লাল সবুজের গল্প

in Incredible India2 days ago

আসসালামু আলাইকুম
প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই অনেক বেশি ভালো আছেন আমি আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো আছি। গতকাল আমাদের গৌরবের ১৬ ডিসেম্বর ছিল সেই গল্পই আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

১৬ই ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। এটি আমাদের জাতীয় জীবনে সবচেয়ে গৌরবময় একটি দিন। এই দিনটি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক, ত্যাগ আর বীরত্বের স্মারক। বিজয়ের ৫৩ বছর পরও এই দিনটি উদযাপন করতে মন যেন নতুন করে উজ্জীবিত হয়। আমার ছোট্ট পরিবার আমি,আমার হাসবেন্ড আর আমাদের দু’বছরের মেয়ে মিরা এই দিনটিকে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে উদযাপন করার পরিকল্পনা করেছিলাম।

pexels-enginakyurt-15652230.jpgsource

গতকাল দিনটি শুরু হয়েছিল খুব ভোরে। ঘুম থেকে উঠেই বারান্দায় দাঁড়ালাম। শীতের সকালের হিমেল হাওয়া আর রোদ মিলে যেন বিজয়ের বার্তা নিয়ে এসেছে। বারান্দা থেকে লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করলাম। মেয়েটি খুশি হয়ে হাততালি দিল। ওর চোখে কৌতূহল, কিন্তু এ পতাকার মাহাত্ম্য বোঝার বয়স এখনও হয়নি।পতাকা তোলার পর ভাবলাম, আজকের দিনটিকে আরও বিশেষ করে তুলতে হবে। হাজব্যান্ডকে বললাম, আজ দুপুরে আমরা একসঙ্গে কিছু পোলাও মাংস রান্না করব। আমার হাজব্যান্ড সঙ্গে সঙ্গেই হাসিমুখে বলল তুমি প্ল্যান করো, আমি তোমার সাথে আছি।আমার মেয়ে তখনো খেলায় মগ্ন।

সকালের নাস্তা সেরে আমি আর আমার হাজব্যান্ড রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। রান্নাঘর থেকে সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ছিল। মেয়েটি এসে মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করছিল, আম্মু, এটা কী হচ্ছে? আমি বললাম, আজ বিজয় দিবস। আমাদের দেশ আজকের দিনে স্বাধীন হয়েছিল। তাই আজ আমরা একটু বিশেষ খাবার রান্না করছি।দুপুরের খাবারের টেবিলে আমরা তিনজন বসেছিলাম। আমার হাজব্যান্ড বলল, ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের জন্য শুধু আনন্দের দিন নয়, এটি আমাদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়। যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাদের সম্মানের জন্য আমাদের দেশের জন্য ভালো কিছু করতে হবে।

pexels-mohd-ashabul-haque-nannu-332280734-18522255.jpgsource

কথাটা শুনে মনে হলো, এমন কথাগুলোই আমাদের মেয়েকে শুনিয়ে বড় করতে হবে।
বিকেলে আমরা ঠিক করলাম শহীদ মিনারে যাব। মেয়েকে নিয়ে রওনা হলাম। শহীদ মিনারের আশপাশে অনেক ভিড়। হাতে ফুল নিয়ে অনেকেই এসেছে। আমরাও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালাম। মেরা জিজ্ঞেস করল, আম্মু ফুল দিচ্ছি কেন?আমি ওর ছোট্ট হাতে হাত রেখে বললাম, যারা আমাদের দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের স্মরণ করছি।

ফেরার পথে আমার হাজব্যান্ড বলল, এভাবে প্রতি বছর আমাদের মেয়েকে জানাতে হবে, মুক্তিযুদ্ধ কী ছিল, বিজয় দিবস কেন আমাদের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ। আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।রাতে বাড়ি ফিরেই মেয়ের ঘর লাল-সবুজ বাতি দিয়ে সাজিয়ে দিলাম। আলোতে ঘরটি যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠল। মেয়ে খুশিতে লাফিয়ে উঠল। ওর সেই আনন্দঘন মুখ দেখে মনে হলো, এই বিজয়ের গল্প তার ছোট্ট মনে চিরকাল রয়ে যাবে।

pexels-md-ahsan-mahmud-83910849-11255399.jpgsource
অবশেষে এটাই বলব ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের জন্য শুধু একটি তারিখ নয়, এটি আমাদের পরিচয়, আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক। এই দিনটি উদযাপন করার সময় আমি বারবার ভেবেছি, আমাদের নতুন প্রজন্মের মাঝে এই গৌরবময় ইতিহাসের গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে।আমাদের ছোট্ট পরিবারে এই বিজয় দিবসের দিনটি আনন্দ আর গর্বের সঙ্গে উদযাপিত হয়েছে। আমরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি, আমাদের মেয়েকে ইতিহাসের গল্প শুনিয়েছি। মনে হয়েছে, এই ছোট ছোট উদযাপনই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে দেশের প্রতি ভালোবাসা আর দায়িত্ববোধ তৈরি করবে।

১৬ই ডিসেম্বর আমাদের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে, ঠিক যেমন এই গল্প।আজ এই পর্যন্তই আপনাদের কেমন লাগলো আমাদের এই ১৬ই ডিসেম্বর উদযাপন টা অবশ্যই জানাবেন সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন আল্লাহ হাফেজ।

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 days ago 

Thank you

 2 days ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো,কেননা দেশকে আপনে যেভাবে রিপ্রেজেন্ট করেছেন আমাদের মাঝে। তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এবং আপনার পোস্টটি পড়ে জানতে পারলাম। যে আপনার ছোট্ট মেয়েকে দেশের সম্পর্কে বলছেন,যারা আমাদের জন্য প্রাণ দিয়ে এই বাংলাদেশ তৈরি করেছে তাদের কথা, আপনি যেভাবে
আপনার পরের প্রজন্ম জানাচ্ছেন এই দেশের ইতিহাস। এই কথাটি পড়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো। এইভাবে উচিত প্রতিটি মা-বাবার তাদের সন্তানকে দেশের ইতিহাস বলা। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন

 2 days ago (edited)

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.26
JST 0.039
BTC 100401.29
ETH 3606.38
USDT 1.00
SBD 3.12