ভূত।
নমস্কার,
ভূতের দেখা এটা শুনতেই কেমন একটা ভয় ভয় কাজ করে। এই ভূত শব্দটির সাথে আমার জড়িয়ে রয়েছে অনেক স্মৃতি। আজ কিন্তু খানিকটা অদ্ভুত একটা অনুভুতি নিয়ে চলে এসেছি। তাহলে চলুন বন্ধুরা, মূল লেখাতে চলে যাই।
বিগত রাতে সাড়ে তিনটের দিকে আমার এক ঠাকুরমা আমার বড় কাকুকে ডাকছিল এবং কাকুর শব্দ পেয়ে আমি আর যাই নি। কিন্তু কিছুক্ষণ বাদেই কাকু আমাকে ডেকে বললো আমি যেন ঠাকুরমার কাছে ঘুমাই। আমি অনেক ছোট থাকতেই আমার ঠাকুরমার কাছে ঘুমাতাম এবং আমার ঠাকুরমা গত হওয়ার পরে এই ঠাকুরমার কাছেই ঘুমাতাম। যে কারণে কোনো অসুবিধাই হয়নি ঘুমোতে।
ঐ ঠাকুরমা দুইদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত এবং বিগত রাতেই ঘরের সদর দরজার সামনে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। কারণ জ্বরে শরীরটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এমনিতেই বয়স বেশি অন্যদিকে শরীরে জল শূন্যতার সমস্যা ও আছে।
এই শারীরিক দুর্বলতার জন্য ঠাকুরমার ঘুমই হচ্ছিল না বরং একটা অস্বস্তি হচ্ছিল। পাশাপাশি, ঠাকুরমা ঘরের বাইরে কাউকে যেন হাটতে দেখছিল যার হাতে নাকি প্রদ্বীপ ছিল। কাকু এবং আমি ঐ রাতে বিছানা ছেড়ে লাঠি নিয়েই বাইরে বেরিয়েছিলাম। কারণ দেশের পরিস্থিতি ভালো না সেই কারণে প্রস্তুতি নিয়েই বেরিয়েছিলাম।
আমাদের বাড়ির সামনে রাস্তাতেই বৈদ্যুতিক বাতি এবং উত্তর ও দক্ষিণ সম্পূর্ণ রাস্তায় ছিল আলোর ব্যবস্থা। কোথাও কিছু না দেখে আমি ও কাকু পশ্চিম পাশের জলকরে গিয়েছিলাম। আমাদের পশ্চিম পাশের জলকরের ঠিক আগেই একটা বড় গাব গাছ আছে।
যদিও বিজ্ঞানের যুগে ভূত বলে কিছুর অস্তিত্ব আছে সেইটা স্বীকার করা হয় না। তবু ও এই যে গাব গাছ সেই গাছের নিচ থেকে নাকি কেউ আগের সময় রাতে বাড়িতে ফিরতে পারতো না। এখানে একাধিক মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। আমি একা একা গভীর রাতে এখানে যাই তবে সেইরকম কোনো কিছু কখনোই দেখিনি।
তবে বাড়িতে ফেরার পথে কাকুকে বললাম ঠাকুরমার শরীর অনেক দুর্বল এবং জলের ও ঘাটতি যে কারণে এইরকম ভূলভাল দেখছে। কাকুও সহমত পোষণ করলো। ২০২৩ সালেও একবার এতো জ্বর উঠেছিল যে আমরা কাঁথা ও কম্বল দিয়েও কাঁপুনির পরিবর্তন না দেখে নিরূপায় হয় সকল নাতি-নাতনী চেপে ধরে বসেছিলাম ঘন্টা খানেক। ঠাকুরমা খুব শক্ত মানুষ আর অসুস্থ্য হলেই সমস্যাটা যেন বেশিই হয়।
ভূতের সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি, আমি এখনো যেরকম শৈশবে ও খানিকটা এইরকম বৈশিষ্ট্যই ছিল। তবে শৈশবে আমি ভীষণ চঞ্চল প্রকৃতির ছিলাম। যে কারণে আমার শিক্ষকরা ও বলতেন আমি নাকি বাতাসের গতিবেগে চলাফেরা করি।
বিশেষ করে জোৎস্না রাতে আমার ঘুমই হতো না। যেহেতু, বাড়ির মধ্যে তখন সকলের ছোট ছিলাম তাই আবদার গুলো কেউ না কেউ পূরণ করতো। আমার ছোট কাকু ও বড়'দির সাথেই বেশি সময় কাটতো। জোৎস্না রাতে পলাপলি অর্থাৎ চোর-পুলিশ খেলতেই হবে এবং এটা হতো শীতের সময়। অবশেষে যখন সকলে ক্লান্ত কিন্তু আমি কারো কথা শুনছি না। তখন আমার সেজো ঠাকুরদা আমাকে ধরে নিয়ে ভূতের গল্পের কথা বলে ভাত খাওয়াতো।
আমার খাওয়া শেষ হলেই আমি ঐ ঠাকুরদার কক্ষে উপস্থিত, আমাকে গল্প তো শোনাতেই হবে। ভূতের গল্প শুনতে শুনতে ভয়ে খাটের এক কোণে চুপ করে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম। তারপর মা বা বাবা বাড়িতে নিয়ে আসতো। কোনো কোনোদিন একটু বিলম্ব হলেই বড়'দি ধরে নিয়ে বড়'দির খাটেই রেখে দিতো।
খুব মিস করি ঐ দিন গুলো। এগুলো সময় আর কখনোই ফিরে পাবো না। সময়ের অতল গহ্বরে প্রিয় মানুষ গুলো ও হারিয়ে গেছে। শুধু রয়ে গেছে স্মৃতি।
আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
সর্ব প্রথম আপনার ঠাকুমায়ের জন্য দোয়া ও প্রার্থনা রইল তিনি যেনো খুবই দ্রুত সুস্থ হতে পারে এবং তাকে ভালো একটি ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত।
জানি না এই পৃথিবীতে ভূত বলে কিছু আছে কি না তবে জেন আছে এটা আমি বিশ্বাস করি। এবং অনেক সময় আমাদের নিজেদের মনে ভয় অনেক কিছু ভাবনার চিন্তার মধ্যে নিয়ে আসে। এবং আগের মানুষ ভূত অনেক বেশি বিশ্বাস করত যাইহোক তবুও আপনারা কোন কিছুর একটি শব্দ পেয়েছেন মানুষের হাঁটা চলাচল জানিনা আপনাদের সাথে রাতে কি হয়েছিল।
আপনাদের সাথে এমন একটি ঘটনা ঘটে যাওয়ার মুহূর্ত আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে ভালো এবং সুস্থ থাকবেন।