Better Life With Steem || The Diary game || 26 January 2025||

in Incredible India17 days ago

আসসালামু আলাইকুম,

প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করি, আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আজকের সকালটা আমার জন্য একদম অন্যরকম ছিল, তাই ভাবলাম আপনাদের সঙ্গে সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করি।
গত রাতে ঘুমাতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। ঘুমাতে ঘুমাতে প্রায় রাত একটার মতো বেজে গিয়েছিল। তাই সকালে উঠতে একটু দেরি হলো। তবে গত রাতেই আমি তরকারি রান্না করে রেখেছিলাম, এজন্য সকালে উঠে খুব বেশি কাজ করতে হলো না। ফ্রেশ হয়ে প্রথমেই আমি আমার হাজবেন্ডের জন্য নাস্তা তৈরি করতে শুরু করলাম। এদিকে, আমার হাজবেন্ড তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করল। নাস্তা শেষ করে সে একদম অফিসের জন্য বেরিয়ে গেল। প্রতিদিনের মতো আজও তার অফিস যাওয়া তাড়াহুড়ো করেই হলো।
তার চলে যাওয়ার পর আমি আমার দিনের কাজগুলো গুছিয়ে নিতে শুরু করলাম।প্রথমেই আমি আমার মেয়ের জন্য নাস্তা চুলায় বসিয়ে দিলাম।

IMG_20250126_123641.jpg

এদিকে আমি ঘরের কাজ করব আর অন্যদিকে আমার মেয়ের জন্য রাস্তা তৈরি হয়ে যাবে যেহেতু গ্যাসের চুলা কষ্ট করে সব কিছু রেডি করে তুলে দিলেই হয়ে যায়। এরপর লেগে পরলাম ঘরের সমস্ত কাজ এ। ঘরের ফ্লোর মোছা, আসবাবপত্র পরিষ্কার করা সব কাজ একে একে করে ফেললাম।কাপড়-চোপড় ধোয়ার কাজে মন দিলাম। আজকে বেশ কিছু কাপড় জমে গিয়েছিল। এগুলো ধুয়ে রোদে দেওয়া দরকার ছিল। আমাদের বেলকনিতে কাপড় শুকানোর জন্য দারুণ জায়গা আছে। তবে সেখানে রোদ আসতে একটু দেরি হয়। তাই তাড়াতাড়ি কাপড় ধুয়ে ফেলে বেলকনিতে রেখে দিলাম। জানি কিছু সময়ের মধ্যেই রোদ এসে পড়বে।

বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে থাকার সময় আমার বেশ ভালো লাগছিল। এখান থেকে চারপাশের দৃশ্য দেখা যায়। সকালের নির্মল বাতাস, পাখির ডাক, আর দূরে গাছপালার সৌন্দর্য আমাকে মনোমুগ্ধ করে তোলে। এমন সময় আমার নজর পড়ল নিচে বিল্ডিং নির্মাণের কাজের দিকে। শ্রমিকেরা কী দারুণ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। ওদের এই পরিশ্রম আর কর্মব্যস্ততা দেখে আমার মন ভালো হয়ে গেল। তাদের মধ্যে কেউ ইট তুলে দিচ্ছে, কেউ মিস্ত্রিদের সাহায্য করছে, আবার কেউ মেশিন চালাচ্ছে। আমি ভাবলাম, মানুষ আজ কতটা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়েছে। প্রযুক্তির সাহায্যে তারা কাজগুলো কত সহজ করে ফেলছে।

IMG_20250126_123659.jpg

একসময় ভাবলাম, এত সময় ধরে বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে থাকার চেয়ে রুমে গিয়ে বাকি কাজগুলো শেষ করি। ঘরে এসে আবার কাজ শুরু করলাম। ঘরের অবশিষ্ট অংশ গুছিয়ে নিলাম। আগের ধোয়া কাপড়গুলো সেগুলো ভাঁজ করে আলমারিতে রেখে দিলাম। এরপর আবার বেলকুনিতে এলাম। বেলকুনি থেকে পুরো এলাকাটা দেখা যায়। এখান থেকে নিচের রাস্তায় মানুষের কর্মব্যস্ততা স্পষ্ট দেখা যায়। কেউ দোকানে যাচ্ছে, কেউ বাজার করছে, কেউবা কোনো কাজের উদ্দেশ্যে ছুটছে।এই দৃশ্যগুলো দেখার সময় ভাবছিলাম, মানুষ জীবনের জন্য কতটা সংগ্রাম করছে। প্রত্যেকের নিজের নিজের জায়গায় কত দায়িত্ব আর চ্যালেঞ্জ। যারা বিল্ডিং তৈরির কাজ করছে, তারা হয়তো খুব সাধারণ মানুষ, কিন্তু তাদের পরিশ্রম ছাড়া আমরা কোনো ভবন বা বাসস্থান পেতাম না। এভাবেই সবাই মিলে পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

IMG_20250126_123624.jpg

এরপর আমি আমার দিনের জন্য কিছু পরিকল্পনা করলাম। দুপুরের জন্য কী রান্না করব, সেটা নিয়ে ভাবতে শুরু করলাম। আমার মেয়ে দুপুরে কী খেতে চাইবে, সেটাও মাথায় রাখতে হলো। মেয়েকে নিয়ে দুপুরের সময়টা সাধারণত ব্যস্তই কাটে। তাই আগে থেকেই কাজের পরিকল্পনা করলে সব কিছু সামলানো সহজ হয়।এইভাবে সকালের কিছু মুহূর্ত কাটিয়ে দিলাম। সকালের সময়টা আমি সবসময় কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। কারণ সকালটা যেমন শুরু হয়, সারা দিনের উপর তার একটা প্রভাব থাকে। সকালের কাজগুলো সুন্দরভাবে শেষ করতে পারলে মনও ভালো থাকে। আজকের সকালটা আমার জন্য বেশ ফলপ্রসূ ছিল।

আমার হাজবেন্ডের অফিসে যাওয়ার পর থেকে আমি নিজের সময়টা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে প্রকৃতি আর মানুষের কর্মব্যস্ততা দেখতে পেয়ে অনেক আনন্দ পেয়েছি। সারা দিনের জন্য এটাই আমার মনকে অনেকটা চাঙ্গা করে দিয়েছে। প্রকৃতির সৌন্দর্য আর মানুষের পরিশ্রম দেখলে জীবনের প্রতি নতুন করে ভালোবাসা জন্মায়।
আশা করি, আপনাদের সকালের সময়টাও আনন্দময় আর ফলপ্রসূ হয়। আল্লাহ আমাদের সবার দিনগুলোকে সুন্দর করে তুলুন। সবাই ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন আল্লাহ হাফেজ ।

Sort:  
 17 days ago 

আপু আপনার দৈনন্দিন দিনের কর্মকাণ্ড আমাদের মাঝে এত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার পোস্টে পড়ে জানতে পারলাম আপনি খুবই ব্যস্ততম দিন পার করেছেন। আমি মনে করি সংসারের সবথেকে কষ্টের কাজ হল কাপড়-চোপড় ধোয়া। কত কষ্টের কাজ আর হয় না।

প্রতিদিনের মতো আজকের পোস্টটাও আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন আপু।

 14 days ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আমার পোস্টে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Loading...
 16 days ago 

খুব ভালো লাগলো আপনার প্রতিদিনের কাজকর্ম পড়ে, আপনি একটা জিনিস ঠিকই বলেছেন,এই শ্রমিকরা যদি কাজ না করতো হয়তোবা আমাদের এত বড় বড় দালান কোঠা সম্ভবই ছিল না! তাই সকল পেশা শ্রমিকদের সম্মান করা উচিত, আপনার পোস্টটি পড়ে জানতে পারলাম আপনি সারাদিনই ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকেন, নিজেকে ব্যস্ত রাখার পাশাপাশি মেয়েকে দেখতে হয় ইত্যাদি ভালোই লাগলো আপনার প্রতিদিনের কাজকর্ম পড়ে। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

 14 days ago 

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া এত ব্যস্ততার মাঝেও আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য। এবং সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।

 14 days ago 

শহরের বাহিরে বের হয়ে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি সময় লাগে কিন্তু আপনি আপনার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে বাহিরের পরিবেশটা খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করেছেন সকালবেলা থেকেই মেয়েদের কাজ শুরু হয়ে যায় বিশেষ করে যদি হাজবেন্ড বাসায় থাকে তাহলে তার জন্য নাস্তা ছোট বাচ্চা থাকলে তার জন্য নাস্তা এবং সংসারের বাকি কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সবটাই আপনি চমৎকার ভাবে করেছেন যেটা দেখে বেশ ভালো লাগলো অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার একটা দিনের কার্যক্রম শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।

TEAM 2

Congratulations! Your post has been upvoted through @steemcurator04. Good post here should be..

TEAM-1.png

Curated by : @jyoti-thelight
 12 days ago 

Thank you so much @jyoti-thelight mam

 12 days ago 

সংসার জীবন অনেক কঠিন আপনি যত ব্যস্তই থাকুন না কেন অসুস্থ থাকুন না কেন সংসারের কাজ ঠিকই করতে হবে।।

আর হ্যাঁ যারা মাঠে-ঘাটে বা যে কোন কাজ করে তাদের সবাইকে সম্মান করা উচিত কারণ তারা কাজ করার জন্যই আমরা খেতে পারছি বা ভালো অবস্থানে যেতে পারছি।। তাই যেকোনো শ্রমিককে আমাদের সম্মান করা উচিত।।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 95806.00
ETH 2604.28
USDT 1.00
SBD 0.75