Better life with steem || The Diary Game || 27th September, 2024 ||

in Incredible India2 months ago
IMG_20240928_005116.jpg
"কিছু সুন্দর মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

কেমন আছেন আপনারা সকলে?
আশা করছি সকলে খুব ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি বেশ ভালো কেটেছে। গত তিনদিন যাবত একটানা বৃষ্টি হলো, তবে আজ বৃষ্টি‌‌ হয়নি বললেই চলে।

বৃষ্টির দিনগুলো ঘরের মধ্যে বসে‌ বেশ কাটিয়েছি, তবে গতকাল দিনটা খুব একটা ভালো কাটেনি। কারণ দিনের শুরুটাই অনেক খারাপ ভাবে হয়েছিলো। যাক সে কথা, মন খারাপের কথা মনে পড়লেও যেন মন খারাপ হয়।

আজকের দিনের কিছু মুহুর্তের কথা, আজ এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। চলুন তাহলে শুরু করি, -

1672344690977_010726.jpg

"সকালবেলা"

IMG_20240927_225227.jpg
"রৌদ্রজ্জ্বল সকাল"

গত কয়েকদিন বৃষ্টি থাকাতে ঘুম থেকে উঠেই মেঘলা আকাশ, আর বাইরের টুকটাপ বৃষ্টি দেখার সুযোগ হয়েছিলো। তবে আজ ঘুম থেকে উঠতেই রৌদ্রজ্জ্বল পরিবেশ দেখার সুযোগ হলো। কথায় আছে মেঘ ভাঙা রোদ্দুরের তেজ অনেক বেশি হয়। এ কথা একদমই সত্যি, আজ সকালে তেমনই রোদ্দুর উঠেছিলো।

IMG_20240927_225256.jpg
"আকাশে মেঘ ও রোদের খেলা চলছে"

রৌদ্র দেখে বেশ ভালোই লাগছিলো।‌ বৃষ্টিতে জামা কাপড় শুকানো একটা বড় সমস্যা, তাই ঘুম থেকে উঠে রোদ্দুরের দেখা ‌পেয়ে, প্রথমে ভিজে জামা কাপড় গুলো মেলে দিয়েছিলাম। অন্তত যতোটুকু সময় রোদ্দুর থাকবে যাতে জামা কাপড় গুলো শুকিয়ে যায় এটা ভেবেই।

IMG_20240927_230039.jpg
"শুভর সকালের চা"

তারপর ফ্রেশ হয়ে, নিচে এসে, প্রথমে চায়ের জল বসিয়ে দিলাম। শ্বশুরমশাই ঘুমাচ্ছিলেন তাই ওনাকে আর ডাকিনি। শুভর চা করে নিয়ে উপরে দিতে গেলাম,আর‌ আসার সময় ফুল তুলে নিয়ে ‌এলাম। ভাতটা অবশ্য আগেই বসিয়ে দিয়ে গিয়েছিলাম। তাই নিচে এসে শুধু মাছের ঝোল ও ঢেঁড়স ভাজা রান্না করে, শুভর টিফিন গুছিয়ে দিয়েছি।

ব্রেকফাস্টে আলাদা করে কিছু করিনি। গতকাল রাতে খিচুড়ি রান্না করেছিলাম, সেটাই রয়ে গেছে। শুভ বলেছিল খিচুড়ি খেয়েই অফিসে চলে যাবে। শ্বশুর মশাই ঘুম থেকে উঠলে ওনাকে ওটস বা ডালিয়া করে দেবো ভেবেছিলাম। কারণ প্রতিদিন রুটি খেতেও উনিও আজকাল অপছন্দ করেন। সবকিছু মিলিয়ে মিশিয়ে সকালের দিকে রান্নার খুব একটা তাড়াহুড়ো ছিল না আজ।

এরপর শ্বশুর মশাইয়ের সুগার মাপতে গিয়ে দেখলাম, সুগার অনেকটাই বেড়ে গেছে। কথায় কথায় জানতে পারলাম, গতকাল রাতে তিনি ফ্রিজ খুলে নিজের পছন্দের মত খাবার খেয়েছেন। ফলত আজকে সুগার বাড়াটা খুব স্বাভাবিক। গতকাল সকালেও এই বিষয় নিয়ে ওনার সাথে কথাকাটি হয়েছিল।

নিজের ইচ্ছামত চললে উনি অসুস্থ হন, তখন ওনার কোনো জ্ঞান থাকে না ঠিকই, তবে আমাদের বাড়ির প্রত্যেকটা মানুষের ওনাকে নিয়ে নাজেহাল অবস্থা হয়ে যায়। শারীরিক পরিশ্রম তো বটেই, এমনকি এত পরিমাণে টাকা খরচ হয় যে, সেটা আমাদের মতন মধ্যবিত্ত পরিবারের‌ পক্ষে সামাল দেওয়া মাঝেমধ্যে কঠিন হয়ে পড়ে। যাইহোক আজ আর আমি কোনো কথা বলিনি।

IMG_20240927_225642.jpg
"আমার আজকের ব্রেকফাস্ট-খিচুড়ি"

শুভ বেরিয়ে যাওয়ার পর, বেশ কিছুক্ষণ শুয়ে শুয়ে ফোনে চেক করলাম। তারপর কমিউনিটিতে ঢুকে একবার পোস্টগুলো চেক করছিলাম। যাইহোক সেই সমস্ত কিছু সামলে নিয়ে, ব্রেকফাস্টে আমিও গতকালের খিচুড়ি একটু খেয়ে নিলাম।

1672344690977_010726.jpg

"দুপুরবেলা"

ঘরের বেশকিছু কাজ বাকি ছিলো, কিন্তু ইতিমধ্যে আমার বোন ফোন করলে ওর সাথে অনেকক্ষণ কথা হলো। আপনাদের হয়তো পুরনো একটি পোস্টে জানিয়েছিলাম আমার বোন প্রেগনেন্ট। বহু বছরের অপেক্ষার পর ওর সন্তান আসতে চলেছে পৃথিবীতে।

IMG_20240927_001051.jpg
"আমার বোন-ওর সাধের দিনে তোলা ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছিল"

প্রথমে টুকটাক কথা বলার পর ও আমাকে জানালো মহালয়ার দিন ওকে সিজারের ডেট দিয়েছেন ডাক্তার। শুনে আমি ভীষণ খুশি হলাম। মহালয়া মানেই আমাদের জন্য একটি বিশেষ দিন। সেই বিশেষ দিনে একজন নতুন মানুষ এই পৃথিবীর আলো দেখবে, এটা যথেষ্ট আনন্দের। এটা নিয়ে ওর সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বললাম।

তারপর ও আমাকে ঐদিন যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলো। আমি ওকে বাড়ির পরিস্থিতি সবটাই বললাম এবং কথা দিয়েছি যদি সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকে, তাহলে অবশ্যই ওর সিজারের দিন আমি নার্সিংহোমে যাব।

IMG_20240927_225537.jpg
"আমাদের গাছের ফুল, পুজো দিতে বসে তোলা ছবি।"

অন্যদিকে শাশুড়ি মা ততক্ষণ রান্না সেরে নিয়েছেন। আমি ওর সাথে কথা শেষ করে, ঘরের কাজ গুছিয়ে স্নান করতে চলে গেলাম। স্নান করা শেষ করে পুজো সেরে, পিকলুকে ওষুধ দিলাম। তারপর ওকে লাঞ্চ দিয়ে দিলাম। শাশুড়ি মা যতক্ষণে স্নান করে এসে শশুর মশাইকে লাঞ্চ দিয়ে দিয়েছিলেন।

IMG_20240927_225825.jpg
"আজকের লাঞ্চ"

তারপর একসাথে আমি ও শাশুড়ি মাও লাঞ্চ শেষ করলাম। প্রায় চারটে নাগাদ লাঞ্চ শেষ করার পর যখন শুতে এলাম, তখন আকাশে মেঘ দেখলাম তবে বৃষ্টি হয়নি। আজ দুপুরে আর ঘুম হয়নি, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সেরেছি সেই সময়।

1672344690977_010726.jpg

"সন্ধ্যাবেলা"

IMG_20240927_225621.jpg
"শুভ আর ওর বন্ধুর জন্য- চা ও বিস্কুট"

এরপর সন্ধ্যা হয়ে এলে আমি সন্ধ্যা পুজো শেষ করে নিলাম।‌ তারপর বসলাম কমিউনিটির বুমিং সংক্রান্ত কাজ নিয়ে। ইতিমধ্যে শুভ এবং ওর একটি বন্ধুর বাড়িতে এলো। ওদেরকে দু কাপ চা করে দিলাম।‌ ওরা উপরেই গল্প করছিল, আমি ততক্ষণে কমিউনিটির কাজ সেরে নিলাম।

কমিউনিটির কাজ করতে করতে আমার মামি ফোন করে জানালো মামীদের ঘরে গতকাল জল ঢুকে গেছে। আমার মামা বাড়িটা একটু নিচু এলাকায়। উঠোনে আগেই জল ছিলো, তবে গতকাল দুপুরে যে পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে, তাতে জল ঘরে ঢুকেছে। ইটের সাহায্যে খাট এবং ঘরের আসবাবপত্র বেশ কিছুটা উঁচু করেছে ঠিকই, তবে এমন ভাবে যদি আগামী দিনেও বৃষ্টি হতে থাকে, তাহলে অবস্থা আরও শোচনীয় হবে।

IMG_20240927_225320.jpg
"কেক খাওয়ার জন্য রেডি পিকলু"

এরপর আমার বেশ খিদে পেয়েছিলো, তাই আমি একটা কেক নিয়ে আসলাম ফ্রীজ থেকে। আর আমার পিছু পিছু পৌছে গেল পিকলু বাবু। বিস্কুটের প্যাকেট হোক বা কেক, অথবা পাউরুটি দেখলেই ও পাগল হয়ে যায়। এই তিনটে জিনিসই খেতে ও ভীষণ ভালোবাসে। সেই সময় আমার বড়দিও ফোন করে জানালো যে, ওদের বাড়ির পিছনেও যমুনা নদী থেকে জল উঠতে শুরু করেছে।

২০০০ সালের বন্যার পর, এইবার নাকি সব থেকে বেশি জল হয়েছে। এরপর দিদির সাথে বেশ কিছু পুরনো দিনের কথা বললাম। মনটা অনেকখানি হাল্কা হলো। আর পুরনো দিনগুলোর স্মৃতি এক পলকে চোখের সামনে ভাসতে থাকলো। সত্যিই তখন দিনগুলো যে কত ভালো ছিলো ,তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। জীবন যত এগোচ্ছে, জীবনের জটিলতাও তত বাড়ছে।

1672344690977_010726.jpg

"রাত্রিবেলা"

IMG_20240927_225913.jpg
"ওষুধ খেতে নারাজ, ওষুধ খেতে ডাকলেই এইভাবে তাকায় 😊"

দিদির সাথে কথা শেষ করে, পিকলুকে ওষুধ দিয়ে আমি রান্নাঘরে গেলাম। রুটি করলাম শুভ এবং শ্বশুরমশাইয়ের জন্য, কারণ শুভ রাতে আজ ভাত খেতে চাইছিল না। পিকলুকে রাতের খাবারটা শুভ দিয়ে দিয়েছিলে। যাইহোক খাওয়া-দাওয়া শেষ করে এইমাত্র পোস্ট লিখতে বসলাম।

গতকাল এই সময়ও কি সুন্দর ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হচ্ছিলো।‌ তবে বৃষ্টিমুখর দিনগুলো আমাদের জন্য আনন্দদায়ক হলেও, আমার খুব প্রিয় কিছু মানুষের জন্যে বড্ড বেশি কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। তাই আশাকরি বিভিন্ন জায়গায় জমা জল খুব তাড়াতাড়ি কমে যাবে। না হলে মানুষের হয়রানি বাড়বে অনেকখানি।

সবকিছু মিলিয়ে আরও একটা দিন আজ কেটে গেলো। যেখানে ভালোর পাশাপাশি মন্দও ছিলো। তবে এটা নিয়ে আক্ষেপ নেই, কারণ জীবনের প্রতিটা দিন কখনোই একই রকম হবে না, এ বিষয়টা আমাদের প্রত্যেকেরই জানা।

যাইহোক আপনারা ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন. আপনাদের আশেপাশে বৃষ্টির জলের কারণে কি অবস্থা, সেটা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। সবাইকে জানাই শুভ রাত্রি।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328TqCvhjhspw5NBPbWMShaDD4yjYoZFwyWS9XH9YcrMyqTMGHiWpaGrwDGkXYMbDHgxptYZq3ueRpXapEAPkAuu3vPaZSXJ2USdTC.png

Sort:  
Loading...
 2 months ago 

প্রথমেই বলবো আপনার বোন কে লাল টুকটুক করা শাড়িতে ভীষণ ভালো লাগছে।,, একটা মেয়ের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় মধ্যে এটা অন্যতম একটা সময় যখন সে মা হতে চলে,, যাক শুনে ভালো লাগলো বিশেষ দিনে নতুন শিশুর আগমন ঘটবে। মা এবং বাচ্চা দুজনেই যেন সুস্থ থাকে সে প্রার্থনাই করছি।

সব মিলিয়ে আপনার আজকের দিনের কার্যক্রম পরে ভীষণ ভালো লাগলো সেই সাথে দুপুরে খাবারের রেসিপি গুলো কিন্তু ভীষণ ছিলো,,ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটা পোস্ট লেখার জন্য।।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.19
JST 0.034
BTC 91295.19
ETH 3130.58
USDT 1.00
SBD 2.89