Better Life with Steem|| The Diary Game||30 November 2024
আসসালামু আলাইকুম
- কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই বেশ ভাল আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। আমি আপনাদের সাথে আজকের দিনটা শেয়ার করতে চাই। কিভাবে আজকে দিনটা কেটেছে আমার।আশা করি আমার লেখা পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
আজকের দিনটা বেশ ব্যস্ততার মধ্যেই কেটেছে আমার। সকালটা শুরু হয়েছিল একটু এলোমেলোভাবেই। ঘুম ভাঙার পর থেকেই মনে হচ্ছিল, কেমন যেনও লাগছিল। মেয়েটারও হঠাৎ করে অসুখ ঘুম থেকে উঠার পর থেকে হাঁচি আর নাক দিয়ে পানি পড়তেছে। তাই আজ মেয়েকে নিয়ে ডাক্তারখানায় যেতে হবে।তারপর থেকেই তাড়াহুড়ো শুরু। এর মাঝেই দেখি মেয়ে আমার ছোট্ট আঙুলে টিপ পড়ে বসে আছে। ও টিপ পড়লে বেশ ঢং করে, আর নিজের মতো করে মজা পায়। আজও তাই হলো। টিপ পড়ে বারবার আয়নার সামনে গিয়ে ছবি তুলতে চাইছে। হাসতে হাসতে আমিও কয়েকটা ছবি তুলে দিলাম।মাশাল্লাহ আমার আম্মুটাকে এত সুন্দর লাগছিল আমি তো ওর দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম।
আমাদের বাসাটা শহরের ভেতরে হলেও এক ধরনের নিরিবিলি পরিবেশ। আমার মেয়ের খেলার জন্য যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। আর বাসার বারান্দায় একটা বড় খাঁচায় আমরা একজোড়া কবুতর রেখেছি। কবুতর দুটোর দেখভাল আমরাই করি। সকালে তাদের খাবার দেওয়ার সময়টা মেয়ের খুব পছন্দ। আজও তাই হলো। খাঁচার কাছে গিয়ে অনেকক্ষণ ধরে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকল। ওর আনন্দ দেখে আমার মনটা ভালো হয়ে যায়।
রান্নার কাজ শুরু করলাম। কি রান্না করবো ভাবতে ভাবতে আধা ঘন্টা চলে যায় আমার। অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিলাম আজ গরুর নেহেরী রান্না করবো।নেহেরী রান্না হলে একটু একঘেয়েমি লাগে,সেই সাথে চিংড়ি মাছের চচ্চড়ি করলাম। চিংড়ি মাছ ধোয়া থেকে শুরু করে কাটাকাটি, সবই একটু সময়সাপেক্ষ। তবে রান্না হয়ে গেলে তার স্বাদ এত ভালো লাগে যে কষ্টটা ভুলে যেতে হয়। এদিকে রান্না করতে করতে বিদ্যুৎ চলে গেল। কারেন্ট না থাকায় ওয়াইফাইও বন্ধ। আমি ভেবেছিলাম, রান্নার ফাঁকে কিছুক্ষণ মোবাইল ঘাঁটব, সেটা আর হলো না।
বিদ্যুৎ না থাকায় একটা অদ্ভুত নীরব পরিবেশ তৈরি হলো। বিদ্যুৎ না থাকলে আমার একটুও ভালো লাগে না। বাইরে থেকে কবুতরদের ডানা ঝাপটানোর শব্দ শুনতে পেলাম। রান্নাঘরে গরুর নেহেরীর মশলার ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে। তার ফাঁকেই মেয়েকে কিছুক্ষণ খাওয়ানোর চেষ্টা করলাম। যদিও টিপ পড়ে ছবি তোলার ধান্ধায় থাকা মেয়ে খাওয়া নিয়ে তেমন মনোযোগ দিল না।
রান্না প্রায় শেষ হতে হতে দুপুর গড়িয়ে এলো। হাজব্যান্ড তখন অফিস থেকে ফিরে এলো। দুপুরে বাড়ি ফিরেই ওর অভ্যাস। আজও বাজার থেকে কিছু ফল নিয়ে এসেছে, তাতে আমার মেয়ে দারুণ খুশি হলো। ফলগুলোর মধ্যে ওর প্রিয় মালটা ছিল, সেটা নিয়েই প্রথমে খেলতে শুরু করল। এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলো আমাকে খুব আনন্দ দেয়।
দুপুরের খাবার সেরে আমরা ডাক্তারখানার জন্য রেডি হলাম। মেয়েকে নিয়ে বের হওয়ার আগে সবকিছু গুছিয়ে নিতে একটু সময় লেগে গেল।
বাইরে বেশ ঠান্ডা ছিল, তবে বাসার কাছেই ডাক্তারখানা হওয়ায় বেশি দূর যেতে হয়নি। সেখানে পৌঁছানোর পর দেখি অন্য বাচ্চারা খেলছে। ডাক্তারখানার একটা অংশে বাচ্চাদের জন্য ছোট্ট একটা খেলার জায়গা আছে। মেয়ে সেখানে খেলতে শুরু করল। তার মধ্যে মাঝে মাঝে এসে আমার কাছে অভিযোগ করে, আম্মু ও আমাকে ঠেলে দিয়েছে, আমি হাসি মুখে ওকে আবার খেলতে পাঠিয়ে দিলাম।
ডাক্তারের সাথে দেখা করার সময় এলো। আমি ডাক্তারখানার ভিতরে ঢুকিয়ে ম্যাম কে সবকিছু খুলে বললাম এবং আর সর্দি কাশি হয়েছে সেটা সম্পর্কে বললাম আমাকে ম্যাডাম সুন্দর করে একটা প্রেসক্রিপশন লিখে দিল। ফেরার পথে ওষুধ নিয়ে চলে আসলাম বাসার দিকে।আমার মেয়ের মুখে আশ্চর্যের হাসি দেখে বুঝলাম, জীবনের এই ছোট ছোট আনন্দই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বাসায় ফিরে দেখি রান্নার খাবারটা চমৎকারভাবে গরম আছে। গরুর নেহেরীর ঝোল আর ছোট মাছের চচ্চড়ি দিয়ে আমরা তিনজন একসঙ্গে খেতে বসলাম। খাওয়ার সময় মেয়ে খেলার গল্প বলছিল। মাঝে মাঝে নিজের ঢং দেখাতে গিয়ে নাচও দেখিয়ে দিচ্ছিল।
দিনটা একদিকে ছিল ব্যস্ততায় ভরা, অন্যদিকে ছিল একরকম আনন্দময়। বিদ্যুৎ না থাকা, মেয়ের টিপ পড়ে ঢং করা, ডাক্তারখানার সফর সবকিছু মিলিয়ে দিনটা কেটে গেল বেশ ঘটনাবহুলভাবে। রাতের খাবার শেষে মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে বারান্দায় গেলাম। কবুতর দুটোর খাঁচায় তাকিয়ে মনে হলো, ছোট্ট এই জীবনটাকে যতটুকু পারা যায় ভালোবাসা আর যত্নে ভরিয়ে তুলতে হবে।
- যাইহোক,এইভাবে আজকের দিনটা আমার চলে গেল কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের দিনের কাটানো সময় অবশ্যই জানাবেন। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Congratulations... I have recommended this post to get support from Steemchiller and Realrobinhood.
প্রথমেই অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই আপনার আন্তরিক সহযোগিতার জন্য। Steemchiller এবং Realrobinhood-এর মতো সহায়তাপ্রদ ব্যক্তিদের সমর্থন পেলে এটি আমাদের উদ্যোগকে আরও শক্তিশালী করবে। আপনার এপ্রিশিয়েশনে সত্যিই অনুপ্রাণিত হলাম।
আপনার একটি দিনের কার্যক্রম আমাদের মাঝে সুন্দর ভাবে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। সারাদিন নিজের সংসারে অনেক পরিশ্রম আপনাদের করতে হয়। তার পাশাপাশি মেয়ে একটু অসুস্থ আছে। যাইহোক সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি আপনার মেয়ে খুবই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। আসলে ছোট বাচ্চারা একটু দুষ্টুমি করবে এটাই স্বাভাবিক। এবং আপনার মেয়ে আজ টিপ পরে একটু আনন্দ করছে। সেটা দেখে আপনি অনেক খুশি হয়েছেন আসলে মায়েরা সন্তানের খুশিতেই খুশি হয়। শুভকামনা রইল আপনাদের জন্য আপনাদের দিন ভালো কাটুক এই কামনা করি।