কলকাতার বহু স্থান আজও অনেক কাহিনী জমা রেখেছে নিজের মধ্যে।
প্রিয় বন্ধুরা,
সোমবারের সন্ধ্যায় সকলকে আমার লেখায় স্বাগত জানিয়ে আজকের লেখা শুরু করছি।
ঐতিহ্যবাহী আমার শহর কলকাতার আনাচে কানাচে আজও অনেক কাহিনী সুপ্তবস্থায় রয়েছে।
বহু ভগ্নস্তুপ এবং ক্ষয়িষ্ণু ইটেদের মাঝে লেখা আছে অনেকের জীবনের ইতিহাস। যেমন আজকের ছবিগুলো তোলা বসিরহাট থেকে আরো বেশ কিছু দূরে অবস্থিত টাকি নামক এক জায়গার।
কিছু পুরনো জিনিষ রক্ষণাবেক্ষণ করা হলেও বেশ কিছু সৃষ্টি আজ ধ্বংসের মুখে। ইটের গায়ে খচিত ফলকে লেখা বাংলার সাল বলে দেয় সৃষ্টির ইতিহাস।
সময়ের সাথে মানুষ হারিয়ে যায়, পড়ে থাকে ইট, কাঠ, পাথরের আড়ালে লুকিয়ে থাকা তাদের জীবনের গল্প, কত জমিদার, কত আমলা কত সাধারণ মানুষের জীবন যাপনের কথা বলে এইসকল পুরনো বাড়ি, আর এইসব ধ্বংসাবশেষ।
এক সময়ে কলকাতা ছিল ভারতের মধ্যমণি, জাকজমের আড়ালে ছিল অনেক রক্তক্ষরণের কাহিনী।
আজকে কলকাতার অলি গলি বলে দেয় পুরনো দিনে এখানে মানুষের জীবনযাত্রা কেমন ছিল।
কলকাতায় যদি আপনি কোনো একটি জায়গাই ঘুরে দেখেন বহু পুরনো বাড়ি এবং গল্পো শুনতে পাবেন স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে।
সেখানে যেমন ভূতের গল্প আছে সাথে আছে সেই ঐতিহ্য বহন করা বাড়ির ইতিহাস। আজকের উন্নত শহরের আড়ালে পুরনো মানুষের অবদান কাজে অনেক খানি।
স্বাধীনতার পূর্বে ভারতের রাজধানী কলকাতা হবার ফলেই এমন অনেক কিছু এই শহরে গঠিত হয়েছিল সেইসময় যেগুলোর গুরুত্ব আজও ম্লান হয়নি।
সেই সময়ের সৃষ্টি আজকের কলকাতার ঐতিহ্য এবং রক্ষণাবেক্ষণ যদি সঠিক থাকে তাহলে হয়তো আরো বহু বছর এদেরকে ধরে রকাহা সম্ভব।
যেটি নতুন প্রজন্মকে এই শহরের ইতিহাস সম্পর্কে কেবল বই পড়ে নয় সাথে এদের চাক্ষুষ নিদর্শন করতেও সক্ষম হবে।
তবে এটাও সঠিক কলকাতার সবকিছু রক্ষা করা বোধ হয় সম্ভবপর নয়, কারণ ভিড়ের আড়ালে অনেক সময় অনেক কিছু হারিয়ে যায়।
ঠিক সেইরকম অনেক গল্প কাহিনী হারিয়ে যাবে স্রোতের সাথে যেগুলো অনেকের কাছেই অধরাই থেকে যাবে।
সেইসময় মানুষের জীবনযাপনের ধরন, প্রযুক্তির অভাব থাকা সত্বেও কিভাবে দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে তারা সক্ষম হতেন, এমন অনেক কিছুই সবটা হয়তো জানা হবে না কোনোদিন।
কত বিভাজন, কত কাছের মানুষকে বিভাজনের আড়ালে হারিয়ে ফেলা, এমন অনেক কিছুর অভাব বোধ করি আমি যখন বাবার মুখে বাংলাদেশ, পাকিস্থানের গল্প শুনি, কিভাবে একসাথে একপরিবার হয়ে তারা একসাথে একসময় বসবাস করতেন।
তাই যখনই সুযোগ পাই, এই পুরনো বাড়িগুলোর কাছে অবক্ষয়ের গল্পো শুনতে ছুটে যাই, যদি কোনো অজানা কাহিনী তাদের কাছ থেকে জানতে পারি, যদি কোনো পুরনো মানুষের মনের কথা জমা থাকে এদের আড়ালে এই আশা নিয়ে।
আপনারাও জানাতে ভুলবেন না, আপনারা পুরনো কোনো স্তম্ভ বা ঐতিহ্যবাহী ক্ষয়িষ্ণু বাড়িঘর নিয়ে কি ভাবেন।
আজ এখানেই শেষ করে বিদায় নিলাম, ভালো থাকবেন সবাই এই কামনা করি।