Better life with steem// The Diary Game// 15th december, 2024// রবিবারের সারাদিন
|
---|
Hello,
Everyone,
কেমন আছেন আপনারা সকলে?
আশা করছি সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটি বেশ ভালো কেটেছে। সপ্তাহ শুরুর দিনটি আমি বেশি ব্যস্ততার মধ্যে কাটিয়েছি। তবে আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, গতকাল ছুটির দিনটি অর্থাৎ রবিবার আমি কেমন কাটিয়েছিলাম সেই গল্প।
অনেকদিন বাদে রবিবার দিনটা একটু অন্যরকম কাটিয়েছিলাম। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে তার কিছু মুহূর্ত অবশ্যই শেয়ার করা উচিত। চলুন তাহলে শুরু করি, -
|
---|
রবিবার মানেই ছুটির দিন। সপ্তাহের অন্যান্য দিন সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চললেও, রবিবার দিন কিছুতেই সেই তাল মেলে না, বা বলা ভালো আমি মেলানোর চেষ্টাও করি না। আগে অবশ্য করতাম। তবে আজকাল একটু নিজের ইচ্ছার মূল্য দিচ্ছি এই যা।
শনিবার দিন বাড়িতে যেহেতু শ্বশুরমশাই ও শাশুড়ি মায়ের বিবাহ বার্ষিকীর আয়োজন হয়েছিলো। সেদিন ননদরা সকলে ছিলো। বেশ অনেক রাতে ওরা বাড়ি গিয়েছিল বলে, আমরাও অনেক রাতে ঘুমাতে গিয়েছিলাম। তবে তেমন একটা চিন্তা ছিল না কারণ, পরের দিন রবিবার ছিলো, তাই দেরি করে ঘুম থেকে উঠলেও কোনো সমস্যা ছিলো না।
যখন ঘুম ভাঙলো তখন ঘড়ির কাঁটায় ৯.৪২ বাজে। তারপরেও শুয়েই বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। কারণ শীতকালে গরম কম্বল ছেড়ে উঠতে কারোরই মন চায় না। শুভ অবশ্য আগেই উঠে গিয়েছিল। ওর এগারোটা নাগাদ বন্ধুর সাথে বারাসাতে যাওয়ার কথা ছিলো। ও ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়েছিল শশুর মশাইয়ের সুগার মাপার জন্য। কিন্তু অদ্ভুতভাবে যখন উপরে এলো, তখন হাতে করে ওর আর আমার জন্য দু কাপ চা নিয়ে এলো, যেটা দেখে আমি তো অবাক।
আরও অবাক হলাম যখন শুনলাম চা টা সে নিজেই বানিয়েছে। যাক খুব একটা খাওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও, এরকম ভাগ্য সচরাচর হয় না। তাই খেয়েই নিলাম। প্রকৃতপক্ষে গতকাল বেড টি খেলাম। এরপর আমি কিছুক্ষণ কমিউনিটির কাজ করলাম। শুভ রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ল, ব্রেকফাস্ট বন্ধুর সাথে বাইরে করে নেবে বলেছিল, তাই আর তাড়াহুড়ো করে আমি কিছু বানাইনি।
নিচে এসে দেখলাম শ্বশুর মশাই ও শাশুড়ি মায়ের খাওয়া হয়ে গেছে। শাশুড়ি মা আমার জন্য দুটি চিনির পরোটা করে রেখেছিলেন, আমি সেটা দিয়েই ব্রেকফাস্ট করলাম। এরপর আমার কাজ ছিল পিকলুকে স্নান করানো। ডিউটি যদিও শুভর ছিলো, কিন্তু যেহেতু ও প্রয়োজনে হঠাৎ বাইরে গেলো, তাই আমাকেই করাতে হলো।
|
"দুপুরবেলা"
পিকলুকে স্নান করাতে করাতেই দুপুর হয়ে গিয়েছিলো। এরপর হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে ওর পশমগুলো ভালো করে শুকিয়ে দিয়ে, আমি নিজেও স্নান করে নিলাম। কারণ আমাকে দুপুরের পর আবার ননদের বাড়িতে যেতে হবে।হিসেব মতো ননদের বিবাহ বার্ষিকী আজ। তবে অনুষ্ঠানটা ওরা গতকাল অর্থাৎ রবিবার ছুটির দিনেই করেছিলো।
তাই দেরি না করে তার স্নান সেরে, ঠাকুর পূজা দিয়ে, গীতা পাঠ করে, আমি লাঞ্চ করে নিলাম। শুভকে ফোন করে জানতে পারলাম ওর আসতে তখনও প্রায় আধঘন্টা সময় লাগবে। আমার লাঞ্চ শেষ হতেই ও বাড়িতে এলো। এরপর ওর সাথে কথা বলা ঠিক করলাম, ও স্নান করে খাওয়া দাওয়া করে, তারপর আমাকে দিয়ে আসবে। ননদকেও সেই মতো জানিয়ে দিলাম। ও স্নান করতে গেলো। আর ততক্ষণে আমি কমিউনিটির বুমিং সংক্রান্ত কিছু কাজ সেরে নিলাম।
লাঞ্চ হওয়ার পর আমরা দুজন বেরোলাম ননদের বাড়ির উদ্দেশ্যে। তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে একটা ফুচকাওয়ালা চোখে পড়লো। হঠাৎ করেই বাইক দাঁড় করিয়ে, আমাকে ফুচকা খাওয়ার জন্য বলাতে আমিও রাজি হয়ে গেলাম। তবে খুব বেশি খাইনি। এরপর গিয়ে পৌঁছালাম ননদের বাড়িতে।
|
---|
সেখানে গিয়ে দেখি বিশাল আয়োজন। মোটামুটি ছোটখাটো অনুষ্ঠান বলা চলে। ননদের বাড়ির পিছনের দিকে একটা বারান্দা আছে, যেখানে পরিষ্কার করে, সকলে মিলে রান্নার আয়োজন করেছিলো। ব্যাপারটা খানিকটা পিকনিকের আয়োজনের মতনই লাগছে।
এরপর সমস্ত কিছু এক জায়গায় নিয়ে এসে, আমরা কাটাকুটি শুরু করলাম। সাথে অনেকজন একসাথে বসে গল্প করতে করতে কাজ শুরু করলাম। কতদিন বাদে যে গতকাল প্রানখুলে হেসেছি, তা বলে বোঝাতে পারবো না। শুধু হেসেছি বলে ভুল হবে, হাসতে হাসতে প্রায় দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
ননদের বাড়িতেই একজন ভাড়াটিয়া কাকিমা থাকেন, তিনি এমনভাবে কথা বলেন যে, আপনিও শুনলে হাসতে বাধ্য হবেন। যাইহোক এমন করেই আয়োজন, রান্নাবান্না শুরু হলো এবং ধীরে ধীরে তা শেষ পর্যায়ে পৌঁছালো।
|
---|
অন্যদিকে কয়েকজন মিলে যে ননদের বিবাহ বার্ষিকী পালন করার এতো আয়োজন করেছিল তা সত্যিই ভাবতে পারিনি। সেখানে গিয়ে দেখে তো অবাক। রান্না শেষ হতেই সবাই মিলে জোর করে ননদকে শাড়ি পরালো, যে শাড়িটা আমি ননদকে গিফট করেছি। শাড়ি টা দেখতে আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন।
যাইহোক অবশেষে একপ্রকার বাধ্য হয়ে ননদ সাজতে গেলো। তারপর সকলে মিলে আনন্দ সরকারে তাদের বিবাহবার্ষিকী পালন করলাম। এরপর ছিলো রাতের খাওয়া-দাওয়া। বাদ বাকি আরো অনেক মজা করেছিলাম সকলে মিলে। কি কি করেছিলাম, কি খাওয়া দাওয়া হয়েছিল সেই সম্পর্কিত একটা আলাদা পোস্ট আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তাই আজকে কিছু মুহূর্ত অজানাই থাক।
অন্যান্য রবিবার গুলিতে কাজের চাপ অনেকটা বেশি থাকে। ছুটির দিনটিকে সেইভাবে উপভোগ করার অবকাশ পাই না। কিন্তু গতকাল দিনটা বেশ উপভোগ করেছি, বিশেষত সন্ধ্যার পর থেকে রাত্রি পর্যন্ত। যাইহোক বাকি গল্প অন্য পোস্টে হবে, আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে। এই ঠান্ডায় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করবেন। শুভ রাত্রি।
|
---|
আপনার লেখাটি পড়ে দারুণ ভালো লাগলো।
আপনার রবিবারের দিনযাপন, পারিবারিক মুহূর্ত আর হাসি-আনন্দে ভরা বিবরণগুলো খুবই প্রাণবন্ত ছিল। বিশেষ করে ননদের বিবাহবার্ষিকীর আয়োজন আর পিকনিকের মতো পরিবেশের গল্প পড়ে আমি বেশ মুগ্ধ হয়েছি। পরিবারকে ঘিরে এমন সুন্দর সময় কাটানো আসলেই খুব প্রশান্তিদায়ক।
আমি ভুল না করলে শুভ আপনার হাসবেন্ড তাইনা? আপনার হাজবেন্ডের বানানো চা আর সকালে বিছানায় চা খাওয়ার অভিজ্ঞতাটা বেশ মজার লাগলো! ছোট ছোট বিষয়গুলো জীবনে বড় আনন্দ নিয়ে আসে। আর রাস্তার ধারের ফুচকার গল্প শুনে মনে হলো, এমন সুন্দর মুহূর্তগুলোই জীবনের সেরা উপহার।
আপনার ননদকে উপহার দেওয়া শাড়িটা বেশ সুন্দর। আপনার উপহারের শাড়িতে ননদকে সাজানো আর রাতের জমজমাট অনুষ্ঠানের বিবরণ খুবই সুন্দর ছিল। পারিবারিক বন্ধন আর হাসি-মজা দিয়ে দিনটি যেভাবে রাঙিয়েছেন, তা থেকে অনুপ্রাণিত হলাম। আশা করি, আগামীতেও এমন সুন্দর দিন কাটাবেন এবং আমাদের সাথে শেয়ার করবেন।
সবসময় ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। ঠান্ডার মধ্যে সাবধানে থাকবেন। শুভকামনা রইলো।