ফুলকপি দিয়ে রুই মাছের রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আজকে আবারো নতুন একটা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।
আপনারা যারা নিয়মিত আমার পোস্ট পড়েন তারা সকলেই জেনে থাকবেন আমি মাছ খেতে পছন্দ করি। মোটামুটি সব রকমের মাছ খেতে আমি ভালোবাসি। আশা করি আমার মত প্রত্যেক বাঙালিদের মাছ ছাড়া একদম চলে না। নিরামিষের দিন ভাত খেতে, একটু অসুবিধে হয়। তবে বেশিরভাগ সময় জ্যান্ত মাছ ছাড়া আমরা একদমই খায় না। অনেক সময় মাছ ওয়ালা মাছ বিক্রি করতে এসে হয়তো জলে থাকতে থাকতে মাছ গুলো মারা যায়। এইসব মাছ আমার শ্বশুরমশাই একদমই নিতে চান না। যেই মাছ গুলো জ্যান্ত থাকবে সেই মাছ উনি কিনে নিয়ে আসেন। তবে জ্যান্ত মাছের স্বাদ একদমই আলাদা। টাটকা মাছের ঝোলের স্বাদ একটু অন্যরকম লাগে।
চলুন তাহলে শুরু করি ফুলকপি দিয়ে রুই মাছের রেসিপি।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | রুই মাছ | ১ কেজি |
২ | বড় সাইজের আলু | ৩ টে |
৩ | ফুলকপি | ১ টা |
৪ | পেঁয়াজ | ১ টা |
৫ | রসুন | ৫ কোয়া |
৬ | কাঁচা লঙ্কা | ১০ টা |
৭ | আদা | ২৫ গ্ৰাম |
৮ | জিরে | ১ চামচ |
৯ | ধনে গুঁড়ো | ১ চামচ |
১০ | মিট মসলা | ১ চামচ |
১১ | লবণ | আড়াই চামচ |
১২ | হলুদ | দেড় চামচ |
১৩ | সাদা তেল | ১০০ গ্ৰাম |
১৪ | শুকনো লঙ্কা | ১ টা |
১৫ | কালো জিরে | সামান্য |
প্রথম ধাপ
প্রথমে গোটা রুই মাছটা ভালো করে আঁশ ছাড়িয়ে কেটে ধুয়ে লবণ, হলুদ মাখিয়ে রেখে দিতে হবে। এরপর পরিমাণ মতো আলু ,ফুলকপি কেটে রেখেছি। আর পরিমাণ মতো সমস্ত মসলা রেডি করে নিয়েছি।
দ্বিতীয় ধাপ
এরপর ফুলকপি গুলো গ্যাসে গরম জলে হালকা সিদ্ধ করে নিয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে ।জল ঝরানো হয়ে গেলে সামান্য পরিমাণে লবণ, হলুদ মাখিয়ে রেখে দিতে হবে।
তৃতীয় ধাপ
এবারে গ্যাস অন করে একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি। কড়াই গরম হলে পরিমাণ মতো সাদা তেল দিয়ে দিয়েছে। তেল গরম হলে একটা একটা করে মাছ ভালো করে ভেজে নিতে হবে। সমস্ত মাছ ভাজা হয়ে গেলে একটা পাত্রে তুলে রেখে দিয়েছি।
চতুর্থ ধাপ
এরপর ওই মাছ ভাজা তেলের মধ্যেই লবণ, হলুদ মাখিয়ে রাখা ফুলকপি গুলো হালকা করে ভেজে নিতে হবে। ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে একটা পাত্রে তুলে রেখে দিতে হবে।
পঞ্চম ধাপ
এবারে গ্যাস অন করে একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি। কড়াই গরম হলে পরিমাণ মতো তেল কড়াইতে দিয়ে দিয়েছি। তেলের মধ্যে কালো জিরে আর শুকনো লঙ্কা দিয়েছি।
ষষ্ঠ ধাপ
এরপর কড়াই তেলের মধ্যেই কেটে রাখা আলু গুলো দিয়ে ভালো করে ভেজে নিতে হবে। ভাজার সময় সামান্য পরিমাণে লবণ, হলুদ দিয়ে দিয়েছি।
সপ্তম ধাপ
আলুগুলো ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে পেস্ট করে রাখার সমস্ত মসলা আলুর মধ্যে দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করতে হবে। মশলা তে আমি ব্যবহার করেছি কাঁচা লঙ্কা, রসুন ,আদা ,পেঁয়াজ, জিরে, ধনে গুঁড়ো, সমস্ত কিছু পেস্ট করে নেওয়ার পর পরিমাণ মত মিট মসলা ভালো করে মিশিয়ে নিয়েছিলাম।
অষ্টম ধাপ
সমস্ত মসলা দিয়ে ভালো করে কষানোর পর ভেজে রাখা ফুলকপি গুলো কড়াইতে দিয়ে দিতে হবে। এবারে আরো ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হবে। ভালোভাবে কষানো হয়ে গেলে পরিমাণ মতো জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিতে হবে।
নবম ধাপ
১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ঢাকনা খুলে যখন ঝোল ফুটে উঠবে তখন ভেজে রাখা মাছগুলো একটা একটা করে ঝোলের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। আবারো খানিকক্ষণ ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
তৈরি
খানিকক্ষণ পর ঢাকনা করলেই তৈরি হয়ে যাবে ফুলকপি দিয়ে রুই মাছের রেসিপি।
রুই মাছ আমার ভীষণ প্রিয়। মাছের ঝোলে যে কোন সবজি দিলেই খেতে ভালো লাগে। তবে শীতের সময় মাছের ঝোলে ফুলকপি স্বাদ একটু আলাদা হয়। দুপুর বেলায় গরম ভাতের সাথে এরকম রেসিপি খেতে খুবই ভালো লাগে। আমি একদমই ঘরোয়া উপায়ে রেসিপি তৈরি করেছি। প্রত্যেকদিন আমরা এই ভাবেই মাছের ঝোল তৈরি করে খাই। আপনারা চাইলে এরকম ভাবেই রেসিপি তৈরি করতে পারেন। মাছের ঝোলে আমি তেমন কোন উপকরণ ব্যবহার করিনি। এইরকম মাছের ঝোল তৈরি করে খেলে শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। শরীর সুস্থ থাকে। আমি সমস্ত উপকরণ আমার পরিমাণ মতো ব্যবহার করেছি ।আপনারা আপনাদের পরিমাণ মতো সমস্ত উপকরণ ব্যবহার করবেন।
আজ এইখানে শেষ করছি। আবার নতুন কোন রেসিপি নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
সত্যি এটি একটি খুব সুন্দর এবং সহজ রেসিপি, ফুলকপি দিয়ে রুই মাছের ঝোল! রুই মাছের সাথে ফুলকপির স্বাদ সত্যিই অসাধারণ, বিশেষ করে শীতের দিনে গরম ভাতের সাথে খেতে একেবারে মজা। আপনি রেসিপি সম্পর্কে খুব বিস্তারিত ভাবে সব কিছু বর্ণনা করেছেন, যা সহজে বুঝতে সাহায্য করবে। আমি নিজেও চেষ্টা করব আপনার মত করে এই রেসিপিটি বানানোর। ধন্যবাদ সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আমরাও ফুলকপি দিয়ে রুই মাছ রান্না করা থাকে আপনার মত করেই আসলে আপনার পরিবেশন টা অনেক বেশি সুন্দর ছিল কিভাবে আপনি তৈরি করেছেন সেটা খুব সুন্দরভাবেই আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ রুই মাছ দিয়ে ফুলকপি রান্নার পদ্ধতি আবারও আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য ভালো থাকবেন।