অনেক দিন পর রেস্টুরেন্টে যাওয়া
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজ আবার চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন কিছু গল্প শেয়ার করে নেওয়ার জন্য। আশা করি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে
আমি আমার আগের পোস্টে জানিয়েছিলাম যে শীতকাল আমি বিশেষ পছন্দ করি না। শীতকালে কোনো কাজে তৎপরতা থাকে না। নিজেকে কেমন যেন জড় বস্তু মনে হয়। উৎসাহ - উদ্দীপনা সব যেন হারিয়ে যায়। তাই শীতকালে যেমন কোন কাজ করতে ভালো লাগেনা ঠিক তেমনই বাড়ি ছেড়ে কোথাও যেতেও মন চায় না। যার ফলে এই বছর শীতকালে হবু বরের সাথে তেমন কোথাও বেড়োনো হয়নি। এরই মাঝে আবার এনগেজমেন্টের প্রোগ্রামের জন্য আমরা সবাই খুব ব্যস্ত ছিলাম। এই দিনটা যাতে খুব ভালোভাবে সেলিব্রেট করা যায় তার জন্য আমরা আমাদের দিক থেকে যতটুকু সম্ভব সবটাই করেছিলাম। যার ফলে এই বছর শীতকালে আমাদের বেড়োনোর মতো সময় হয়ে ওঠেনি। তাই আজ আমরা একটু সময় বের করেছিলাম যাতে কিছুটা সময় গল্প করে কাটাতে পারি।
সকাল থেকে অনেক ব্যস্ততা ছিল। আর রাতে বেরোনোর মত কোন পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না। তাই প্রত্যেকদিনের রুটিন অনুযায়ী আমি সকালবেলায় পড়াতে গিয়েছিলাম। তারপর পড়িয়ে বাড়ি ফিরে চলে গিয়েছিলাম স্কুলে। আমাদের internship এখনও পর্যন্ত চলছে। আগামী ৩১ শে জানুয়ারি ইন্টার্নশিপ শেষ হবে। তাই এখন প্রত্যেকদিনই আমাদের স্কুলে যেতে হয়। স্কুলে বাচ্চাদের পড়িয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে সময় হয়ে গিয়েছিল প্রায় ৩.৩০। এরপর বাড়িতে এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে নিয়েছিলাম। এরমধ্যেই হবু বরের ফোন আসে। সে আজকে রাতে বাইরে খাবার খাওয়ার প্রস্তাব দেয়। আমিও রাজি হয়ে গিয়েছিলাম যেহেতু অনেকদিন আমাদের কোথাও বেরোনো হয়নি। তারপর বিকাল ৪ টে থেকে আমার পড়ানো ছিল। প্রথম পড়ানোটা ছুটি দেওয়ার পর আবার ছয়টা থেকে আরও একটা পড়ানো ছিল। সেটাও আটটার মধ্যে ছুটি হয়ে গিয়েছিল। এরপর বাড়ি এসে সাড়ে আটটার মধ্যে রেডি হয়ে গিয়েছিলাম। তারপর হবু বরের সাথে বেড়িয়ে পড়েছিলাম।
আমরা কখনোই আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখি না যে ফোন রেস্টুরেন্টে যাব। প্রত্যেকবারেই বাড়ি থেকে বেরোনোর পর রাস্তায় যেতে যেতে আমাদের স্থির হয় যে কোন রেস্টুরেন্টে আমরা যাব। আজকে আমরা ঠিক করেছিলাম দুজনেই চলে যাব আমাদের প্রিয় মাদার্স হাট এ। খাবারের কোয়ালিটি ,কোয়ান্টিটি ও প্রাইজের দিক থেকে এই রেস্টুরেন্টটাই আমার বেশি ভালো লাগে।
দেখতে দেখতে কিছু সময়ের মধ্যেই আমরা রেস্টুরেন্টে পৌঁছে যাই। এই রেস্টুরেন্টে আমাদের বাড়ি থেকে বেশ অনেকটা দূরত্বের পথ। সেই পথ অতিক্রম করে অবশেষে আমরা মাদার্স হাট এ প্রবেশ করি। এরপর আমাদের নির্দিষ্ট সিটে বসিয়ে দেওয়া হয়। তারপর আমরা মেনু কার্ড থেকে খাবারের আইটেম চুজ করছিলাম।
শীতকালে স্যুপ খেতে বেশ ভালো লাগে। তাই আমরা দুজনেই আগে থেকে ভেবে রেখেছিলাম যে আমরা একটা স্যুপ অর্ডার দেবো। সেই মতো আমরা একটা manchow soup অর্ডার দিয়েছিলাম। স্যুপটা এত টেস্টি ছিল কি বলবো। এর আগেও আমরা বেশ কয়েকবার এই সুপ টা ট্রাই করেছিলাম। এটা আমাদের অলটাইম ফেভারিট স্যুপ।
এরপর আমার নিয়ে নিয়েছিলাম ক্রিসপি চিকেন উইংশ। এটা আমি প্রথমবার ট্রাই করলাম। এক প্লেটে আট পিস ছিল। সত্যি কথা বলতে গেলে এটা এত অসাধারণ খেতে ছিল যে পরেরবার হয়তো আমি আবার এটা ট্রাই করবো। তবে পরিমাণটা একটু বেশি থাকাই দুজন মিলে খাওয়াটা চাপের হয়ে গিয়েছিল।
এরপর আমরা অর্ডার দিয়েছিলাম গার্লিক বাটার নান ও এক চিকেন পাঞ্জাবি তরকা। এই ডিশটা যে আমার কি পরিমান ভালো লাগে কি বলবো। অল্প খরচের মধ্যে ভালো খাবার খেতে হলে এই ডিশটা ট্রাই করা যেতে পারে। আমরা দুজনেই এটা খেতে খুব ভালোবাসি।
এত কিছু খাবার পর নান খাওয়াটা খুবই চাপের মনে হচ্ছিল। তাই শরীর অসুস্থ না করে আমরা বাকি খাবার গুলো প্যাক করে নিয়েছিলাম। এরপর বিল মিটিয়ে প্যাক করা খাবার নিয়ে আমরা বাড়ি ফিরেছিলাম।
এইভাবেই আমরা একটা সুন্দর রাত্রি কাটিয়েছিলাম। আজ তাহলে এখানেই শেষ করলাম। আগামীকাল আবার অন্য কোন গল্প নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।