Better Life With Steem || The Diary game || 02/12/2024

in Incredible India17 days ago

আসলামু আলাইকুম

  • কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। আজকে আমার সারাটা দিন কিভাবে কাটাইছি, সেটাই আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো তো চলুন দেরি না করে শুরু করি আজকের গল্প।

আমি সকালে ঘুম থেকে উঠি প্রায় ভোরেই। আমাদের ছোট্ট সংসার, তবে এখানে ভালোবাসার অভাব নেই। আমার স্বামী সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠেন আর তার নিত্যদিনের রুটিন শুরু হয়। আমি তখন রান্নাঘরে গিয়ে সকালের নাস্তার প্রস্তুতি নেই। আজ ভেবে রেখেছিলাম রুটি আর ডিম ভাজি করব।
আমার দুই বছরের মেয়ে, ছোট্ট মিরা, তখনো গভীর ঘুমে। তার গোলাপি মুখ দেখে যেন সারাটা দিনের ক্লান্তি মুছে যায়। এই ছোট্ট মেয়েটাই তো আমাদের জীবনের সব আনন্দের উৎস। তার ছোট্ট পায়ের আওয়াজ, মিষ্টি বুলি, আর দুষ্টুমি দিয়ে সে আমাদের দিনগুলো রঙিন করে রাখে।

IMG_20241202_195519.jpg

আমার স্বামী নাস্তা শেষ করে অফিসের জন্য রওনা দেয়। তিনি প্রতিদিন সকালে চলে যান, আর দুপুরে বাড়ি ফিরে আসেন। যাওয়ার আগে তিনি মিরার গালে একটা আলতো চুমু দেন। মিরা ঘুমে থাকলেও মনে হয় যেন হাসি দিয়ে তার বাবাকে বিদায় জানাচ্ছে।
আমার হাজব্যান্ড চলে যাওয়ার পর আমার দিন শুরু হয় মিরাকে ঘুম থেকে তোলা দিয়ে। ও ঘুম থেকে উঠে গায়ে আলগা করে ঝাঁকি দেয় আর চোখ মুছতে মুছতে বলে, আম্মু বাবা কই, বাবা নাই। আমি বলি, বাবা অফিসে গেছে। দুপুরে আসবে।এই কথা শুনে ও একটু মুখ বাঁকায়, এরপর আমি মিরা কে খাওয়ানোর জন্য বসায় কিন্তু কিছুতেই খাইতে চায় না এই বাচ্চাদের একটাই সমস্যা কিছুই খেতে চায় না। দিনরাত আমি চিন্তায় চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছি ওর খাওয়া নিয়ে।প্রতিদিন অনেক কষ্টে মিরাকে আমি নাস্তা খাওয়াই।

IMG_20241202_233041.jpg

নাস্তা শেষ করার পর বারান্দায় গিয়ে আমি আমার গাছগুলো দেখতে শুরু করি। বারান্দা আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। এখানে টমেটো গাছ, মরিচ গাছ, লাউ গাছ সব মিলিয়ে এক টুকরো সবুজে ভরা। গাছের যত্ন নেওয়া আমার নিত্যদিনের কাজ। মিরা আমার পাশে দাঁড়িয়ে গাছের পাতা ধরে বলে, আম্মু এটা কি আমি হাসি দিয়ে বলি, আম্মু এটা সবজির গাছ।
বারান্দার আরেকদিকে আমার দুইটি কবুতর।

তাদের জন্য খাবার নিয়ে যাই। তারা ডানা ঝাপটিয়ে জানিয়ে দেয় তারা খুশি। মিরা এই কবুতর পাখিগুলোকে খুব ভালবাসে। মিরার পাশাপাশি আপনাদের জেনেও খারাপ লাগবে যে আমি এই কবুতর পাখি দুটা বিক্রি করতে চাচ্ছি।বিক্রি করার একটা কারণ আছে এই কবুতর পাখি দু দুইবার ডিম দিল কিন্তু একটা বারও বাচ্চা হলো না দুই দুইবার ডিম দুইটা ওরা ভেঙ্গে ফেলছে জানিনা কেনও আপনারা জানলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন কেনও বারবার দিনগুলো ডিম গুলো ভেঙ্গে ফেলছে।
তাই আমিও আমার হাজব্যান্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আর একটা বার দেখবো এইবার যদি ডিম ভেঙ্গে ফেলে তাহলে এদেরকে আমি বিক্রি করে দিব।

IMG_20241202_233346.jpg

সকালের কাজ শেষ করে আমি রান্নাঘরে যাই। আজ ভেবেছি পিঠা করব তেলের পিঠা কিন্তু এর ভিতরে আমি তালের রস মিক্সড করবো। আমি তালের সিজনে খুব সুন্দরভাবে তালের রস ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলাম সেটা দিয়ে আজকে একটু তাল পিটা করব।ফ্রিজ হয়ে আমাদের কতই না সুবিধা হয়েছে তাই না যদিও তালের সময় নয় কিন্তু আমি খুব সুন্দরভাবে ফ্রিজে রাখার কারণে এখন তালের পিটা করতে পারতেছি। তার সাথে দেশি মুরগির মাংসের ঝোল। দুপুরে হাজবেন্ড আসবেন, তাই খাবারের জন্য একটু বেশি যত্ন।

মিরা তখন নিজের খেলনা নিয়ে বসে আছে। সে মাঝে মাঝে আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করে, আম্মু কি করো, আমি হেসে বলি, পিঠা বানাচ্ছি। তুমি খাবে? সে ছোট্ট হাত তুলে বলে, হ্যাঁ, খেতে চাই।
দুপুর ২টার দিকে হাজব্যান্ড বাসায় ফিরলেন। মুখে অফিসের কাজের ক্লান্তি। তবে পিঠার গন্ধে তার মুখে হাসি ফুটল। আমি বললাম, খাওয়া রেডি। তাড়াতাড়ি হাত-মুখ ধুয়ে নাও। আমরা তিনজন একসাথে খেতে বসলাম। মিরা তার ছোট্ট প্লেটে পিঠা নিয়ে খেলতে খেলতে খাচ্ছিল।

দুপুরে খাবারের পর আমাদের গল্পের পালা। আমার হাজব্যান্ড অফিসের গল্প করেন, আমি মিরার সারাদিনের দুষ্টুমি শোনাই। এরমধ্যেই মিরা দৌড়ে কবুতরের কাছে চলে যায়। সে তাদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে। এই দৃশ্য দেখে আমরা দুজনেই হেসে উঠি।

IMG_20241202_233103.jpg

বিকেলে বারান্দায় চা বানিয়ে নিয়ে যাই। আমার হাজব্যান্ড মোবাইল দেখে আর আমি টমেটো গাছে হালকা পানি দেই। সন্ধ্যা নামার আগে আমাদের একসাথে গল্পের সময়। আমরা একে অপরের পাশে বসে গ্রাম নিয়ে, ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো বিভিন্ন গল্প করি এবং মেয়ের সাথে খেলি।

রাতের খাবার শেষে মিরাকে ঘুম পাড়াই। তার ছোট্ট শরীরটা নরম বিছানায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে থাকে। আমি আর আমার হাজব্যান্ড জানালার পাশে বসে এক কাপ কফি হাতে চুপচাপ সময় কাটাই।
এই বাড়ি, এই জীবন, এই ছোট্ট মেয়ে আর আমাদের ছোট সংসার সব মিলিয়ে যেন একটা সুন্দর গল্প।
দিনগুলো সব একইরকম মনে হয়, তবে এই ছোট ছোট মুহূর্তই আমাদের জীবনের আসল সৌন্দর্য।

  • এভাবে আজকের দিনটা আমার পার হয়ে গেল। এগুলো নিয়েই আমার গল্প আপনাদের জন্যই লিখে ফেললাম।কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। আজ এই পর্যন্তই ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন আল্লাহ হাফেজ।
Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...
 16 days ago 

আপনি খুব সুন্দরভাবে আপনার তিনজনের ছোট্ট পরিবারকে আমাদের মাঝে তুলে ধরেন। বাবা মায়ের সকল দুঃখ দুর হয়ে যায় সন্তানের হাসি মুখ দেখলে।

আপনার প্রতিটা পোস্টে আপনি সংসারের প্রতি আপনার দায়িত্বগুলো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা তৈরি করা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করেন। বাসার বারান্দায় নানা সবজি চাষ করেছেন যেগুলো পরিচর্যা করতে হয় আপনাকে প্রতিনিয়ত। ভালো থাকবেন।

 16 days ago 

আপনি খুব সুন্দরভাবে আপনার তিনজনের ছোট্ট পরিবারকে আমাদের মাঝে তুলে ধরেন। বাবা মায়ের সকল দুঃখ দুর হয়ে যায় সন্তানের হাসি মুখ দেখলে।

আপনার প্রতিটা পোস্টে আপনি সংসারের প্রতি আপনার দায়িত্বগুলো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা তৈরি করা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করেন। বাসার বারান্দায় নানা সবজি চাষ করেছেন যেগুলো পরিচর্যা করতে হয় আপনাকে প্রতিনিয়ত। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.26
JST 0.039
BTC 100401.29
ETH 3606.38
USDT 1.00
SBD 3.12