দীপাবলির রাত।
শুভ দীপাবলি,🎉🎉🎉
বন্ধুরা, আজকে বিশেষ একটি দিন, আমাদের জন্য কারণ দীপাবলি এবং শ্যামা পূজো। মা কালীর অনেক রূপ, আমি নিজেও মায়ের সকল নাম জানিনা। যতোবার মায়ের রূপ সম্পর্কে জেনেছি ততোই যেন কৌতুহল বেড়েছে।
যাইহোক, আমি ঐদিকে যাচ্ছি না তবে আমার আজকের শ্যামা পূজো উদযাপন এবং অভিমত তুলে ধরছি। অনেক আগে থেকেই প্রতিমা প্রস্তুতির কাজ করছিল ভাস্কর কাকুরা। বিগত রাতেই মায়ের প্রতিমাতে রং করা হয়েছে।
গ্রামের ছোট থেকে বড় সকলের প্রাণে আনন্দের হাওয়া যেন মায়ের পূজোর মূহুর্তের প্রতীক্ষা। অন্যদিকে কেউ কেউ বাজি কেনাতে অতিব্যস্ত। অবশেষে অপেক্ষার অবসান এবং সন্ধ্যা ঘনিয়ে আগত।
আমি সন্ধ্যার পরেই মন্দিরে গেলাম মায়ের মুখ দর্শন করতে এবং মা'কে প্রণাম জানাতে। মোটামুটি কিছুটা সাজসজ্জা ও করা হয়েছে।
মায়ের এই রূপটা ভয়ংকর মনে হলেও এটা আমাদের জন্য কোনো একটি বার্তা। যখন দুষ্টের দমনে মাতৃরূপে শ্যামা মা দুষ্টের দমন করছিলেন তখন এতোটাই রাগান্বিত ছিলেন যে কোনোভাবেই মা'কে থামানো যাচ্ছিল না। ঠিক তখনি পতি দেবতা শিবঠাকুর এই পন্থা অবলম্বন করেন।
যে কারণে ঐ মুহুর্তে ও শ্যামা মা চেতনা ফিরে পেয়েছিলেন এবং যখন দেখলেন পতিরূপে শিব ঠাকুর তারই পদতলে। এটা ছিল মা'কে প্রতিরোধ করার একটা পরিকল্পনা মাত্র।মা, এতোটাই রাগান্বিত ছিলেন যে তাঁকে কোনোভাবেই প্রতিরোধ করা যাচ্ছিল না।
এটার পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলতে চাই অনেকেই এখনো নারীকে মূল্যায়নই করে না বা করতে জানেই না। তবে এটা শতভাগ সঠিক যে নারীরা শান্ত এবং ধৈর্যশীল মানে তাঁরা কিন্তু দুর্বল না। মা রূপে কোনো নারী যদি রাগান্বিত হয় তাহলে তখন মা চন্ডী রূপ ধারণ ও করতে পারে। তখন যেটা হয় বা হবে সেইটা কল্পনারও বাইরে।
ঢাকেল তালে মন্দিরের সামনেই চলছিল আরতি পর্ব। শ্যামা মায়ের পূজো হবে মধ্যরাতে তবে মানুষের ভিড় হয় পূজোর আগ মুহূর্তে। কারণ মধ্যরাত পর্যন্ত সকলে জেগে থাকতেও পারবে না।
আরতি চলাকালীন মূহুর্ত প্রধান অতিথির আগমন। অতিথিদের আপ্যায়ন পর্ব এবং কুশলাদি বিনিময় একটি বছর পরে অনেক মানুষের সাথে। আমাদের গ্রামে প্রতি ঘরে এখন স্বজনদের আগমন। বছরের এই বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতেই আমরা সকলে একত্রিত হই যেটা যে কোনো উৎসবের আনন্দ অনেক গুন বৃদ্ধি করে।
শ্যামা মায়ের উদ্দেশ্যে মোমবাতি সাজানো হয়েছে যেটা দেখতে ভারী সুন্দর লাগছে। এটাতে যখন আলো থাকবে তখন আরো বেশি সুন্দর লাগবে। আমায কাছে দীপাবলির আকর্ষণীয় বিষয় হলো আলোকসজ্জা, বাজি পোড়ানো এবং শ্যামা পূজো।
মায়ের ভোগে দেওয়ার জন্য ফল কেটে প্রস্তুত করার কাজ ও করছে কয়েকজন মিলে। আমাদের গ্রামের বাৎসরিক একটা বড় আয়োজন এই শ্যামা পূজো। যেখানে বেশ বড় একটা বাজেট থাকে আমাদের সকলের।
যদিও অন্যান্য বছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। কিন্তু এই বছর সেইরকম সময় ও সুযোগ কোনোটাই হয়নি। তবে পূজোর কোথাও কোনো ঘাটতি নেই। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারো সবকিছু একদমই পারফেক্ট।
শত ব্যস্ততার মাঝেও এই শ্যামা পূজো উদযাপন করতে রাজধানী থেকে বাড়িতে ফিরেছে গ্রামের এই ছেলেটা। ভক্তিভরে শুধুমাত্র মায়ের চরণ স্পর্শ করবে এটাই উদ্দেশ্যে। "বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।"অজানা এই কথাটা মনে হয় অনেকেই শুনেছেন।
এটা গল্প না সত্য ঘটনা যেটা আমিও একসময় গল্পই মনে করতাম। কিন্তু যেদিন ঘটনার সাক্ষী লোকটির পাশে বসে ওনার মুখে শুনলাম তখন আমার অবস্থা কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ঐ লোকটি এক ব্যক্তির সাথে তর্কে জড়িয়ে বলে বসেছিল মন্দিরে গিয়ে মায়ের গলা থেকে নেকলেস খুলে নিয়ে আসবে।
যদিও তিনি মন্দিরে গিয়েছিলেন কিন্তু পরে যখন চোখ খুললেন তখন তিনি রাস্তায় পড়েছিলেন এবং কয়েকজন ধরাধরি করে তাঁকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এখনো আমাদের এদিকে অনেক জাগ্রত মন্দির আছে যেখানে কেউ পবিত্র মনে প্রার্থনা করলে সেইটা হয়ে থাকে।
যাইহোক, চোখে অনেক ঘুম তাই এখানেই লেখাটি সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
উৎসব খুব ভালোভাবে উদযাপন করেছেন শুনে ভালো লাগলো প্রতিটা উৎসবে কোন না কোন স্মৃতি আমাদের জীবনে থেকে যায়।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ উৎসবের আনন্দময় মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য ভালো থাকবেন।
আপনার পোস্ট পরিদর্শন করে দীপাবলীর রাত সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম এবং দীপাবলীর রাতে মালয়েশিয়াতে বাজিল আওয়াজে আমরা সারারাত ঘুমাতে পারিনি এখানেও ছোট বড় সবাই অনেক বেশি আনন্দ করেছে আপনারাও অনেক বেশি আনন্দ করেছেন দেখে ভালো লাগলো।