপোস করে। কিন্তু কিছুই করনীয় নেই সেই মুহূর্তে আমাকে যেতেই হলো।
|
---|
ওষুধ নিয়ে ফেরার পথে একটু সবজি বাজারে গিয়েছিলাম। নিজের জন্য কাঁচা হলুদ কিনতে। শাশুড়ি মা ও বলে দিয়েছিলেন সামনে যদি কিছু সবজি পাই, যেন অল্প করে নিয়ে নিই। সবজির দাম শুনে প্রায় অজ্ঞান হওয়ার মত অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। সবজি কিনতে কিনতেই ভাবলাম শাশুড়ি মা কিভাবে এই সংসারটাকে চালাচ্ছে?
|
---|
|
---|
|
---|
|
---|
|
---|
|
---|
সত্যিই সংসারের সবদিক ম্যানেজ করা অনেক বেশি চাপের বিষয়। যাইহোক সেদিন কি কি সবজি কিনেছি, চলুন আপনাদের সাথে একবার শেয়ার করি-
নং | উপকরণ | মূল্য | স্টিম মূল্য |
---|---|---|---|
১. | শশুর মশাইয়ের ওষুধ (২০০ এম.এল) | ১৬০ টাকা | ৭.১৭ স্টিম |
২. | কাঁচা হলুদ(১০০ গ্রাম) | ১০ টাকা | ০.৪৫ স্টিম |
৩. | সিম (৫০০ গ্রাম) | ৪০ টাকা | ১.৭৯ স্টিম |
৪. | পালংশাক (২ আঁটি) | ৩০ টাকা | ১.৩৪ স্টিম |
৫. | মূলা (৫০০ গ্রাম) | ৩০ টাকা | ১.৩৪ স্টিম |
৬. | রসুন (১ টা) | ১৩ টাকা | ০.৫৯ স্টিম |
৭. | পেঁপে (প্রায় ৭০০ গ্রাম) | ৪৫ টাকা | ২.০২ স্টিম |
|
---|
|
---|
এরপর বাড়িতে ফিরে যথারীতি একাদশীর সমস্ত নিয়মাবলী পালন করেছি। দুপুরে শশুর মশাইকে লাঞ্চ করিয়ে দেওয়ার পর, ওনাকে ওষুধ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতেই সন্ধ্যা হয়ে এলো, তাই আমি উঠে সন্ধ্যা পূজো সেরে কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসলাম
অফিস থেকে ফেরার পথে শুভ মিষ্টি নিয়ে এসেছিলো। ও ভেবেছিলো একাদশীতে হয়তো মিষ্টি খাবো। তবে একাদশীতে আমি মিষ্টি খাই না, কারণ মিষ্টি শুধুমাত্র ছানা দিয়ে তৈরি হয় না। তার মধ্যে কিছুটা হলেও আটা, ময়দা বা সুজি মেলানো হয়। যেটা একাদশীর দিন না খাওয়াই ভালো।
|
---|
তবে অনেকেই আছেন, যারা রুটি খেয়ে থাকেন। আসলে এই সমস্ত বিষয়টাই নিজের মনের। নিজের মন থেকে যেটা করতে ইচ্ছে করবে সেটাই করা উচিত। জোর করে কোনো কিছুই করা উচিত নয়। আমার মন থেকে মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছিল না, তাই আমি সেদিন খাইনি।
|
---|
রাতে সবাই সবার মতন ডিনার সেরেছিল। আমি পিকলু কে খাবার খাইয়ে দিয়ে নিজের মতো করে ফল খেয়ে নিয়েছিলাম। যদিও আমি সেদিন উপোস ছিলাম, তবে বিশ্বাস করুন শারীরিক খারাপ লাগার থেকেও মানসিক চাপ ছিল সেদিন অনেকটাই বেশি।
এখনো যে একেবারে চাপ মুক্ত এমনটা নয়। কারণ যথেষ্ট খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছি এই মুহূর্তে। শ্বশুরমশাইয়ের এন্টিবায়োটিকের কোর্স শুরু করেছি, জানিনা পরিস্থিতি কোথায় নিয়ে যাবে।
যাইহোক সেদিন সারাটা দিন মোটামুটি একটি মানসিক চাপের মধ্যে ছিলাম। তার মধ্যে থেকেও একাদশীর সকল নিয়মাবলী যেমন সম্পন্ন করেছি তেমনি নিজে দায়িত্বে বাজার থেকে কিছু সবজি ও কাঁচা হলুদ কিনেছি। কাঁচা হলুদ খাওয়ার কথা আমাকে বলেছেন আমাদের অ্যাডমিন ম্যাম, কারণ সেটি নাকি স্বাস্থ্যকর।
আপনারা যারা এই মুহূর্তে আমার পোস্ট পড়ছেন, তাদেরকেও বলব সম্ভব হলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক টুকরো কাঁচা হলুদ খাওয়ার অভ্যাস আপনারাও করতে পারেন। শুরুর দিকে খেতে সত্যিই খুব খারাপ লাগে, তবে ধীরে ধীরে এটা অভ্যাস হয়ে যাবে।
আমি খেতে শুরু করেছি, সুফল পেলে অবশ্যই আপনাদেরকে জানাবো। যাইহোক সকলকে অনেক ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ার জন্য। ভালো থাকবেন সকলে।