পারিবারিক কলহ
কেমন আছেন বন্ধুরা? আল্লাহ্র অশেষ মেহেরবানীতে আমি সুস্থ্য এবং ভালো আছি। সুস্থ্যতা আল্লাহ্ তা’লার সবচেয়ে বড় নিয়ামত। আর এই নিয়ামত পেয়ে আমি অনেক খুশি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে “পারিবারিক কলহ” শীর্ষক একটি লিখনি উপস্থাপন করছি। তাহলে শুরু করা যাকঃ-
আমরা সকলেই পারিবারিক কলহ এই শব্দটার সাথে পরিচিত। যদিও এটি ব্যক্তিগত একটি ব্যপার তারপরেও এই সমস্যা সমাধানে সু-পরামর্শের প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। প্রতিটি পরিবারেই কমবেশি কলহ বিদ্যমান।
এই কলহের জেরে অনেক একান্নবর্তী পরিবার ভেঙ্গে একক পরিবার গঠন করছে। এতে করে একে অপরের সাথে যোগাযোগ কমে যাচ্ছে, সাথে পারিবারিক ও জোটগত শক্তিও কমে যাচ্ছে।
পারিবারিক কলহ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সবথেকে যেটি বেশি পরিলক্ষিত হয় সেটি হলো জমি নিয়ে বিরোধ। ভাইয়ে ভাইয়ে দন্দ কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে জমি জমা সংক্রান্ত ঝামেলা বিশেষ ভাবে পরিলক্ষিত হয় আমাদের সমাজে।
আর এখান থেকেই শুরু হয় পারিবারিক কলহ। তাছাড়াও একই বাড়িতে দুই ভাইয়ের কলহ, আবার ভাইয়ের বউদের কলহ তো রয়েছেই।
পারিবারিক কলহ দূর করতে হলে সবার আগে আমাদের কলহের কারণ খুঁজে বের করতে হবে। খুব বিচক্ষনতার সাথে এই কাজটি করতে হবে। যতদূর পারা যায় সমাধানে আসতে হবে।
যদি নিজের মাঝেও কোন ভুল ত্রুটি থাকে, যার কারণে কলহ হচ্ছে তাহলে সেই ভুল ত্রুটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজনে ছাড় দিতে হবে। দিনশেষে তো শান্তি আসল কথা তাইনা। জীবনে যদি শান্তি না থাকে তাহলে সবকিছুই অশান্তিতে ভরে যাবে।
পারিবারিক কলহ দূর করতে প্রথমত আমাদের খুঁজে দেখতে হবে কী কারণে কলহ হচ্ছে, কার কারণে হচ্ছে, কোন বিষয় নিয়ে হচ্ছে। দ্বিতীয়ত পারিবারিক কলহে জড়িত ব্যক্তিদের একত্রিত করতে হবে। বড়দের এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে।
তৃতীয়ত সকলের মতামত শুনতে হবে। কার অভিযোগ কোন বিষয়গুলো নিয়ে। সকলের অভিযোগ ভাগ ভাগ করে শুনতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা যায়গায় তাদের অভিযোগ গুলো শুনতে হবে।
সবার সব অভিযোগ শোনা শেষ হলে সবাইকে একতাবদ্ধ থাকার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে হবে। যার যে অভিযোগ রয়েছে সেগুলো সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। আবার সকলের সাথে সকলকে মিলিয়ে দেয়া কিন্তু বড়দের দায়িত্ব।
কেননা পরিবারের ছোটরা ভুল করবে। কলহের সৃষ্টি করবে। তাদেরকে আবার বুঝিয়ে সঠিক পথে ফেরত আনতে হবে।
পারিবারিক কলহ দূরীকরণের অন্যতম আরেকটি উপায় হলো পরিবারের সবার সাথে আত্মিক যোগাযোগ স্থাপন করা।
যেকোন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত করা এবং সবাইকে একসাথে নিয়ে সেই অনুষ্ঠান পালন করা। পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে তিনবেলা খাবার খাওয়া।
কোন বিষয়ে কারোর আপত্তি থাকলে তৎক্ষণাৎ সেই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা। বিষয়টি যদি সঠিক হয় তাহলে সেই সদস্যকে ভালোভাবে বোঝানো এবং সেই বিষয়টির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অবগত করা।
আর বিষয়টি সত্যি যদি আপত্তিজনক হয় তাহলে বিষয়টির সুষ্ঠ সমাধানের ব্যবস্থা করা।
আমি এরকম অনেক দেখেছি, পারিবারিক কলহের কারণে অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে যেতে। পরিবারের সদস্যদের শারিরিক এবং মানসিক বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে।
এমনো হয়েছে একজন আরেকজনের সাথে কলহে জড়িয়ে অসুস্থ হয়ে পরপারে পারি জমিয়েছে। সেই প্রভাব আবার তার উত্তরসূরীর উপর পরেছে। এক ভাই আরেকভাইকে দেখতে পারে না। সবসময় জমিজমা নিয়ে কলহ বেধেই থাকে।
দুশ্চিন্তায় খাওয়া দাওয়া ঘুম সব বাদ দিয়ে কলহ নিয়েই পরে থাকে। এতে যেমন তাদের শারিরীক অবস্থার অবনতি হচ্ছে, সাথে সাথে মানসিক অবস্থারও অবনতি হচ্ছে।
পারিবারিক কলহের প্রভাব সবথেকে শিশুদের উপর বেশি পরে। কেননা শিশুরা যা দেখে তাই শেখে। পরিবারের অন্য সদস্যের মধ্যে বিদ্যমান কলহ একটি শিশু প্রত্যক্ষ করে এবং সে সেটি শিখে নেয়।
এমন একদিন আসে সেই শিশুটি তার নিজের পরিবারের সদস্যদের সাথে এমন আচরন করে, যা কখনো কেউ মেনে নিতে পারেনা।
তাই আসুন পারিবারিক কলহ বন্ধ করি। এব্যপারে যাবতীয় পদক্ষেপ নিই। আর শিশুদের সবসময় পারিবারিক কলহ থেকে দূরে রাখি।
কেননা তারা আমাদের ভবিষ্যত। এমন যেন না হয় তারা বড় হয়ে আমাদের সাথে অসদ আচরণ করে, যা আমাদের মোটেই কাম্য ছিলো না।
আজ আর নয় বন্ধুরা। ভালো থাকবেন সকলে। আল্লাহ্হাফেজ।
X promotion link: https://x.com/AlRiaz76338/status/1795126818019692593
পারিবারিক কলহ কথাটা আমরা এখন থেকে নয়। যবে থেকে পড়াশোনা করছি তখন থেকেই শুনে আসছি, এটা একেবারে প্রত্যেকটা পরিবারের মধ্যে ছোট বড় আকারে লেগেই থাকে। তবে আপনার মত করে সবাই যদি বুঝিয়ে বলত। তাহলে হয়তো বা অনেক আগেই পারিবারিক কলহ প্রত্যেকটা পরিবার থেকে নিমিষেই দূর হয়ে যেত।
বর্তমান সময়ে একটা জিনিস বেশ ভালোভাবেই লক্ষ্য করেছি। সেটা হচ্ছে মানুষ তার নিজের দোষ কখনো স্বীকার করে না। সেটা ছোট হোক কিংবা বড় একটা পরিবারের মধ্যে বসবাস করলে সমস্যা থাকবে। সে সমস্যা থেকে আমাদেরকে সমাধান বের করতে হবে। কিন্তু আমরা সেই সমাধান বের না করে, ছোটরা কি দোষারোপ করেছে সেটা নিয়ে তাদেরকে শাসন করতে বসি।
অবশ্যই তাদেরকে শাসন করতে হবে। তবে সেটা শারীরিকভাবে না করে যদি আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বলি। তাহলে হয়তোবা সে সমস্যাটা খুব সহজে সমাধান করা সম্ভব। ধন্যবাদ চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।
সত্যি ভাই অনেকদিন পর এরকম একটি ভিন্ন রকম পোস্ট পড়ার সুযোগ হলো। বর্তমান সমাজের প্রতিটি পরিবারে কলহ লেগেই আছে। আগের যুগের মানুষরা সবাই পরিবারে যৌথভাবে বসবাস করত। সবাই এখন একক পরিবার হয়ে নিজেদের মধ্যে একটা বিভেদ সৃষ্টি করেছে।
একটা পরিবারে বিভিন্ন কারণে কলহ হতে পারে। আপনার সাথে আমি সহমত, বিশেষ করে ভাইয়ে ভাইয়ে জমি নিয়ে বেশি দ্বন্দ্ব দেখা যায়।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন, ভাই ছোট শিশুরা যা দেখবে তাই তো দেখে শিখবে।
সত্যিই একটি সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি খুব সুন্দরভাবে পারিবারিক কলহের বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন। আসলেই পারিবারিক কলহের কারনে সম্পর্ক বিচ্ছেদের মতো ঘটনা আজকাল সচরাচর ঘটছে।বিশেষ করে জমি নিয়ে ভাইদের মধ্যে এসব ঘটনা খুবি কমন।আমাদের সকলের উচিত এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মুল্যবান পোস্টের জন্য।
বর্তমান সময়ে পারিবারিক কলহ, যেন প্রতিটি পরিবারে লেগেই আছে।। আপনি এর কয়েকটি কারণও বলেছেন এটি একদম সঠিক বলেছেন জমি জমার কারণে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকে প্রতিটি পরিবারে।।
আর আজকে আপনি এই কলহ থেকে কিভাবে বেঁচে থাকা যায় এর কিছু উপায় বলেছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো।। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট করার জন্য ভালো থাকবেন।।