পুজোর কেনাকাটা
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ?আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।
দুর্গাপুজো বাঙ্গালীদের সবথেকে বড় উৎসব । দুর্গাপূজার জন্য আমরা সারা বছর ধরে আশায় বসে থাকি। পুজো যেহেতু আর বেশি দিন দেরি নেই ।তাই এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে আমাদের কেনাকাটার প্রস্তুতি। সারা বছর ধরেই আমাদের কেনাকাটার শেষ হয় না। কিন্তু পুজোর সময় অনেক স্পেশাল কিছু কিনতে হয়। কারণ সারা বছর ধরে যেকোনো ভালো জামা কাপড় দেখলেই মনে মনে ভেবে রাখি এটা আমি পুজোর সময় কিনব।আমাদের কেনাকাটা করবার জন্য হুটহাট করে চলে যেতে হয়। কোন প্ল্যান করে যাওয়া হয়ে হয়ে ওঠেনা। আমাদের এখানে গত চার দিন ধরে একটানা বৃষ্টি হচ্ছিল। আমরা অনেক জন মিলেই কালকে হঠাৎ ঠিক করে ফেললাম কেনাকাটা করতে যাব। আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় অনেকটা দূরেই। বেশ কয়েকদিন ধরেই ফেসবুক জুড়ে বিঞ্জাপন দেখাচ্ছে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি। তবে মনে মনে একটা ইচ্ছে ছিল কবে যাব কিনতে।এত কম দামে শাড়ি দেখার একটু আগ্ৰহ ছিল।
গতকাল পাশের বাড়ি কাকা এসে বলতেই আমরা প্রত্যেকেই রাজি হয়ে গেলাম। আসলে বৃষ্টির মধ্যে কারোরই তেমন কোন কাজ হচ্ছিল না আমরা যেহেতু মাটির কাজ করি ।তাই বৃষ্টির মধ্যে করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। যত বৃষ্টি হবে মাটি তত নরম হয়ে যায়। প্রত্যেকেই দুপুরের খাবার খেয়ে বেলা দেড়টা নাগাদ বেরিয়ে পড়েছিলাম কেনাকাটা জন্য। তখনো অল্প অল্প বৃষ্টি পড়ছিল ।বৃষ্টিতে ভিজে ভিজেই বেরিয়ে পড়েছিলাম। বাড়ি থেকে একটা টোটো ঠিক করে টোটো তে করে গিয়েছিলাম। কারণ বৃষ্টির মধ্যে বাসে করে যাওয়া অসুবিধা। বাড়ি থেকে বেরোনোর পর রাস্তা যে এত খারাপ তা আমাদের জানা ছিল না। মাঝে মাঝেই রাস্তায় এত খাদ যে আমাদের টোটো থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে যেতে হচ্ছে। না হলে টোটো উল্টে যাবার ভয় থাকে। রাস্তায় বেরিয়ে ওর থেকেই বলছিল আগে জানলে যেতাম না।
যাই হোক যেতে অনেকটাই সময় লেগেছিল। পাশের বাড়ির কাকুরা ওখানে একদিন শাড়ি কিনতে গিয়েছিল। কিন্তু তারা জায়গাটা ঠিক চিনতে পারছিল না। দোকান ছাড়িয়ে আমরা প্রায় মাঠের দিকে চলে গিয়েছিলাম। মাঠের দিকে যেতেই দেখলাম চাষের জমিগুলো জলে ডুবে গেছে। কত ধানের ক্ষেতে ধান গুলো শুয়ে পড়েছে। পাটকাঠি গুলো শুকানোর জন্য রাস্তার ধারে ধারে রেখেছিল। সেগুলো জলের ভাড়ে পড়ে গেছে। আবার ছাড়ানো পাটের দড়ি গুলো সবই জলে ভিজে গেছে । বর্ষাকালে কালে চাষিদের খুব ক্ষতি হয়।এছাড়াও যেতে যেতে রাস্তার ধারে প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো দেখতে অপূর্ব লাগছিল । আমাদের বাড়ি থেকে বেরোনোর খানিকক্ষণ পর বৃষ্টি থেমে গিয়েছিল। আমরা যেখানে শাড়ি কিনতে গিয়েছিলাম ।সেই জায়গাটার নাম গোবিন্দপুর। আমরা ভুল রাস্তায় চলে গিয়েছিলাম। তাই আমরা ওখানে রাস্তার কিছু লোককে জিজ্ঞেস করে করে তারপরে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম শাড়ির দোকান।
কিন্তু যাবার পর আমাদের কোন শাড়ি ঠিকমতো পছন্দ হচ্ছিল না। ফোনে যেমন দামে শাড়ি দেখায় ওই রকম দামের কোন শাড়ি ছিল না। থাকলেও আমাদের সেই শাড়িগুলো একেবারে পছন্দ হচ্ছিল না।আবার আমরা যে শাড়িগুলো চাইছিলাম সেই শাড়িগুলো পাচ্ছিলাম না। আসলে পুজোয় আমার মা ,বোন, শাশুড়ি মা আরো অনেককেই জামা কাপড় কিনে দিতে হয়। সকলের জন্য মনের মতো কোনো শাড়ি আমি পাইনি। শাড়ি কিনতে আসার আগেই বাড়ি থেকেই আমার শাশুড়ি মা ,বর দুজনেই বারণ করেছিল। দোকানে গিয়ে বারবার ওদের কথাগুলোই মনে পড়ছিল। বড়দের কথা না শুনলে যা হয়।
কিন্তু অত দূরে গাড়ি ভাড়া দিয়ে দিয়েছি তাই কিছু তো কিনতেই হবে। না হলে শাশুড়ি মা আবার বকাবকি করবে। কারণ দুদিন ধরেই আমার খুব শরীর খারাপ। সেই অবস্থায় আমি গিয়েছি কেনাকাটা করতে। তাই কয়েকজনের জন্য কিছু জিনিসপত্র কিনে নিয়েছিলাম। ঈশা তো খুব রেগে গিয়েছিল। কারণ ওর কিছুই পছন্দ হচ্ছিল না। আমরা অনেকেই মনে মনে ভাবছিলাম আর কোনদিনই এভাবে কেনাকাটা করতে আসবো না। যাইহোক সবাই কিছু না কিছু কেনাকাটা করে বেরিয়ে পড়েছিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে ।তখন সন্ধ্যা সন্ধ্যা হয়ে গেছে যেহেতু টোটো করে আসবো মেন রোড দিয়ে তাই আরো ভয় করছিল। কারণ আমরা টোটোতে সাতজন মত ছিলাম।
অনেকে দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে যায়নি ।তাই খিদে ও পেয়ে গিয়েছিল। একটু রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রত্যেকে একটু করে চা আর বিস্কুট খেয়েছিলাম। বাড়ি পৌঁছেছিলাম সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ। এইভাবেই গতকাল আমাদের সাড়ে পাঁচ ঘন্টা সময় কেটে গিয়েছিল। আমি আর ঈশা দুজনেই বলাবলি করছিলাম ।আমাদের সময়টা একদম ফালতু নষ্ট হলো। এতটা জার্নি করার পর বাড়িতে এসে শরীরটা খুবই খারাপ করছিল।
আজ এখানে শেষ করছি ।আশা করছি সকলেরই ভালো লাগবে। পরবর্তী কোন গল্প নিয়ে আবার হাজির হব আপনাদের মাঝে।
হায় হায়! আমার বাজে ছবিটা পোস্ট করে দিলে! আমি কাঁদবো এবার।
🤣🤣 কাঁদো
বিভিন্ন উৎসবকে সামনে রেখে আমরা কেনাকাটা করতে পছন্দ করি, যেমন ঈদের সময় আমরা কেনাকাটা করি, পুজোর সময় কেনাকাটা করি, কেনাকাটা করতে যাওয়ার সময় অবশ্যই বড়দের কথা শুনতে হয়, আশা করি পরবর্তী সময়ে আপনি পছন্দের শাড়ি পেয়ে যাবেন, অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার শপিং অভিজ্ঞতা খুবই বাস্তবসম্মত এবং মজাদার! দুর্গাপূজার কেনাকাটা সবসময় একটা বড় ব্যাপার, আর সেটা যদি বৃষ্টির দিনে হয়, তাহলে যেন আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়। আপনার যাত্রার বর্ণনা, শাড়ি বাছাই করার সময়ের দ্বিধা এবং সেই ভেজা, কাদামাখা রাস্তায় ভ্রমণ দারুণ লাগল। আশা করছি, পরেরবার আর এভাবে কষ্ট করতে হবে না, আর শাড়ির কেনাকাটাও অনেক সহজ এবং মজাদার হবে।
আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
যেকোনো উৎসব যখন নিজেদের বাড়ি আসে তখন আমরা বাজার ঘাট করে উৎসব অনেক আনন্দের সাথে পালন করতে চাই ঠিক আপনিও পূজার উদ্দেশ্যে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন যা আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ভালো লাগলো আপনার আজকের এই পোস্ট পরিদর্শন করতে পেরে।
আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।