Better life with steem// The Diary Game// 10th January,2025// একাদশীর সারাদিন
|
---|
Hello,
Everyone,
কিছুক্ষণ হলো দিদি বাড়িতে বসে পৌঁছালাম। ফ্রেশ হয়ে কমিউনিটির একটু কাজ সেরে, বসলাম পোস্ট লিখতে।অনেকদিন বাদে এলাম দিদি বাড়িতে। সত্যি বলতে তিতলি ও তাতানের এর সাথে অনেকদিন দেখা না হলে মনটা বেশ খারাপই লাগে। যদিও আজ শুধু দেখা করতে নয়, একটু প্রয়োজনেই এসেছি। তবে সেই বিষয়ে আপনাদের সাথে অন্য একটি পোস্টে কথা বলবো। যাইহোক আজ আমি গতকালকে আমার দিনটা কিভাবে কাটিয়েছিলাম, সে গল্পই শেয়ার করবো এই পোস্টের মাধ্যমে। চলুন তাহলে শুরু করি, -
|
---|
"শীতকালীন ফুল- চন্দ্রমল্লিকা"
যারা আমার পোস্ট কম বেশি পড়েন, তারা জানেন বেশ কয়েকদিন হয়েছে আমি একাদশীর উপবাস পালন করা শুরু করেছি। গতকাল ছিল পুত্রদা একাদশী। এটি ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম একাদশী ছিলো। আগের দিন সন্ধ্যা বেলাতে গিয়েই কিছু ফল কিনে নিয়ে এসেছিলাম, সে কথা আগের দিনের পোস্টে শেয়ার করেছিলাম।
যাইহোক গতকাল সকালে যথাসময়ে ফোনে অ্যালার্ম বেজেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরেই কম্বল থেকে বের হতে একেবারেই ইচ্ছা করে না। তাই পরপর তিনবার অ্যালার্ম সেট করেছি। দুবার বন্ধ করে দিয়ে আবার শুয়ে পড়ি তিনবার বাজার অপেক্ষায়। তবে তিনবারের বার সমস্ত অলসতা ছেড়ে উঠে পড়তেই হয়, কারণ তার থেকে বেশি দেরি হলে আবার শুভর অফিসের টিফিন করে দিতে পারবো না।
"শুভর সকালের চা"
"শুভর ব্রেকফাস্ট-বাঁধাকপি,বেগুন ভাজা ও রুটি"
যাইহোক রোজকার মতো ওকে চা দিয়ে, নিজে গরম জল খেলাম। তারপর রান্না বসিয়ে, ব্রেকফাস্টের জন্য রুটি করেছিলাম। ব্রেকফাস্ট সম্পন্ন করে শুভ অফিসে চলে যাওয়ার পর, আজকাল প্রতিদিনই ছাদে গিয়ে কিছুক্ষণ বসি। কারণ সকালের দিকে রোদটা পড়ে ছাদে। শাশুড়ি মা বেশ কিছু নতুন গাছ বসিয়েছেন ফুলের, সেগুলোতে দু একটা ফুল ফোঁটাও শুরু করেছে। কিন্তু কোনো না কোনো কারণে সেগুলো আর আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়ে ওঠেনি।
যেহেতু একাদশী তার খুব বেশিক্ষণ ছাদে বসতে পারলাম না। কারণ তখনও অনেকগুলো কাজ করা বাকি ছিলো। তাই ঝটপট সেই কাজগুলো সেরে নিয়ে, স্নান করে পুজো করতে বসলাম।
|
---|
"ফুলদিয়ে সাজানো আসন"
"গুরুদেবের আসন"
আমাদের একদম পাশের বাড়ির কাকি জানলা দিয়ে ডাকলো। উনি পুজো দিতে পারবেন না, তাই আমি যেন ওনাদের বাড়ির ফুলগুলো নিয়ে আসি, সেটাই বললেন। ভাগ্যিস তখনও পুজো শেষ হয়ে যায়নি, না হলে ফুলগুলো আনতে পারতাম না। পূজার কাজ কিছুটা গুছিয়ে আমি কাকিদের ঘর থেকে ফুল নিয়ে আসলাম। আর আসনটা সুন্দর করে সাজিয়ে নিলাম।
"একাদশীর আয়োজন"
"পুজো শেষ করার পর"
"ষষ্ঠ অধ্যায়"
"শ্রীমতভগবত গীতা"
এরপর ফল কেটে সমস্ত কিছু গুছিয়ে আমি পুজো দিলাম। সব শেষে ভগবত গীতা পাঠ করলাম। কাল আমার ষষ্ঠ অধ্যায় পড়ার ছিলো, তার সাথে অবশ্যই গীতা মাহাত্ম্য পড়েছি। কারণ গীতায় লেখা আছে, গীতা পাঠ করে মাহাত্ম্য পাঠ না করলে গীতা পাঠ বৃথা হয়।
ইতিমধ্যে শ্বশুরমশাইয়ের স্নান হয়ে গিয়েছিল এবং শাশুড়ি মা ও রান্না শেষ করে স্নান করতে ঢুকেছিলেন। আমি পুজো সম্পন্ন করে, আমাদের খাবারগুলো টেবিলে এনে রাখলাম। শ্বশুর মশাইকে খেতে দিলাম। তারপর পিকলুকেও খাওয়ালাম।
সবশেষে শাশুড়ি মা খেতে বসলেন। অন্যদিন আমি ওনার সঙ্গ দিই। তবে গতকাল আমি একটু আগেই সাবু মাখা খেয়ে নিয়েছিলাম। তারপর ঐ মামা কেমন আছে জানতে রীতি কাছে মেসেজ করলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে উত্তর দিলো আগের থেকে অবস্থা বেশ কিছুটা স্থিতিশীল। শুনে খুশি হলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষে প্রতিদিনের মতোই কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসলাম।
|
---|
"নিজের জন্য কেটে নেওয়া পেয়ারা"
সকলেই জানেন শীতকালে সন্ধ্যা হয়ে যায় দেখতে দেখতে। আর আমাদের দুপুরের খাওয়াটা অনেকটা দেরিতে হয়ে থাকে, ফলতো খেয়ে ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যা হয়ে যায়। কিন্তু শীতকালে সন্ধ্যা পুজো দিতে আমার বড্ড কষ্ট হয়। সব থেকে বেশি কষ্ট হয় গরম কম্বল থেকে বেরিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করতে। কিন্তু কিছু করার নেই।
যেহেতু একাদশীর উপবাস ছিলাম, তাই সন্ধ্যাটা আমি দেবো ঠিক করেছিলাম। অন্যান্য দিন অবশ্য শাশুড়ি মাকে বললে তিনি দিয়ে দেন। তবে আমার আবার সন্ধ্যাবেলায় সন্ধান না দিলে ভালো লাগে না। শাশুড়ি মা দুপুরে দেরি করে ঘুমান বলে সন্ধ্যা পেরিয়ে যাওয়ার অনেকক্ষণ বাদে পুজো দেন। সেটা আবার আমার খারাপ লাগে, তাই একটু কষ্ট হলেও চেষ্টা করি সন্ধ্যাটা সময় মত দিয়ে দেওয়ার।
|
---|
"শুভকে দেওয়া ফল"
চুল কাটিয়ে ফিরতে ফিরতে শুভর গতকাল বেশি রাত হয়েছিলো, কারণ সেলুনে নাকি প্রচুর ভিড় ছিলো। যাইহোক ততক্ষণ আমি কমিউনিটির কাজ গুলো সম্পন্ন করেছি। শুভ বাড়িতে আসলে ওকে একটু ফল দিয়েছিলাম, যেগুলো আমি নিজের জন্য কেটেছিলাম। ও একটু খেয়ে আর কিছু খাইনি একেবারে রাতে রুটি খাবে বলে।
কিছুক্ষণ বাদে কমিউনিটির কাজগুলো শেষ করে, আমি রুটি করতে গেলাম। গতকাল আমি শুধু রুটি করেছিলাম, বাকি টেবিলে খাবার আনা, সবাইকে খাবার দেওয়া, সমস্তটাই শাশুড়ি মা করেছিলেন। আমি শুধু পিকলুকে সময় মত খাইয়ে দিয়ে ওষুধ দিয়ে দিয়েছিলাম।
"কয়েকদিন আগে পিকলুকে স্যালাইন দেওয়ার সময় তোলা ছবি"
প্রসঙ্গতা জানাই পিকলুর শরীরটাও গত কয়েকদিন ধরে বেশ খারাপ। মাঝখানে তিনদিন ওকে স্যালাইন দিতে হয়েছিলো। সেই বিষয়ে অন্য কখনো আপনাদের সাথে কথা বলবো। এরপর খাওয়া সম্পন্ন করে আমি একটু কমিউনিস্টের কাজ নিয়ে বসলাম, আর শুভ কিছুক্ষণ ফোন দেখলো। কিছুক্ষণ পর শুয়ে পড়লাম।
এই শীতকালে কম্বলের নিচে একবার ঢুকে পড়লে, বেশিক্ষণ চোখ খুলে রাখা মুশকিল। কখন যে ঘুম এসে যায় বুঝতে পারি না। যাক এভাবেই কেটেছে আমার একাদশীর দিনটা। আশা করছি আপনাদের আজকাল দিন খুব ভালো কাটছে ভালো থাকবেন সকলে শুভরাত্রি।
|
---|
আপনার প্রতিদিনের কার্যক্রম দেখে খুব ভালোই লাগছে! আপনার পোস্টটি পড়ে জানতে পারলাম। আপনার মামা আগের থেকে এখন সুস্থ আছে, জেনে অনেক ভালো লাগলো। কেননা গত পোস্টে আমি পড়েছিলাম, উনি আইসিইউতে ছিলেন। আপনার পোস্টটি পড়ে আরেকটি বিষয় বুঝতে পারলাম, আপনি হয়তো রোজা রেখেছেন! বা সৃষ্টিকর্তার জন্য উপবাস করছেন, আপনার রোজা বা উপবাস সৃষ্টিকর্তা যেন কবুল করে এই দোয়া করি। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য,আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আসলে আপনাদের অনেক ধরনের পুজো আছে সেটা আমি জানি। একাদশী সম্পর্কে আমার তেমন একটা ধারণা নেই। আজকে আপনার পোস্ট পরিদর্শন করে বুঝতে পারলাম। এই সময়টাতে আপনারা উপাসনা করে থাকেন। সকালবেলা যতই ইচ্ছে করুক না কেন কম্বলের নিচ থেকে না ওঠার, কিন্তু একটা মেয়ে যখন বিয়ে হয়ে যায় তার পরবর্তী সময়ে তাকে সমস্ত অলসতা ছেড়ে দিয়ে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠতে হয়।
এগুলো শরীরের বর্তমান অবস্থা কেমন যদি একটু জানাতেন ভালো হতো। আপনার সমস্ত ব্যস্ততা সত্যিই অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়েছে। সবকিছু সামলে নিয়ে তারপরেও কমিউনিটির কাজগুলো সঠিকভাবে করে যাচ্ছেন। নিজের দিকেও খেয়াল রাখবেন কারণ সবকিছু সামলাতে গিয়ে, দিন শেষে আমরা নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়ি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার একটা দিনের কার্যক্রম শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।